আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
219 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (10 points)

আসসালামু আলাইকুম। মুহতারাম, জানতে চাচ্ছিঃ

আমি একটি কম্পানিতে ৩ মাসের জন্য ইন্টার্নশিপ করছি। এর জন্য তারা আমাকে কিছু বেতন দিবে এবং দুপুরের খাবার ফ্রি।

(১) আমি এখানে জয়েন করেছি ডিসেম্বরের ২২ তারিখ, ২০২১। সেক্ষত্রে গণণা করা হবে জানুয়ারি ০১ থেকে জানুয়ারি ৩০ পর্যন্ত (মোট ১ মাসের) বেতন। কিন্তু তারা আমাকে অফার করছেন, আমি যেন ডিসেম্বরের ২২ তারিখ থেকে নিয়ে জানুয়ারির ৩০ তারিখ পর্যন্ত (মোট ১ মাস ৮ দিন) হিসেব করে বেতন গ্রহণ করি। কিন্তু কথা হচ্ছে, আমি ডিসেম্বরের ২২, ২৩, ২৪ এই দিনগুলোতে অফিসে আসলেও তারা আমাকে কোন কাজ দেয়নি, কাজ শিখিয়েছেন আমাকে। সেক্ষেত্রে, এই ২২, ২৩, ২৪ তারিখের বেতন গ্রহণ করা আমার জন্য কি জায়েজ হবে?

(২) জানুয়ারি মাসে আমি মোট ৩ দিন ছুটি নিয়েছি (কম্পানির অনুমতি সাপেক্ষে)। শর্ত ছিল, আমি যেন বাসায় বসেই কম্পানির কাজ করি। কিন্তু দেখা গেছে, অসুস্থতা ও বিভিন্ন টেকনিক্যাল সমস্যা ও বিয়ের দাওয়াত থাকার কারণে পুরোপুরি কাজ সম্পাদন করতে পারি নাই, অল্প কিছু কাজ করতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু নিয়্যাত ছিলো অফিসের কাজগুলো পুরোপুরি সম্পাদন করার। সেক্ষেত্রে, জানুয়ারি মাসের বেতন গ্রহণ করার ক্ষেত্রে আমি কি এই ৩ দিনকে গণনা করবো নাকি বাদ দিবো? এই ৩ দিনসহ বেতন গ্রহণ করা আমার জন্য জায়েজ হবে কি?

(৩) এছাড়াও এমনও ২/৩ দিন গিয়েছে অফিসে গিয়েছি কিন্তু কোন কাজ দেয়নি, বসে ছিলাম। আবার কাজ দিয়েছে কিন্তু পুরোপুরি শেষ করতে পারিনি। তবে অসম্পূর্ণ কাজ জমা দিয়েছি। কিন্তু কম্পানি থেকে আমাকে কিছু বলা হয়নি। বলা হয়েছে, যতটুকু পারি ততটুকু যেন কাজ শেষ করি। এখন, বেতন গ্রহণ করার ক্ষেত্রে এই দিনগুলোও গণণা করা আমার জন্য জায়েজ হবে কই?

(৪) এই কম্পানি হতে প্রাপ্ত মোট ৭ হাজার টাকা বেতনের উপর কার কার হক্ব আছে? এর উপর কোন দান-সদকা কিংবা জাকাত প্রদান করতে হবে কি? (বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ আমি একজন ছাত্র, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি, পরিবারে শুধু আমার বাবা, মা, আমার স্ত্রী ও আমি আছি)

(ওয়াল্লাহু আ'লাম)

জাযাকাল্লাহ

by (10 points)
আলহামদুলিল্লাহ। মুহতারাম, (২) নং প্রশ্নের ক্ষেত্রে, যদি অফিস কতৃপক্ষ সেই ৩ দিন সহকারে বেতন স্বেচ্ছায় দিতে চায় আমাকে তবে তা গ্রহণ করা জায়েজ হবে কি? ( আবার, কোন কোন দিন অফিসে ১৫/৩০ মিনিট অনিচ্ছাকৃত দেরি করে যেতে হয়েছে )

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

ওয়াবিসা ইবনে মা'বাদ রাযি থেকে বর্ণিত,

ﻭﻋﻦ ﻭﺍﺑﺼﺔَ ﺑﻦِ ﻣَﻌْﺒِﺪٍ  ﻗَﺎﻝَ : ﺃَﺗَﻴْﺖُ ﺭﺳﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪ ﷺ ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺟِﺌْﺖَ ﺗﺴﺄَﻝُ ﻋﻦِ ﺍﻟﺒِﺮِّ؟ » ﻗُﻠْﺖُ : ﻧَﻌَﻢْ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺍﺳْﺘَﻔْﺖِ ﻗَﻠْﺒَﻚَ، ﺍﻟﺒِﺮُّ : ﻣَﺎ ﺍﻃْﻤَﺄَﻧَّﺖْ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲُ، ﻭﺍﻃْﻤَﺄَﻥَّ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻟﻘَﻠْﺐُ، ﻭﺍﻹِﺛﻢُ : ﻣَﺎ ﺣﺎﻙَ ﻓﻲ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲِ، ﻭﺗَﺮَﺩَّﺩَ ﻓِﻲ ﺍﻟﺼَّﺪْﺭِ، ﻭﺇِﻥْ ﺃَﻓْﺘَﺎﻙَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻭَﺃَﻓْﺘَﻮﻙَ » ﺣﺪﻳﺚٌ ﺣﺴﻦٌ، ﺭﻭﺍﻩُ ﺃﺣﻤﺪُ ﻭﺍﻟﺪَّﺍﺭﻣِﻲُّ ﻓﻲ " ﻣُﺴْﻨَﺪَﻳْﻬِﻤﺎ ."

তিনি বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট গেলাম।রাসূলুল্লাহ সাঃ আমাকে বললেন,তুমি কি নেকীর কাজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার জন্য এসেছ?আমি বললাম জ্বী হ্যা, ইয়া রাসূলাল্লাহ!

তখন তিনি আমাকে বললেন,তুমি তোমার অন্তরের নিকট ফাতওয়া জিজ্ঞাসা করো।নেকি হল সেটা যার উপর অন্তর প্রশান্তিবোধ করে,এবং যে জিনিষের উপর অন্তর শান্ত থাকে।আর গোনাহ হল সেটা,যা অন্তরে অশান্তি সৃষ্টি করে নাড়িয়ে দেয়,এবং অন্তরকে দ্বিধান্বিত করে ফেলে।যদিও উক্ত কাজ সম্পর্কে মুফতিগণ বৈধতার ফাতাওয়া প্রদাণ করুক না কেন।(মুসনাদে আহমদ-১৭৫৪৫)

নিজে উপার্জন করে খাওয়ার কথা রাসুল সাঃ বলেছেন। হাদীসে এসেছে,

হযরত মিক্বদাম ইবনে মা'দি কারুবা রাযি থেকে বর্ণিত,

 ﻋَﻦِ اﻟْﻤِﻘْﺪَاﻡِ ﺑْﻦِ ﻣَﻌْﺪِﻱ ﻛَﺮِﺏَ - ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ: ﻗَﺎﻝَ: ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ اﻟﻠَّﻪِ - ﺻَﻠَّﻰ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - " «ﻣَﺎ ﺃَﻛَﻞَ ﺃَﺣَﺪٌ ﻃَﻌَﺎﻣًﺎ ﻗَﻂُّ ﺧَﻴْﺮًا ﻣِﻦْ ﺃَﻥْ ﻳَﺄْﻛُﻞَ ﻣِﻦْ ﻋَﻤَﻞِ ﻳَﺪَﻳْﻪِ، ﻭَﺇِﻥَّ ﻧَﺒِﻲَّ اﻟﻠَّﻪِ ﺩَاﻭُﺩَ - ﻋَﻠَﻴْﻪِ اﻟﺴَّﻼَﻡُ - ﻛَﺎﻥَ ﻳَﺄْﻛُﻞُ ﻣِﻦْ ﻋَﻤَﻞِ ﻳَﺪَﻳْﻪِ» "

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন, নিজ হাতের উপার্জন হতে অধিক উত্তম রিজিক কেউ কখনো আহার করেনি। আর আল্লাহর নবী হযরত দাউদ আঃ নিজ হাতের উপার্জন দ্বারাই দিনাতিপাত করতেন। (মিশকাত-২৭৫৯)

হযরত ইবনে মাসউদ রাযি থেকে বর্ণিত,

 عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ - رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ -: " «طَلَبُ كَسْبِ الْحَلَالِ فَرِيضَةٌ بَعْدَ الْفَرِيضَةِ» " رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي " شُعَبِ الْإِيمَانِ.

রাসুলাল্লাহ সাঃ বলেন,হালাল রিযিক তালাশ করা অন্যন্য ফরয বিধানের পরই ফরয।(মিশকাতুল মাসাবিহ-২৭৮১)

প্রশ্নকারী প্রিয় দ্বীনী ভাই/বোন!

১. যদি কোম্পানী কর্তৃপক্ষ স্বেচ্ছায় আপনাকে জানুয়ারীর সাথে ডিসেম্বরের ৮ দিনেরও বেতন দেয় তাহলে তা আপনার জন্য জায়েয।

২. কোম্পানীর দেওয়া শর্তানুযায়ী যদি সেই তিন দিন কাজ করতে না পারেন তাহলে সেই দিনগুলির বেতন নেওয়া আপনার জন্য জায়েয হবে না।

৩. সময়মত অফিসে যাওয়ার পরে অফিস কর্তৃপক্ষ যদি কোন কাজ না দেয় বা যতটুকু কাজ করেন তাতে তারা কোন আপত্তি না করে তাহলে সেই দিনগুলির বেতন নেওয়া জায়েয আছে।

৪. উক্ত বেতন থেকে আপনি নিজের প্রয়োজন পূরণ করার পাশাপাশি স্বীয় স্ত্রীর জরুরত পূর্ণ করবেন এবং সাথে সাথে মা বাবার জন্যও খরচ করবেন যদি আপনার সামর্থ্য থাকে। কারণ, এ ব্যাপারে হাদিস শরিফে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘খরচের ব্যাপারে তুমি আগে নিজের প্রয়োজনীয় খরচের দায়িত্বশীল, তারপর তোমার স্ত্রীর, তারপর সামর্থ্য হলে তোমার নিকটাত্মীয়ের খরচ তোমার ওপর বর্তাবে। ’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস ৯৯৭)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...