আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
159 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (12 points)
আসসালামু আলাইকুম, আমার প্রশ্ন কিছু প্রশ্ন,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

১. আল বিদায়া ওয়ান নীহায়া গ্রন্থে কি জাল হাদীয বা বানোয়াট ও দূর্বল কাহিনী থাকতে পারে?????

২. আল বিদায়া ওয়ান নীহায়া গ্রন্থ কি পড়া যাবে?????

1 Answer

0 votes
by (566,160 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
‘আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া’ ইসলামী ইতিহাসের বিখ্যাত গ্রন্থ। আরবি ভাষায় রচিত এই বৃহৎ কলেবরের এই কিতাবের প্রসিদ্ধি বিশ্বজুড়ে। মুসলিম বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ তাফসিরবিশারদ ও ইতিহাসবেত্তা আবুল ফিদা হাফিজ ইবনে কাসির আদ-দামেস্কি (রহ.) বইটির রচয়িতা। 
.
‘আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া’ গ্রন্থে গভীর তত্ত্বীয় জ্ঞান-অভিজ্ঞান, সূক্ষ্ম-নিপুণ বাস্তব-আশ্রিত ইতিহাস রয়েছে। ইসলামী ইতিহাসের দক্ষতা প্রয়াসীদের জন্য গ্রন্থটির পঠন-পাঠন গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি বিষয়-বৈচিত্র্যের জন্য অমুসলিম বিদ্বানরাও গ্রন্থটিকে গুরুত্ব দেন। মহান আল্লাহ তাআলার বিশাল সৃষ্টিজগৎ, মানব সৃষ্টিতত্ত্ব, ইতিহাস-ঐতিহ্য, কৃষ্টি-সভ্যতা, নবী-রাসুলদের আগমন-প্রস্থান ও তাঁদের বর্ণোজ্জ্বল জীবনযাপনের সবিস্তারে বর্ণনা করেছেন। বইটিতে ইসলামের ইতিহাস ও সভ্যতা-সংস্কৃতি সম্পর্কে স্পষ্ট ও গোছালো ধারণা পাওয়া যায়। ইসলামের ইতিহাস গবেষকদের কাছে গ্রন্থটি মৌলিক ইতিহাসগ্রন্থ হিসেবে বিবেচিত। ইসলামী ইতিহাসের গ্রন্থ হলেও উচ্চ মার্গীয় ভাষা-মাধুর্য ও সাহিত্য-শৈলীর গাঁথুনি এ বইয়ের সৌকর্য। খ্যাতিমান আরবি সাহিত্যিক ও বোদ্ধাদের কাছে এটি বিপুলভাবে প্রশংসিত। 
,
অনেক আগেই ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে বাংলায় প্রকাশিত হয়েছে ১৪ খন্ডের ‘আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া’

আল্লাহ তায়ালার বিশাল সৃষ্টিজগতের সৃষ্টিতত্ত্ব ও রহস্য, মানব সৃষ্টিতত্ত্ব তথা মানব ইতিহাসের বিভিন্ন ঘটনা, নবী-রাসুলদের আগমন ও তাঁদের কর্মব্যস্ত জীবনের ইতিহাস বর্ণনা করা হয়েছে এ গ্রন্থে। 

‘আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া’ একটি ইতিহাস গ্রন্থ হওয়া সত্ত্বেও এ গ্রন্থে ব্যবহৃত উচ্চস্তরের ভাষা ও এর সাহিত্যিক মানের কারণে বিখ্যাত আরবি সাহিত্যিকদের কাছে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। আল্লামা ইবনে কাসির তার এ গ্রন্থের প্রতিটি আলোচনা কোরআন, হাদিস, সাহাবা ও বিভিন্ন মনীষীর উক্তি দ্বারা সমৃদ্ধ করেছেন। এ ক্ষেত্রে লেখক কোনো তথ্য বা বর্ণনাতে অতিরঞ্জন, অতিকথন বা নিজের পক্ষ থেকে কোনো পরিবর্তন, সংযোজন, বিয়োজন পরিহার করেছেন।
আল্লামা ইবনে কাসির তার এ গ্রন্থকে তিন ভাগে ভাগ করেছেন। প্রথম অংশে রয়েছে সৃষ্টিজগতের তত্ত্ব-রহস্য তথা আরশ-কুরসি, আসমান-জমিন ও এগুলোর মধ্যস্থিত যা কিছু আছে তা সৃষ্টি এবং আসমান-জমিনের মধ্যবর্তী যা কিছু আছে সেগুলো সৃষ্টির ইতিহাস। অর্থাৎ আরশ-কুরসি, আসমান-জমিনের মধ্যবর্তী সব কিছু তথা ফেরেশতা, জিন, শয়তান, হজরত আদম (আ.) এর সৃষ্টি, নবী-রাসুলদের ধারাবাহিক আলোচনা, বনি ইসরাইলিদের বর্ণনা, আইয়ামে জাহেলিয়াতের ঘটনা এবং হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর জীবনচরিত ও নবুয়ত লাভ পর্যন্ত সময়ের আলোচনা করা হয়েছে।

দ্বিতীয় অংশে রয়েছে রাসুল (সা.) এর ওফাতের পর থেকে ৭৬৮ হিজরি সাল পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য খলিফা, রাজা-বাদশাহদের উত্থান-পতনের ঘটনা, মনীষীদের বর্ণনা, সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিষয়ের বিস্তারিত বিবরণ। আর তৃতীয় অংশে লেখক অন্তর্ভুক্ত করেছেন মুসলিম উম্মাহর অশান্তি ও বিপর্যয়ের কারণ, ভবিষ্যতে অনুষ্ঠিতব্য মানবজাতির মধ্যে সংঘাত, অশান্তি, বিপর্যয়, যুদ্ধ-বিগ্রহ, ফেৎনা-ফ্যাসাদ, কেয়ামতের আলামত, পুনরুত্থান, হাশর-নশর, কেয়ামত দিবসের ভয়াবহ অবস্থা, জান্নাত ও জাহান্নামের বিবরণ।

ইতিহাস গ্রন্থ রচনায় লেখক তার পূর্বে রচিত গ্রন্থগুলোর রীতি অনুসরণ করেছেন। ঘটনাগুলোর বর্ণনায় তিনি ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন এবং সেগুলোর বর্ণনায় তিনি বিভিন্ন শিরোনাম দিয়েছেন। প্রথমে তিনি বছরের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলো এবং পরবর্তীতে ওই বছর গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের জীবনী আলোচনা করেছেন। কখনও কখনও তিনি তার স্বরচিত কবিতা সন্নিবেশন করেছেন। আবার তথ্য-প্রমাণে তিনি প্রাসঙ্গিক কোরআনের আয়াত ও হাদিস উপস্থাপন করেছেন। ইসলামের ইতিহাস চর্চাকারীদের কাছে তাই এ বিখ্যাত গ্রন্থটি মৌলিক ও নির্ভুল ইতিহাস গ্রন্থ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।
(সংগৃহীত)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া গ্রন্থ যেহেতু ইতিহাসের কিতাব,তাই এতে মউযু' তথা জাল হাদীস,  ও দূর্বল কাহিনী থাকতে পারে।

(০২)
আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া গ্রন্থ  পড়া যাবে।
তবে সাধারণ অবস্থায় আগে ইসলামী ইতিহাসের প্রাথমিক বইপড়ার পর এই গ্রন্থ পড়ার পরামর্শ থাকবে।

আরো জানুনঃ 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...