আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
346 views
in খাদ্য ও পানীয় (Food & Drink) by (58 points)
আচ্ছালামু আ'লাইকুম হুজুর, তাফসীরের কিতাবে নিম্ন লিখিত লেখাটি পেলাম।

এ জন্য পারিশ্রমিকের বিনিময়ে মৃতদের ঈসালে সওয়াবের উদ্দেশে কোরআন খতম করানো বা অন্য কোন দোয়া-কালাম ও অযিফা পড়ানো হারাম। [সংক্ষিপ্ত তাফসীরে মারেফুল কুরআন : ৩০ পৃ, মাকতাবাতুল আজহার প্রকাশিত]

এখন প্রশ্ন হলো,
১. জুম্মার দিন বা অন্য কোনো দিন, কারো মৃত্যু উপলক্ষে আসর নামাজের পর দোয়া করায়। যারা দোয়ার আবেদন করে, তারা দোয়ার পর মিষ্টি, জিলাপি, আবার নানা রকম খাবার এর ব্যবস্থা করে। এই খাবার খাওয়া কি জায়েজ হবে? না জায়েজ হলে আগে যা খাওয়া হয়েছে তার কিভাবে কি করা যায়?

২. এছাড়া বিশেষ দোয়া (যেমন: নতুন দোকান দেওয়া, নতুন ব্যবসা শুরু করা, নতুন বাড়িতে যাওয়া ইত্যাদি রকমের) করার পর যে খাবার দেওয়া হয় সেগুলো খাওয়া হুকুম কি?

৩. যদি হাফেজদের দিয়ে ঈসালে সাওয়াব এর উদ্দেশ্য কুরআন খতম করানো হয় আর তাদেরকে একবেলার খাবার খাওয়ানো হয় সেটার হুকুম কি হবে?

1 Answer

0 votes
by (575,580 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
মৃত মানুষের উদ্দেশ্যে মসজিদে ঈসালে ছওয়াবের উদ্দেশ্যে দেওয়া তাবারক ধনীদের জন্য না খাওয়াই উত্তম।
কেননা এটি মাইয়্যিতের নিকটে ছওয়াব পৌছানোর জন্য খাওয়ানো হচ্ছে,আর ধনীকে খাওয়ালে ঈসালে ছওয়াব হবেনা।  

তবে যেহেতু মালিক মুবাহ করে সকলের জন্যই ব্যবস্থা করেছেন,তাই এটি ধনীদের জন্য খাওয়া হারাম হবে না।
জায়েজ হবে,তবে ধনীদের জন্য অনুত্তম।  
গরীব তথা যাদের উপর যাকাত ফরজ নয়,নেসাব পরিমান সম্পদের যারা মালিক নন,তাদের জন্য ঈসালে ছওয়াবের এই ধরনের তাবারক খাওয়া অনুত্তম নয়। 
তারা খেলে ঈসালে ছওয়াব হবে।
এতে মাইয়্যিতের কবরে ছওয়াব পৌছবে। 


বিস্তারিত জানুনঃ 

(০২)
এগুলো যেহেতু ঈসালে ছওয়াবের জন্য নয়,তাই এগুলো ধনী গরিব নির্বিশেষে কাহারো জন্যই অনুত্তম নয়।  

(০৩)
যদি হাফেজদের দিয়ে ঈসালে সাওয়াব এর উদ্দেশ্য কুরআন খতম করানো হয় আর তাদেরকে খাবার খাওয়ানো হয়,সেক্ষেত্রে বিধানঃ-

শরীয়তের বিধান হলো মৃত ব্যক্তির ঈসালে সওয়াবের জন্য কুরআন মজীদ খতম করে বা কুরআন মজীদের কোনো সূরা তিলাওয়াত করে কোনো ধরনের বিনিময় গ্রহণ করা জায়েয নেই। 
,
নির্ভরযোগ্য বর্ণনায় এসেছে, সাহাবী আবদুর রহমান ইবনে শিবল রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমরা কুরআনের বিনিময় গ্রহণ করো না এবং এর দ্বারা আয় বৃদ্ধির চিন্তা করো না।-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ১৫৫২৯ 
,
অন্য বর্ণনায় এসেছে, সাহাবী ইমরান ইবনে হুসাইন রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, তোমরা কুরআন পড় এবং বিনিময় আল্লাহ তাআলার কাছে চাও। তোমাদের পর এমন জাতি আসবে, যারা কুরআন পড়ে এর বিনিময় মানুষের কাছে চাবে।-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ১৯৯১৭ 

★তবে কোনো দুনিয়াবী উদ্দেশ্যে, যেমন-রোগ-ব্যাধি থেকে আরোগ্য লাভ করা, বিপদ-আপদ দূর হওয়া বা ঘরে বরকতের জন্য কোনো সূরা তিলাওয়াত করে বা কুরআন মজীদ খতম করা জায়েজ আছে,এবং এর  বিনিময় নেওয়া,খাবার খাওয়ারও অবকাশ আছে। 

সহীহ বুখারীর এক বর্ণনায় আছে, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. বলেন, সাহাবীদের একটি জামাত জলাশয়ে বসবাসকারী একটি গোত্রের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। ঐ গোত্রের এক ব্যক্তিকে বিচ্ছু দংশন করেছিল।  তাদের একজন এসে সাহাবীদেরকে বলল, আপনাদের মাধ্যে কি কোনো ঝাড়-ফুঁককারী আছেন? আমাদের গোত্রের এক লোককে বিচ্ছু দংশন করেছে। তখন সাহাবীগণের মধ্যে একজন সেখানে গেলেন। এরপর কিছু বকরি দানের বিনিময়ে তিনি সূরা ফাতিহা পড়লেন (এবং ফুঁক দিলেন) ফলে লোকটি আরোগ্য লাভ করল। এরপর তিনি যখন বকরিগুলো নিয়ে অন্যান্য সাহাবীদের নিকট এলেন তারা কাজটি অপছন্দ করলেন এবং বললেন, আপনি আল্লাহর কিতাবের উপর বিনিময় গ্রহণ করছেন!
অবশেষে তারা মদীনায় পৌঁছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! তিনি আল্লাহর কিতাবের উপর বিনিময় গ্রহণ করেছেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনুমতি দিলেন এবং বললেন, তোমরা যে সকল জিনিসের বিনিময় গ্রহণ কর তন্মধ্যে আল্লাহ তাআলার কিতাব সবচেয়ে  উপযুক্ত (অর্থাৎ যখন এর দ্বারা ঝাড়ফুঁক করা  হয়)।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ৫৭৩৭

আরো জানুনঃ 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরত তথা যদি হাফেজদের দিয়ে ঈসালে সাওয়াব এর উদ্দেশ্য কুরআন খতম করানো হয় আর তাদেরকে একবেলার খাবার খাওয়ানো হয়,তাহলে সেটা নাজায়েজ হবে।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...