আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
333 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (31 points)
আসসালামু আলাইকুম।।
আমি সবসময় আল্লাহর কাছে ভালো একটা কিছু চেয়ে জন্য দোয়া করি।একদিন আমার একবন্ধুকে বললাম তোর ও এই জিনিসটা ভালো হোক ইন শা আল্লাহ। অই বন্ধু এখন বলতেছিলো, "এই জিনিস ভালো জিনিসটা তোর (মানে আমার) না হয়ে আমার হোক,এখন বল ইন শা আল্লাহ।"

আমি সাথে সাথে বলছিলাম ইন শা আল্লাহ।


এখন আমার মনে হচ্ছে আমি কি নিজের জন্য বদ দোয়া করলাম? যে জিনিসটা আল্লাহর কাছে চেয়ে আসলাম সেটা যেন না পাই সে জন্য ইন শা আল্লাহ বলে ফেললাম।এতে করে আমি যে আগে চেয়ে দোয়া করছি সেগুলো কি খারিজ হয়ে যাবে? মনে শান্তি পাচ্ছি না।আমি কি করণীয়।আমার জন্য দোয়া করবেন যেন সেই জিনিসটা পাই

1 Answer

0 votes
by (63,560 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

একজন প্রকৃত মুমিন মানেই সে এ কথায় বিশ্বাসী যে আল্লাহ তায়ালা সর্বজ্ঞ, সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী- তিনি যা চান, তা-ই করেন। তাঁকে বাধ্য করার মতো কেউ নেই। এবং তিনি কোনো কিছু করতে বাধ্যও নন। তাই তো তিনি মানব জাতিকে উপদেশ করেছেন যেন সে ভবিষ্যতে কোনো কিছু করার ইচ্ছা পোষণ বা দৃঢ়প্রতিজ্ঞা করলে অথবা কোনো কিছু অর্জন করার মনস্থ করলে বিষয়টি সম্পাদন হওয়া না-হওয়ার ব্যাপারটি সম্পূর্ণভাবে আল্লাহর মর্জির ওপর ছেড়ে দেওয়া এবং বলে দেওয়া 'ইনশাআল্লাহ'

 

'ইনশাআল্লাহ' বলার দ্বারা কাঙ্ক্ষিত বিষয়ের ওপর ইতিবাচক প্রভাব বৈ নেতিবাচক কোনো প্রভাব পড়ে না। নেতিবাচক প্রভাব 'ইনশাআল্লাহ' মুখে উচ্চারণ না করার ক্ষেত্রেই পড়ে। দেখুন আল্লাহ তায়ালা তাঁর প্রিয় হাবীব মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন- '(হে নবী!) কোনো কাজ সম্পর্কেই কখনো বলো না, আমি এ কাজ করব।' তবে (বলো) আল্লাহ যদি চান (তবে করব) এর দ্বারা বোঝা গেল অতীত বা বর্তমান বিষয়ে নয়; কেবল ভবিষ্যৎ সম্পর্কিত বিষয়েই 'ইনশাআল্লাহ' বলতে হবে।

 

বৈধ কাজে ইনশা আল্লাহ বলা ফজিলতপূর্ণ হলেও যেকোনো অবৈধ কাজ করার আশা ব্যক্ত করে ইনশা আল্লাহ যোগ করা অবৈধ। যেমন চুরি, ডাকাতি, ব্যভিচার, দুর্নীতি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করার ইচ্ছা করে ইনশা আল্লাহ বলা সম্পূর্ণ হারাম।

 

মুমিন তার জীবনের প্রতিটি কাজে আল্লাহকে স্মরণ করবে। সে নির্ভর করবে একমাত্র আল্লাহর উপর, নিজের শক্তি সামর্থর্ ও উপায় উপকরণের উপর নয়। তাইতো মুমিন ভবিষ্যতের কোনো কাজের কথা বলতে ‘‘ইনশাআল্লাহ’’ বলে। ‘‘ইনশাআল্লাহ’’ অর্থ ‘‘যদি আল্লাহ চান’’ এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আদব, যা আল্লাহ কুরআনে শিখিয়েছেন। আল্লাহ কুরআনে বলেছেন

وَمَا تَشَاءُونَ إِلَّا أَن يَشَاءَ اللَّهُ رَبُّ الْعَالَمِينَ

 (অর্থ) ‘‘তোমরা ইচ্ছা করবে না (তোমাদের ইচ্ছা বাস্তবে রূপ নিবে না) যদি না আল্লাহ ইচ্ছা করেন যিনি জগতসমূহের প্রতিপালক।’’-সূরা তাকভীর : ২৯

 

সূরা কাহাফের ২৩ ও ২৪ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সম্বোধন করে বলেছেন, (অর্থ) (হে নবী) কোনো কাজ সম্পর্কে কখনও বলো না ‘‘আমি এ কাজ আগামীকাল করব।  তবে বল ‘‘ইনশাআল্লাহ’’ (আল্লাহ যদি চান তবে করব) এই আয়াত নাযিল হওয়ার প্রেক্ষাপট অনেকেরই জানা আছে। একবার কাফেররা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আসহাবে কাহাফ ও যুল কারনাইন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করল। তখন নবীজী বললেন; আগামীকাল বলব (কিন্তু ইনশাআল্লাহ বলতে ভুলে গেলেন) ফলে পনের দিন ওহী আসা বন্ধ থাকল। তারপর ওহী এলো এবং উপরের আয়াতটি অবতীর্ণ হল।

আল্লাহ আমাদের পূর্ণ অনুভূতির সাথে ‘‘ইনশাআল্লাহ’’ বলার এবং ইসলামের অন্যান্য আদবও অভ্যাসে পরিণত করার তাওফীক দান করুন। আমীন। (কপি)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!


পেরেশানী হওয়ার কোন কারণ নেই। কারণ, ইনশাআল্লাহ বলার দ্বারা ঐ জিনিসটা তার জন্য নিশ্চিত হয়ে যাবে বিষয়টা এমন নয়। সুতরাং আল্লাহ তায়ালা যদি আপনার জন্য কল্যাণকর মনে করেন এবং জিনিসটা বৈধ জিনিস হয় তাহলে তা আপনাকেই দিবেন। আর যদি আপনার বন্ধুর জন্য কল্যাণকর মনে করেন তাহলে তাকেই দিবেন। এতে মন খারাপ করার কিছু নেই। বরং আল্লাহ তায়ালার কাছে বেশী বেশী দুআ করতে থাকুন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...