আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
256 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (40 points)
edited by
আসসামুআলাইকুম ওরাহমাতুল্লা।

১।হুজুর আমার স্বামী বলেছিল ওই কাজটা করলে কপালে  দুঃখ আছে/ কপালে দুঃখ লিখছ।আমি ওই কাজটা করেছি।এতে কি আমার তালাক হবে? এসব দ্বারাও কি তালাক হবে?আমি এরপর বলেছি তালাক ছাড়া আর কি করতে পারবা যে? স্বামী কি বলেছে এরপর মনে নেই।মনে হয় বলেছে দিতে হলে দিব তালাক সেটা বলেছিল।আগের কথা তহ।ওনাকে এখন জিগ্যেস করলে  বলে যে আগে কোনদিন তালাকের নিয়তে কিছু বলে নি।

২।হুজুর আমি একবার কলেজে থাকতে কলেজে হিন্দুদের স্বরস্বতী পূজা হচ্ছিল।যদ্দুর মনে পড়ে দরজা দিয়ে একটু করে মানে ৫-১০ মিনিট দেখেছিলাম।সম্ভবত প্রাইভেটে পড়তে গিয়েছিলাম।ওইখান থেকে কলেজে গিয়েছিলাম।হিন্দু বান্ধবীর সাথে।আর কোনদিন হিন্দুদের কোন পূজায়,আমার জানা মতে যায় নি।এখন আমার বিয়ে হয়েছে।হুজুর ওটার জন্য কি তওবা করলে হবে? আমি খুব টেনশনে আছি।আমি জানার পর থেকে যে হিন্দুদের পূজায় গেলে ঈমান চলে যাবে।এখন আমার বিয়েও হয়েছে।আবার ঠিকি ওই বান্ধবীর বাসায়,গিয়েছিলাম পূজার দিন নই।২–৩ দিন পর।পূজোর দিন তহ আসিস নাই এখন আই বলে নিয়ে গিয়েছিল।আর সেইদিন নাস্তা বানিয়ে দিয়েছিল।আমি জানি না নাকি ওদের প্রাসাদ ছিল কিনা।এরকম আরেকবার আরেকজন ওদের পূজো উপলক্ষে নাস্তা এনেছিল।অনেক আগে।জানি না ওটা কি ওদের প্রাসাদ ছিল কিনা।কি করব এখন?আমার মনে সবসময় চিন্তা ঘুরে বেরায় আমার ঈমান ঠিক আছে কিনা।আমি বার বার কালেমা পড়তেই থাকি।আগে ইসলামের তেমন বেশি জানতাম না, এখন যদ্দুর জানি মেনে চলার চেস্টা করি।আমার ঈমান কি চলে গেছে এর দ্বারা?

৩।আরেকটা কথা হুজুর।আমার হিন্দু বান্ধবীর সাথে কথা হয় মেসেজে।কোন পড়া পারলে বা কোন কথায় আমি বলি আল্লাহ ভরসা।ও ওদের ঠাকুর নিয়ে বলার পর ও আমি বলতাম আল্লাহ ভরসা।এখন সন্দেহ হচ্চে কোন ওদের ঠাকুর নিয়ে বলার পর আমি কোন ওই কথাটার পক্ষে কোন রিপ্লাই দিয়েছি কিনা।যদি দিয়েও থাকি হয়ত মন থেকে ওদের দেবতাকে সমর্থন করে দি নি।কারন আমি সবসময় আল্লাহ ভরসা বলতাম, ও ওদের দেবতার প্রসংংসা করলেও আমি আল্লাহ ভরসা বলতাম।মনের অজান্তে বা জেনে যদি এরকম ভুল হয়ে থাকে আমার ঈমান কি চলে যাবে? আমি কোনদিন আল্লাহর জায়গায় অন্য কাউকে শরিক করার চিন্তায় করতে পারি না।ভয়,হচ্চে কোন মেসেজে ওদের দেবতার পক্ষে কথা বলেছি কিনা।আরেকবার অনেক ছোট থাাকতে মামার কাধে করে হিন্দুদের ছাগল কাটা দেখতে গিয়েছিলাম।এখন টেনশন হয় এসবের দ্বারা আমার ঈমান ঠিক আছে কিনা।

৪।হুজুর স্বামীকে বারবার তালাকের ব্যপারে প্রশ্ন করায় ওনি বলেছে এই বিষয়ে যেন আর প্রশ্ন না করি।আর তখন বলেওছিলেন ওনার মনে নেই।আমার  মনে সন্দেহ আসতে থাকে।আমার কি ওনাকে প্রশ্ন করা উচিত হবে?

৫।স্ত্রী মেসেজে তালাক চাওয়ার পর যদি স্বামী যদি দিব বলে বা তুমি দিও বলে।এর পর যদি কেনায়া বাক্য বলে তাহলে কি তালাক হবে? পর পর যদি রিপ্লাই হিসেবে কেনায়া বাক্য না বলে দিব বা তুমি দিও সেটা  বলে আর পরে কেনায়া বাক্য তাহলে কি তালাক হবে? নিয়ত ছাড়াও?মেসেজে বা ফোনে?ফোনে কম কথা হয় মেসেজে হয় যে বেশি।আসলে আমি সন্দেহের ওপর ভিত্তি করে প্রশ্ন করেছি।ওইভাবে কি তালাক হবে?

৬।স্ত্রী যদি মেসেজে বলে স্বামীকে তুমাকে বিয়ে করে জীবন শেষ।স্বামীও যদি বলে তহ ছেড়ে দাও সময় আছে তহ ভেবে দেখ তারপর মা বাবার পছন্দমত করিও/ কর গা/ কর।এভাবে কি তালাক হবে?

৭।আমার মা আমার বিয়ে মেনে নিচ্ছিল না।তহ আমি স্বামীকে বলেছি আমার মায়ের দিকে তাকিয়ে আমাকে ভুলতে পারবা? মায়ের সুখের জন্য।স্বামী অনেক কথা বলার পর বলল।যদি তুমার সুখের জন্য সেটা করতে হয় তহ করব।তুমার ক্ষতি করব না কোনদিন।আসলে হুজুর আমিও চাই না তাকে ছাড়তে।আরো বলে  কল ও দিব না যদি তুমার মা বাবা না মানে তখন।এখানে কি তালাক হবে?

1 Answer

0 votes
by (573,930 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


তালাক খুবই মারাত্মক  একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

এ ভয়ানক শব্দটি নিয়ত থাকুক বা না থাকুক রাগে বলুক আর ভালবেসে বলুক স্ত্রীকে উদ্দেশ্য নিয়ে মুখ দিয়ে এ শব্দ বের হলেই তালাক পতিত হয়ে যায়। 

হাদীসে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” ثَلَاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ: الطَّلَاقُ، وَالنِّكَاحُ، وَالرَّجْعَةُ “

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তিনি বিষয় এমন যে, ইচ্ছেকৃত করলে ইচ্ছেকৃত এবং ঠাট্টা করে করলেও ইচ্ছেকৃত বলে ধর্তব্য হয়। তা হল, তালাক, বিবাহ এবং তালাকে রেজয়ীপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২০৩৯, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৯৪}

তালাক স্পষ্ট বাক্য দ্বারাও হতে পারে,আবার কেনায়া শব্দ,ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারাও হতে পারে।
কেনায়া তালাক বলা হয় স্পষ্ট তালাক শব্দ না বলে বরং তালাকের ইঙ্গিতসূচক শব্দ বলে তালাক দেওয়া। 

★★শরিয়তের পরিভাষায় তালাকের ইঙ্গিত সূচক শব্দে তালাক দেয়াটাকে বলা হয় ‘কেনায়া তালাক’ বা ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারা তালাক। আর কেনায়া তালাকের ক্ষেত্রে নিয়ত তথা তালাকের ইচ্ছা থাকা অত্যাবশ্যক। আর কেনায়া তালাক দ্বারা এক তালাকে বায়েন পতিত হয় ৷
সুতরাং যদি কেউ স্ত্রীকে তালাকের ইঙ্গিত সূচক কথা বলে এবং তালাকের নিয়ত করে, তবে স্ত্রী তালাক হয়ে যাবে। আর যদি তালাকের নিয়ত না করে তাহলে তালাক হবে না। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/৩৭৫)

হেদায়া গ্রন্থে আছেঃ 

وَالضَّرْبُ الثَّانِي: الْکِنَايَاتُ، وَلاَيَقَعُ بهَا الطلاَقُ إلاَّبِنِيَةٍ، اَوْ دَلالَةٍ حَالٍ. وَهِيَ عَلَی ضَرْبَيْنِ: مَنْها ثَلاَثَةُ اَلْفَاظٍ يَقَعُ بهَا الطّلاقُ الرَّجْعِيُّ،وَلاَيَقَعُ بهَا إِلا وَاحَدَةٌ، وَهِيَ قَوْلُهُ: اعْتَدِّي، وَاسْتَبْرِئِي رَحِمَکِ، وَاَنْتِ وَاحِدَةٌ، وَبَقِيَةُ الْکِنَايَاتِ إِذا نَوَی بهَا الطلاَقَ کَانَتْ وَاحِدَةً بَائِنَةً، وَإِنْ نَوَی بِهَا ثَلاَثاً کَانَتْ ثَلاَثاً، وَإِنْ نَوَی اثْنَتَيْنِ کَانَتْ وَاحِدَةً، وَهَذَا مِثْلُ قَوْلِهِ: اَنْتِ بَائِنٌ، وَبَتَّةٌ، وَبَتْلَةٌ، وَحَرَامٌ، وَحَبْلُکِ عَلَی غَارِبِکِ، وَالْحَقی بِاَهْلِک، وَخَلِيَةٌ، وَبَرِيّةٌ، وَوَهَبْتُکِ لاهْلِکِ، وَسَرَّحْتُکِ، وَاخْتَارِيْ، وَفارَقْتُکِ، وَاَنْتِ حُرَّةٌ، وَتَقَنَّعِي، وَتَخَمَّرِي، وَاسْتَتِرِيْ، وَاغْرُبِيْ، وَابْتَغِي الاَزْوَاجَ، فَإِنْ لَمْ يَکُنْ لَهُ نِيَةٌ لَمْ يَقَعْ بِهٰذِهِ الاَلْفَاظِ طَلاَقٌ؛ إِلا اَنْ يَکُوْنَا فِيْ مُذَاکَرَةِ الطّلاَقِ؛ فَيَقَعُ بِهَا الطّلاَقُ فِيْ الْقَضَاءِ، وَلاَيَقَعُ فِيْمَابَيْنَةُ وَبَيْنَ اﷲِ تَعَالَی إِلاَّ اَنْ يَنْوِيَهُ، وَإِنْ لَمْ يَکُوْنَا فِيْ مَذَاکَرَةِ الطّلاَقِ، وَکَانافِيْ غَضَبٍ اَوْ خُصُوْمَةٍ، وَقَعَ الطّلاَقُ بِکُلِّ لَفْظٍ لاَ يُقْصَدُ بِهِ السَّبُّ وَالشَّتِيْمَةُ، وَلَمْ يَقَعْ بِمَا يُقْصَدُبِهِ السَّبُّ وَالشَّتِيْمَةُ إِلاَّ اَنْ يَنْوِيَةُ.

احمد بن محمد البغدادي المعروف بالقدوري، مختصر القدوري: 363. 364، موسسة الريان للطباعة والنشر والتوزيع، بيروت
برهان الدين علي المرغيناني، الهداية شرح البداية، 1: 241، المکتبة الاسلامية

সারমর্মঃ  
কেহ যদি তার স্ত্রীকে বলে যে তোমাকে আমি ছেড়ে  দিলাম, যা খুশি তাই করো,তুমি মুক্ত, তুমি স্বাধীন, তুমি স্বামী খুজো,বা স্বামী তালাশ করো,তাহলে এটিও কেনায়া তালাক।
কেনায়া তালাক হলো ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারা যেটা হয়।
কেনায়া তালাকের ক্ষেত্রে নিয়ত তথা তালাকের ইচ্ছা থাকা অত্যাবশ্যক। আর কেনায়া তালাক দ্বারা এক তালাকে বায়েন পতিত হয়।

আরো জানুনঃ

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,

(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে কোনো তালাক হবেনা।
আপনি নিশ্চিন্তে থাকুন।

(০২)
আপনার ঈমান চলে যায়নি।
তবে আপনাকে উল্লেখিত সকল কাজের কারনে তওবা করতে হবে।    
মহান আল্লাহর কাছে ভবিষ্যতে এহেন কোনো কাজ না করার ওয়াদাবদ্ধ হতে হবে। 

(০৩)
আপনার ঈমান ঠিক আছে। 

(০৪)
তাকে আর প্রশ্ন করা উচিত নয়।
এতে সমস্যা হতে পারে।

(০৫)
এখানে স্বামী স্ত্রীর তালাক চাওয়ার জবাবে কেনায়া বাক্য বলেছে বলে ধরা হবে।
তাই আসলেই কেনায়া তালাকের বাক্য বলে থাকলে এক্ষেত্রে তালাক পতিত হবে।

(০৬)
এখানে স্বামী ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি  স্ত্রীর ইচ্ছার উপর ছেড়ে দিয়েছে।
তাই এক্ষেত্রে স্ত্রী না চাইলে তালাক হবেনা।

(০৭)
এখানে তালাক হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...