আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
347 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (38 points)

১) আমার মনে অনেক ধরনের প্রস্ন উদিত হয় ? এগুল ওয়াস ওয়াসা নাকি অন্যকিছু যেমন নবীজি কি আল্লহ কে দেখতে পান কিনা নামাযে , আমি কি গসল থিক ভাবে করলাম, আল্লাহ যখন বললেন যে আমি পৃথিবী তে প্রতিনিধি সৃষ্টি করব তখন কোন কোন ফেরেশতা তা সুনে ছিল, আমি কি কাফের হয়ে গেলাম কিনা , আমি কি অমুক কথা বা তার কাসে এটা সুনলাম আমার কি ঈমান চলে গেল, এরকম অনেক ধরনের প্রশ্ন। আসলে এসব কি শয়তান আমাকে ওয়াস ওয়াসা দিচ্ছে নাকি এমনি হচ্ছে ?

 

২)কু দৃষ্টি বা খারাপ দৃষ্টি সম্পর্কে কুরান কি বলে? কোরান এ ৬৮ নং সুরা ৫১ নং আয়াত এ কি এই বিষয়ে বলা হচ্ছে ?

৩) হাসান আর হুসাইন রাঃ তারা যে জান্নাতি এর কোন হাদিস আসে কারন আমরা ত জানি ১০ জন সাহাবি পৃথিবী তে জান্নাতের সুসংবাদ পেয়েছেন ?

1 Answer

0 votes
by (709,320 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
সমাধানঃ-
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢ : َ ( ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺗَﺠَﺎﻭَﺯَ ﻟِﻲ ﻋَﻦْ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﻣَﺎ ﻭَﺳْﻮَﺳَﺖْ ﺑِﻪِ ﺻُﺪُﻭﺭُﻫَﺎ ﻣَﺎ ﻟَﻢْ ﺗَﻌْﻤَﻞْ ﺃَﻭْ ﺗَﻜَﻠَّﻢ
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা আমার খাতিরে আমার উম্মতের অন্তরে চলে আসা ওয়াসওয়াসা(শয়তানি প্ররোচনা) বিষয়ে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ/শাস্তি প্রদাণ করবেন না।যতক্ষণ না সে কথা বা কাজের মাধ্যমে সেটাকে বাস্তব রূপ দিচ্ছে। (সহীহ বোখারী-২৩৯১,সহীহ মুসলিম-১২৭)

হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﻫﺮﻳﺮﺓ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺃﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠّﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠّﻢ ﻗﺎﻝ : ( ﻳَﺄْﺗِﻲ ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥُ ﺃَﺣَﺪَﻛُﻢْ ﻓَﻴَﻘُﻮﻝُ ﻣَﻦْ ﺧَﻠَﻖَ ﻛَﺬَﺍ ﻣَﻦْ ﺧَﻠَﻖَ ﻛَﺬَﺍ ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﻘُﻮﻝَ ﻣَﻦْ ﺧَﻠَﻖَ ﺭَﺑَّﻚَ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺑَﻠَﻐَﻪُ ﻓَﻠْﻴَﺴْﺘَﻌِﺬْ ﺑِﺎﻟﻠَّﻪِ ﻭَﻟْﻴَﻨْﺘَﻪِ ﻭﻓﻲ ﺭﻭﺍﻳﺔ ﻣﺴﻠﻢ : ( ﺁﻣﻨﺖ ﺑﺎﻟﻠﻪ ﻭﺭﺳﻠﻪ)
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,শয়তান তোমাদের কারো নিকট উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞেস করে, এটা কে বানিয়েছে?ওটা কে বানিয়েছে?শেষ পর্যন্ত জিজ্ঞেস করে, খোদা-কে বানিয়েছে? যখন এমন অবস্থায় কেউ পতিত হবে,সে যেন আল্লাহর নিকট পানাহ চায়।এবং সাথে সাথে সে যেন উক্ত বিষয়ে চিন্তা করা থেকে বিরত থাকে।এক বর্ণনায় এসেছে সে যেন আ'মানতু বিল্লাহি ওয়া রুসুলিহি পড়ে নেয়।(সহীহ বোখারী-৩১০২,সহীহ মুসলিম-১৩৪)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১)
আপনার বর্ণিত অনেকগুলি বিষয় শয়তানের ওয়াসওয়াসা। আর কিছু বিষয়েরর সাথে আ'মলের কোনো সম্পর্ক নেই। বিধায় এগুলো নিয়ে অযথা চিন্তা করার কোনো মানে হয় না। যখনই এমন চিন্তা মনে আসবে , সাথে সাথেই আউযুবিল্লাহ পড়ে নিবেন। 

(২)
আপনার বর্ণিত আয়াতটি হল এই
وَإِن يَكَادُ الَّذِينَ كَفَرُوا لَيُزْلِقُونَكَ بِأَبْصَارِهِمْ لَمَّا سَمِعُوا الذِّكْرَ وَيَقُولُونَ إِنَّهُ لَمَجْنُونٌ
কাফেররা যখন কোরআন শুনে, তখন তারা তাদের দৃষ্টি দ্বারা যেন আপনাকে আছাড় দিয়ে ফেলে দিবে এবং তারা বলেঃ সে তো একজন পাগল।(সূরা কলম-৫১)
অত্র আয়াতে কু দৃষ্টির কোনো বিবরণ নেই। কু দৃষ্টি বলতে আমরা সাধারণত পরনারীর দিকে দৃষ্টিকে বুঝে থাকি। কু দৃষ্টি হারাম ও নাজায়েয। 

চোখের পর্দা সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
 ﻗُﻞ ﻟِّﻠْﻤُﺆْﻣِﻨِﻴﻦَ ﻳَﻐُﻀُّﻮﺍ ﻣِﻦْ ﺃَﺑْﺼَﺎﺭِﻫِﻢْ ﻭَﻳَﺤْﻔَﻈُﻮﺍ ﻓُﺮُﻭﺟَﻬُﻢْ ﺫَﻟِﻚَ ﺃَﺯْﻛَﻰ ﻟَﻬُﻢْ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺧَﺒِﻴﺮٌ ﺑِﻤَﺎ ﻳَﺼْﻨَﻌُﻮﻥَ 
মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।
 ﻭَﻗُﻞ ﻟِّﻠْﻤُﺆْﻣِﻨَﺎﺕِ ﻳَﻐْﻀُﻀْﻦَ ﻣِﻦْ ﺃَﺑْﺼَﺎﺭِﻫِﻦَّ ﻭَﻳَﺤْﻔَﻈْﻦَ ﻓُﺮُﻭﺟَﻬُﻦَّ
 ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে।(সূরা নূর-৩০-৩১) আল্লাহ তা'আলা অন্যত্র বলেন,
ﻳَﻌْﻠَﻢُ ﺧَﺎﺋِﻨَﺔَ ﺍﻟْﺄَﻋْﻴُﻦِ ﻭَﻣَﺎ ﺗُﺨْﻔِﻲ ﺍﻟﺼُّﺪُﻭﺭُ 
চোখের চুরি এবং অন্তরের গোপন বিষয় তিনি জানেন।(সূরা গাফির-১৯)
 ﺇِﻥَّ ﺍﻟﺴَّﻤْﻊَ ﻭَﺍﻟْﺒَﺼَﺮَ ﻭَﺍﻟْﻔُﺆَﺍﺩَ ﻛُﻞُّ ﺃُﻭﻟـﺌِﻚَ ﻛَﺎﻥَ ﻋَﻨْﻪُ ﻣَﺴْﺆُﻭﻻً 
নিশ্চয় কান, চক্ষু ও অন্তঃকরণ এদের প্রত্যেকটিই জিজ্ঞাসিত হবে।(সূরা বনী ইসরাঈল-৩৬) 

(৩)
জান্নাতের সু-সংবাদ প্রাপ্ত দশ সাহাবী ব্যতীত আরো অনেক জান্নাতে যাবে। কেননা এই দশ ব্যতীত রাসূলুল্লাহ সাঃ আরো অনেকের ব্যাপারে জান্নাতের সু-সংবাদ দিয়ে গেছেন। যেহেতু একটি হাদীসে দশজন সাহাবীর নাম এসেছে,তাই এ দশজন সাহাবী জান্নাতি হিসেবে প্রসিদ্ধি লাভ করেছেন। এ দশজন ছাড়া হামযা বিন আব্দুল মুত্তালিবও জান্নাতে যাবেন,এবং বেলাল ইবনে আবি রাবাহ সহ আরো অসংখ্য সাহাবাদের সম্পর্কে জান্নাতের সু-সংবাদ রয়েছে।তারা জান্নাতে যাবেন।

হযরত হামযা রাযি সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,
قال رسول الله ﷺ: (سَيِّدُ الشُّهَدَاءِ حَمْزَةُ بن عَبْدِ الْمُطَّلِبِ) رواه
হামযা ইবনে আব্দুল মুত্তালিব শহীদদের সর্দার।(মুসতাদরাকে হাকীম-৪৮৮৪,তাবারানি-কাবির-২৯৫৮)
 
বেলাল ইবনে আবি রাবাহ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,
(يَا بِلَالُ بِمَ سَبَقْتَنِي إِلَى الجَنَّةِ؟ مَا دَخَلْتُ الجَنَّةَ قَطُّ إِلَّا سَمِعْتُ خَشْخَشَتَكَ أَمَامِي)
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলছেন,হে বেলাল ইবনে আবি রাবাহ! যখনই আমি স্বপ্নযোগে জান্নাতে যাই,তোমার নড়াচড়া শুনতে পাই।সুনানে তিরমিযি-৩৬৮৯)
 
ইয়াসিরের পরিবারবর্গ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,
قال رسول الله ﷺ («صَبْرًا يَا آلَ يَاسِرٍ، فَإِنَّ مَوْعِدَكُمُ الْجَنَّةُ)
হে ইয়াসির তুমি ধর্য্য ধারণ করো! তোমার ঠিকানা জান্নাত।(মুসতাদরাকে হাকিম-৫৬৪৬,তাবারানি-কবির-৭৬৯)
 
উকাশাহ ইবনে মিহসান জান্নাতি। এ সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন- 9367

হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাযি থেকে বর্ণিত
عن أبي سعيد الخدري قال: قال رسول الله - صلى الله عليه وسلم -: (الحسن والحسين سيدا شباب أهل الجنة)
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,হাসান এবং হুসাইন জান্নাতের যুবকদের সর্দার হবে।(সুনানে তিরমিযি-৩৭৬৮)

قال رسول الله ﷺ: (الْحَسَنُ وَالْحُسَيْنُ سَيِّدَا شَبَابِ أَهْلِ الْجَنَّةِ , وَأَبُوهُمَا خَيْرٌ مِنْهُمَا)
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,হাসান এবং হুসাইন জান্নাতের যুবকদের সর্দার হবে।এবং তাদের পিতা তাদের থেকেও উত্তম।(হাকীম-৪৭৭৯,ইবনে মা'জা-১১৮,মসনদে আহমদ-১০৯৯৯)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...