আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
104 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (39 points)
শাইখ,
১|মনে করুন আমি একটি নতুন জিনিস আবিষ্কার করি যা মানুষের নিত্যদিন দরকার হয়,এই নতুন জিনিসটা কিন্তু বাজারে নেই,যেহেতু আমি জিনিসটি পাইকারী /খুচরা দামে বিক্রি করে লাভ করতে চাই অথবা আমি আমার আবিষ্ককৃত জিনিসটি দিয়ে হালাল ব্যবসা করতে চাই,এখন আমি ইসলামী শরীয়তে এর নায্য দামটা কিভাবে ঠিক করবো?

২|ধরুন আমি কতক ভিন্ন ডিজাইনের মোমবাতি তৈরী করে ব্যবসা করতে চাই,এক্ষেত্রে আমি আমার ডিজাইন করা মোমবাতির সঠিক দামটা কিভাবে নির্ণয় করবো?
দেখা গেল, মোমবাতিটির দাম ২০টাকা হলে আমার লস হয়,আবার ৪০টাকা হলেও অথটা মন্দ নয়,আমার ১০০টাকা হলে দাম বেশী হয়ে যায়,এখন করণীয় কি?

৩|কোন পণ্যের দাম ঠিক করতে,ইসলামী শরীয়তে কোন পদ্বতি অবলম্বন করা হয়,এবং কিভাবে?

৪|আমি কিভাবে সঠিক দামটা ঠিক করবো,যাতে করে এটা জুলুম না হয়ে যায় জনগণের প্রতি,যাতে করে এটি নিয়ে আল্লাহকে জবাব দিতে না হয়।

1 Answer

0 votes
by (709,320 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহাম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/3747 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
ওয়া আলাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
ব্যবসায় কি পরিমান লাভ করা যায়?
ইসলামী শরীয়তে এর কোনো নির্দিষ্ট সীমারেখা নেই, বরং যেকোনো জিনিষ উভয়ের সন্তুষ্টিতে যেকোনো মূল্যে ক্রয়-বিক্রয় করা যায়।
ক্রয়-বিক্রয়ে আমাদেরকে অবশ্যই দুটি দিক খেয়ালে রাখতে হবে।
প্রথমতঃউভয়ের সন্তুষ্টি আছে কি না নেই?
সেদিকে অত্যান্ত সতর্কতার সাথে লক্ষ্য রাখতে হবে ,
কেননা আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍْ ﻻَ ﺗَﺄْﻛُﻠُﻮﺍْ ﺃَﻣْﻮَﺍﻟَﻜُﻢْ ﺑَﻴْﻨَﻜُﻢْ ﺑِﺎﻟْﺒَﺎﻃِﻞِ ﺇِﻻَّ ﺃَﻥ ﺗَﻜُﻮﻥَ ﺗِﺠَﺎﺭَﺓً ﻋَﻦ ﺗَﺮَﺍﺽٍ ﻣِّﻨﻜُﻢْ ﻭَﻻَ ﺗَﻘْﺘُﻠُﻮﺍْ ﺃَﻧﻔُﺴَﻜُﻢْ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠّﻪَ ﻛَﺎﻥَ ﺑِﻜُﻢْ ﺭَﺣِﻴﻤًﺎ
তরজমাঃ-হে ঈমানদারগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না। কেবলমাত্র তোমাদের পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা করা হয় তা বৈধ। আর তোমরা নিজেদের কাউকে হত্যা করো না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা’আলা তোমাদের প্রতি দয়ালু।(সূরা নিসা(২৯)

এবং হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত,
عن ابن عباس قال;قال رسول اللّٰه صلى اللّٰه عليه و سلم
  " ﻻ ﻳﺤﻞ ﻣﺎﻝ ﺍﻣﺮﺉ ﻣﺴﻠﻢ ﺇﻻ ﺑﻄﻴﺐ ﻧﻔﺲ ﻣﻨﻪ "
নবী কারীম সাঃ বলেনঃ"কোন মুসলমানের জন্য  অন্য কোনো মুসলমানের মাল তার অন্তরের সন্তুষ্টি ব্যতীত হালাল হবে না।(তালখিসুল হাবীর-১২৪৯)

সুপ্রিয় পাঠকবর্গ!
অত্র আয়াত এবং হাদীস থেকে আমরা সুস্পষ্টভাবে  বুঝতে পারলাম যে,যে কোনো ধরণের লেনদেনে উভয়ের সন্তুষ্টি একান্ত অত্যাবশ্যকীয় একটি বিষয়।সুতরাং উভয়ের সন্তুষ্টিতে যেকোনো মূল্যে লেনদেন করা যাবে,বৈধ আছে।কিন্তু কারো সন্তুষ্টি না থাকলে জোর করে বা তাকে বাধ্য করে তার সাথে লেনদেন করা কখনো জায়েয হবে না।

দ্বিতীয়তঃ কারো উপর জুলুম হচ্ছে কি না?সে দিকটাও নজরে রাখতে হবে।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাঃ থেকে বর্ণিত, নবী কারীম সাঃ বলেনঃ
ﻋﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻋﻦ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ ﺍﻟﻈﻠﻢ ﻇﻠﻤﺎﺕ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ
জুলুম/নির্যাতন কিয়ামতের দিন অন্ধকাররূপ ধারণ করবে।(সহীহ বুখারী-২৩১৫)

এবং অত্র হাদীস থেকে আমরা সুস্পষ্টভাবে বুঝতে পারলাম যে লেনদেনে কারো প্রতি জুলুম/নির্যাতন না হওয়া চাই। জুলুম/নির্যাতন করা সর্বাবস্থায়  হারাম।
কিন্তু এক্ষেত্রে যেহেতু ক্রয়-বিক্রয়ের নির্ধারিত শর্ত ইজাব-কবুল(প্রস্তাব-সম্মতি)পাওয়া যাচ্ছে,তাই লেনদেন সংগঠিত হয়ে গেলেও জুলুম-নির্যাতনের গোনাহ অবশ্যই হবে।

ইমদাদুল ফাতাওয়া৩/১৯
আবকে মাসাঈল আউর উনকা হল৬/২৭
জামেউল ফাতাওয়া ৬/৬২(শেষ)

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
(১)
আপনি যত ইচ্ছা নির্ধারণ করতে পারবেন। তবে সীমিত লাভ করা অর্থাৎ প্রতিটা পণ্যে ১০/১৫ টাকা করে লাভ করা মানবতার প্রতি অনগ্রহ প্রদর্শন হিসেবে বিবেচিত হবে।এবং এর জন্য অবশ্যই আপনি সওয়াব পাবেন।

(২)
আপনি ৫০/৬০ নির্ধারণ করতে পারেন।

(৩)
নিজের লাভ, খাযানা সংগ্রহের দিকে অগ্রসর না হয় বরং মানব সেবার দিকে অগ্রসর হওয়াই শরীয়তের উদ্দেশ্য। সুতরাং সহনীয় পর্যায়ের লাভ করাই উচিৎ।

(৪)
আপনার সামান্য লাভ হয়, এবং জনগণের কষ্ট না হয়,সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...