বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-
(০১)
নেক সন্তান লাভের জন্য মা হালাল রিযিক ভক্ষন করবে,হারাম, গুনাহের কাজ থেকে বেঁচে থাকবে, গান বাজনা থেকে বেঁচে থাকবে,বেশি বেশি যিকির,কুরআন তিলাওয়াত করতে হবে,এবং নিম্নোক্ত দোয়া করবেঃ-
رَبِّ هَبْ لِي مِن لَّدُنْكَ ذُرِّيَّةً طَيِّبَةً إِنَّكَ سَمِيعُ الدُّعَاء
হে, আমার পালনকর্তা! আপনার নিকট থেকে আমাকে পুত-পবিত্র সন্তান দান করুন। নিশ্চয়ই আপনি প্রার্থনা শ্রবণকারী। (সূরা আল-ইমরান ৩৮)
رَبِّ هَبْ لِي مِنَ الصَّالِحِينَ
‘হে আমার পরওয়ারদেগার! আমাকে এক সৎপুত্র দান করুন।’ (সূরা সাফফাত ১০০)
رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا
‘হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের জীবনসঙ্গীর পক্ষ থেকে এবং আমাদের সন্তানের পক্ষ থেকে আমাদের জন্যে চোখের শীতলতা দান দান করুন এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্যে আদর্শস্বরূপ দান করুন।’ (সূরা ফুরকান ৭৪)
(০২)
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী নারীদের জন্য গায়রে মাহরাম পুরুষদের সামনে মাথা চেহারা,হাত সহ পুরো শরীর ঢেকে রাখা ফরজ।
নিজ স্বামী ভাই,ইত্যাদি, অন্যান্য মহিলাদের সামনে মাথা ঢেকে রাখা জরুরী নয়।
তাদের সামনে মাথা না ঢাকলে কোনো গুনাহ নেই।
আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١]
ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩০-৩১}
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
★উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. বলেন, আমরা যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে ইহরাম অবস্থায় ছিলাম তখন আমাদের পাশ দিয়ে অনেক কাফেলা অতিক্রম করত। তারা যখন আমাদের সামনাসামনি চলে আসত তখন আমাদের সকলেই চেহারার ওপর ওড়না টেনে দিতাম। তারা চলে গেলে আবার তা সরিয়ে নিতাম।-মুসনাদে আহমাদ ৬/৩০; ইবনে মাজাহ,
হাদীস: ২৯৩৫
আরো জানুনঃ
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
সবসময় মেয়েদের মাথার কাপড় দিয়ে রাখা আল্লাহর নির্দেশ নয়।
শুধুমাত্র গায়রে মাহরাম পুরুষদের সামনে মাথায় কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে।
সুতরাং মহিলাদের মাথা ঢেকে রাখা শুধু গায়রে মাহরাম পুরুষের উপস্থিতিতে জরুরী।
মাহরাম পুরুষ তথা নিজ স্বামী ভাই,ইত্যাদি, অন্যান্য মহিলাদের সামনে মাথা ঢেকে রাখা জরুরী নয়।
এতে কোনো গুনাহ নেই।
(০৩)
এই ছুরতেও জায়েজ হবেনা।
কেননা রাসুলুল্লাহ সাঃ এর স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
(০৪)
মহান আল্লাহ তায়াল ইরশাদ করেনঃ
يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا قُوا أَنفُسَكُمْ وَأَهْلِيكُمْ نَارًا وَقُودُهَا النَّاسُ وَالْحِجَارَةُ عَلَيْهَا مَلَائِكَةٌ غِلَاظٌ شِدَادٌ لَا يَعْصُونَ اللَّهَ مَا أَمَرَهُمْ وَيَفْعَلُونَ مَا يُؤْمَرُونَ.
হে মুমিনগণ! তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবারবর্গকে রক্ষা কর সেই আগুন থেকে যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর। তাতে নিয়োজিত আছে কঠোরস্বভাব, কঠিনহৃদয় ফেরেশতাগণ। যারা আল্লাহর কোনো হুকুমে তাঁর অবাধ্যতা করে না এবং সেটাই করে যার নির্দেশ তাদেরকে দেওয়া হয়। -সূরা তাহরীম (৬৬) : ৬
পিতা-মাতার কর্তব্য হল, সন্তানকে আল্লাহর ফরমাবরদার বান্দা হিসাবে গড়ে তোলা এবং শয়তানের সবধরনের গোলামি থেকে দূরে রাখা।
সুতরাং সন্তানের জন্য দোয়া করতে হবে।
সুন্দর নাম রাখতে হবে।
প্রয়োজনীয় ইসলামী শিক্ষা ছোটকালেই দিতে হবে।
ফরজ ইলম পরিমান তাকে শিক্ষা দিতেই হবে।
জন্মের পর থেকে নবজাতকের কানে এমন সব শব্দবাক্য বলতে থাকা, যা শিশুর হৃদয়ে আল্লাহ ও রাসূলের মহব্বত পয়দা করবে এবং দ্বীন-ধর্মের ভালবাসা সৃষ্টি করবে।
৭ বছর বয়স থেকে নামাজের পাবন্দ বানাতে হবে।
১০ বছর বয়সে প্রয়োজনে নামাজের জন্য প্রহার করতে হবে।
শিশু যখন কথা বলতে শুরু করে, তখন তাকে সর্বপ্রথম ‘আল্লাহ’ ও ‘মুহাম্মদ’; এরপর ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ ও ‘মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ ইত্যাদি শিক্ষা দেওয়া। কোরআন শিক্ষা দেওয়া। দ্বিনের অতিপ্রয়োজনীয় বিষয়াদি শিক্ষা দেওয়া। মাঝেমধ্যে তাকে নবী-সাহাবা ও মহামনীষীদের উপদেশমূলক ঘটনা শোনানো। শিশুর কোনো সুন্দর আচরণ বা প্রশংসনীয় কাজ চোখে পড়লে, তার প্রশংসা করা, পুরস্কার দেওয়া। অমার্জিত পোশাক থেকে বিমুখতা সৃষ্টি করা। বেশি দামি পোশাকে অভ্যস্ত না করা, যাতে সে অহংকারের ছোবল থেকে রক্ষা পায়। তাদের সব ইচ্ছা পূরণ না করা। পাঠশালায় যাওয়ার ব্যাপারে কখনো শিথিলতা প্রদর্শন না করা। সন্তানের সামনে উচ্চৈঃস্বরে কথা না বলা। যথাসম্ভব তাকে চোখে চোখে রাখা, যাতে কোনো খারাপ সঙ্গ গ্রহণ না করে বসে।
(০৫)
খাবারের আইটেমে দুইয়ের অধিক পদ রাখা সুন্নত পরিপন্থি নয়।
আমাদের সমাজে প্রচলিত জামাই আদরের যে রেওয়াজ আছে, সেগুলোর অনেকটাই কু প্রথার শামিল,মেয়ের বাবার উপর জুলুমের নামান্তর।
মেয়ের বাবা যদি সন্তুষ্টি চিত্তে এসব খাবার না খাওয়ায়,তাহলে মেয়ের বাবার উপর জুলুম করা হবে।
এখানে স্বামী জালেম হবে।
এই প্রচলিত নিয়মে না হলে কেউ যদি মন খারাপ করে এটা নিয়ে এতে তার গুনাহ হবে।