আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
357 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (42 points)
edited by
১)প্রেমিকা প্রেমিককে বলল '"এভাবে হারাম সম্পর্কে থাকা যাবেনা। আল্লাহকে ভয় করতে হবে। আল্লাহর আদেশ সবার আগে মানতে হবে। "

এরপর প্রেমিক বলল," প্লিজ রিলেশনটা ভেঙ্গে না "

এখানে যে প্রেমিক, প্রেমিকাকে বলছে আল্লাহর আদেশ নামেনে তাকে বেশি গুরুত্ব দিতে, এটি কি শিরক হবে???

২)ধরুন কোনো মানুষ তার মনের কথা শুধু আল্লাহর কাছে বলে
কেউ যখন থেকে জিজ্ঞেস করে, "তুমি তোমার সব কথা কার সাথে শেয়ার করো? "

সে উত্তর দেয়,"আল্লাহর সাথে। "

এরপর বিয়ের পর সে তার অনেক একান্ত কথা স্ত্রীর সাথে শেয়ার করে এটা কি শিরক হচ্ছে???

৩)সেদিন একজনের সাথে মেসেঞ্জারে  কথা বলছিলাম। কথা বলার সময় কোন শিরকি কথা হয়ে গেছিল। এরপর আমি মেসেজটি  মুছে দেওয়ার চেষ্টা করলাম  কিন্তু সে অপশনটা খুঁজে পাচ্ছিলাম না। তখন আমি শুধু তাওবা করছি কিন্তু তাকে ব্লক করিনি। গুনা হবে??

৪)ধরুন, কোন গুনাহের জন্য আমি তওবা করিলাম। এরপর যে দুনিয়াবী হালাল কাজ করলে ওই গুনাহটি করার আশঙ্কা তৈরি হয়, সেই কাজ বাদ দিতে পারছিনা। ওই কাজটি করা কি আমার জন্য হারাম???

৫)ধরুন কোনো ব্যক্তি যখন দেখে দুনিয়ায় তার অবস্থান ঠিক আছে তখন সে খুশি হয়। শিরক করছে বলে, কুফর করছে বলে সন্দেহ হইলেও দুঃখিত হয় না।
তার এই মনভাব কি শিরক??

৬) শিরকের তাওবা করার চেয়ে দুনিয়াবি কোন কাজ কে বেশি গুরুত্ব দেওয়া কি শিরক???

৭)ধরুন কোনো মেয়ের বাবা ভাই বাসায় থাকা অবস্থাতেই সেই মেয়ে নিজে থেকে বাসার বাইরে ৬০ মাইল দূরে গিয়ে মাসআলা জেনে আসলো।
বিনা কারণে মেয়েটা এত দূরে যাওয়া যে অন্যায় তা জানি।

 কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে এই অন্যায় কাজ করে সে যে মাসআলা টা জানল সে কি সেই অনুযায়ী আমল করতে পারবে??

৮)ধরুন কেউ জানে যে সুদের চাকরি করা হারাম। কিন্তু সে চাকরি ছাড়তে পারছে না কেননা সে ভয় করতেছে চাকরি ছেড়ে দিলে সে পথে বসে যাবে।

 রিজিকের মালিক আল্লাহ। সে যে আল্লাহর উপর ভরসা না করে রিজিকের ভয়ে করে সুদের চাকরি ছাড়তে পারতেছেনা এটা কি শিরক??

৯)একজন ব্যক্তির করার পর যত দুঃখ পায় তার থেকে বেশি দুঃখিত হয় দুনিয়াবী কোন ক্ষতি হইলে।।

 এই মনোভাব কি শিরক
(যদিও সে শিরক জানতে পারলে তাওবা করে)

১০)মুসলিম খেলোয়াড় এর চেয়ে খ্রিস্টান খেলোয়াড় ভালো খেললে যদি বেশি খুশি লাগে তাইলে কি শিরক বা কুফর হবে??
(আমি জানি বিভিন্ন হারাম যুক্ত থাকার কারণে খেলা দেখা হারাম)

১১)ধরুন একজনের স্কুলে একটা মজার ছিল। সে পরীক্ষার আগে ওই মাজারে সেজদা দিয়ে দুয়া করত। সেটা যে শিরক সেটা সে জানত। পরে সে তওবা করে এবং আল্লাহর কাছে ওয়াদা করেছে আর স্কুলে যাবে না। যেহেতু স্কুলে মাজার আছে তাই আবার শিরক করার আশঙ্কা আছে। এবার তার মন খারাপ লাগছিল। সে যে শিরক করল এজন্য তার মন খারাপ লাগেনি বরং স্কুল যাওয়া বাদ দেওয়া লাগতেছে এজন্য মন খারাপ করতেছে। এই মনভাব কি শিরক??

১২)ধরুন কেউ জানে যে ইলিশ খাওয়া হারাম
সে হারাম জেনেই খায়
এরপর যখন সে জানল হালাল তখন সে কি করবে???

১৩)যদি কেউ বলে আমি আব্বু আম্মুকে খুশি করার জন্য বুয়েটে পড়তে চাই তবে কি শিরক হবে???

১৪)ধরুন,আমি বললাম সারাদিন পড়ার চাপে খাওয়ার সময় পাচ্ছিনা।

 তখন আম্মু বলল আমি তোমাকে খাওয়ার সময় বের করে দিব।তখন আমি বললাম," ধুর তুমি কি? আল্লাহ চাইলে তখনই খাবার সময় বের হবে।" আমি ভাবলাম আম্মু এতে দুঃখ পেল কিনা?? আমি আম্মুকে জিজ্ঞাস করলাম যে "তুমি কি রাগ করলা?? "

এই জিজ্ঞেস করাতে আমার কি গুনাহ বা শিরক হবে??

এখন করনীয় কি??

১৫)ধরুন কোনো এক ভালো ছাত্র পড়াশোনা করতে খুব ভালবাসে।

সে খুব মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করে। বুয়েটে চান্স পেতে চায়। তার আব্বু আম্মু তাকে পরাশুনার জন্য খুব চাপ দেয়।

একবার তার পরীক্ষা হচ্ছিল।তাদের স্কুলে একটা পাথর ছিল।অনেক দিনের পুরনো। মানুষ বলত ওই পাথরের কাছে দুয়া করলে সেটা পুরন হয়।

এরপর সে ওই পাথর কে সিজদা করে বল্ল,"আমার পাশ ফেল, আপনার হাতে।আমার জীবনের ভালো মন্দ আপনার হাতে। দয়া করে আমার পরিক্ষা ভালো করায়া দেন"

সে জানত যে এটা শিরক হচ্ছে।

কিন্তু সে মনে মনে ভাবল শিরক থেকে বাঁচার চেয়ে পরীক্ষা দেওয়াটা,পড়ালেখায় ভালো করাটা তার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

এরপর সে পরীক্ষা শেষ করল।

এখন সে তোওবা করতে চায়।

সে কিভাবে তওবা করবে?

সে কালেমা শাহাদত পড়ে আল্লাহর কাছে এর জন্য মাফ চাইলে এবং যদি প্রতিজ্ঞা করে যে আর কোনদিন এভাবে কাউকে সেজদা দেবে না তাহলেই চলবে??

নাকি পড়াশোনা বাদ দিয়ে দেওয়া লাগবে, যেহেতু সে পড়াশোনা কে শিরক থেকে বেঁচে থাকার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করছিলে এক সময়।

সে যদি তাওবা করে এবং পরাশুনা চালিয়ে যায়,তবে কি কোন সমস্যা আছে??

১৬)আমার একটা মাসালা জানা খুব দরকার। মাসআলা না জানাতে আমি দুনিয়াবী গুরুত্বপূর্ণ একটা কাজ করতে পারছি না। এই সময়ে আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করলাম যাতে আল্লাহ আমাকে এই মাসআলা জানিয়ে দেন। তারপরেও মনে শান্তি পাচ্ছিলাম না। এরপর আমি আলেমের কাছে যে প্রশ্নটা করলাম মেসেঞ্জারে। তার কাছে প্রশ্ন করার পর আমার ভালো লাগছে যে এখন হয়তো আমি মাসআলা জানতে পারব।তখন মনে শান্তি পাচ্ছিলাম।

এই যে আমি আল্লাহর কাছে দুয়া করার পর শান্তি পাচ্ছিলাম না, কিন্তু আলেমের কাছে প্রশ্ন করে শান্তি পাচ্ছিলাম, এতে কি শিরক হবে??


১৭)ধরুন ইউটিউব ফেসবুকে যখন কুরআন তিলাওয়াতের কোন ভিডিও বা ইসলামিক কোন লেকচার ভিডিও পাই তখন সেটাকে আমি একটা ফোল্ডারে রাখি নাম দিছি, " ইসলাম"। আর অন্যান্য আরো ফোল্ডার আছে সেসবে আমি স্বাভাবিক ভিডিও রাখি।

 এখন আমার কি উচিত হবে অন্যান্য ফোল্ডার এর চেয়ে ওই ফোল্ডারকে বেশি সম্মান দেওয়া??


নাকি এটা শিরক??

1 Answer

0 votes
by (575,070 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
ইসলামে বিবাহ পূর্ব প্রেম স্পষ্ট  হারাম।
হাদীসে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন-

اَلْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظْرُ وَالْاُذُنَانِ زِنَاهُمَا الْاِسْتِمَاعُ وَاللِّسَانُ زِنَاهُمَا الْككَلَامُ وَالْيَدُ زِنَاهُمَا الْبَطْشُ وَالرِّجْلُ زِنَاهُمَا الخُطَا وَالْقَلْبُ يَهْوِىْ وَيَتَمَنَّى وَيُصَدِّقُ ذَالِكَ الْفَرْجُ اَوْ يُكَذِّبُه

“দুই চোখের ব্যভিচার হল হারাম দৃষ্টি দেয়া, দুই কানের ব্যভিচার হল পরনারীর কণ্ঠস্বর শোনা, যবানের ব্যভিচার হল অশোভন উক্তি, হাতের ব্যভিচার হল পরনারী স্পর্শ করা, পায়ের ব্যভিচার হল গুনাহর কাজের দিকে পা বাড়ান, অন্তরের ব্যভিচার হল কামনা-বাসনা আর গুপ্তাঙ্গ তা সত্য অথবা মিথ্যায় পরিণত করে।” (মেশকাত ১/৩২)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
বিবাহ পূর্ব প্রেম হারাম,তবে তাহা শিরক নয়।
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে শিরক হবেনা।
তবে তাহা মারাত্মক হারাম কাজ।      
কিছু ইসলামী স্কলারদের মতে ইহা শিরকের নিকটতম। 

বিস্তারিত জানুনঃ  

(০২)
এতে শিরক হবেনা।
,
(০৩)
তাকে ব্লক করা আবশ্যকীয় নয়।
তবে এহেন কথা বলায় আপনার গুনাহ হয়েছে,তওবা করার দ্বারা আল্লাহ তায়ালা মাফ করবেন।
,
(০৪)
ঐ হালাল কাজটি আপনার জন্য হারাম হবেনা।
তবে সতর্কতা মূলক সেই কাজের নিকটে যাবেননা।
,
আল্লাহ তায়ালা বলেন, 
ولا تقربوا الزني إنه كان فاحشة وساء سبيلا 
‘আর ব্যভিচারের কাছেও যেও না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ ও মন্দ পথ।’ (সূরা: বনী ইসরাইল, আয়াত: ৩২)

(৫.৬)
না শিরক নয়।
তবে দ্রুত শিরক থেকে তওবা করে ফিরে আসতে হবে।

(০৭)
হ্যাঁ উক্ত মাসয়ালাটির উপর সে আমল করতে পারবে। 

তবে যদি সে কোনো ভাবে জানতে পারে যে উক্ত মাসয়ালা ভূল,তাহলে আমল করতে পারবেনা।
,
(০৮)
এতে শিরকের কাছাকাছি গুনাহ হবে।
তার জন্য উচিত হলো অন্য চাকুরী দ্রুত খুজে সেই হালাল চাকরিতে জয়েন করা।
আপাতত এই চাকুরী বহাল রেখে হালাল চাকরি সে খুজতে পারে 
তবে পরবর্তীতে ধীরে ধীরে হারাম টাকার সমপরিমাণ টাকা ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনকে দান করে দিতে হবে।
,
(০৯)
এটি শিরক নয়।          

(১০)
এতে শিরক বা কুফর হবেনা।
,
(১১)
এই মনোভাব শিরক নয়।
,
(১২)
সে এটি খাবে।
যদি খেতে না পারে,তাহলে আপাতত আকীদা রাখবে যে এটি হালাল।
,
(১৩)
 না,এতে শিরক হবেনা।

(১৪)
না,এতে শিরক হবেনা।
এতে কোনো সমস্যা হবেনা।
,
(১৫)
সে কালেমা শাহাদত পড়ে আল্লাহর কাছে এর জন্য মাফ চাইলে এবং যদি প্রতিজ্ঞা করে যে আর কোনদিন এভাবে কাউকে সেজদা দেবেনা তাহলেই চলবে।

পড়াশোনা বাদ দিতে হবেনা।

(১৬)
না,এতে শিরক হবেনা।
মাসয়ালা জানার প্রতি আপনার এই আগ্রহ অনেক ভালো।
আল্লাহ তায়ালা আপনাকে উত্তম জাযা দিবেন,ইনশাআল্লাহ।    

(১৭)
হ্যাঁ আপনি সেই ফোল্ডারকে সম্মান করতে পারবেন।
এর জন্য অযু বা আলাদা কিছুর প্রয়োজনীয়তা নেই।
এটি শিরক নয়।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...