আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
144 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (46 points)
আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ্ ,
উস্তাদজী,

১/ কোন মহিলা যদি বেপর্দা চলে তবে কি সে কুরআনে ছবক দিতে পারবে অন্যদের? অর্থাৎ মাদ্রাসায় যেমন ছাত্রীদের পড়া নতুন করে ছবক দেওয়া হয় এবং ছাত্রীরা সাথে পড়ে ।

সমস্যা হবে না তো কোন ?


২/ কোন মেয়েকে তার বোন স্বর্ণের দুল দিয়েছে অনেকদিন আগেই , তখন মেয়ে হালাল হারাম এভাবে মেনে চলতো না , বিশেষ করে এই সুক্ষ বিষয়ে ,
সে মেয়েটির বোন জামাই লোন নিয়ে ব্যবসা করে , এখন ও লোন শোধ হয়নি ,
এখন ঐ দুল বিক্রি করে যদি ঐ মেয়ে তার ঋণ পরিশোধ করে তবে কি তা আদায় করা হবে ?
কিয়ামতের দিন ঋণের জন্য আবার আল্লাহ্ কি হিসাব নিবেন ?
বা ঐ দুল এখন ব্যবহার করলে কি গোনাহ হবে ?


৩/ হায়েজ সংক্রান্ত :

কোন মেয়ের হায়েজ প্রতি মাসে ঠিক মতো হয় ( হিসেব অনুযায়ী) আবার কখনো হয়না ,
এক হায়েজ থেকে অন্য হায়েজ পর্যন্ত ঠিক মাঝে ১৫ দিন ১৫ রাত পাক থাকলে, এর পরে ব্লিডিং আসলে সেটা হায়েজ হিসেবে গণ্য হবে ।
তো, কোন মেয়ে যদি ১২ দিন ১২ রাত পাক থাকে এর পরদিন সকালে থেকে ব্লিডিং হয় তবে সেটা ইস্তেহাযা হিসেবে গণ্য হবে ।
এখন ঐ মেয়ে যদি ১৫ দিন ১৫ রাত আসতে আরও তিন দিন তিন রাত বাকি থাকায় ইস্তেহাযা ধরে বাকী তিন দিন তিন রাত নামাজ,রোযা , কুরআন তিলাওয়াত করে তবে কি গোনাহ হবে ?
এর পরেও ব্লিডিং চলতে থাকে একটানা ঐ তিন দিন তিন রাত বাদে ১০ দিন ১০ রাত ।

এখন ঐ মেয়ে ৮ দিন ৮ রাত পার হওয়ার পর সালাত আদায় এবং কুরআন পড়ে যেহেতু সে আর ব্লিডিং দেখেনি, স্বাভাবিক ভাবেই তার ৬ দিন ৬ রাত হায়েজ থাকে সেহেতু সে ওটা ভেবেই ৮ দিন ৮ রাত পার হওয়ার পর ৯ দিনের দিন সালাত আদায় করে । ১০ম দিনে যোহরের নামাজ এবং কুরআন পড়ে এবং এর পর আবার ব্লিডিং দেখে , এর পর আসরের সালাত থেকে ফজর পর্যন্ত সালাত কুরআন পড়া বাদ দেয় , ১০ দিন ১০ রাত হায়েজ হিসেবে ধরে পূর্ণ করার জন্য ।
এটা কি ঠিক আছে ?

এখানে কি তার গোনাহ হয়েছে ?
কি করা উচিত ছিলো ?

বিস্তারিত কুরআন ও হাদীসের আলোকে নিজের ভাষায় বুঝিয়ে দিন অনুগ্রহ করে ।

৪/ রমাদ্বানে সম্পূর্ণ কুরআন খতম দেওয়া একজন ত্বলিবুল ইলমের জন্য বেশি সওয়াব নাকি

কুরআন শিখতেছে এমন ত্বলিবার জন্য সহীহ ভাবে তেলাওয়াত শেখা বেশি গুরুত্বপূর্ণ , মাদ্রাসা সিস্টেমে ?


৫/ হিফয করে এমন বোন যদি ১০ /১২ হায়েজ থাকে তবে সে কুরআন ইয়াদ রাখার ভালো পদ্ধতি কি ?
দুই একটা শব্দ যদি মিলিয়ে ফেলে পড়া ফোনে দেখতে গিয়ে ভেঙে ভেঙে পড়তে গিয়ে তবে কি গোনাহ হবে ?


৬ / কোন মেয়ে যদি হায়েজ শুরু আগে ছোট বেলায় বোনের ব্যাগ থেকে টাকা নেয় না বলে এবং পরবর্তীতে বড় হওয়ার পর নিজে বুঝতে পারে এটা অন্যায় ছিলো তবে কি গোনাহ হবে?
এখন কিভাবে টাকা পরিশোধ করবে ?
বোনকে তো বলতে ও সে লজ্জা পায় ।


৭/ কোন ছেলে যদি তার মেয়ে ফ্রেন্ডদের গাছের ডাব খায় কাউকে না বলে এবং পরবর্তীতে তার ফ্রেন্ডকে বলে দেয় যে তোদের গাছের ডাব খেয়েছিলাম , তবে কি ঋণ শোধ হয়ে যাবে ? গাছের মালিক তো মেয়ের বাবা ।

1 Answer

0 votes
by (684,760 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
বেপর্দা চলার কারনে তার গুনাহ হবে।
তবে সে অন্যদের কুরআনে ছবক দিতে পারবে। 
তবে কেহ যদি তার এহেন চলাফেরার কারনে তার থেকে সবক না নেয়,তাহলে সেটি ভিন্ন কথা।

(০২)
ঐ দুল বিক্রি করে যদি ঐ মেয়ে তার বোন জামাইয়ের ঋণ পরিশোধ করে তবে তা আদায় করা হবে। 

উক্ত দুল ব্যবহার করা যাবে।  

(০৩)
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী হায়েযের সর্বোচ্চ সময়সীমা ১০দিন।

এ ১০দিনের ভিতর লাল,হলুদ,সবুজ,লাল মিশ্রিত কালো বা নিখুত কালো যে কালারের-ই পানি বের হোক না কেন তা হায়েয হিসেবেই গণ্য হবে।যতক্ষণ না নেপকিন সাদা নজরে আসবে। (বেহেশতী জেওর-১/২০৬)  

উম্মে আলক্বামাহ তথা মার্জনা (مَوْلاَةِ عَائِشَةَ) হইতে বর্ণিত,

عن أم علقمة أَنَّهَا قَالَتْ : " كَانَ النِّسَاءُ يَبْعَثْنَ إِلَى عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ بِالدُّرْجَةِ فِيهَا الْكُرْسُفُ فِيهِ الصُّفْرَةُ مِنْ دَمِ الْحَيْضَةِ يَسْأَلْنَهَا عَنْ الصَّلَاةِ فَتَقُولُ لَهُنَّ لَا تَعْجَلْنَ حَتَّى تَرَيْنَ الْقَصَّةَ الْبَيْضَاءَ تُرِيدُ بِذَلِكَ الطُّهْرَ مِنْ الْحَيْضَةِ "

তিনি বলেনঃ (ঋতুমতী) স্ত্রীলোকেরা আয়েশা (রাঃ)-এর নিকট ঝোলা বা ডিবা (دُرْجَة) পাঠাইতেন, যাহাতে নেকড়া বা তুলা (كُرْسُفْ) থাকিত। উহাতে পাণ্ডুবৰ্ণ ঋতুর রক্ত লাগিয়া থাকিত। তাহারা এই অবস্থায় নামায পড়া সম্পর্কে তাহার নিকট জানিতে চাহিতেন। তিনি [আয়েশা (রাঃ)] তাহাদিগকে বলিতেনঃ তাড়াহুড়া করিও না, যতক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ সাদা (বর্ণ) দেখিতে না পাও। তিনি ইহা দ্বারা ঋতু হইতে পবিত্রতা (طُهْر) বুঝাইতেন।(মুয়াত্তা মালিক-১২৭)

বিস্তারিত জানুনঃ
,
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী তুহর তথা দুই হায়েজের মাঝে পবিত্রতার সর্বনিম্ন সীমা পনেরো দিন।
এই পনেরো দিনের মধ্যে কোনো রক্ত আসলে সেটি হায়েজ নয়,বরং সেটি ইস্তেহাজা তথা অসুস্থতা।
এই সময়ে নামাজ রোযা আদায় করতে হবে।    

হজরত হান্নাদ [রহ] আম্মাজান আয়েশা [রা]-এর হাদিস বর্ণনা করেছেন যে, ফাতিমা বিনতে হুবাইশ নামক এক নারী একবার রাসুল [সা]-এর সমীপে এসে বললো, হে আল্লাহর রাসুল, আমি একজন ইস্তেহাযাগ্রস্ত মেয়ে। আমি তো পাক হই না। তাই আমি কি নামাজ পড়া ছেড়ে দেবো? রাসুল [সা] বললেন, না, কারণ এ রক্ত হায়েযের নয়; বরং এ হলো শিরা থেকে বেরিয়ে আসা রক্ত। সুতরাং যখন তোমার হায়েযের নির্ধারিত দিনগুলি আসে তখন সে দিনগুলি নামাজ ছেড়ে দেবে। আর হায়েযের দিন চলে গেলে তোমার রক্ত ধুয়ে নেবে এবং নামাজ আদায় করবে। [তিরমিজি, হাদিস-১২৫]
     
,
★ উভয় হায়েজের মাঝে কমপক্ষে পনেরো দিন পবিত্রতা ধরতে হবে।
হায়েজ শেষ হওয়ার পরদিন থেকে পনেরো দিন গণনা করা হবে।
এই পনেরো দিনের মধ্যে কোনো রক্ত আসলে সেটাকে ইস্তেহাজা তথা অসুস্থতা ধরতে হবে।
নামাজ রোযা আদায় করতে হবে।

পনেরো দিন থেকে বেশি পবিত্রতা হলে তো হায়েজের দিন গুলো চিনতে কোনো  সমস্যাই নেই।
,
★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে ঐ মেয়ে যদি ১৫ দিন ১৫ রাত আসতে আরও তিন দিন তিন রাত বাকি থাকায় ইস্তেহাযা ধরে বাকী তিন দিন তিন রাত নামাজ,রোযা , কুরআন তিলাওয়াত করে তবে তবে গুনাহ হবেনা।
বরং এটিই নিয়ম।

৯ দিনের মাথায় হায়েজ বন্ধ হয়েছে মনে করে তিনি যে সালাত আদায় করেছিলেন,সেই নামাজ পড়া মাফ হবে।
কেননা যেহেতু ১০ ম দিনেও হায়েজ এসেছিলো,তার মানে ৯ম দিনও হায়েজের অন্তর্ভুক্ত ছিলো। 
,
আরো জানুনঃ   

(০৪)
সহীহ ভাবে তেলাওয়াত শেখা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

(০৫)
এ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ

(০৬)
উক্ত টাকা তার বোনকে ফেরয় দিতেই হবে।
তাকে না জানিয়ে তার কাছে রেখে দিতে পারে।
তার মোবাইলে বিকাশ ইত্যাদির মাধ্যমে পাঠাতে পারে,  রিচার্জ করে দিতে পারে,তার ব্যাংক একাউন্টে জমা করিয়ে দিতে পারে।

(০৭)
সরাসরি সেই মেয়ের বাবা থেকে অথবা কাহারো মাধ্যমে অথবা সেই মেয়ের মাধ্যমে উক্ত মেয়ের বাবাকে জানিয়ে মাফ চেয়ে নিতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 91 views
0 votes
1 answer 81 views
0 votes
1 answer 128 views
...