আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
269 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (58 points)
১. বসা অবস্থায় লুঙ্গি অনেক বাড়তি থাকে তখন যদি বাড়তি অংশ টা দিয়ে পুরো পা ঢেকে বসি(শীতের কারণে বা মশার কারণে, তাহলে কি টাখনুর তলে জামা পড়ার গুনাহ হবে কিনা?

২. ঘুমানো অবস্থায় কাথা গায়ের উপর থাকে তখন যদি ভিতর থেকে লুঙ্গি হাঁটুর উপর উঠে যায় তাহলে কি ফরজ সতর খুলে যাওয়ার গুনাহ হবে নাকি কাথা দিয়ে ঢেকে থাকার কারণে গুনাহ হবে না?

৩. অজু ছাড়া কি হাদীসের আরবি ধরা, তাকওয়ার দিক দিয়ে কোনটা উত্তম হবে?
৪. কিছু গুনাহ এর তালিকা যা একজন দ্বীন মেনে চলতে গেলে হয়ে যায় বা আসক্ত থাকে। এমন কিছু গুনাহ এর তালিকা বা নাম বললে ভালো হতো।

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
শরীয়তের বিধান হলো অহংকার বশত টাখনুর উপরে কাপড় পরিধান করা  মারাত্মক কবীরা গুনাহ। 
তবে যদি অহংকার না থাকে,তাহলে এটা নাজায়েজ। 
কোনো ক্রমেই এটি জায়েজ নয়।

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি অহংকারবশত মাটিতে কাপড় টেনে টেনে চলে আল্লাহ তাআলা কেয়ামতের দিন তার দিকে দৃষ্টিপাত করবেন না (রাগান্বিত থাকবেন)।-বুখারী, হাদীস : ৫৭৯১;  মুসলিম, হাদীস : ২০৮৫/৪৪

অন্য হাদীসে ইরশাদ হয়েছে, 

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَا أَسْفَلَ مِنَ الكَعْبَيْنِ مِنَ الإِزَارِ فَفِي النَّارِ»

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, টাখনুর নিচের যে অংশ পায়জামা বা লুঙ্গি দ্বারা ঢাকা থাকে তা জাহান্নামে যাবে। {বুখারী, হাদীস নং-৫৭৮৭, ৫৪৫০}

জাহেলি যুগের অহংকারী লোকেরা মাটিতে কাপড় টেনে টেনে চলত। 
অহংকারবশত হয়ে থাকলে এটা মারাত্মক কবীরা গুনাহ আর শুধু অভ্যাস বা রেওয়াজের কারণে হলেও নাজায়েয। অতএব সর্বাবস্থায় তা পরিত্যাজ্য।
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
এই নিষেধাজ্ঞা উপর থেকে কোনো কাপড় পরিধান এর ক্ষেত্রে।
যদি দাড়ানো অবস্থায় টাখনুর উপর লুঙ্গি /পায়জামা/জামা না গিয়ে যদি শুধু বসা অবস্থায় পায়জামা/লুঙ্গি টাখনুর উপর চলে আসে,তাহলে এতে কোনো সমস্যা নেই।

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে কোনো গুনাহ হবেনা।    
এটি জায়েজ আছে।

আরো জানুনঃ

(০২)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে কোনো গুনাহ হবেনা।

(০৩)
তাকওয়ার দিক থেকে অযু সহ হাদীসের ইবারত স্পর্শ করা উত্তম।
তবে অযু ছাড়া হাদীসের ইবারত স্পর্শ করা নাজায়েজ নয়।

(০৪)
বড় বড় গুনাহঃ
(১) আল্লাহর সাথে শিরক করা। এটি সবচেয়ে জঘন্যতম কবীরা গুনাহ। উদাহারন স্বরূপ- চন্দ্র-সূর্য, পাথর, বৃক্ষ, মানুষের তৈরী মূর্তী বা দেব-দেবী, ফেরেশতা, নবী ওলী, গ্রহ-নক্ষত্র, জ্বিন ইত্যাদিকে আল্লাহর সমতুল্য মনে করা ও এদের উপাসনা করা। (২) ইচ্ছাকৃতভাবে কাউকে হত্যা করা বা খুন করা। (৩) জাদু-টোনা করা বা এতে লিপ্ত হওয়া। জাদু-টোনায় বিশ্বাস স্থাপন করা। (৪) নামাযে অবহেলা করা বা নামাযের ব্যাপারে উদাসীন থাকা। সময় মতো নামায আদায় না করে নামাযের সময় চলে যাওয়ার পর তা আদায় করা। নামায পরিত্যাগ করা। (৫) সামর্থ্যবান হওয়া সত্ত্বেও যাকাত আদায় না করা। (৬) বিনা ওযরে রমজান মাসের রোজা না রাখা বা পরিত্যাগ করা। (৭) সামর্থ্যবান হওয়া সত্ত্বেও হজ্জ না করা। (৮) পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া বা তাদেরকে কোনভাবে কষ্ট দেয়া। তাদেরকে কটু কথা বলা, অভিসম্পাত করা। তাদের প্রতি সদয় আচরন না করা। (৯)আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করা। (১০) যিনা ব্যভিচার করা। নিজের স্ত্রী/স্বামী ব্যতীত অন্য কোন নারী/পুরুষের সাথে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন করা।
(১১)সুদ দেয়া বা সুদ নেয়া, সুদ লেখা বা তাতে সাক্ষী থাকা। (১২)এতীমের সম্পদ আত্মসাৎ করা। (১৩) সমকামিতার সম্পর্ক স্থাপন করা। (১৪) আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল (সাঃ) –এর প্রতি মিথ্যাচার করা। (১৫) জিহাদের ময়দান থেকে পলায়ন করা। (১৬)শাসক কর্তৃক জনগনকে প্রতারণা করা। জনগনের প্রতি জুলুম করা। (১৭) অহংকার করা, দাম্ভিকতা প্রকাশ করা, ঔদ্ধতা দেখানো। (১৮) মদ পান করা বা নেশা জাতীয় কিছু খাওয়া বা পান করা। মদ বা নেশা জাতীয় কিছু তৈরীতে সংশ্লিষ্ট হওয়া। (১৯)জুয়া-হাউজি ইত্যাদিতে লিপ্ত হওয়া। (২০) কারো বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া।
(২১)সতী-সাধ্বী মু‘মিন নারীর প্রতি অপবাদ আরোপ করা (২২)অন্যের মাল বা সম্পদ চুরি করা। (২৩)ডাকাতি, রাহাজানি, অপহরণে লিপ্ত হওয়া। (২৪) গনীমতের মাল আত্মসাৎ করা। (২৫)মিথ্যা কথা বলা (২৬)মিথ্যা শপথ করা বা মিথ্যা কসম খেয়ে পন্য বিক্রী করা। ভেজাল পণ্য বিক্রয় করা। আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কারো নামে শপথ করা (২৭) কারো প্রতি জুলুম-অত্যাচার করা বা জুলুমে সহায়তা করা। (২৮)অবৈধ পথে অর্থ উপার্জন করা। ঘুষ দেয়া বা নেয়া (২৯)হারাম খাদ্য গ্রহন করা। (৩০) আত্মহত্যা করা।
(৩১)চাঁদাবাজি করা বা অন্যায়ভাবে জোরপূর্বক কিছু আদায় করা। (৩২)বিচারক কর্তৃক অন্যায়ভাবে বিচার করা। বিচারকার্যে সত্য ও ন্যায়ের পথে না থাকা। (৩৩)পুরুষের জন্য মহিলার আকৃতি গ্রহণ করা বা মহিলার পোষাক পরিধান করা এবং মহিলার জন্য পুরুষের আকৃতি গ্রহণ করা বা পুরুষের পোষাক পরিধান করা। (৩৪) শরীয়ত অনুযায়ী পর্দা মেনে না চলা। (৩৫) পরিবারবর্গের যে কোন অশ্লীল কাজকে প্রশয় দেয়া। (৩৬)তালাক প্রাপ্ত নারীকে হিলা করা। (৩৭) প্রস্রাবের ছিটা থেকে পবিত্র না হওয়া। (৩৮) রিয়া বা লোক দেখানো এবাদত করা। (৩৯) আমানতের খিয়ানত করা। (৪০)দান/উপকার করে খোটা দান করা।
(৪১)তকদীর অবিশ্বাস করা বা অস্বীকার করা। (৪২)প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়া (৪৩)মানুষের গোপন কথা চুপিসারে শ্রবন করা। (৪৪)চুগলখোরি করা (ঝগড়া লাগানোর উদ্দেশ্যে একজনের কথা আরেকজনের নিকট লাগোনো) (৪৫) কোন মুমিনকে অভিসম্পাত করা। (৪৬) ওয়াদা করে তা ভঙ্গ করা। (৪৭)গণকের কাছে ধর্না দেয়া বা গণকের কাছে অদৃশ্যের খবর জানতে চাওয়া বা তা বিশ্বাস করা। (৪৮)অদৃশ্যের খবর জানার দাবী করা (৪৯)রাসূল (সা:)এর নামে মিথ্যা হাদীস বর্ণনা করা (৫০)মিথ্যা স্বপ্ন বর্ণনা করা।
(৫১)মানুষ বা যে কোন প্রানীর ছবি আঁকা। (৫২) স্বামী-স্ত্রীর পরস্পরের অধিকার খর্ব করা। স্বামীর শরীয়ত সম্মত আদেশে স্ত্রীর অবাধ্য হওয়া। (৫৩)মানুষের বংশ মর্যাদায় আঘাত হানা। (৫৪)মৃতের উদ্দেশ্যে উচ্চস্বরে ক্রন্দন করা। (৫৫)ঘরের দেয়ালে অথবা কাপড়ে বা ক্যালেন্ডারে জীব-জন্তুর ছবি রাখা। (৫৬)মুসলিম সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা। (৫৭)কোন মুসলিমকে গালি দেয়া, কষ্ট দেয়া অথবা তার সাথে ঝগড়া বা লড়াইয়ে লিপ্ত হওয়া। (৫৮) দাস-দাসী, দুর্বল শ্রেনীর মানুষ এবং জীবজন্তুর প্রতি নিষ্ঠুর আচরন করা। (৫৯) অহংকারবশত টাখনুর নীচে পোষাক পরিধান করা। (৬০)আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে পশু জবেহ করা।
(৬১)মাপে বা ওজনে কম দেয়া। (৬২) কোন অপরাধীকে আশ্রয় দান করা। (৬৩)ঝগড়া-বিবাদে অশ্লীল ভাষা প্রয়োগ করা (৬৪)গীবত তথা কারো অসাক্ষাতে তাঁর দোষ চর্চা করা। (৬৫)পুরুষের রেশমি পোশাক এবং স্বর্ণ ও রৌপ্য পরিধান করা। (৬৬) মনিবের কাছ থেকে গোলামের পলায়ন। (৬৭)জমিনের সীমানা পরিবর্তন করা বা পরের জমি জবর দখল করা। (৬৮) পিতা ব্যতীত অন্য কাউকে পিতৃরূপে স্বীকৃতি দেয়া। (৬৯)তর্ক-বিতর্কের মাধ্যমে সত্যের বিরোধীতা করা। (৭০)পথিককে নিজের কাছে অতিরিক্ত পানি থাকার পরেও না দেয়া।
(৭১) সৌন্দর্যের উদ্দেশ্যে মুখ মণ্ডলের চুল তুলে ফেলা বা ভ্রু চিকন করা। পরচুলা ব্যবহার করা। সৌন্দর্যের উদ্দেশ্যে দাঁত চিকন করা। (৭২) চুল বা দাড়িতে মেহেদী ব্যাতীত কালো বা অন্য কোন রঙ লাগানো। (৭৩)বিপরীত লিঙ্গের প্রতি কামনার দৃষ্টিতে তাকানো। (৭৪) আল্লাহর আযাব-গযব সম্পর্কে উদাসীন থাকা। (৭৫) আল্লহর রহমত হতে নিরাশ হওয়া। (৭৬) বিনা ওযরে জুম্মা ও জামায়াত ত্যাগ করা। (৭৭) কোন প্রকার ক্ষতিকর অসিয়ত করা। (৭৮) ধোকাবাজি বা প্রতারনা করা। বিশ্বাস ঘাতকতা করা। (৭৯) কোন মুসলমানের গোপনীয় বিষয় অন্যের কাছে প্রকাশ করা। (৮০)সাহাবী (রাঃ)-দের কাউকে গালি দেয়া।
(৮১)কবরকে মসজিদ হিসেবে গ্রহণ করা। কবরে বা মাজারে সিজদা করা। (৮২)মুসলিম শাসকের সাথে কৃত বাইআত বা আনুগত্যের শপথ ভঙ্গ করা। (৮৩)স্ত্রীর পায়ু পথে যৌন ক্রিয়া করা। (৮৪) ঋতুকালীন স্ত্রী সহবাস করা। (৮৪)অস্ত্র দ্বারা ভয় দেখানো বা তা দ্বারা কাউকে ইঙ্গিত করা। (৮৫)নামাযরত অবস্থায় মুসল্লির সামনে দিয়ে গমন করা। (৮৬) ভ্রান্ত মতবাদ জাহেলী রীতিনীতি অথবা বিদআতের প্রতি আহবান করা। (৮৭) মহিলাদের সুগন্ধি লাগিয়ে বাহিরে বের হওয়া। (৮৮) মুহরিম ছাড়া মহিলাদের সফর। (৮৯)বিনা প্রয়োজনে তালাক চাওয়া। (৯০) শ্রমিকের পাওনা বা মজুরী পরিশোধ না করা। মজুরী কম দেয়া।
(৯১)বিনা প্রয়োজনে ভিক্ষাবৃত্তি করা। (৯২)ঋণ পরিশোধ না করা। (৯৩)গান-বাজনা শ্রবন করা। (৯৪)স্বামী-স্ত্রীর মিলনের কথা জনসম্মুখে বা অন্যের কাছে প্রকাশ করা। (৯৫)অনুমতী ব্যতীত অন্যের ঘরে প্রবেশ করা। (৯৬) মহিলাদের পাতলা কাপড় পরিধান করা। (৯৭)স্বর্ণ বা রৌপ্যের তৈরি পাত্র ব্যবহার করা। (৯৮)স্ত্রী কর্তৃক স্বামীর অবদান অস্বীকার করা। (৯৯) আল্লাহর উপর ভরসা না করে তাবিজ-কবজ, রিং, সুতা ইত্যাদির উপর ভরসা করা। (১০০)দুনিয়া কামানোর উদ্দেশ্যে দীনী ইলম অর্জন করা। কোন ইলম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে জানা সত্যেও তা গোপন করা।
(সংগৃহীত)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 161 views
...