আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
451 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (18 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।
প্যান্টের ব্যাপারে সাধারণভাবে যা বলা হয় যে, প্যান্ট ছেলেদের পোশাক মেয়েদের না। সুতরাং মেয়েরা প্যান্ট পড়তে পারবে না।

কিন্তু বর্তমানে লেডিজ প্যান্ট নামে যে প্যান্টগুলো তৈরি করা হয়, সেগুলো স্পেশালি মেয়েদের জন্যই তৈরি। সেগুলোর শেইপ থাকে আলাদা, ছেলেরা সেগুলো পড়েন না।  ছেলেদের প্যান্ট সাধারণত একটু ঢোলা হয়ে থাকে এবং শেইপ আলাদা হয়ে থাকে।
ছেলে এবং মেয়েদের প্যান্ট পাশাপাশি রাখলে পার্থক্য স্পষ্ট ধরা পড়ে। মেয়েরা অহরহ এসব লেডিজ প্যান্ট পড়ে, এতে তাদেরকে  দেখতে ছেলেদের মত লাগে না।
যেমন জুতা ছেলে এবং মেয়ে দুজনই পরে, কিন্তু তাদের শেইপ এবং ডিজাইন আলাদা থাকে। ফতুয়া ছেলে-মেয়ে দুজনই পরে, কিন্তু সেগুলোর ডিজাইন আলাদা থাকে; বোঝা যায় কোনটা ছেলে এবং কোনটা মেয়ের। এখন এটা খুব বেশি পরিমাণে ব্যবহৃত হচ্ছে, এবং প্যান্ট পরার সাথে ছেলেদের সাথে সাদৃশ্য হয় না। [কখনো কখনো যদি হয়ও, কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিশেষত কামিজ, বা গাউনের সাথে পরলে কোন ধরনের সাদৃশ্য বোঝাও কঠিন]
তবু যদি প্যান্টকে মেয়েদের জন্য হারাম ঘোষণা করা হয়, তাহলে অনুগ্রহ করে এর মানদন্ড জানতে চাই। যেমন - জিন্স, গ্যাবার্ডিন এসব কাপড় কি শুধু ছেলেদের জন্যই খাস; মেয়েরা কখনো ব্যবহার করতে পারবে না? যদি না পারে, তাহলে এই কাপড় মেয়েদের জন্য নিষিদ্ধ করার ভিত্তি সম্পর্কেও জানতে চাই, যেহেতু এই কাপড়গুলো নবী-যুগে ছিল না। এছাড়া, জিন্সের মত কোন কাপড় আছে যেটা মেয়েরা প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারবে সেটাও জানতে চাই।
(এতো ভালো করে জিজ্ঞাসা করার পিছনে কারণ হচ্ছে, অনেক জায়গা থেকেই এ সম্পর্কে হারাম ফতওয়া পাচ্ছি যা বুঝতে সমস্যা হচ্ছে, যেহেতু এখানে পাশ্চাত্য সাদৃশ্য বা পুরুষের সাথে সাদৃশ্য পাওয়া যাচ্ছে না )

1 Answer

0 votes
by (566,280 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


এতে কোনো সন্দেহ নেই যে কোট-স্যুট ও প্যান্ট-শার্ট পশ্চিমাদের সংস্কৃতি থেকে আমাদের সংস্কৃতিতে ঢুকে পড়েছে। তাই কাফিরদের সাদৃশ্যপূর্ণ হওয়ায় মৌলিকভাবে এগুলো নিষিদ্ধ হওয়ারই কথা।

 এ জন্য প্রথম দিকে ইসলামিক স্কলাররা এগুলো পরিধানকে মাকরুহ বলেছেন। যেমন—মুফতি কেফায়েত উল্লাহ (রহ.) লিখেছেন : ‘কোট-স্যুট এখনো ব্যাপকভাবে প্রচলিত হয়নি, বরং এগুলো খ্রিস্টান ও তাদের অনুসারীদের পোশাক। তাই এগুলোর মধ্যে সাদৃশ্যপূর্ণ হওয়ার নিষেধাজ্ঞা বিদ্যমান।’ (কেফায়াতুল মুফতি : ৯/১৫৯)

কিন্তু আজকাল মুসলমানদের মধ্যে কোট-স্যুট, প্যান্ট-শার্ট পরিধান করা ব্যাপকভাবে প্রচলিত। অধিক প্রচলনের কারণে এগুলোকে কাফিরদের ঐতিহ্যবাহী ও জাতিগত নিদর্শনমূলক পোশাক বলা কঠিন। তাই মুফতি মাহমুদ হাসান গাংগুহি (রহ.) বলেছেন : ‘পাক-ভারত উপমহাদেশে কোট-স্যুট পরিধান করা হারাম নয়, তবে এটি নেককার ও ওলি-আউলিয়াদের পোশাক নয়। তাই এগুলো থেকে দূরে থাকা উচিত।’ (ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া : ১৯/২৬০)
,
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
সেই হিসেবে বর্তমান উলামায়ে কেরামগন ঢিলেঢালা হওয়া,টাখনুর উপরে থাকা ইত্যাদি শর্তে পুরুষদের জন্য প্যান্ট পড়ার অনুমতি প্রদান করেছেন।      

তবে নারীদের জন্য প্যান্ট পরিধান করা কোনোভাবেই বৈধ নয়। 

কেননা প্রথমত, এটি কাফিরদের সাদৃশ্যপূর্ণ। 

দ্বিতীয়ত, এটি পুরুষদের সাদৃশ্যপূর্ণ পোশাক। হাদিস শরিফে এমন সাদৃশ্যপূর্ণ পোশাক পরিধানে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। 
★উলামায়ে কেরামগন এটিকে পুরুষের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ  হিসেবেই বিবেচনা করেন।   

তৃতীয়ত, প্যান্ট পুরুষদের তুলনায় নারীদের জন্য অধিক লজ্জাহীনতা, পর্দাহীনতা ও উলঙ্গপনার কারণ। এ জন্য নারীদের সর্বাবস্থায় এটি প্রত্যাখ্যান করা উচিত। 

আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

‘আর তোমরা স্বগৃহে অবস্থান করবে এবং জাহিলিয়াতযুগের মত নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবে না।’(সূরা আহযাব ৩৩)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,

الْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ ، وَإِنَّهَا إِذَا خَرَجَتِ اسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ ، وَإِنَّهَا لا تَكُونُ أَقْرَبَ إِلَى اللَّهِ مِنْهَا فِي قَعْرِ بَيْتِهَا

‘নারী গোপন জিনিস, যখন সে ঘর থেকে বের হয় শয়তান তাকে তাড়া করে। আর সে আল্লাহ তাআলার সবচে’ নিকটতম তখন হয় যখন সে নিজের ঘরের মাঝে লুকিয়ে থাকে।’ (তাবরানী ২৯৭৪)

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «صِنْفَانِ مِنْ أَهْلِ النَّارِ لَمْ أَرَهُمَا، قَوْمٌ مَعَهُمْ سِيَاطٌ كَأَذْنَابِ الْبَقَرِ يَضْرِبُونَ بِهَا النَّاسَ، وَنِسَاءٌ كَاسِيَاتٌ عَارِيَاتٌ مُمِيلَاتٌ مَائِلَاتٌ، رُءُوسُهُنَّ كَأَسْنِمَةِ الْبُخْتِ الْمَائِلَةِ، لَا يَدْخُلْنَ الْجَنَّةَ، وَلَا يَجِدْنَ رِيحَهَا، وَإِنَّ رِيحَهَا لَيُوجَدُ مِنْ مَسِيرَةِ كَذَا وَكَذَا»

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জাহান্নামবাসী দু’ধরনের লোক এমন আছে যাদের আমি (এখনো) দেখতে পাইনি। একদল লোক, যাদের সাথে গরুর লেজের ন্যায় চাবুক থাকবে, তা দিয়ে তারা লোকজনকে পিটাবে। আর এক দল স্ত্রীলোক, যারা বস্ত্র পরিহিত হয়েও বিবস্ত্রা, (সুখ সম্পদ ভোগকারিনী হয়েও অকৃতজ্ঞা) যারা অন্যদের আকর্ষণকারিণী ও আকৃষ্টা, তাদের মাথার চুলের অবস্থা উটের হেলে পড়া কূঁজের ন্যায়। ওরা জান্নাতে প্রবেশ করবে না, এমনকি তার খুশবুও পাবে না। অথচ এত এত দূর থেকে তার খুশবু পাওয়া যায়। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২১২৮]


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...