জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللّٰهُ عَنْهَا قَالَتْ: دَخَلَ عَلَىَّ النَّبِىِّ ﷺ ذَاتَ يَوْمٍ فَقَالَ: هَلْ عِنْدَكُمْ شَىْءٌ؟ فَقُلْنَا: لَا قَالَ: فَإِنِّىْ إِذًا صَائِمٌ. ثُمَّ أَتَانَا يَوْمًا اٰخَرَ فَقُلْنَا: يَا رَسُوْلَ اللّٰهِ أُهْدِىَ لَنَا حَيْسٌ فَقَالَ: أَرِينِيهِ فَلَقَدْ أَصْبَحْتُ صَائِمًا فَأَكَلَ. رَوَاهُ مُسْلِمٌ
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাছে এলেন। তিনি বললেন, তোমার কাছে কী (খাবার) কিছু আছে? আমি বললাম, না (কিছুতো নেই)। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তাহলে আমি (আজ) সিয়াম পালন করবো! এরপর আর একদিন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার কাছে এলেন। (জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কাছে কী খাবার কিছু আছে?) আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমাদের জন্য ‘হায়স’ হাদিয়্যাহ্ এসেছে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আনো, আমাকে দেখাও। আমি সকাল থেকে সওম রেখেছি। তারপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ‘হায়স’ খেয়ে নিলেন।
সহীহ মুসলিম ১১৫৪, তিরমিযী ৭৩৩, নাসায়ী ২৩২৭, সহীহ ইবনু খুযায়মাহ্ ২১৪৩, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৭৯১৩।
এই হাদীসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছেঃ
‘আল্লামা সিনদী (রহঃ) বলেন, আলোচ্য হাদীস প্রমাণ করে যে, কোন ধরনের ওযর ছাড়াই নফল সিয়াম ভঙ্গ করা জায়িয এবং এর উপর অধিকাংশ ‘উলামায়ে আহনাফদের মত রয়েছে। কিন্তু তারা কাযা ওয়াজিব করেছেন। ‘আল্লামা ইবনুল হাম্মাম বলেন, যখন নফল সিয়াম পালনকারিণী রমণীর ঋতুস্রাব আসার কারণে ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় সিয়াম ভঙ্গ হবে, তখন অবশ্যই তা কাযা করতে হবে। এ ব্যাপারে আমাদের ‘উলামাগণের মাঝে কোন মতপার্থক্য নেই। তবে ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ)-এর বিপরীত মত দিয়েছেন। অর্থাৎ তাঁর মতে কাযা ওয়াজিব নয়। ‘আল্লামা খাত্ত্বাবী (রহঃ) বলেন, রাত হওয়ার পূর্বেই নফল সিয়াম ভঙ্গ করা জায়িয, তবে তিনি কাযার কথা উল্লেখ করেননি এবং এর উপর একাধিক সাহাবীর ‘আমাল রয়েছে। তাদের মধ্য হতে ‘আবদুল্লাহ বিন মাস্‘ঊদ, হুযায়ফাহ্, আবূ দারদা, আবূ আইয়ূব আল আনসারী (রাঃ) এবং অনুরূপ কথা বলেছেন ইমাম শাফি‘ঈ ও ইমাম আহমাদ (রহঃ)। ‘আল্লামা ইবনুল কুদামাহ্ (রহঃ) বলেন, যে নফল সিয়াম শুরু করবে, তার জন্য তা পূর্ণ করা মুস্তাহাব, ওয়াজিব নয়। সুতরাং তা পরিত্যাগ করলে তার ওপর কাযা নেই। ইবনু ‘উমার ও ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তারা দু’জনই সিয়াম অবস্থায় সকাল করলেন, অতঃপর সিয়াম ভঙ্গ করলেন।
ইবনু ‘উমার (রাঃ) বলেন, যদি মানতের সিয়াম ও রমাযানের কাযা না হয়, তবে সিয়াম ভঙ্গে কোন সমস্যা নেই। অর্থাৎ- তাতে কোন কাযা নেই। ‘আল্লামা আসকালানী (রহঃ) বলেন, কোন কারণ ছাড়া নফল সিয়াম ভঙ্গ করা জায়িয, এটা জমহূর ‘উলামাগণের মত। আর তারা কাযা ওয়াজিব করেননি, বরং তা মুস্তাহাব রেখেছেন। মির্‘আত প্রণেতা বলেন, নফল সিয়াম ভঙ্গ করা জায়িয এটা জমহূর ‘উলামাগণের কথা দ্বারা প্রমাণিত। আর এটা কাযা ওয়াজিব নয়, এটা জুহায়ফাহ্ এর হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। যা বর্ণনা করেছেন বুখারী ও তিরমিযী। আর এ হাদীসের প্রথম অংশের দ্বারা এটাও প্রমাণিত হয়েছে যে, নফল সিয়ামের জন্য দিনের বেলা নিয়্যাত করা জায়িয আছে।
لمافی الشامیۃ(۳۷۷/۲): وفی الجامع الصغیر قبل نصف النھار وھو الاصح لأنہ لابد من وجود النیۃ فی اکثر النھار ونصفہ من وقت طلوع الفجر الی وقت الضحوۃ الکبری لاوقت الزوال فتشترط النیۃ قبلھا لتتحقق فی الأکثر۔
সারমর্মঃ
অর্ধ দিনের আগেই নিয়ত করতে হবে, এটিই সহীহ মত।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
এখানে মূল মাসয়ালা হলো আপনি কি রোযার নিয়ত অর্ধদিন তথা দ্বীপ্রহরের আগে করেছেন? নাকি পরে করেছেন?
যদি পরে করে থাকেন,তাহলে উক্ত রোযার কাজা আদায় করতে হবেনা।
আর যদি আগেই করে থাকেন,তাহলে উক্ত রোযার কাজা আদায় করতে হবে।
,
প্রশ্নে উল্লেখ রয়েছে যে আপনি ১২-০০ টার দিকে নিয়ত করেছিলেন।
সুতরাং আপনি দেখুন যে আপনার জেলায় অর্ধ দিন, দ্বীপ্রহর এর ওয়াক্ত কয়টায় হয়?
(সহজের জন্য আপনি একটি হিসেব কষুন।
আপনার এলাকার সাহরীর শেষ টাইম কয়টায়,আর ইফতারীর টাইম কয়টায়?
উভয় টাইম এক জায়গায় লিখে এটিকে ফুল দিন ধরে এর অর্ধ দিন বের করুন।)