আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
201 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (23 points)
১। একই পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে ভিন্নজনের থেকে ভিন্ন ভিন্ন দাম রাখা (যেমন, রেগুলার/পরিচিত কাস্টমার থেকে অপেক্ষাকৃত কম দাম রাখা) কি শরীয়াহ সম্মত?


২। দোকান ভাড়ার জন্য অ্যাডভান্স নেয়া কি জায়েজ? জায়েজ হলে অনেক বেশি অ্যাডভান্স নেয়া কি জায়েজ? উদাহরণস্বরূপ, মাসিক ১০ হাজার টাকা দোকান ভাড়ার অ্যাডভান্স ৫/৬ লাখ টাকা নেয়ার ক্ষেত্রে হুকুম কি?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাব
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম


(০১)
ব্যবসায় কি পরিমান লাভ করা যায়,এক্ষেত্রে ইসলামী শরীয়তে এর কোনো নির্দিষ্ট সীমারেখা নেই, বরং যেকোনো জিনিষ উভয়ের সন্তুষ্টিতে যেকোনো মূল্যে ক্রয়-বিক্রয় করা যায়।

ক্রয়-বিক্রয়ে আমাদেরকে অবশ্যই দুটি দিক খেয়ালে রাখতে হবে।


এক, উভয়ের সন্তুষ্টি আছে কি না নেই।

দুই, কাহারো উপর জুলুম হচ্ছে কি না।

সেদিকে অত্যান্ত সতর্কতার সাথে লক্ষ্য রাখতে হবে ,
কেননা আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ


ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍْ ﻻَ ﺗَﺄْﻛُﻠُﻮﺍْ ﺃَﻣْﻮَﺍﻟَﻜُﻢْ ﺑَﻴْﻨَﻜُﻢْ ﺑِﺎﻟْﺒَﺎﻃِﻞِ ﺇِﻻَّ ﺃَﻥ ﺗَﻜُﻮﻥَ ﺗِﺠَﺎﺭَﺓً ﻋَﻦ ﺗَﺮَﺍﺽٍ ﻣِّﻨﻜُﻢْ ﻭَﻻَ ﺗَﻘْﺘُﻠُﻮﺍْ ﺃَﻧﻔُﺴَﻜُﻢْ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠّﻪَ ﻛَﺎﻥَ ﺑِﻜُﻢْ ﺭَﺣِﻴﻤًﺎ

তরজমাঃ-হে ঈমানদারগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না। কেবলমাত্র তোমাদের পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা করা হয় তা বৈধ। আর তোমরা নিজেদের কাউকে হত্যা করো না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা’আলা তোমাদের প্রতি দয়ালু।(সূরা নিসা(২৯)

এবং হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত,
عن ابن عباس قال;قال رسول اللّٰه صلى اللّٰه عليه و سلم
  " ﻻ ﻳﺤﻞ ﻣﺎﻝ ﺍﻣﺮﺉ ﻣﺴﻠﻢ ﺇﻻ ﺑﻄﻴﺐ ﻧﻔﺲ ﻣﻨﻪ "
নবী কারীম সাঃ বলেনঃ"কোন মুসলমানের জন্য  অন্য কোনো মুসলমানের মাল তার অন্তরের সন্তুষ্টি ব্যতীত হালাল হবে না।(তালখিসুল হাবীর-১২৪৯)

বিস্তারিত জানুনঃ  

https://ifatwa.info/29654/

★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত বিষয় শরীয়ত সম্মত।     

(০২)

প্রশ্নে উল্লেখিত পন্থায় দোকানের মালিককে অগ্রিম ৫/৬ লাখ টাকা  দেওয়াকে ইসলামি আইনের পরিভাষায় বন্ধক বলা হয়। আর কোনো কিছু বন্ধক রাখা শরিয়তে জায়েয আছে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.), আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.), ইবরাহিম নাখায়ি (রহ.), শাবী (রহ.) প্রমুখ সাহাবা-তাবেয়ি থেকে বর্ণিত আছে, তারা বলেন, আগাম বিক্রিতে বিক্রেতা থেকে বন্ধক নিলে তাতে কোনো অসুবিধা নেই। [মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদিস: ১৪০৮৬, ১৪০৮৭, ১৪০৯০]

★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত এডভান্স তথা বন্ধক জায়েজ।  তবে এখানে যেহেতু অনেক বেশি টাকা নেওয়া হচ্ছে,তাই এখানে জুলুমের অর্থ পাওয়া যায়,যাহা পরিহার করা উচিত। তবে এটি গ্রহন নাজায়েজ হবেনা।      

তবে প্রশ্নে উল্লেখিত  ক্ষেত্রে একটি সমস্যা হলো, যেহেতু এখানে উল্লিখিত ৫/৬ লাখ টাকা বন্ধক হিসেবে বিবেচিত, সেহেতু দোকানের মালিকের জন্য উক্ত টাকা খরচ করা জায়েয হবে না। বরং কোথাও তা জমা রেখে দিতে হবে। কারণ বন্ধকী বস্তু থেকে উপকৃত হওয়া জায়েয নয়।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ  

ইবনে সিরিন (রহ.) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) এর নিকট এক ব্যক্তি এসে বলল, আমার কাছে এক ব্যক্তি একটি ঘোড়া বন্ধক রেখেছে। আমি এতে আরোহণ করেছি। তখন আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বললেন, তুমি এর পিঠ থেকে (আরোহণ করে) যে উপকৃত হয়েছ তা সুদের অন্তর্ভুক্ত। [মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদিস: ১৫০৭১]


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...