আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
190 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (30 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম হুজুর। আমি বিভিন্ন বিষয়ে ওয়াসওয়াসায় ভুগি। মাঝে মধ্যেই মনের মধ্যে অনেক প্রশ্ন জাগে৷ ভয়ে থাকি যাতে ঈমান নষ্ট না হয়ে যায়। আমি যাতে আল্লাহর থেকে দূরে সরে না যাই৷ নানান বিষয় নিয়ে জানতে ইচ্ছা হয়৷ আমি যদি সেই মনের সন্দেহ বা উদয় হওয়া প্রশ্ন গুলো প্রকাশ করি বা কারোর কাছে জান্তে চাই তাহলে কি ঈমানে কোন সমস্যা হবে??

যদি মনে এরকম প্রশ্নের উদয় হয় যে, আল্লাহ তা আলা তো নিজেই কোরআন নাজিল করেছেন৷ সেখানে সুরার অর্থ গুলোতে দেখা যায় বলা আছে, "তোমার রব তোমাকে এত দিবেন যে তুমি খুশি হয়ে যাবে" অনেক আয়াতে এরকম ভাবে অর্থ  বলা আছে অর্থাত আল্লাহকে উল্লেখ করে৷ যদি প্রশ্ন উদয় হয় আল্লাহ নিজেই বলেছেন প্রতিটি বানী  তাহলে "আমি" কেন বললেন না, রব তো আল্লাহ নিজেই। মনে এরকম প্রশ্ন আসলে শয়তানকে কি বলে হারিয়ে দেওয়া যায় দয়া করে বলবেন।  আর মনের ওয়াসওয়াসা নিয়ে প্রশ্ন করার ফলে কি ঈমানের কোন ক্ষতি হবে??

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: جَاءَهُ نَاسٌ مِنْ أَصْحَابِهِ فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ، نَجِدُ فِي أَنْفُسِنَا الشَّيْءَ نُعْظِمُ أَنْ نَتَكَلَّمَ بِهِ، أَوِ الْكَلَامَ بِهِ، مَا نُحِبُّ أَنَّ لَنَا وَأَنَّا تَكَلَّمْنَا بِهِ، قَالَ: أَوَقَدْ وَجَدْتُمُوهُ؟ قَالُوا: نَعَمْ، قَالَ: ذَاكَ صَرِيحُ الْإِيمَانِ صحيح

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট তাঁর কতিপয় সাহাবী (রাঃ) এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা আমাদের অন্তরে এমন কিছু অনুভব করি যা ব্যক্ত করাকে বা যা মুখে বলাকে আমরা গুরুতর মনে করি। আমরা এ ধরণের কথা মনে আসা অথবা পরস্পর সমালোচনা করাকে পছন্দ করি না। তিনি বললেনঃ তোমরা কি এরূপ অনুভব করো? তারা বললেন, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ এটা স্পষ্ট ঈমানের লক্ষণ।
(মুসলিম ১৩২, আবূ দাঊদ ৫১১১, আহমাদ ৯৬৯৫.মিশকাতুল মাসাবিহ ৬৪)

হাদীসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছেঃ
আমাদের কেউ সে বিষয়ে কথা বলাটাও বড় অপরাধ মনে করে। যেমন আল্লাহকে কে সৃষ্টি করেছে? তিনি কেমন? তিনি কোন্ বস্তু? আমরা জানি যে, এমন কোন বিষয় তাঁর জন্য প্রযোজ্য নয়। আমরা এও জানি যে, তিনি সকল বস্তুর স্রষ্টা, তিনি সৃষ্ট নন। এমন বিষয়ের উদয় হলে এর বিধান কি? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমাদের হৃদয়ে কি এমনটি অনুভব কর? অর্থাৎ- তোমরা জান ও বুঝ যে, এরূপ কথা উদয় হওয়া গুরুতর অপরাধমূলক? আর এরূপ অনুভব করাটাই প্রকৃত ঈমান। কেননা এটাকে বড় অপরাধ মনে করা ও তাকে ভয় করা কেবলমাত্র তার থেকেই পাওয়া সম্ভব যার ঈমান পরিপূর্ণ।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
যে কোনো ওয়াসওয়াসার প্রধান চিকিৎসা এটাই যে, একে গুরুত্ব না দেয়া। কী চিন্তা আসল, কী চিন্তা গেল-তা না ভেবে নিজের কাজে মশগুল থাকুন। কেননা, এটা মূলত শয়তানের কাজ। 

নতুবা আপনি এটা নিয়ে চিন্তায় পড়ে গেলে আপনি এখানেই আটকা পড়ে যাবেন। সামনে অগ্রসর হওয়া আর সম্ভব হবে না। এভাবে শয়তানের উদ্দেশ্য পূরণ হয়ে যাবে।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

إِنَّمَا النَّجْوَىٰ مِنَ الشَّيْطَانِ لِيَحْزُنَ الَّذِينَ آمَنُوا وَلَيْسَ بِضَارِّهِمْ شَيْئًا إِلَّا بِإِذْنِ اللَّهِ ۚ وَعَلَى اللَّهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُؤْمِنُونَ

এই ওয়াসওয়াসা তো শয়তানের কাজ; মুমিনদেরকে দুঃখ দেয়ার দেয়ার জন্যে। তবে (এই ওয়াসওয়াসা সৃষ্টি করে) সে মুমিনদেরকে চুল পরিমাণ ক্ষতি করতে পারে না, আল্লাহর হুকুম ছাড়া। মুমিনদের উচিত আল্লাহর উপর ভরসা করা। (সূরা মুজাদালাহ ১০)

এহেন চিন্তা মাথায় আসলে আল্লাহর কাছে বিতাড়িত শয়তান থেকে পানাহ চাইবেন।

★পবিত্র কুরআন কারীমে অনেক আয়াতে আল্লাহ তায়ালা নিজের দিকে নিসবত  করে কথা বলেছেন,কখনোও বান্দার দিকে নিসবত করে কথা বলেছেন।

প্রশ্নে উল্লেখিত বিষয়টি কুরআনের ভাষাগত সৌন্দর্যতা,ভাষার অলংকার। 
(বড় বড় সাহিত্যিকদের বই,রচণা ইত্যাদি  পড়লে বিষয়টি স্পষ্ট হবে।)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...