আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
150 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (14 points)
closed by
আস'সালামু আলাইকুম,

**খুব জরুরী মাসালা জানা দরকার,**

আমি নন মুসলিম দেশে থাকি পড়াশোনার জন্য। আমি, মোটামোটি সুন্নাত এর উপর চলার চেষ্টা করি। যেমন, লম্বা দাড়ি, পাঞ্জাবি-পায়জামা, টুপি পরি (আলহামদুলিল্লাহ্‌)।

আমাকে দরকারে পরে এইখানে পার্ট টাইম কাজ করতে হয় একটা গ্রোসারি শপে। আমি এইখানে ক্যাশিয়ার হিসেবে কাজ করি। ক্যাশিয়ারের ৩ টা দায়িত্ব। ১) জিনিস ভালো ভাবে স্ক্যান করা, ২) ডোনেশনের কথা বলা ৩) কোম্পানির নিজের ক্রেডিট কার্ড অফার করা (এই কার্ড এর লাভ বলা)।

এখন, সমস্যা হইলো ৩ নম্বর টা নিয়ে। ক্রেডিট কার্ড এর সাথে সুদ জড়িত। আমি কাস্টোমারদের কে কোম্পানির ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে বলি, নিতে বলি, এইটার লাভ বলি।

আমি, এইখানে প্রায় নয় মাস যাবত কাজ করছি। এই নয় মাসে ২জন লোক (অমুসলিম) আমার কাছ দেখে ক্রেডিট কার্ড এর অফার নিয়ে, কার্ড এর জন্য আবেদন করেছে। ১জন নিজে থেকে আবেদন করেছে, আরেক জন কে আমি লাভ বলেছিলাম। এদের কার্ড নেওয়ার জন্য যে আবেদন করতে হয়, তাও আমি নিজে লিখে দেই নাই (অন্য একজন কে দিয়ে লিখেয়েছিলাম)। প্রায়, ৯৯ ভাগ মানুষই এই কার্ড নিতে না করে দেয়। আমি যাদের মুসলিম হিসেবে জানি, তাদের কখনো এই কার্ড এর অফার বলি না।

সাধারণত, আমি কাস্টোমারদের কে শুধুমাত্র জিজ্ঞাসা করি যে, তারা কি কার্ড নিতে ইচ্ছুক নাকি? আর বলি, কার্ড নিলে কিছু টাকা সেভ করা যাবে ইত্যাদি। যদি কেও কারো কাছ দেখে অফার শুনে কার্ড নেয়, তাহলে কোম্পানি তাকে ৪ ডলার বোনাস দেয়। সেই হিসেবে, আমি ৮ ডলার বোনাস পাইছিলাম।

কার্ড এর কথা বলা ক্যাশিয়ার হিসেবে আমার দায়িত্ব। এখন থেকে, আমি যতটুকু পারি, কার্ড এর কথা না বলার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। কিন্তু, অনেক সময়, ম্যানেজার বা দায়িত্তরত মানুষ আশেপাশে দিয়ে ঘোরাঘুরি করে, খবর নেয় সবাই কাজ করছে কিনা, একজন বেশি কার্ড সেল করতে পারতাছে, আরেকজন পারতাছে না ইত্যাদি।

আমি যেটা জানতে চাই,

১) যদি কেও আমার কাছ থেকে কার্ড এর অফার শুনে, কার্ড নেয় (অথবা আমি শুধু কার্ড এর অফার বলেই গেলাম কিন্তু কেও কার্ড নিলো না), তাহলে কি আমি সুদ সম্পর্কিত হাদিসের সতর্কবাণীর মধ্যে পরে যাবো? যেহেতু আমি নিজে কাস্টমারদের অ্যাপ্লিকেশন পুরা করি না (কিন্তু, অ্যাপ্লিকেশন আমি না করলেও, আমার নাম এ থাকবে যে আমি তাদের কার্ড দিয়েছি, যেহেতু তারা আমার কাছ থেকে অফার শুনেছে বা আমার ক্যাশ থেকে আবেদন করছে)।

২) আমার যে আগের ৮ ডলার জমা হয়েছিলো, অইটা কি এখন দান করে দিবো নেকীর নিয়ৎ ছারা?

৩) আমি যতটুকু পারলাম, কার্ড এর কথা এড়াই যদি কাজ করি, মাঝে মাঝে কার্ড এর কথা বলি, তাহলেও কি হাদিসের সতর্কবাণীর মধ্যে পরে যাবো?

৪) কার্ড এর কথা আমি মানুষ কে বললাম। কেও যদি নিতে চায়, তাহলে অন্য কাওকে দিয়ে তার অ্যাপ্লিকেশন করাই দিলাম (আমার নিজের নামে নিলাম না এবং ৪ ডলারও নিলাম না)। এইটা কি করা যাবে?

৫) কার্ড এর কথা বললাম ই না (আর বল্লেও, এমন ভাবে বললাম, যে কেও নিলো ও না)। তাহলেও কি হাদিসের সতর্কবাণীর মধ্যে পরে যাবো?

এই কোম্পানির কিছু ভালো দিক আছে। যেমন, আমি হুজুর হওয়ার পরেও তারা আমাকে আমার এই পোষাকে কাজ করতে দেয়। তারা আমাকে নামাজ পরার জন্য এক্সট্রা সময় দেয়। তারা আমার দাড়ি নিয়ে কোন সমস্যা করে না।

আমি কিছু কোম্পানির কথা জানি, যেইখানে (অন্য মুসলিম রা কাজ করে), নামাজ এর সময় দেয় না বা নামাজ পড়ার জায়গা নাই (নামাজ কাজা হয়ে যায়), দাড়ি নিয়ে কাজ করা যায় না (কেটে ফেলতে হয়), পাঞ্জাবি-পায়জামা পরে কাজ করা যায় না (তাদের নিদিষ্ট পোশাক পরতে হয়)। সেই হিসেবে এই কোম্পনি অনেক ভালো। ইভেন, আমি যেই এলাকায় থাকি, ওই এলাকায়, আমি একাই হুজুর। আর, এই এলাকা এতো ছোট যে, এইখানে কাজ পাওয়াও অনেক কষ্টের।
closed

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
selected by
 
Best answer
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ جَابِرٍ قَالَ : لَعَنَ رَسُوْلَ اللّٰهِ ﷺ أَكَلَ الرِّبَا وَمُوَكِلَه وَكَاتِبَه وَشَاهِدَيْهِ وَقَالَ : «هُمْ سَوَاءٌ». رَوَاهُ مُسْلِمٌ

জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লা‘নাত করেছেন, যে ব্যক্তি সুদ খায়, যে সুদ দেয়, যে সুদের কাগজপত্র লিখে, যে দু’জন সুদের সাক্ষী হয় তাদের সকলের ওপর। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আরো বলেছেন, (গুনাহের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকার কারণে) তারা সকলেই সমান।
(মুসলিম ১৫৪৯, সহীহ আত্ তারগীব ১৮৪৭।)

এই হাদীসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে,  

 هُمْ سَوَاءٌ ‘‘তারা সকলেই সমান’’ অর্থাৎ সুদগ্রহীতা, সুদদাতা, এর লেখক এবং সাক্ষী- এরা সকলেই পাপের সমান ভাগীদার। ‘আল্লামা নববী বলেনঃ এতে সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায় যে, সুদ আদান প্রদান যেমন হারাম, অনুরূপভাবে সুদের চুক্তি লেখা এবং এর সাক্ষী দেয়া উভয়ই হারাম। (শারহে মুসলিম ১১/১২ খন্ড, হাঃ ১৫৯৯; মিরকাতুল মাফাতীহ)

★যেই কোম্পানীর অধিকাংশ কাজই হালাল,সে কোম্পানিতে চাকুরী জায়েজ। 
আর যদি অধিকাংশ কাজই হারাম হয়,তাদের অধিকাংশ কার্যক্রমই হারাম সংশ্লিষ্ট হয়,তাহলে সেখানে চাকুরী করা জায়েজ নেই।      

ফিকহুল বুয়ূ কিতাবে উল্লেখ রয়েছে-

والحاصل ان الاجارة في الخدمة المباحة إنما تصح اذا كانت اجرتها معلومة بانفرادها. ولا تصح فيما اذا لم تكن اجرتها معلومة. فان كان كذلك في خدمات الفنادق...صارت اجرة المؤظف فيها مركبة من الحلال والحرام...وحل التعامل معه بقدر الحلال.
মর্মার্থ: হালাল ও হারাম মিশ্রিত হোটেলে হালাল পরিমাণ লেনদেন করা বৈধ। (ফিকহুল বুয়ূ, ২/১০৫৭)
,
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,  
প্রশ্নে উল্লেখিত কোম্পানির অধিকাংশ কাজই যদি হালাল হয়,তাদের অধিকাংশ কার্যক্রমই হালাল সংশ্লিষ্ট হয়,হারামর সংশ্লিষ্টতা যদি খুবই কম থাকে,তাহলে সেখানে চাকুরী করা আপনার জন্য জায়েজ হবে।
সেক্ষেত্রে আপনি উল্লেখিত ৫ম নং ছুরত অনুযায়ী কাজ করবেন।
,
(০১)
এটি উক্ত হাদীসের আওতাধীন, তাই এমনটি করা যাবেনা।
,
(০২)
হ্যাঁ সেটি গরিব মিসকিনকে ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া দান করে দিবেন। 

(৩.৪)
এগুলোও উক্ত হাদীসের আওতাধীন, তাই এমনটি করা যাবেনা।

(০৫)
এই ছুরতটি আপনি ইখতিয়ার করবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...