আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
198 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (10 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম, মুহতারাম, জানতে চাচ্ছিঃ
https://ifatwa.info/36011/ উক্ত ফতোয়াতে আমার একটি কম্পানিতে চাকরির বিয়য়ে বিস্তারিত তুলে ধরেছিলাম। এটি একটি বাংলাদেশী কম্পানি।
এখন সেই কম্পানি থেকে প্রাপ্ত বেতন হালাল নাকি হারাম তা বোঝার জন্য কম্পানির প্রোডাক্টগুলোর বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরছি ইনশাআল্লাহ।
-Vasmol Hair Colour, Vasmol Yogiraaj একটি ভারতীয় প্রোডাক্ট। (হিন্দু সন্নাসীর ছবি আছে প্রোডাক্টটির গায়ে)
- Sesa Shampoo একটি স্পেইন দেশের প্রোডাক্ট।
- Rohto একটি জাপানের প্রোডাক্ট।
- Olive Oil একটি স্পেইনের প্রোডাক্ট।
এই প্রোডাক্টগুলোর গায়ে স্বল্প ড্রেস পরিহিত ভারতীয় নারীর ছবি, আবার আরেকটিতে ভারতীয় সন্নাসীর ছবি এবং বিভিন্ন ভারতীয় লিখা আছে। (মার্কেটিং এর জন্য, বিক্রয় এর উদ্দেশ্যে)
এখানে আমার কাজ হচ্ছে, আমি টেবিলে বসে মাঠপর্যায়ের সেলসম্যানদের ট্র্যাক করি এবং তাদের ফোনের উপর রাখি, যেন তারা ঠিকমত প্রোডাক্টগুলো বিক্রি করে দোকানদারদের কাছে।
(আমি এখানে চাকরি নয়, শুধু ৩ মাসের জন্য ইন্টার্নশিপে আছি তাও আবার আমার ইউনিভার্সিটির প্রয়োজনে)
(কম্পানিটি বাংলাদেশী এবং কম্পানির অধিকাংশ মুসলিম চাকুরিজীবী)

(১) যেহেতু এগুলো অমুসলিম দেশের প্রোডাক্ট এবং আমি এই কম্পানিতে আছি এবং মাস শেষে ৭০০০ টাকা পাচ্ছি, তাই এখান হতে প্রাপ্ত বেতন কি হালাল নাকি হারাম?
(২) এই কম্পানি হতে প্রাপ্ত খাবার কি হালাল নাকি হারাম?
(৩) একটু ভিন্ন প্রশ্ন, সম্ভবত আহলে হাদিসদের অনুস্মরণ করেন, কোন নির্দিষ্ট মাযহাম ফলো করেন না, তবে সম্মান করেন, এরকম একজন মসজিদের ইমামের পক্ষ থেকে ইসলামিক বই প্রকাশার্থে উনাকে দান-সদকা প্রদান করা যাবে কি?
(৪) আহলে হাদিস/কোন নির্দিষ্ট মাযহাম ফলো করেন না - এমন কারো নিকট জ্ঞান অর্জন করা দ্বীনি জ্গ্ন অর্জন করা উচিত কিনা?

(৫) উক্ত কম্পানিতে কেশ কালার (Hair Colour) এর প্রডাক্টগুলোর জন্য কি প্রাপ্ত বেতন হারাম হয়ে যাবে?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/287 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
অমুসলিমদের ধর্মীয় জিনিষপত্র বা বিজাতীয় সংস্কৃতির জিনিষপত্র এবং বিভিন্ন শরীয়ত বিরোধী কাজ সমূহে ব্যবহৃত জিনিষপত্রর ক্রয়-বিক্রয় সম্পর্কে বলা যায় যে,এতে মতপার্থক্য বিদ্যমান রয়েছে-

একদল উলামায়ে কেরাম এ ক্রয়-বিক্রয় কে স্পষ্টত নাজায়েয বলেন, তাদের দলীল হল, কুরআনে কারীমে আল্লাহ তা'আলা ঘোষণা দিয়েছেন,
ﻭَﻻَ ﺗَﻌَﺎﻭَﻧُﻮﺍْ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻹِﺛْﻢِ ﻭَﺍﻟْﻌُﺪْﻭَﺍﻥِ ﻭَﺍﺗَّﻘُﻮﺍْ ﺍﻟﻠّﻪَ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠّﻪَ ﺷَﺪِﻳﺪُ ﺍﻟْﻌِﻘَﺎﺏِ
সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা।(সূরা-মায়েদা-২)
তাই তাদের বক্তব্য হল,শরীয়ত ও দ্বীন-ধর্ম বিরোধী কোনো কাজে সহায়তা করা কখনো জায়েয হবে না।

অন্যদিকে উলামায়ে কেরামের বিরাট একটি অংশ বলেন,
সুদ,মদ,শুকুর ব্যতীত অন্যান্য বিষয়ে মূল কাজ বৈধ হলে তা করা যাবে।যেমন গির্জায় ঝাড়ু দেওয়া, ইত্যাদি। কেননা শুধুমাত্র ঝাড়ু দানের কাজ অবৈধ নয়।তাই উক্ত ঝাড়ু দানের কাজ অবৈধ হবে না,চায় তা কোনো গির্জা বা অনৈসলামিক স্থানেই হোক না কেন? যেমন ফাতাওয়া শামীতে বর্ণিত আছে,
ﻭﻟﻮ ﺁﺟﺮ ﻧﻔﺴﻪ ﻟﻴﻌﻤﻞ ﻓﻲ ﺍﻟﻜﻨﻴﺴﺔ ﻭﻳﻌﻤﺮﻫﺎ ﻻ ﺑﺄﺱ ﺑﻪ ﻷﻧﻪ ﻻ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﻓﻲ ﻋﻴﻦ ﺍﻟﻌﻤﻞ
যদি কেউ কোনো গির্জায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করে,অথবা টাকার বিনিময়ে গির্জা নির্মাণ করে দেয়, তাহলে এতে তার কোনো গুনাহ হবে না। কেননা এখানে মূল কাজে কোনো গুনাহ নাই।(রদ্দুল মুহতার,৬/৩৯২)
وصح بيع غير الخمر و مفاده صحة بيع الحشيشة الخ
মদ ব্যতীত অন্যান্য নেশদ্রব্য বিক্রি করা বৈধ,সারমর্ম হলঃ হাশীশ (একপ্রকার তামাক দ্রব্য) বিক্রিও বৈধ।(রদ্দুল মুহতার,৬/৪৫৪)

(ফাতাওয়ায়ে উসমানী, ৩/৮৯,তে এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।তানক্বিহু ফাতাওয়াল হামিদিয়্যাহ,৬/৩৬৬,মাজ্বমুআতুল ফাতাওয়া,২/২৭,ফাতাওয়া রশিদিয়্যাহ, ৪৮৮,ক্বিফায়াতুল মুফতী, ৯/১৪৮)

সুপ্রিয় পাঠকবর্গ!
এমন ব্যবসা যেখানে মতপার্থক্য চলে আসে সেরকম ব্যবসায় সাধারণত নিজেকে না জড়ানোই ভাল ও উত্তম। তবে যদি কোথাও শত চেষ্টা করার পরও এছাড়া অন্য কোনো ব্যবসার সুযোগ না হয়,তাই যেহেতু কিছুসংখ্যক উলামায়ে এরকম ব্যবসার অনুমোদনের পক্ষে রয়েছেন, সেহেতু এরকম ব্যবসার অনুমোদন দেয়া যেতে পারে।সেক্ষেত্রে গোনাহ ঐ ব্যক্তির-ই হবে, যে গোনাহকে সরাসরি সংগঠিত করবে। বিক্রতার কোনো প্রকার গোনাহ হবে না। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/242

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
(১)
বেতন ভাতা হালাল হবে।
(২)
খাবারও হালাল হবে।

(৩)
এরকম মাযহাব বিরোধী কিতাব প্রকাশ করে জনমনে বিভ্রান্তি চড়ানো হচ্ছে, তাই এমন প্রকাশনায় দান না করাই উত্তম হবে।

(৪)
না, এমন কারো কাছ থেকে দ্বীন শিক্ষা উচিৎ হবে না।

(৫)
বেতন হালাল হবে।
পণ্যর গায়ে যে বা যারা ছবি সংযোজন করবেন, সিংহভাগ গোনাহের ভাড়  শুধুমাত্র তাদের উপরই পড়বে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (597,330 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...