আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
197 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (20 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু
শাইখ,বার বার বিরক্ত করার জন্য ক্ষমা পার্থি। আসলে আমি গতবার আমার প্রশ্নটা করেও কাঙ্ক্ষিত উত্তর টা পাই নি। তাই বাধ্য হয়ে আবার করলাম।এই প্রশ্ন টার উত্তর খুজতে খুজতে আমি দিন দিন ডিপ্রেশনে চলে যাচ্ছি!প্রশ্নের উত্তর টা খুব ই জরুরি। আমার জীবনের অনেক কিছু নির্ভর করে এই প্রশ্নের উপর তাই দয়া করে আমাকে প্রশ্ন টা একটু বুঝি বলবেন।

আমার প্রশ্ন টা ছিলোঃ


প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে উপার্জিত অর্থ হালাল হবে কি না।(আমার মাহরাম উক্ত মাধ্যমে উপার্জন করেন)।  যদি ও আমি এই প্রশ্নট পূর্বে ও করেছি,উত্তর ও পেয়েছি, আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু আরেকটু ক্লিয়ার হওয়ার জন্য আবার প্রশ্নটি আপনাকে করা,বার বার বিরক্ত করার জন্য ক্ষমা পার্থি।শাইখ,আমি লক্ষ্য করালাম যে এই ইনকাম কয়েকজন আলেম হারাম বলেছেন আবার কয়েকজন আলেম বলেছেন হালাল।আমি আপনার থেকে সন্তোষজনক উত্তর ই পেয়েছিলাম, আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু, শাইখ ড.মঞ্জুর এলাহির একটা লেকচার আমাকে খুব ভাবাচ্ছে।http://sharevideo1.com/v/VnpSMnFsVGJiaTQ=?t=ytb&f=coউনি বলেছিলেন যে," শরিয়ার একটা মূলনীতি হলো,! যা কিছু নিষিদ্ধ তা করে যদি কেউ ইনকাম করে তাহলে তার সেই ইনকাম ও নিষিদ্ধ!যেমন কেউ যদি সিগেরেট প্রডিউস করে ইনকাম করে সেটা হারাম ইনকাম, কেউ যদি সিগেরেট সার্ভিস দিয়ে ইনকাম করে সেটা হারাম ইনকাম,।আমরা জানি,অশ্লিল কোনো কথা কাজ করে কেউ যদি ইনকাম করে সেটা হারাম ইনকাম, চুরির মাধ্যমে যদি কেউ ইনকাম করে সেটা হারাম ইনকাম। অতএব,হারাম কোনো কাজ করে যদি কেউ ইনকাম করে সেটা ও হারাম ইনকাম""।এই কথা গুলো ই শাইখ তার লেকচারে বলেছিলেন।শাইখের,আরেকটা লেকচার ঃhttp://sharevideo1.com/v/dGpvUFN5Y0RVeXc=?t=ytb&f=co, ।এই লেকচারটা ও যদি একটু দেখতেন।


আর,আমি গতকাল রাতে প্রফেসর মোখতার আহমেদ কে লাইভে জিজ্ঞাস করেছিলাম।উনি লাইভের এক্কেবারে শেষ পর্যায়ে উত্তরটা দিয়েছিলেন খুবই সংখেপে,।উনি বলেছিলেন যে,চাকরি করা টা নাজায়েজ হবে।উনি আরো বলেছিলেন যে,পর্দা রক্ষা করা ফরজ। কিন্তু, সংংক্ষিপ্ত আলোচনা বিধায় আমি ঠিক ভাবে বুঝতে পারি নি।


কিন্তু, আমার মাথায় একটা ঘুরপাক খাচ্ছে যে,শিক্ষকেরা তো আর সহশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছেলে মেয়েদের একসাথে বসানোর মাধ্যমে ফেতনা সৃষ্টি করার জন্য তো আর টাকা পাচ্ছেন না!কিংবা উনাদের পর্দা ভঙ করার জন্য ও কোনো টাকা পাচ্ছেন না!

উনারা তো জাস্ট স্টুডেন্ট দের পড়ানোর জন্য ই সরকার থেকে টাকা পাচ্ছেন,পড়ানোর বিনিময়ে।উল্লিখিত আমার চিন্তা ভাবনা গুলো কতটুকু যুক্তিযুক্ত?

আর,এখন আরেকটা প্রশ্ন ও ঘুরপাক খাচ্ছে যে, "পড়ানোর বিনিময়ে টাকা টা যেহেতু নিচ্ছেন উনি কোনো অলসতা অবহেলা না করে, তাই উনার টাকা টা হারাম হবে না কেনো না উনি পড়ানোর বিনিময়ে ই নিচ্ছেন, পর্দা লঙ্ঘনের জন্য না!কিন্তু এর সাথে আরেকটা প্রশ্ন ও ঘুরপাক খাচ্ছে যে," যদি নিজেকে সংযত রাখা না যায় তাহলে তো আর ওই পড়ানো টা উনার জন্য জায়েজ হবে না।কিন্তু তবুও উনি ওই নাজায়েজ কাজের মাধ্যমে গিয়েই তো উপার্জন করছেন!এখন তো উনার জন্য ওই পড়ানো টা ও জায়েজ নয়!"

শরিয়ার একটা মূলনীতি হলো,"  যা কিছু হারাম তা করে কেউ যদি ইনকাম করে তাহলে সেই ইনকাম ও হারাম!"এইটার আলোকে যদি আমাকে উল্লিখিত দুইটা বিষয়কে বুঝিয়ে বলে আমাকে ডিপ্রেশন মুক্ত করতেন।আমার জীবনের অনেক কিছু এখন এই প্রশ্নের উপর নির্ভর করে,অনুগ্রহ করে উত্তর টা বুঝিয়ে বলবেন।

1 Answer

0 votes
by (59,040 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

 https://ifatwa.info/14986/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, শরীয়তের বিধান অনুযায়ী পর্দা করা ফরজ। সুতরাং কোনো বালেগ পুরুষ কোনো বালেগা মহিলাকে প্রাইভেট পড়াতে পারবেনা।

 আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ      

قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠]

وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١]

মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩০-৩১}

يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী ভঙ্গিতে কথা বলনা, যাতে যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে, জাহেলী যুগের মেয়েদের মত নিজেদের প্রকাশ করো না। {সূরা আহযাব-৩২}

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ

অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}

তবে যদি বিশেষ প্রয়োজন হয়,অন্যত্রে প্রাইভেট পড়া মুশকিল হয়,এখানে প্রাইভেট পড়াইলে ফেতনার আশংকা যদি না থাকে, পুরোপুরি পর্দা করেই যদি মেয়ে পড়তে আসে, সকলেই যদি দৃষ্টির পুরোপুরি হেফাজত করে,এবং প্রাইভেট পড়ানোর পুরো টাইম যদি  মেয়ের কোনো মাহরাম ব্যাক্তি তার কাছে বা সেই রুমেই অবস্থান করে,তাহলে প্রাইভেট পোড়ানো জায়েজ আছে।

বেগানা নারী-পুরুষ খালওয়াত তথা নির্জনে একাকী অবস্থান করতে পারবে না। হাদীসে একে নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়েছে.......

ﻻَ ﻳَﺨْﻠﻮﻥَّ ﺭَﺟُﻞٌ ﺑِﺎﻣْﺮَﺃﺓٍ ﺇِﻻَّ ﻭَﻣَﻌَﻬﺎ ﺫُﻭ ﻣَﺤْﺮَﻡ )

কোনো পুরুষ কোনো মহিলার সাথে মহিলার মাহরাম না থাকা অবস্থায় নির্জনে একাকী বসবাস করতে পারবে না। (সহীহ বুখারী-৫২৩৩;সহীহ মুসলিম-১৩৪১) আরো বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন: https://ifatwa.info/34083/

প্রশ্নকারী প্রিয় দ্বীনী ভাই/বোন!

সুতরাং তাকওয়ার খাতিরে তো এমনিতেই এহেন চাকুরী ছেড়ে দেওয়া উচিত। তদুপরি যদি চাকুরী চালিয়ে গেলে শরীয়াহ নীতিমালা মেনে চলতে হবে। দৃষ্টির হেফাজত করতে হবে। অপ্রয়োজনীয় কথা বলা যাবেনা,ফিতনার আশংকা থাকা যাবেনা,ইত্যাদি ইত্যাদি। এহেন শর্ত মেনে চাকুরী করতে না পারলে  এ চাকরি ছেড়ে দিতে হবে। কারণ, পার্থিব লাভ অর্জনের চাইতে দীনদারি রক্ষা করার গুরুত্ব অবশ্যই বেশি। যদি এমনটি করতে পারে, তাহলে আল্লাহ তাআলা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন,

وَمَنْ يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَلْ لَهُ مَخْرَجًا . وَيَرْزُقْهُ مِنْ حَيْثُ لَا يَحْتَسِبُ

আর যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্যে নিস্কৃতির পথ করে দেবেন এবং তাকে তার ধারণাতীত জায়গা থেকে রিযিক দেবেন। (সূরা তালাক ২,৩)

আরো জানুনঃ https://ifatwa.info/654/

 (এক্ষেত্রে কিছু আলেমদের দৃষ্টিভঙ্গি হলো, যদি তিনি দৃষ্টি নিচু করতে না পারেন,সর্বদায় যদি এই শিক্ষকতার দরুন গুনাহ চলমান থাকে,ফিতনায় জড়িয়ে যায়,তাহলে যেহেতু এ ধরনের প্রতিষ্ঠানে চাকরিই তার গুনাহের কারন,তাই এহেন বেতন জায়েজ গ্রহন হবেনা।)

 

 

 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...