আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
330 views
in পবিত্রতা (Purity) by (65 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম হজরত আমার ৪টি প্রশ্ন রয়েছে
প্রথম প্রশ্ন টি হল যদি শরীরের এমন কোন স্থানে ক্ষত সৃষ্টি হয় যেখানে ডাক্তার ব্যান্ডেজ করে না করে দিতে রাজি নয় বা করার প্রয়োজন নেই সেখানে শুধু ক্রিম বা মলম বা অন্য জাতি কোন কোন ওষুধ লাগিয়ে রাখতে হয়দীর্ঘ সময় ধরে। তাহলে অজু-গোসলের ক্ষেত্রে সেখানে পানি দিলে তো ক্রিমটি, ঔষধটি বা মলমটি ধুয়ে যাবে  যাবে এক্ষেত্রে করণীয় কি।

২অনেক সময় এসবে  পানি লাগলে পানি লাগলে অনেক জালা পোড়া করে সহ্যেররের সীমা ছাড়িয়ে যায় অপরদিকে ডাক্তারও ব্যান্ডেজ করে দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেন না কারণ ক্ষতস্থানটি চাপা থাকলে উল্টো খারাপ পরিস্থিতি হতে পারে বা সাধারণভাবে ও ডাক্তার ব্যান্ডেজ করে দেন না । এক্ষেত্রেরে অজু-গোসলের করণীয় কি
৩,আমার নখের পাশে গর্ত সৃষ্টি হয়েছে যেখানে নখ আর মাংস লেগে থাকে, নখের প্রান্ত দিয়ে গর্তটি দেখা যায়, এবং চামড়া টিপলে এবং অন্যান্য ভাবে বোঝা যায় যে ভিতরে গর্ত টি আরো ও বিস্তার লাভ করেছে।তবে বিস্তারলাভ কৃত অংশটুকু সরাসরি উপর থেকে চোখ দিয়ে দেখা যায় না, এমতাবস্থায় অজু-গোসলের ক্ষেত্রে সেই ছিদ্র বরাবর ওপর দিয়ে যতটুক চোখে দেখা যায় সেটুকুতেপানি ঢাললে  ও প্রবেশ করালেই কি হবে নাকি সেই ছিদ্রের ভিতর পানি প্রবেশ করাতে হবে যে অংশটুকু দেখা যায় না ?  কারণ ভিতরে পানি ঢুকলে তা স্বাস্থগত ঝুকি ও পুজ জমতে পারে।


৪,সাধারণ ভাবে যদি আংগুলের নখের নিচে ময়লা না থাকে এমতবস্থায় অযু গোসলে পানি পৌছানোর বিধান কি? আমি এতদিন এম্নিতেই পানি দিতাম এর উপর দিয়ে প্রবাহিত,আলাদা করে আংগুল ধরে নখের উপর দিতাম না।এখন কি আমার পূর্বের সালাত গুলা আবার সব পড়তে হবে?

1 Answer

+1 vote
by (565,890 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


শরীয়তের বিধান হলো যদি কাহারো শরীরের অধিকাংশ জায়গা ক্ষত হয়,তাহলে সে তায়াম্মুম করিবে।
ক্ষত জায়গায় মাসাহ করিবে।
সমস্যা হলে সেই জায়গা ছেড়ে দিবে।  

যদি অধিকাংশ জায়গা ভালো থাকে,তাহলে তায়াম্মুম করিবেনা,বরং ধৌত করিবে।
ক্ষতস্থানের জায়গা  যদি শরীরের অন্যান্য অঙ্গ মলে মলে ধোয়ার মতো এই জায়গা ধোয়া না যায়,তাহলে শুধু পানি প্রবাহিত করে দিবে। যদি পানি প্রবাবিত করে দেওয়া ক্ষতিকর হয়,তাহলে মাসাহ করে নিবে,অর্থাৎ সামান্য ভেজা আঙ্গুল হালকা ভাবে যখমের স্থানের উপর ফিরিয়ে নিবে।
,
যদি মাসেহ করাটাও ক্ষতিকর হয়,কঠিন হয়,তাহলে সেই অঙ্গ আপন অবস্থায়  ছেড়ে দিবে,বাকি অঙ্গ ধুয়ে ফেলবে।
সেই স্থান এমতাবস্থায়  শুকনো রাখা যাবে।
(কিতাবুন নাওয়াজেল ৫/৩০১)
     
হাদীস শরীফে এসেছেঃ   
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الأَنْطَاكِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنِ الزُّبَيْرِ بْنِ خُرَيْقٍ، عَنْ عَطَاءٍ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ خَرَجْنَا فِي سَفَرٍ فَأَصَابَ رَجُلاً مِنَّا حَجَرٌ فَشَجَّهُ فِي رَأْسِهِ ثُمَّ احْتَلَمَ فَسَأَلَ أَصْحَابَهُ فَقَالَ : هَلْ تَجِدُونَ لِي رُخْصَةً فِي التَّيَمُّمِ؟ فَقَالُوا مَا نَجِدُ لَكَ رُخْصَةً وَأَنْتَ تَقْدِرُ عَلَى الْمَاءِ فَاغْتَسَلَ فَمَاتَ، فَلَمَّا قَدِمْنَا عَلَى النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم أُخْبِرَ بِذَلِكَ فَقَالَ : " قَتَلُوهُ قَتَلَهُمُ اللهُ أَلَّا سَأَلُوا إِذْ لَمْ يَعْلَمُوا فَإِنَّمَا شِفَاءُ الْعِيِّ السُّؤَالُ إِنَّمَا كَانَ يَكْفِيهِ أَنْ يَتَيَمَّمَ وَيَعْصِرَ " . أَوْ " يَعْصِبَ " . شَكَّ مُوسَى " عَلَى جُرْحِهِ خِرْقَةً ثُمَّ يَمْسَحَ عَلَيْهَا وَيَغْسِلَ سَائِرَ جَسَدِهِ " . - حسن (سنن أبي داؤد، الطہارۃ / باب في المجروح یتیمم ۱؍۱۴۹ رقم ۳۳۶)

জাবির (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমরা কোন এক সফরে বের হলে আমাদের মধ্যকার একজনের মাথা পাথরের আঘাতে ফেটে যায়। ঐ অবস্থায় তার স্বপ্নদোষ হলে সে সাথীদের জিজ্ঞেস করল, তোমরা কি আমার জন্য তায়াম্মুমের সুযোগ গ্রহণের অনুমতি পাও? তারা বলল, যেহেতু তুমি পানি ব্যবহার করতে সক্ষম, তাই তোমাকে তায়াম্মুম করার সুযোগ দেয়া যায় না। অতএব সে গোসল করল। ফলে সে মৃত্যুবরণ করল। আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আসলে তাঁকে বিষয়টি জানানো হলো। তিনি বললেনঃ এরা অন্যায়ভাবে তাকে হত্যা করেছে। আল্লাহ এদের ধ্বংস করুন। তাদের যখন (সমাধান) জানা ছিল না, তারা কেন জিজ্ঞেস করে তা জেনে নিল না। কারণ অজ্ঞতার প্রতিষেধক হচ্ছে জিজ্ঞেস করা। ঐ লোকটির জন্য তায়াম্মুম করাই যথেষ্ট ছিল। আর যখমের স্থানে ব্যান্ডেজ করে তার উপর মাসাহ্ করে শরীরের অন্যান্য স্থান ধুয়ে ফেললেই যথেষ্ট হত।
(আবু দাউদ ৩৩৬.বায়হাক্বী (১/২২৮), দারাকুতনী (১/১৯০)।
,
আরো জানুনঃ 

(০১)
এখানে ঔষধ/মলম ধুয়ে যাওয়া ওযর হিসেবে বিবেচিত হবেনা।
কথা হলো সেখানে পানি পৌছানো ক্ষতিকর কিনা?
ডাক্তার কি সেখানে পানি পৌছানো হলে ক্ষতি হবে বলেছে?
এটিই মূল বিষয়।    

সুতরাং উল্লেখিত ছুরতে সেটি অযুর ফরজ অঙ্গ হলে সেখানে পানির দ্বারা ক্ষতি না হলে পানি পৌছাতে হবে।

(০২)
এক্ষেত্রে বুঝা যাচ্ছে যে এখানে পানি পৌছানো ক্ষতিকর। 
বিষয়টি যদি অভিজ্ঞ ডাক্তার বলে থাকে,তাহলে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে ,যদি ক্ষতস্থানে যদি মাসাহ করা সম্ভবপর হয়,তাহলে সামান্য ভেজা আঙ্গুল হালকা ভাবে যখমের স্থানের উপর ফিরিয়ে নিবে।
,
আর অবশিষ্ট সারা শরীর গোসল করবে।
অযুর ক্ষেত্রে বাকি অঙ্গগুলো ধৌত করবে।
,
হ্যাঁ যদি ক্ষতস্থানে মাসাহ করাও ক্ষতিকর হয়,তাহলে সেই জায়গা ছেড়ে দিবে,বাকি পুরো শরীর গোসল করবে।
সেই স্থান এমতাবস্থায়  শুকনো রাখা যাবে।
কোনো সমস্যা নেই।   
,
অযুর বাকি অঙ্গগুলো ধৌত করবে,সেই স্থান ছেড়ে দিবে।

(০৩)
এমতাবস্থায় অজু-গোসলের ক্ষেত্রে সেই ছিদ্র বরাবর ওপর দিয়ে যতটুক চোখে দেখা যায় সেটুকুতে পানি ঢাললে  ও প্রবেশ করালেই যথেষ্ট। 
,
(০৪)
আপনি যেই পদ্ধতিতে অযু গোসল করেছেন,সেটিই যথেষ্ট। 
পূর্বের সালাত গুলা আবার সব পড়তে হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 157 views
...