আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
220 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (55 points)
edited by

আসসালামু আলাইকুম হুজুর। দয়া করে আমার প্রশ্নের উত্তর দিয়ে সাহায্য করবেন আমাকে। খুবই পেরেশানিতে আছি। সমাধান দিবেন কষ্ট করে। 


১।কোন ব্যক্তি যদি তার স্ত্রীকে তালাকের সুস্পষ্ট শব্দ এইভাবে লিখে তালাকের নিয়ত করে তাহলে হবে কিনা?? অর্থাত যদি সে লিখে, "তা****"।  এইভাবে অর্থাত স্টাএ দিয়ে লিখার ফলে কি পতিত হবে?? নাকি সম্পূর্ণ টা লিখতে হবে??

২।যদি কেউ তার বউকে শর্ত দেওয়ার জন্য লিখে," তালাকের সন্দেহ তালাক " শুধু এইটুকু লিখে। এইটা লিখার সময় সে তালাকের সন্দেহ হলে /সন্দেহ করলে এইভাবে লিখেনি। ভুল করে শুধু লিখেছে, " তালাকের সন্দেহ তালাক"।  এখন এইটুকু লিখার জন্য কি শর্ত পতিত হবে বা তার বউ তালাকের সন্দেহ করলে পতিত হবে?? নাকি তার ভুল লিখার জন্য শর্ত পতিত হবে না?লিখাটা যদি বউয়ের কাছে না লিখে থাকে, তাহলে হুকুম কি কারন এইটুকু লিখায় সে বউকে উল্লেখ করেনি মনে মনে ভেবেছে। সে যদি ভেবে থাকে সে সঠিক লিখেছে মানে তালাকের সন্দেহ হলে লিখেছে ভেবে থাকে তাহলে হুকুম কি??

৩। যদি একই কথা কোন মহিলা বলে, তাহলে কি তার উপর শর্ত পতিত হবে???  সে যদি শুধু, "তালাকের সন্দেহ ****  " এইটুকু লিখে কিন্তু সন্দেহ করলে বা হলে না লিখে। এবং নিজেকে উল্লেখ না করে লিখার সময় শুধু মনে মনে ভাবে,, তাহলে হুকুম কি??

৪।যদি কোন স্ত্রী তার স্বামীকে জিজ্ঞেস করে সে কখনো তালাকের শব্দ লিখেছে কিনা??যাতে রাগের মাথায় ও কখনো না বলে। কারন রাগে লিখুক যেভাবেই লিখুক সমস্যা হয়ে যায়, সেজন্য সে সাবধান করে কখনোই যাতে অইসব শব্দ না লিখে ফেলে। কারন মেসেজে লিখে সেন্ড না করলেও শুধু লিখলেও সমস্যা হয়।এইসব কথা তার স্বামীকে বলার পর  তার স্বামী যদি উত্তর দেয় " আর বলবো না  বা লিখবো না।"এই কথার মাধ্যমে কি মিথ্যা স্বীকারোক্তি হবে?? সে বলেনি যে আগে বলেছে কিনা, শুধু যদি বলে আর বলবে না,  এই কথাত মাধ্যমেও কি মিথ্যা স্বীকারোক্তি হবে? নাকি আগে দেওয়ার কথা বলতে হবে???সে হয়তো বুঝাতে চেয়েছে এই কথা কখনোই সে বলবে না। 

 

৫। একটা ঘটনাঃ  কোন একটা বউ স্বামীকে বলছে যে  আজকে জানলাম  কোন স্বামী তার বউয়ের জন্য সুস্পষ্ট তালাকের শব্দ লিখলেই তা পতিত হয়ে যায়, যদি মেসেজ সেন্ড না করে তাও নাকি হয়ে যায়। তোমার তো অনেক রাগ। কখনও এই কাজ করো না, রাগের মাথায় লিখে ফেললেও সমস্যা।  (বউ অনেক সময় স্বামীকে মানা করতো রাগ করে কেনায়া ধরনের বাক্য যাতে না বলে।কিন্তু ওইদিন বলছিল যাতে সুস্পষ্ট তালাকের কথা যাতে না লিখে কখনো) বউ অনেক কথা লিখে ফেলে তার স্বামীকে বুঝানোর জন্য। বউয়ের অনেক মেসেজের পর,, 

তারপর স্বামী উত্তর দেয় যে,  আচ্ছা আর কখনো এইসব বলবো না বা লিখবো ও না৷  তারপর বউ ভয় পেয়ে যায়৷ তার স্বামী কি তার কথা না বুঝেই মিথ্যা স্বীকারোক্তি দিয়ে দিলো কিনা৷ কারন সে বলেছে আর এইসব লিখবে না বলবেও না। 

পরে বউ আবার বুঝিয়ে বলে তালাকের মেসেজ লিখে সেন্ড না করলেও সমস্যা হয়ে যায়। আমি জানি তুমি কখনো লিখো নি। 

স্বামীঃ তুমিতো জানো আমি বলেছি আমি লিখিনি, তাহলে কেন আবার এইসব বলছো৷ 

অর্থাত স্বামী বলতে চেয়েছে সে কখনোই তালাকের সুস্পষ্ট শব্দ বউয়ের জন্য লিখেনি। 

প্রশ্ন ঃস্বামী যে বলেছে আর কখনোই বলবে না বা লিখবে না, এই কথার মাধ্যমে কি মিথ্যা স্বীকারোক্তি হবে?? সে হয়তো কথাটা বুঝতে পারেনি যে স্ত্রী  সুস্পষ্ট তালাকের শব্দ না লিখতে বলেছে। আর কখনো লিখবে না বলার মাধ্যমে কি মিথ্যা স্বীকারোক্তি হবে?? কারণ  আর কখনো না লিখার মানে যদি এরকম হয় যে আগে লিখেছিল কিনা। তাহলে হুকুম কি??

সে তো পরে আবার বলেছে সে কখনোই লিখেনি।স্ত্রী যখন বলেছে তুমি কখনো সুস্পষ্ট তালাকের শব্দ লিখোনি তো??বা লিখে সেন্ড করোনি এমন হয়নি তো??তারপর সে বলে যে তুমি জানো আমি বলেছি কখনোই লিখিনি তাহলে কেন আবার জিজ্ঞেস করো। কিন্তু প্রথমে বলেছে আর কখনোই এইসব বলবে না বা লিখবে না।  অনেক মেসেজ দেওয়াতে সে হয়তো বুঝতে পারেনি কথাটা। এখন কথা না বুঝার ফলে যদি এরকম উত্তর দেয়, তাহলে কি সমস্যা হবে??স্বামী অবশ্যই মিথ্যা স্বীকারোক্তি দেওয়ার জন্য লিখেনি কথাটা। স্ত্রী বলেছে কখনোই যাতে এইসব না লিখে রাগ করে। এইসব কথার উত্তর দিতে গিয়ে স্বামী অইভাবে বলে ফেলেছে কথাটা।  

#স্বামী এটা বুঝাতে চায়নি যে সে আগে তালাকের শব্দ বলেছে পরে আর বলবে না। কারণ স্ত্রী যখন বুঝিয়ে বললো, তারপর সে উত্তর দেয় সে কখনোই  লিখেনি এইসব। 

দয়া করে সমাধান দিন হুজুর। 

৬। উপরের ঘটনা নিয়ে স্ত্রী স্বামীকে আবারো জিগ্যেস করলে সে খুবই রেগে যায়, বলে কতবার বলেছি আমি অই কথা বলিনি, লিখিনি, কোনভাবেই বলিনি তাও কেন আবার জিজ্ঞেস করছো একই কথা। আসলে স্ত্রী জানতে চেয়েছিল অইদিন, " আর বলবো না বা লিখবো না," এই কথা ভুল করে বলেছিল কিনা। বা স্ত্রীর কথা না বুঝেই উত্তর দিয়েছিল কিনা।।স্বামী বলে যদি এইসময় ভুল উত্তর দেই তাহলে এখন সঠিক উত্তর দিচ্ছি আমি অইসব বলিনি বা লিখিনি। হয়েছে??

হুজুর, স্বামী মিথ্যা স্বীকারোক্তি দেওয়ার জন্য, "আর বলবো না বলেনি,সে মূলত বুঝিয়েছিল সে ভবিষ্যতে কখনোই এই কথা বলবে না। আর আগে বলেছে বলে সে মিথ্যা স্বীকারোক্তি দেয়নি বা দেওয়ার জন্য বলেনি কথাটা। 

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


https://ifatwa.info/37385/ ফতোয়াতে উল্লেখ করা হয়েছেঃ

 
আল্লাহ তা'আলা বলেন,

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَسْأَلُوا عَنْ أَشْيَاءَ إِن تُبْدَ لَكُمْ تَسُؤْكُمْ وَإِن تَسْأَلُوا عَنْهَا حِينَ يُنَزَّلُ الْقُرْآنُ تُبْدَ لَكُمْ عَفَا اللَّهُ عَنْهَا ۗ وَاللَّهُ غَفُورٌ حَلِيمٌ


হে মুমিণগন, এমন কথাবার্তা জিজ্ঞেস করো না, যা তোমাদের কাছে পরিব্যক্ত হলে তোমাদের খারাপ লাগবে। যদি কোরআন অবতরণকালে তোমরা এসব বিষয় জিজ্ঞেস কর, তবে তা তোমাদের জন্যে প্রকাশ করা হবে। অতীত বিষয় আল্লাহ ক্ষমা করেছেন আল্লাহ ক্ষমাশীল, সহনশীল।


قَدْ سَأَلَهَا قَوْمٌ مِّن قَبْلِكُمْ ثُمَّ أَصْبَحُوا بِهَا كَافِرِينَ
এরূপ কথা বার্তা তোমাদের পুর্বে এক সম্প্রদায় জিজ্ঞেস করেছিল। এর পর তারা এসব বিষয়ে অবিশ্বাসী হয়ে গেল।(সূরায়ে মায়েদা-১০১-১০২)

হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত তিনি বলেন,
عن أبي هريرة رضي الله عنه قال : سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول : ما نهيتكم عنه ، فاجتنبوه ، وما أمرتكم به فأتوا منه ما استطعتم ، فإنما أهلك الذين من قبلكم كثرة مسائلهم واختلافهم على أنبيائهم . رواه البخاري ومسلم .


আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি যে,তিনি বলেন, আমি তোমাদেরকে যে সমস্ত জিনিষ থেকে নিষেধ করেছি, সে সমস্ত জিনিষ থেকে বিরত থাকো,এবং যে সমস্ত জিনিষের আদেশ করেছি, যথাসম্ভব সেগুলো পালন করার চেষ্টা করো। তোমাদের পূর্ববর্তীগণ তাদের অধিক প্রশ্ন এবং মতপার্থক্যর কারণেই ধংস হয়েছে।(বোখারী-মুসলিম)

https://www.ifatwa.info/1379 নং ফাতাওয়ায় বলা হয়েছে যে,
তালাকের ওয়াসওয়াসা আসলে মাথা নাড়ালে তালাক পতিত হবে না।
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢ : َ ( ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺗَﺠَﺎﻭَﺯَ ﻟِﻲ ﻋَﻦْ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﻣَﺎ ﻭَﺳْﻮَﺳَﺖْ ﺑِﻪِ ﺻُﺪُﻭﺭُﻫَﺎ ﻣَﺎ ﻟَﻢْ ﺗَﻌْﻤَﻞْ ﺃَﻭْ ﺗَﻜَﻠَّﻢ


রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা আমার খাতিরে আমার উম্মতের অন্তরে চলে আসা ওয়াসওয়াসা(শয়তানি প্ররোচনা) বিষয়ে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ/শাস্তি প্রদাণ করবেন না।যতক্ষণ না সে কথা বা কাজের মাধ্যমে সেটাকে বাস্তব রূপ দিচ্ছে। (সহীহ বোখারী-২৩৯১,সহীহ মুসলিম-১২৭)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন! 

(০১)
"তা****"এইভাবে অর্থাৎ স্টার দিয়ে লিখার ফলে পতিত হবেনা।
সম্পূর্ণ ভাবে লিখতে হবে।

(০২)
এতটুকু লেখাতে কোনো সমস্যা নেই।
শর্ত যুক্ত বা শর্ত বিহিন কোনো তালাকই পতিত হবেনা।

(০৩)
না,এতে তার উপর শর্ত পতিত হবেনা।

(০৪)
এই কথার মাধ্যমে মিথ্যা স্বীকারোক্তি হবেনা।
  
(০৫)
স্বামী যে বলেছে আর কখনোই বলবে না বা লিখবে না, এই কথার মাধ্যমে মিথ্যা স্বীকারোক্তি হবেনা।

(০৬)
এই কথার মাধ্যমে মিথ্যা স্বীকারোক্তি হবেনা।

প্রিয় দ্বীনি বোন,
এইভাবে স্বামীকে প্রশ্নবানে জর্জরিত করা নিজের জন্য মারাত্মক ক্ষতি হবে।
তাই তালাক সংক্রান্ত আলোচনা আর স্বামীর সাথে করবেননা।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...