আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
369 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (40 points)
আসসালামু আলাইকুৃম মুফতি সাহেব।আমি ওয়াসওয়াসা রুগী।সবকিছু নিয়েই টেনশনে ভুগি।আমার কিছু বিষয়ে জানার ছিল

১।আমার স্বামী আমাকে বন্ধুর সাথে কথা না বলতে বলে।আমি বলি ঠিক আছে।কোন কাজে লাগলে বলব আর কি।ওনি বলেন না।তবু বার বার অনুরধের পরে ওনি বলে ঠিক আছে তুমার ব্যাপার/ ইচ্ছে।মানে আমি চাইলে বলতে পারি।এতে কি কেনায়া তালাক হবে?

২।আমার পরিবার আমাদের বিয়ে মেনে নেই নি।আমি বলি না মানলেও সম্পর্ক রাখিও। ও বলে আমি অমানুষ নই।বলে তুমার পরিবার তুমার ওপর।মানে আমি চাইলে যোগাযোগ করতে পারি।এতে কি কেনায়া বাক্য?

৩।আমার স্বামীও পড়ালেখা করে আমিও।সে বলেছিল আমার পড়াশুনার ব্যাপারে তুমি কিছু বলবে না তুমার ব্যাপারেও আমি বলব না।এতে কি কেনায়া বাক্য?

৪।বিয়ে মেনে নেই নি।স্বামী যদি রাগ করে বলে তুমার পরিবারের কারো সাথে সম্পর্ক/যোগাযোগ নেই বা করব না আর  বললে কি তালাক হবে?

৫।আমার স্বামী আর আমি খুলা তালাকের ব্যাপারে জানতাম না।শুধু জানতাম মেয়েরা তালাক দিতে পারে না।১৮ নং এ যে তালাকের ব্যপারে আছে সেটাও যানতাম না।স্বামীও জানে না।স্বামী বলেছিল কাজি নাকি বলেছে ওটা যোগ করতে হয়।তহ ১৮ নং এর ব্যপারে জানার আগে স্বামী বলেছিল "তুমার আমাকে ভাল না লাগলে তালাক দিয়ে দিও" মানে আদালত / কাজী অফিসের মাধ্যমে বুঝাইছে।খুলা তালাকের ব্যাপারে জানতাম না আমরা কেও।ইসলামে যে এর নিয়ম আছে আমরা দুইজনে জানতাম না।আমি খুব চিন্তায় এটা নিয়ে।অসুস্থ হয়ে গেছিলাম।আমি রাখতে চাই না এই অধিকার। আমার কান্না দেখে স্বামী বলেছে ঠিক আছে অধিকার ওটা নিয়ে নিছি।হুজুর আমার খুব ভয় হয় এই বুঝি মুখ দিয়ে বের হয়ে গেল।ভাবলে সহ আমি চিন্তায় অসুস্থ হয়ে পড়ি।আমি আমার স্বামীকে অধিকার টা দিয়ে দিতে চাই।পারব?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


তালাক খুবই মারাত্মক একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

এ ভয়ানক শব্দটি নিয়ত থাকুক বা না থাকুক রাগে বলুক আর ভালবেসে বলুক স্ত্রীকে উদ্দেশ্য নিয়ে মুখ দিয়ে এ শব্দ বের হলেই তালাক পতিত হয়ে যায়। 

হাদীসে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” ثَلَاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ: الطَّلَاقُ، وَالنِّكَاحُ، وَالرَّجْعَةُ “

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তিনি বিষয় এমন যে, ইচ্ছেকৃত করলে ইচ্ছেকৃত এবং ঠাট্টা করে করলেও ইচ্ছেকৃত বলে ধর্তব্য হয়। তা হল, তালাক, বিবাহ এবং তালাকে রেজয়ীপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২০৩৯, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৯৪}

★তালাক স্পষ্ট বাক্য দ্বারাও হতে পারে,আবার কেনায়া শব্দ,ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারাও হতে পারে।
কেনায়া তালাক বলা হয় স্পষ্ট তালাক শব্দ না বলে বরং তালাকের ইঙ্গিতসূচক শব্দ বলে তালাক দেওয়া। 

★★শরিয়তের পরিভাষায় তালাকের ইঙ্গিতসুচক শব্দে তালাক দেয়াটাকে বলা হয় ‘কেনায়া তালাক’ বা ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারা তালাক। আর কেনায়া তালাকের ক্ষেত্রে নিয়ত তথা তালাকের ইচ্ছা থাকা অত্যাবশ্যক। আর কেনায়া তালাক দ্বারা এক তালাকে বায়েন পতিত হয় ৷
সুতরাং যদি কেউ স্ত্রীকে এরূপ কথা বলে এবং তালাকের নিয়ত করে, তবে স্ত্রী তালাক হয়ে যাবে। আর যদি তালাকের নিয়ত না করে তাহলে তালাক হবে না। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/৩৭৫)

আরো জানুনঃ 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে  আপনার স্বামী আপনাকে 
বলেছে যে ঠিক আছে তোমার ব্যাপার/ ইচ্ছে।
তার মানে বন্ধুর সাথে আপনার কথা বলা না বলা আপনার ইচ্ছার উপর ছেড়ে দিয়েছে।
এখানে কেয়ানা তালাক হবেনা।


(২.৩)
এটি কেনায়া বাক্য নয়।

(০৪)
এখানে আপনার পরিবারের সাথে সম্পর্ক নিয়ে কথা বলেছে।
আপনাত সাথে সম্পর্ক নেই বা ইত্যাদি কোনো কিছু বলেনি। 
সুতরাং এটি কেনায়া বাক্য হবেনা।
তালাক হবেনা।
     
(০৫)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
আপনার স্বামী যদি জেনে শুনে আপনাকে তালাকের অধিকার দিয়ে থাকে,তাহলে এই অধিকার আর ফিরিয়ে দেওয়া যাবেনা,ফিরিয়ে নেওয়াও সম্ভব নয়।
তবে এক্ষেত্রে টেনশনের কিছু নেই।
আপনি যদি তালাক দিতে চান,তাহলে নির্দিষ্ট কিছু শব্দ বলে তালাক দিতে হবে,সুতরাং তালাক না হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
কেননা অনেকেই সেই নির্দিষ্ট বলে সাধারণত তালাক দেয়না। 
তাই তালাকও হয়না।
আবার তালাক হলেও এক তালাকের বেশি হবেনা।  
তাই পুনরায় বিবাহ করা যাবে।
,
সুতরাং  এই বিষয়ে টেনশন করবেননা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...