আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
180 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (3 points)
গত ৪ বছর ধরে স্বামী গালাগালি, গায়ে হাত তুলে আসছে।এমন দিন গেছে আমি প্রেগনেন্ট অবস্থা ,বাচ্চা হাতে নিয়েও আমাকে মেরেছে। এত সময় পর এখনও ৩/৪ মাস পর পর আমার গায়ে হাত তুলে,কোনো নরমাল কারণে মাথা গরম হয়ে গেলেই এমন করে। তার কাছে মানসম্মান বেশি,আমি কাউকে এই কথা এখনও বলিনি।কিন্তু নিজেকে আর ঠিক রাখতে পারছিনা।এখন ছেলেও দেখে , মাথা ঠিক হয়ে গেলে আবার ঘণ্টা খানিক পর এসে ক্ষমা চায়,এত বছর আমি ক্ষমা করে দিয়েছি,আমি দূরে থাকতে চায় তার মাথা গরমের সময়,একা একা কান্না করি আল্লাহর কাছে, তাও তার ভাল্লাগেনা,বলে আমি কান্তে পারবোনা।মারে আমাকে। এখন আমি তার প্রতি বিরক্ত হয়ে গিয়েছি। আল্লাহর দ্বীনের প্রতি অবহেলা করে।আমার ৩ বছরের ছেলেও আছে।আমি কি করবো,আমার ভাল্লাগেনা আর।আমাকে যেতে ও দেইনা ।আমি আর পারতেছিনা,আমার অনেক কষ্ট আর ব্যাথা লাগে ।আমি সবসময়ই ক্ষমা করে দিয়েছি।এখন আর পারছিনা।আমাকে কিছু বলেন।আমি কি করবো।সে কিছু বুঝতে চায়না।আমার এখন তার প্রতি ইচ্ছাও চলে গিয়েছে ।তার মাকে বললে বলবে সহ্য করতে হয়। ছেলেও বাবাকে ছাড়া থাকতে পারবেনা,সে নিজে কেও একা রাখতে পারবেনা ।আমি তার জন্য কি করতে পারি? দ্বীনের কথা বললে শুনে ,যা লজিক মনে করে তাই গ্রহণ করে । আল্লাহ হেদায়েত দান করুক তাকে,ঈমানদার করুক চাই আমি। আমাকে মারলে নিজেকে নিজে আঘাত করে যেই হাত দিয়ে মারে। মাথা গরম হলে পাগল হয়ে যায়।আমি অনেক ভয় পাই।আমার ছেলেও এগুলা শিখছে।

আমার ছেলের জন্য অনেক বড়ো নিয়ত নিয়ে এখানে আলিম কোর্সে ভর্তি হওয়া আমার।  কি করব আমি?

1 Answer

0 votes
by (60,240 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

স্বামীর জন্য জরুরি হলো স্ত্রীর অধিকার রক্ষা করা,তার সাথে সদব্যবহার করা।

  

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন

ألا واستوصوا بالنساء خيرا، فإنما هن عوان عندكم ليس تملكون منهن شيئا غير ذلك

শোন হে! তোমরা আমার পক্ষ হতে নারীদের প্রতি সদাচরণের উপদেশ গ্রহণ কর। তারা তো তোমাদের কাছে আটকে আছে। তোমরা তাদের কাছ থেকে এছাড়া আর কিছুর অধিকার রাখো না। (জামে তিরমিযী, হাদীস: ১০৮৩

 

সুতরাং স্ত্রীর উপর স্বামীর খেদমত আবশ্যক,শ্বশুর-শাশুড়ির সেবা স্ত্রীর জন্য একটি অতিরিক্ত কাজ। এটা তার দায়িত্ব নয়,আবশ্যক নয়, কিন্তু বর্তমান সমাজে মনে করা হয়, এটা তার অপরিহার্য দায়িত্ব বরং এটিই যেন তার প্রধান দায়িত্ব। আমাদের সমাজের আবহমান কালের চলমান রীতি হলো, যৌথ পরিবারগুলোতে পুত্রবধূরা শ্বশুর-শাশুড়ির সেবাযত্ন করে থাকেন। এটাকে পারিবারিক দায়িত্ব হিসেবে মনে করা হয়ে থাকে।

ছেলের জন্য বউ আনাই হয় শ্বশুর-শাশুড়ির সেবার জন্য। এ সবই পরিমিতিবোধের চরম লঙ্ঘন। মা-বাবার সেবা করা সন্তানের দায়িত্ব, পুত্রবধূর নয়। (আল-বাহরুর রায়েক ৪/১৯৩, কিফায়াতুল মুফতি ৫/২৩০)

 

যদি স্বামীর মা-বাবার খেদমতের প্রয়োজন হয়, তাহলে স্বামীর কর্তব্য হলো তাঁদের সেবা-যত্ন করা। তবে কোনো স্ত্রী যদি সন্তুষ্টচিত্তে স্বামীর মা-বাবার সেবা করেন, এটা তাঁর পরম সৌভাগ্যের ব্যাপার। এর বিনিময়ে তিনি অনেক সওয়াব পাবেন। তবে এসব করতে আইনত তিনি বাধ্য নন। যদিও কাম্য এটাই যে স্বামীর মা-বাবাকে নিজের মা-বাবার মতো সম্মান ও সমীহের চোখে দেখবেন। তাঁদের মনেপ্রাণে ভালোবাসবেন এবং তাঁদের সেবা করতে পারাকে নিজের জন্য পরম সৌভাগ্য মনে করবেন। অনুরূপ শ্বশুর-শাশুড়িও পুত্রবধূকে নিজের মেয়ের মতো আদর ও খাতির করবেন। তার সুখ-সুবিধার প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখবেন।

 

আপনি আপনার পরিবারের মুরব্বিদেরকে তাদের মুরব্বিদের সাথে বৈঠক করাতে পারেন।

এলাকার মাতব্বরদের সাহায্য নিতে পারেন। কোনো ভাবেই কাজ না হলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারেন।

আরো জানুনঃ 

https://ifatwa.info/10894/?show=10894#q10894

 

 হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ عَمْرِو بْنِ الأَحْوَصِ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي أَنَّهُ، شَهِدَ حَجَّةَ الْوَدَاعِ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ وَذَكَّرَ وَوَعَظَ فَذَكَرَ فِي الْحَدِيثِ قِصَّةً فَقَالَ " أَلاَ وَاسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ خَيْرًا أَلاَ وَحَقُّهُنَّ عَلَيْكُمْ أَنْ تُحْسِنُوا إِلَيْهِنَّ فِي كِسْوَتِهِنَّ وَطَعَامِهِنَّ " .

সুলাইমান ইবনু আমর ইবনুল আহওয়াস (রহঃ) হতে তার পিতার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ

বিদায় হজ্জের সময় তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিলেন। তিনি আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা ও গুণগান করলেন এবং ওয়াজ-নাসীহাত করলেন। এ হাদীসের মধ্যে বর্ণনাকারী একটি ঘটনা বর্ণনা করে বলেনতিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ স্ত্রীদের সাথে ভালো আচরণের উপদেশ নাও। ... জেনে রাখ! তোমাদের প্রতি তাদের অধিকার এই যেতোমরা তাদের উত্তম পোশাক-পরিচ্ছদ ও ভরণপোষণের ব্যবস্থা করবে। (সুনানে তিরমিযী ১১৬৩)

  

 সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

 

১. বোন, সাংসারিক জীবনে অনেক কষ্ট করেই সামনে আগাতে হয়। মন মালিন্য, টুকটাক ঝগড়া থাকবেই। তাই মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়লে হবে না। আল্লাহ তায়ালার কাছে তাহাজ্জদের নামাজ পড়ে বেশী বেশী দুআ করবেন। আবার তাকে কোন ভাবে বুঝিয়ে তাবলীগে চিল্লাতে পাঠাতে পারেন বা IOM এও ভর্তি করিয়ে দিতে পারেন।

 

২. আপনি আপনার পরিবারের মুরব্বিদেরকে তাদের মুরব্বিদের সাথে বৈঠক করাতে পারেন। এলাকার মাতব্বরদের সাহায্য নিতে পারেন। কোনো ভাবেই কাজ না হলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করতেও পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...