জবাব
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
(০১)
ব্যবসায় কি পরিমান লাভ করা যায়,এক্ষেত্রে ইসলামী শরীয়তে এর কোনো নির্দিষ্ট সীমারেখা নেই, বরং যেকোনো জিনিষ উভয়ের সন্তুষ্টিতে যেকোনো মূল্যে ক্রয়-বিক্রয় করা যায়।
ক্রয়-বিক্রয়ে আমাদেরকে অবশ্যই দুটি দিক খেয়ালে রাখতে হবে।
এক, উভয়ের সন্তুষ্টি আছে কি না নেই।
দুই, কাহারো উপর জুলুম হচ্ছে কি না।
সেদিকে অত্যান্ত সতর্কতার সাথে লক্ষ্য রাখতে হবে ,
কেননা আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍْ ﻻَ ﺗَﺄْﻛُﻠُﻮﺍْ ﺃَﻣْﻮَﺍﻟَﻜُﻢْ ﺑَﻴْﻨَﻜُﻢْ ﺑِﺎﻟْﺒَﺎﻃِﻞِ ﺇِﻻَّ ﺃَﻥ ﺗَﻜُﻮﻥَ ﺗِﺠَﺎﺭَﺓً ﻋَﻦ ﺗَﺮَﺍﺽٍ ﻣِّﻨﻜُﻢْ ﻭَﻻَ ﺗَﻘْﺘُﻠُﻮﺍْ ﺃَﻧﻔُﺴَﻜُﻢْ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠّﻪَ ﻛَﺎﻥَ ﺑِﻜُﻢْ ﺭَﺣِﻴﻤًﺎ
তরজমাঃ-হে ঈমানদারগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না। কেবলমাত্র তোমাদের পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা করা হয় তা বৈধ। আর তোমরা নিজেদের কাউকে হত্যা করো না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা’আলা তোমাদের প্রতি দয়ালু।(সূরা নিসা(২৯)
এবং হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত,
عن ابن عباس قال;قال رسول اللّٰه صلى اللّٰه عليه و سلم
" ﻻ ﻳﺤﻞ ﻣﺎﻝ ﺍﻣﺮﺉ ﻣﺴﻠﻢ ﺇﻻ ﺑﻄﻴﺐ ﻧﻔﺲ ﻣﻨﻪ "
নবী কারীম সাঃ বলেনঃ"কোন মুসলমানের জন্য অন্য কোনো মুসলমানের মাল তার অন্তরের সন্তুষ্টি ব্যতীত হালাল হবে না।(তালখিসুল হাবীর-১২৪৯)
বিস্তারিত জানুনঃ
https://ifatwa.info/29654/
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত বিষয় শরীয়ত সম্মত।
(০২)
প্রশ্নে উল্লেখিত পন্থায় দোকানের মালিককে অগ্রিম ৫/৬ লাখ টাকা দেওয়াকে ইসলামি আইনের পরিভাষায় বন্ধক বলা হয়। আর কোনো কিছু বন্ধক রাখা শরিয়তে জায়েয আছে।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.), আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.), ইবরাহিম নাখায়ি (রহ.), শাবী (রহ.) প্রমুখ সাহাবা-তাবেয়ি থেকে বর্ণিত আছে, তারা বলেন, আগাম বিক্রিতে বিক্রেতা থেকে বন্ধক নিলে তাতে কোনো অসুবিধা নেই। [মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদিস: ১৪০৮৬, ১৪০৮৭, ১৪০৯০]
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত এডভান্স তথা বন্ধক জায়েজ। তবে এখানে যেহেতু অনেক বেশি টাকা নেওয়া হচ্ছে,তাই এখানে জুলুমের অর্থ পাওয়া যায়,যাহা পরিহার করা উচিত। তবে এটি গ্রহন নাজায়েজ হবেনা।
তবে প্রশ্নে উল্লেখিত ক্ষেত্রে একটি সমস্যা হলো, যেহেতু এখানে উল্লিখিত ৫/৬ লাখ টাকা বন্ধক হিসেবে বিবেচিত, সেহেতু দোকানের মালিকের জন্য উক্ত টাকা খরচ করা জায়েয হবে না। বরং কোথাও তা জমা রেখে দিতে হবে। কারণ বন্ধকী বস্তু থেকে উপকৃত হওয়া জায়েয নয়।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
ইবনে সিরিন (রহ.) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) এর নিকট এক ব্যক্তি এসে বলল, আমার কাছে এক ব্যক্তি একটি ঘোড়া বন্ধক রেখেছে। আমি এতে আরোহণ করেছি। তখন আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বললেন, তুমি এর পিঠ থেকে (আরোহণ করে) যে উপকৃত হয়েছ তা সুদের অন্তর্ভুক্ত। [মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদিস: ১৫০৭১]