আস'সালামু আলাইকুম,
**খুব জরুরী মাসালা জানা দরকার,**
আমি নন মুসলিম দেশে থাকি পড়াশোনার জন্য। আমি, মোটামোটি সুন্নাত এর উপর চলার চেষ্টা করি। যেমন, লম্বা দাড়ি, পাঞ্জাবি-পায়জামা, টুপি পরি (আলহামদুলিল্লাহ্‌)।
আমাকে দরকারে পরে এইখানে পার্ট টাইম কাজ করতে হয় একটা গ্রোসারি শপে। আমি এইখানে ক্যাশিয়ার হিসেবে কাজ করি। ক্যাশিয়ারের ৩ টা দায়িত্ব। ১) জিনিস ভালো ভাবে স্ক্যান করা, ২) ডোনেশনের কথা বলা ৩) কোম্পানির নিজের ক্রেডিট কার্ড অফার করা (এই কার্ড এর লাভ বলা)।
এখন, সমস্যা হইলো ৩ নম্বর টা নিয়ে। ক্রেডিট কার্ড এর সাথে সুদ জড়িত। আমি কাস্টোমারদের কে কোম্পানির ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে বলি, নিতে বলি, এইটার লাভ বলি।
আমি, এইখানে প্রায় নয় মাস যাবত কাজ করছি। এই নয় মাসে ২জন লোক (অমুসলিম) আমার কাছ দেখে ক্রেডিট কার্ড এর অফার নিয়ে, কার্ড এর জন্য আবেদন করেছে। ১জন নিজে থেকে আবেদন করেছে, আরেক জন কে আমি লাভ বলেছিলাম। এদের কার্ড নেওয়ার জন্য যে আবেদন করতে হয়, তাও আমি নিজে লিখে দেই নাই (অন্য একজন কে দিয়ে লিখেয়েছিলাম)। প্রায়, ৯৯ ভাগ মানুষই এই কার্ড নিতে না করে দেয়। আমি যাদের মুসলিম হিসেবে জানি, তাদের কখনো এই কার্ড এর অফার বলি না।
সাধারণত, আমি কাস্টোমারদের কে শুধুমাত্র জিজ্ঞাসা করি যে, তারা কি কার্ড নিতে ইচ্ছুক নাকি? আর বলি, কার্ড নিলে কিছু টাকা সেভ করা যাবে ইত্যাদি। যদি কেও কারো কাছ দেখে অফার শুনে কার্ড নেয়, তাহলে কোম্পানি তাকে ৪ ডলার বোনাস দেয়। সেই হিসেবে, আমি ৮ ডলার বোনাস পাইছিলাম।
কার্ড এর কথা বলা ক্যাশিয়ার হিসেবে আমার দায়িত্ব। এখন থেকে, আমি যতটুকু পারি, কার্ড এর কথা না বলার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। কিন্তু, অনেক সময়, ম্যানেজার বা দায়িত্তরত মানুষ আশেপাশে দিয়ে ঘোরাঘুরি করে, খবর নেয় সবাই কাজ করছে কিনা, একজন বেশি কার্ড সেল করতে পারতাছে, আরেকজন পারতাছে না ইত্যাদি।
আমি যেটা জানতে চাই,
১) যদি কেও আমার কাছ থেকে কার্ড এর অফার শুনে, কার্ড নেয় (অথবা আমি শুধু কার্ড এর অফার বলেই গেলাম কিন্তু কেও কার্ড নিলো না), তাহলে কি আমি সুদ সম্পর্কিত হাদিসের সতর্কবাণীর মধ্যে পরে যাবো? যেহেতু আমি নিজে কাস্টমারদের অ্যাপ্লিকেশন পুরা করি না (কিন্তু, অ্যাপ্লিকেশন আমি না করলেও, আমার নাম এ থাকবে যে আমি তাদের কার্ড দিয়েছি, যেহেতু তারা আমার কাছ থেকে অফার শুনেছে বা আমার ক্যাশ থেকে আবেদন করছে)।
২) আমার যে আগের ৮ ডলার জমা হয়েছিলো, অইটা কি এখন দান করে দিবো নেকীর নিয়ৎ ছারা?
৩) আমি যতটুকু পারলাম, কার্ড এর কথা এড়াই যদি কাজ করি, মাঝে মাঝে কার্ড এর কথা বলি, তাহলেও কি হাদিসের সতর্কবাণীর মধ্যে পরে যাবো?
৪) কার্ড এর কথা আমি মানুষ কে বললাম। কেও যদি নিতে চায়, তাহলে অন্য কাওকে দিয়ে তার অ্যাপ্লিকেশন করাই দিলাম (আমার নিজের নামে নিলাম না এবং ৪ ডলারও নিলাম না)। এইটা কি করা যাবে?
৫) কার্ড এর কথা বললাম ই না (আর বল্লেও, এমন ভাবে বললাম, যে কেও নিলো ও না)। তাহলেও কি হাদিসের সতর্কবাণীর মধ্যে পরে যাবো?
এই কোম্পানির কিছু ভালো দিক আছে। যেমন, আমি হুজুর হওয়ার পরেও তারা আমাকে আমার এই পোষাকে কাজ করতে দেয়। তারা আমাকে নামাজ পরার জন্য এক্সট্রা সময় দেয়। তারা আমার দাড়ি নিয়ে কোন সমস্যা করে না।
আমি কিছু কোম্পানির কথা জানি, যেইখানে (অন্য মুসলিম রা কাজ করে), নামাজ এর সময় দেয় না বা নামাজ পড়ার জায়গা নাই (নামাজ কাজা হয়ে যায়), দাড়ি নিয়ে কাজ করা যায় না (কেটে ফেলতে হয়), পাঞ্জাবি-পায়জামা পরে কাজ করা যায় না (তাদের নিদিষ্ট পোশাক পরতে হয়)। সেই হিসেবে এই কোম্পনি অনেক ভালো। ইভেন, আমি যেই এলাকায় থাকি, ওই এলাকায়, আমি একাই হুজুর। আর, এই এলাকা এতো ছোট যে, এইখানে কাজ পাওয়াও অনেক কষ্টের।