আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
120 views
in খাদ্য ও পানীয় (Food & Drink) by (9 points)
আসসালামুআলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।রাতের বেলায় খাওয়ার আগে আমি আমার ছোট বোনকে বলেছিলাম যে -রাতে আমি খাবো না, যেটুকু ভাত আছে তুমি সব খেয়ে নিও।অল্প একটু ভাতই ছিলো যদিও,তাও সে সবটুকু না খেয়ে কিছু অংশ রেখে দেয়।শেষ রাতে উঠে দেখি ভাতটা নষ্ট হয়ে গেসে।এখন আমি তাকে দোষারোপ করছি সে পুরোটা খায়নি বলে ভাত নষ্ট হয়ে গেসে আর  সে আমাকে দোষারোপ করছে আমার ভাগের টা আমি খাইনি বলে নষ্ট হয়ে গেসে।এই সিচুুয়েশনে ভাত নষ্টের জন্য কার গুনাহ হবে?
আর আমি মন থেকে অনেক কষ্ট অনুভব করি খাবার নষ্ট হলে। তাও দেখা যায় প্রতিদিন কিছু না কিছু খাবার নষ্ট হয়েই যাই, এ থেকে পরিত্রাণের উপায় এবং কিছু নাসীহা দিলে খুবই উপকৃত হতাম।

1 Answer

0 votes
by (63,160 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

প্রতিনিয়ত আমাদের চারপাশে খাদ্য অপচয়ের অপ্রীতিকর চিত্র চোখে পড়ছে। বিশেষ করে সাধারণ বাড়িঘর, বিবাহের অনুষ্ঠান, হোটেল-রেস্টুরেন্ট, ছাত্রাবাসসহ এমন কোনো স্থান নেই, যেখানে খাবার নষ্ট হচ্ছে না। জাতিসংঘের কৃষি ও খাদ্য সংস্থার গবেষণা অনুযায়ী, পৃথিবীর মোট উৎপাদিত খাদ্যের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ অপচয় হয়। খাদ্য অপচয়ের এমন অসুস্থপ্রবণতা আমাদের জন্য অশনিবার্তা বহন করছে। কেননা, আল্লাহ তায়ালা বলেন,

يَا بَنِي آدَمَ خُذُوا زِينَتَكُمْ عِندَ كُلِّ مَسْجِدٍ وَكُلُوا وَاشْرَبُوا وَلَا تُسْرِفُوا ۚ إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الْمُسْرِفِينَ

হে বনী-আদম! তোমরা প্রত্যেক নামাযের সময় সাজসজ্জা পরিধান করে নাও, খাও ও পান কর এবং অপব্যয় করো না। তিনি অপব্যয়ীদেরকে পছন্দ করেন না।’ (সুরা আরাফ : ৩১)।

 

অপচয় ও অপব্যয়ের কারণে খাদ্যের বরকত উঠে যায়। খাবার হলো মহান আল্লাহর নেয়ামত। রাসুলে কারিম (সা.) খাবার অপচয় থেকে বাঁচতে খাবারের সময় দস্তরখান বিছিয়ে খাওয়ার জন্য বলেছেন। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত,

عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا مَا أَكَلَ طَعَامًا لَعِقَ أَصَابِعَهُ الثَّلاَثَ وَقَالَ " إِذَا مَا وَقَعَتْ لُقْمَةُ أَحَدِكُمْ فَلْيُمِطْ عَنْهَا الأَذَى وَلْيَأْكُلْهَا وَلاَ يَدَعْهَا لِلشَّيْطَانِ " . وَأَمَرَنَا أَنْ نَسْلُتَ الصَّحْفَةَ وَقَالَ " إِنَّكُمْ لاَ تَدْرُونَ فِي أَىِّ طَعَامِكُمُ الْبَرَكَةُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খাওয়ার পরে তাঁর তিনটি আঙ্গুল চাটতেন। তিনি বলতেনঃ তোমাদের কারো খাবারের লোকমা নিচে পড়ে গেলে সে যেন তার ময়লা দূর করে তা খেয়ে নেয় এবং শাইতানের জন্য তা ফেলে না রাখে। (বর্ণনাকারী বলেন,) আমাদেরকে তিনি থালাও চেটে খাওয়ার জন্যে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি আরও বলেছেনঃ তোমাদের খাদ্যের কোন্ অংশে বারকাত রয়েছে তা তোমাদের জানা নেই। (তিরমিজি : ১৮০৩)।

 

পরিশেষে বলব, রাসুল (সা.)-এর কোনো সুন্নতই অনর্থক নয়। প্রতিটি সুন্নতেই আমাদের ইহকালীন ও পরকালীন কল্যাণ নিহিত রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম সুন্নত হলো, খাবারের পর আঙুল চেটে খাওয়া। খাবারের অপচয় থেকে বিরত থাকা। তাই আসুন, আমরা রাসুলে কারিম (সা.) এর এই সুন্নতের ওপর গুরুত্বসহকারে আমল করে জীবনকে ধন্য করি। কেননা, খাবার হলো মহান আল্লাহ তায়ালার নেয়ামত। যে আল্লাহর নেয়ামত পেয়ে শুকরিয়া আদায়ের সহিত হেফাজত করবে না তার জন্য আখেরাতে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। (কপি)

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

১. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আশা করি কারোর গোনাহ হবে না। কারণ, এটা ইচ্ছাকৃত ভাবে হয়নি। তাই আশা করা যায় আল্লাহ তায়ালা মাফ করে দিবেন।

২. প্রতিদিন যেই খাবারটা খাওয়া দাওয়ার পরে থেকে যায় সেটা সম্ভব হলে পাশের কোনো গরীব দুঃখীকে দিয়ে দিবেন। আর এটা সম্ভব না হলে কোনো প্রাণীকে খাওয়ায়ে দিবেন। যেমন, ছাগল, কুকুর ইত্যাদি। আর এটাও সম্ভব না হলে ডাস্টবিনে সওয়াবের নিয়তে ফেলে দিবেন। কারণ, এখান থেকেও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রাণী খায়। যেমন, পিপিলিকা ও আরো ছোট ছোট প্রাণী ইত্যাদি। তাহলে আর খাবার অপচয়ের গোনাহ হবে না ইনশাআল্লাহ। বরং আরো সওয়াব পাবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...