আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
274 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (25 points)
edited by

মুহতারাম মুফতি সাহেবকে শুকরিয়া উত্তরটি দেয়ার জন্য। 

পুণরায় বিরক্ত করায় মাফ চাইছি। ৩৪২২ নং প্রশ্নের সম্পূরক প্রশ্ন হিসেবে আবার লিখছি। 

 

আমার প্রশ্নগুলি ছিল- ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে সুরা বাকারার ২৮২ নং আয়াতে যা বলা হয়েছে সে সব হুকুম যথা 

১। মেয়াদ নির্ধারণ -ফরজ, ওয়াজিব নাকি মুস্তাহাব?

২। লিখে রাখা -ফরজ, ওয়াজিব নাকি মুস্তাহাব?

৩। সাক্ষী রাখা -ফরজ, ওয়াজিব নাকি মুস্তাহাব?

 

উত্তরে প্রদত্ত রদ্দুল মুহতারের উদ্ধৃতিতে- "শুধুমাত্র বিবাহর ক্ষেত্রেই সাক্ষী রাখা শর্ত। তাছাড়া অন্যান্য লেনদেন ও চুক্তিতে সাক্ষী রাখা জরুরী নয়,বরং মুস্তাহাব। হ্যা ঋণের বেলায় সাক্ষী রাখা ওয়াজিব

সম্ভবত নিজের অযোগ্যতার কারণেই আমার কাছে কথাটি অস্পষ্ট মনে হচ্ছে। কর্জে হাসানার ক্ষেত্রে সাক্ষীর বিষয়টা কী দাঁড়ালো তাহলে? 

 

 আর যদি মুস্তাহাবও হয়, তাহলে এ যুগে কীভাবে আমল করা হবে? যখন লেনদেন অনেক সময়ই ডিজিটাল। বাস্তবে তা দেখা যায় না। সেক্ষেত্রে  দু'জনকে অবহিত করে একটা অনলাইন ডকুমেন্ট রাখলেই কি চলবে? যেমন গুগল ডকুমেন্টে ২ জনকে অ্যাকসেস দিয়ে দেয়া যায়।


এছাড়া কর্জে হাসানার মেয়াদ নির্ধারণের ব্যাপারে হুকুম কি তা যদি বলতেন বড় উপকৃত হতাম। 

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by

উত্তর

بسم الله الرحمن الرحيم  

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী  ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে মেয়াদ নির্ধারণ করা, লিখে রাখা,  সাক্ষী রাখা সবই মুস্তাহাব।  

সে হিসেবে কর্জে হাসানার ক্ষেত্রে মেয়াদ নির্ধারন করা মুস্তাহাব। 

বর্তমান যামানায়  লেনদেন অনেক সময়ই ডিজিটাল। বাস্তবে তা দেখা যায় না। সেক্ষেত্রে  দু'জনকে অবহিত করে একটা অনলাইন ডকুমেন্ট রাখলেই  চলবে।

যেমনটি প্রশ্নে উল্লেখিত রয়েছে যে গুগল ডকুমেন্টে ২ জনকে অ্যাকসেস দিয়ে দেয়া যায়।

এই সিষ্টেম অবলম্বন করাও যাবে। 

কোনো সমস্যা নেই।    

.
★পারস্পারিক লেনদেন ও অাচার অনুষ্টান সমূহে সাক্ষী রাখার নির্দেশ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা দিয়েছেন।
এ সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ إِذَا تَدَايَنتُم بِدَيْنٍ إِلَى أَجَلٍ مُّسَمًّى فَاكْتُبُوهُ وَلْيَكْتُب بَّيْنَكُمْ كَاتِبٌ بِالْعَدْلِ وَلاَ يَأْبَ كَاتِبٌ أَنْ يَكْتُبَ كَمَا عَلَّمَهُ اللّهُ فَلْيَكْتُبْ وَلْيُمْلِلِ الَّذِي عَلَيْهِ الْحَقُّ وَلْيَتَّقِ اللّهَ رَبَّهُ وَلاَ يَبْخَسْ مِنْهُ شَيْئًا فَإن كَانَ الَّذِي عَلَيْهِ الْحَقُّ سَفِيهًا أَوْ ضَعِيفًا أَوْ لاَ يَسْتَطِيعُ أَن يُمِلَّ هُوَ فَلْيُمْلِلْ وَلِيُّهُ بِالْعَدْلِ وَاسْتَشْهِدُواْ شَهِيدَيْنِ من رِّجَالِكُمْ فَإِن لَّمْ يَكُونَا رَجُلَيْنِ فَرَجُلٌ وَامْرَأَتَانِ مِمَّن تَرْضَوْنَ مِنَ الشُّهَدَاء أَن تَضِلَّ إْحْدَاهُمَا فَتُذَكِّرَ إِحْدَاهُمَا الأُخْرَى وَلاَ يَأْبَ الشُّهَدَاء إِذَا مَا دُعُواْ وَلاَ تَسْأَمُوْاْ أَن تَكْتُبُوْهُ صَغِيرًا أَو كَبِيرًا إِلَى أَجَلِهِ ذَلِكُمْ أَقْسَطُ عِندَ اللّهِ وَأَقْومُ لِلشَّهَادَةِ وَأَدْنَى أَلاَّ تَرْتَابُواْ إِلاَّ أَن تَكُونَ تِجَارَةً حَاضِرَةً تُدِيرُونَهَا بَيْنَكُمْ فَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَلاَّ تَكْتُبُوهَا وَأَشْهِدُوْاْ إِذَا تَبَايَعْتُمْ وَلاَ يُضَآرَّ كَاتِبٌ وَلاَ شَهِيدٌ وَإِن تَفْعَلُواْ فَإِنَّهُ فُسُوقٌ بِكُمْ وَاتَّقُواْ اللّهَ وَيُعَلِّمُكُمُ اللّهُ وَاللّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ
হে মুমিনগণ! যখন তোমরা কোন নির্দিষ্ট সময়ের জন্যে ঋনের আদান-প্রদান কর, তখন তা লিপিবদ্ধ করে নাও এবং তোমাদের মধ্যে কোন লেখক ন্যায়সঙ্গতভাবে তা লিখে দেবে; লেখক লিখতে অস্বীকার করবে না। আল্লাহ তাকে যেমন শিক্ষা দিয়েছেন, তার উচিত তা লিখে দেয়া। এবং ঋন গ্রহীতা যেন লেখার বিষয় বলে দেয় এবং সে যেন স্বীয় পালনকর্তা আল্লাহকে ভয় করে এবং লেখার মধ্যে বিন্দুমাত্রও বেশ কম না করে। অতঃপর ঋণগ্রহীতা যদি নির্বোধ হয় কিংবা দূর্বল হয় অথবা নিজে লেখার বিষয়বস্তু বলে দিতে অক্ষম হয়, তবে তার অভিভাবক ন্যায়সঙ্গতভাবে লিখাবে। দুজন সাক্ষী কর, তোমাদের পুরুষদের মধ্যে থেকে। যদি দুজন পুরুষ না হয়, তবে একজন পুরুষ ও দুজন মহিলা। ঐ সাক্ষীদের মধ্য থেকে যাদেরকে তোমরা পছন্দ কর যাতে একজন যদি ভুলে যায়, তবে একজন অন্যজনকে স্মরণ করিয়ে দেয়। যখন ডাকা হয়, তখন সাক্ষীদের অস্বীকার করা উচিত নয়। তোমরা এটা লিখতে অলসতা করোনা, তা ছোট হোক কিংবা বড়, নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। এ লিপিবদ্ধ করণ আল্লাহর কাছে সুবিচারকে অধিক কায়েম রাখে, সাক্ষ্যকে অধিক সুসংহত রাখে এবং তোমাদের সন্দেহে পতিত না হওয়ার পক্ষে অধিক উপযুক্ত। কিন্তু যদি কারবার নগদ হয়, পরস্পর হাতে হাতে আদান-প্রদান কর, তবে তা না লিখলে তোমাদের প্রতি কোন অভিযোগ নেই। তোমরা ক্রয়-বিক্রয়ের সময় সাক্ষী রাখ। কোন লেখক ও সাক্ষীকে ক্ষতিগ্রস্ত করো না। যদি তোমরা এরূপ কর, তবে তা তোমাদের পক্ষে পাপের বিষয়। আল্লাহকে ভয় কর তিনি তোমাদেরকে শিক্ষা দেন। আল্লাহ সব কিছু জানেন।(সূরা বাকারা-২৮২)
.
এর জন্য কমপক্ষে দুইজন সাক্ষী রাখা মুস্তাহাব।
ইবনে আবেদীন শামী রাহ লিখেন,

وفي البحر قيدنا الإشهاد بأنه خاص بالنكاح لقول الإسبيجابي: وأما سائر العقود فتنفذ بغير شهود ولكن الإشهاد عليه مستحب علية. اهـ. وفي الواقعات أنه واجب في المداينات، وأما الكتابة ففي عتق المحيط يستحب أن يكتب للعتق كتابا ويشهد عليه صيانة عن التجاحد كما في المداينة بخلاف سائر التجارات للحرج؛

শুধুমাত্র বিবাহর ক্ষেত্রেই সাক্ষী রাখা শর্ত।তাছাড়া অন্যান্য লেনদেন ও চুক্তিতে সাক্ষী রাখা জরুরী নয়,বরং মুস্তাহাব।হ্যা ঋণের বেলায় সাক্ষী রাখা ওয়াজিব।এবং গোলাম আযাদের বিষয়টা লিখে রাখা ও সাক্ষী রাখা মুস্তাহাব যাতেকরে পরবর্তীতে কোনোপ্রকার ঝগড়া না হয়।যেমন ঋণ ইত্যাদির বিষয়ে সাক্ষী রাখা ও লিখে রাখা মুস্তাহাব।(সাক্ষীর বেলায় কেউ কেউ ওয়াজিবও বলেছেন)
(উল্লেখ্য যে এখানে কেহ কেহ ওয়াজিব বলেছেন,তবে ফতোয়া হলো মুস্তাহাব)  

তাছাড়া অন্যান্য চুক্তি যেমন ব্যবসা-বাণিজ্য ইত্যাদির বেলায় লিখে রাখা মুস্তাহাব নয়।কেননা এতে বেশ ঝামেলার উদ্ভব হবে।(রদ্দুল মুহতার-৩/২১)

وقيدنا الإشهاد بأنه خاص بالنكاح لما ذكره الإسبيجابي بقوله، وأما سائر العقود فتنفذبغير شهود، ولكن الإشهاد عليه مستحب للآية. اهـ. وذكر في الواقعات أن الإشهاد واجب في المداينات.وأما الكتابة فقال في المحيط من باب العتق: ويستحب للعبد أن يكتب للعتق كتابا ويشهد عليه شهودا توثيقا وصيانة عن التجاحد كما في المداينة بخلاف سائر التجارات؛ لأنه مما يكثر وقوعها فالكتابة فيها تؤدي إلى الحرج، ولا كذلك العتق. اهـ. وينبغي أن يكون النكاح كالعتق؛ لأنه لا حرج فيها.

সাক্ষী রাখাঃ
বিবাহের জন্য সাক্ষী শর্ত।এছাড়া অন্যান্য লেনদেন ও চুক্তির বেলায় সাক্ষী শর্ত নয়।কেননা সেগুলো সাক্ষী ব্যতীতও সম্পাদন হয়ে যায়।তবে সাক্ষী রাখা মুস্তাহাব।ওয়াক্বে'আত কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,ঋণের বেলায় সাক্ষী রাখা ওয়াজিব।

লিখে রাখাঃ
গোলাম আযাদের সময় গোলামের জন্য লিখে রাখা মুস্তাহাব।এবং সাথে সাথে সাক্ষী রাখাও মুস্তাহাব।যাতেকরে পরবর্তীতে অস্বীকারের কোনো সুযোগ তৈরী না হয়,যেমন ঋণের ব্যাপারে সাক্ষী ও লিখে রাখা মুস্তাহাব(কেউ কেউ ওয়াজিবও বলেছেন)।

তবে ব্যবসা বাণিজ্যে লিখে রাখা মুস্তাহাব নয়,কেননা তা বেশী হওয়ার কারণে মানুষকে কষ্টকর পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাবে।তবে গোলাম আযাদের বিষয়টা সচরাচর ও অহরহ নয়।বিধায় এদ্ধারা মানুষ কষ্টে নিপতিত হবে না।এবং গোলাম আযাদের মত বিবাহের বিষয়টাও কষ্টকর নয়,বিধায় লিখে রাখা মুস্তাহাব। (বাহরুর রায়েক-৩/৯৬)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...