আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
206 views
in পবিত্রতা (Purity) by (5 points)
edited by
আগের প্রশ্নেঃ https://ifatwa.info/37639/

আমি বলেছিলাম যেঃ আমি প্যান্টে বীর্য নির্গত করে ফেলেছি। এতে কিছু বীর্য আমার উরুতে লেগেছিল। আমি কোমড় থেকে পানি ঢেলে দিয়েছি। ২-৩ বার ঢেলেছি। হাত দিয়ে ঘষেছি। সব জায়গায় ঘষতে পারিনি। মানে, কোমড় থেকে পানি ঢেলেছি সব কাপড় খুলে। বীর্য ধোয়া পানি আমার কোমড় থেকে নীচ পর্যন্ত সমস্ত শরীরে লেগেছে।

এখানে একটু ভুল হয়েছে, কোমড় থেকে সমস্ত শরীরে লাগেনি৷ বরং, পানি প্রবাহ করেছি৷ কোথায় কোথায় গিয়েছে নিশ্চিত বুঝতে পারছি না।
১. এক্ষেত্রে কি করনীয় হুজুর?

২. আমি যেই বিছানায় ঘুমিয়েছি সেই বিছানার চাদর ও কাথা কি ধুতে হবে? কারণ, ধুয়ে আসার পর আমার শরীর সামান্য ভেজা ছিল হয়তো।

৩.সতর্কতার জন্য যদি পাপোশ ধুয়ে ফেলি তাহলে কি তা বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে?

৪. এই অবস্থায় এরপর আবার স্বপ্নদোষ হয়েছিল এখন আমি গোসল না করে কি আমি কাপড় ধুতে পারবো?

৫. প্যান্ট একটা মানুষের যে পরিমাণ বীর্য বের হয় সবটুকুই লেগেছিল। এরপর বাকী কাপড়গুলোর সাথে ডিটারজেন্ট পাউডার দিয়ে ধুয়ে দিয়েছে আরেকজন৷ এতে কি কাপড় পাক হয়েছে?

৬. কাপড় ৩ বার ধুতে হবে - এর মানে কি প্রত্যেক বার নতুন পানি নিতে হবে নাকি আগের পানিতে চুবালে হবে - এটা একটু বিস্তারিত বইলেন।

৭. আজকে প্রশ্রাব করার সময় লিংগের সামনে পিচ্ছিল পদার্থ দেখতে পেয়েছি৷ অনেকটাই ছিল। তবে, তা প্যান্টে লেগেছে কি না নিশ্চিত নয়। পরে প্রশ্রাব করে তা মুছে দিয়েছি। আমার প্যান্ট কি নাপাক হয়ে গেছে?

৮. প্যান্ট সামান্য ভেজা থাকলে কি সেটা ভেজা হিসেবে শরিয়তে বলা হয়?আমার জিন্সের প্যান্ট পুরোপুরি না শুকাতেই আমি পড়ে ফেলেছি।  প্যান্টে সামান্য ঠান্ডাভাব রয়ে গেছে ভেজার কারণে। প্যান্টেই ৭ নং অবস্থার মত অবস্থা হয়েছে। এখন এই প্যান্টের সামনের পকেটে মোবাইল রাখলে কি নাপাক হয়ে যাবে? আমি আন্ডারওয়ার পড়িনি। সরাসরি প্যান্ট পড়েছি। কাারন এমনত হতে পারে যে প্যান্টের পকেটে এসব পিচ্ছিল পদার্থ লেগে থাকবে।

৯. আমি প্রচুর ওয়াসওয়াসার রুগী হয়ে গেছি।পাত্তা না দেওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু পারি না। এই রোগ আমাকে ধবংস করে দিচ্ছে।

১০. 'আল্লাহর কসম আমি আগামী ৩ দিন ওয়াসওয়াসা অনুযায়ী কাজ করবো না।' এই কসম কেটেছিলাম। তখন আমি বাইকের পেছনে বসা ছিলাম আর মনে মনে চলে আসলো আমি যদি কসম ভেঙে ফেলি তাহলে কাফফারা আদায় না করলে আমি বাইক চালালে এক্সিডেন্ট করে ফেলবো। - এই অংশটুকু জিহবা নাড়িয়ে বলেছি নাকি এমনি মনে মনে বলেছি তা খেয়াল নাই। আমার অতিরিক্ত ওয়াসওয়াসার কারণে মনে মনে নাকি জিহবা নাড়িয়ে খেয়াল থাকে না। এরপর আমি নিয়ত করেছি উমুক টাকা থেকে কাফফারার টাকা দিয়ে দিবো কারণ আমি তো কসম রাখতে পারবো না। উমুক টাকা থেকে কাফফারা আদায় করবো - এটা মনে হয় মনে মনে নিয়ত করেছি।
১০. এসব ঘটনার সময় আমি রাজনৈতিকজনিত একটি হারাম কাজের সাথে লিপ্ত ছিলাম। আমাার শরীরও নাপাক ছিল মনে হয়। কারণ, উপরের প্রশ্ন গুলো পড়লেই বুঝবেন।

 এখন কি কাফফারা আদায় করতে হবে? নাকি হারাম কাজে লিপ্ত থাকার কারণে কাফফারা আদায় করলেও কবুল হবে না?
১০.১ঃঃ কাফফারা কি সেই টাকা থেকেই দিতে হবে?

১০.২ঃঃ কাফফারা কি ৩ দিন পর দিবো নাকি এখনই দিতে হবে?

১০.৩ঃঃ কাফফারা যদি আরো অনেক পড়ে দেই তাহলে কি হবে না?

১০.৪ঃঃ শরীর নাপাক থাকলে কি কাফফারা আদায় হয়?

আমার ভয় হচ্ছে আমার কি কাফফারার টাকা না দিয়ে বাইক চালানো উচিত হবে?

১১. আমার মনে এত বেশী প্রশ্ন মনে আসে। কিভাবে বেচে থাকবো আমি?

1 Answer

0 votes
by (572,970 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَلِيِّ بْنِ الْعَلَاءِ ، ثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ شَوْكَرِ بْنِ رَافِعٍ الطُّوسِيُّ ، نَا أَبُو إِسْحَاقَ الضَّرِيرُ إِبْرَاهِيمُ بْنُ زَكَرِيَّا ، نَا ثَابِتُ بْنُ حَمَّادٍ ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ زَيْدٍ ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ ، عَنْ عَمَّارِ بْنِ يَاسِرٍ ، قَالَ : أَتَى عَلَيَّ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - وَأَنَا عَلَى بِئْرٍ أَدْلُو مَاءً فِي رِكْوَةٍ لِي ، فَقَالَ : يَا عَمَّارُ ، مَا تَصْنَعُ ؟ قُلْتُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، بِأَبِي وَأُمِّي ، أَغْسِلُ ثَوْبِي مِنْ نُخَامَةٍ أَصَابَتْهُ . فَقَالَ " يَا عَمَّارُ ، إِنَّمَا يُغْسَلُ الثَّوْبُ مِنْ خَمْسٍ : مِنَ الْغَائِطِ ، وَالْبَوْلِ ، وَالْقَيْءِ ، وَالدَّمِ ، وَالْمَنِيِّ ، يَا عَمَّارُ ، مَا نُخَامَتُكَ وَدُمُوعُ عَيْنَيْكَ وَالْمَاءُ الَّذِي فِي رِكْوَتِكَ إِلَّا سَوَاءٌ "

আহমাদ ইবনে আলী ইবনুল 'আলা (রহঃ) ... আম্মার ইবনে ইয়াসির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট এলেন, তখন আমি একটি কূপ থেকে বালতি দিয়ে পানি তুলে আমার একটি পানির পাত্রে ভর্তি করছিলাম। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, হে আম্মার! তুমি কি করছো? আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কোরবান হোক। আমি আমার পরিধেয় বস্ত্রে লেগে যাওয়া শ্লেষ্মা পরিষ্কার করছি। তিনি বলেনঃ হে আম্মার! পাঁচটি জিনিস থেকে কাপড় ধৌত করা প্রয়োজনঃ বিষ্ঠা, পেশাব, বমি, রক্ত ও বীর্য। হে আম্মার! তোমার নাকের শ্লেষ্মা, তোমার উভয় চোখের অশ্রু এবং তোমার এই পানির পাত্রের পানি একই সমান (পাক-নাপাকীর হুকুমের ক্ষেত্রে)।
(সুনানে দারা কুতনি ৪৫০)

হাদীস শরীফে পেশাব থেকে ভালোভাবে পবিত্রতা অর্জনের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছেঃ
  
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: مَرَّ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِقَبْرَيْنِ، فَقَالَ: ” إِنَّهُمَا لَيُعَذَّبَانِ، وَمَا يُعَذَّبَانِ فِي كَبِيرٍ، أَمَّا أَحَدُهُمَا: فَكَانَ لَا يَسْتَنْزِهُ مِنَ البَوْلِ – قَالَ وَكِيعٌ: مِنْ بَوْلِهِ – وَأَمَّا الْآخَرُ: فَكَانَ يَمْشِي بِالنَّمِيمَةِ “.

হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসূল সাঃ দু’টি কবরের পাশ দিয়ে অতিক্রম হচ্ছিলেন। বললেন, এ দু’টি কবরে আযাব হচ্ছে। কোন বড় কারণে আজাব হচ্ছে না। একজনের কবরে আজাব হচ্ছে সে পেশাব থেকে ভাল করে ইস্তিঞ্জা করতো না। আরেকজন চোগোলখুরী করতো। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৯৮০, বুখারী, হাদীস নং-১৩৬১}

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই! 
বীর্য যেহেতু নাপাক,তাই এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে কোনো সমস্যা নেই।
আপনি পরবর্তীতে ফরজ গোসল আদায় করে নিবেন। 

(০২)
সেই বিছানার চাদর ও কাথা পাক করতে হবেনা।

(০৩)
বাড়াবাড়ি হবে।

(০৪)
হ্যাঁ কাপড় ধৌত করবেন।

তবে পাক কাপড় ধৌত করলে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
যাতে আপনার শরীরের/কাপড়ের নাপাক স্থানে ভেজা হাত লেগে সেই হাত আবার যেই পাক কাপড় ধোয়া হচ্ছে,সেটিতে না লাগে।

(০৫)
এখানে নাপাক সেই প্যান্টের সাথে পাক ভেজা কাপড় লাগলে বা নাপাক কাপড়ের পানি সেই পাক কাপড়ে লাগলে সেই পাক কাপড় গুলো নাপাক হয়ে যাবে।
নতুবা কোনো সমস্যা নেই।

(০৬)
প্রত্যেকবার নতুন পানি নিতে হবে।

(০৭)
আপনার প্যান্টে সেটি লেগে থাকলে প্যান্ট নাপাক হয়ে যাবে।

এখন কথা হলো আপনি যদি নিশ্চিত না হোন যে প্যান্টে লেগেছে কিনা?
তাহলে  পিচ্ছিল পদার্থ সামান্য হলে আপনার প্যান্টে সেটি লাগেনি বলে ধরবেন।
পিচ্ছিল পদার্থ বেশি হলে আপনার প্যান্টে লেগেছে বলে ধরবেন।

(০৮)
ধুয়ে ফেলার পর উক্ত প্যান্ট পাক হয়ে গেছে।
এখন সামান্য ভেজা থাকলেও কোনো সমস্যা নেই।
আপনার মোবাইল পাক।

(০৯)
ওয়াসওয়াসা থেকে বাঁচার আমল গুলো মেনে চলুন।

বিস্তারিত  জানুনঃ 

(১০)
এক্ষেত্রে এই তিনদিনের মধ্যে কসম ভেঙ্গে ফেলে ওয়াসওয়াসা মোতাবেক কোনো কাজ করলেই কেবল কাফফারা দিতে হবে। 
নতুবা নয়।
কাফফারা হালাল যেকোনো টাকা থেকে দিতে পারবেন।

কসম ফেঙ্গে ফেললে পরেও কাফফারা দিতে পারবেন।

শরীর নাপাক থাকলেও কাফফারা দিলে তাহা আদায় হবে।

(১১)
ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকার আমল গুলি করুন।

বিস্তারিত  জানুনঃ 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...