আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
232 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (10 points)

আসসালামু ওয়ালাইকুম। ফেমিনিজম রিলেটেড একটা প্রশ্ন ছিলো।

Encyclopedia Britannica এর সংজ্ঞানুসারে Feminism হলো,

Feminism, the belief in social, economic, and political equality of the sexes.

আর সব টাইপের ফেমিনিজমের ক্ষেত্রেই এ সংজ্ঞা সত্য। সেটা মুসলিম ফেমিনিজম হোক বা অন্য যেকোনো টাইপ ফেমিনিজমই হোক না কেন। ওদের মূল Base এটাই যে সামাজিক,অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমতা বা সমান সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা।

এখন ফেমিনিজমের একদম বেসিক এই বিলিভটিই ইসলামের সাথে সম্পূর্ন সাংঘর্ষিক। শুধু তাই না, এটি কুরআন এর সুরা নিসা এর ৩৪ নং আয়াতটির সাথেই সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। আয়াতটি হলো-

"পুরুষরা নারীদের তত্ত্বাবধায়ক, এ কারণে যে, আল্লাহ তাদের একের উপর অন্যকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এবং যেহেতু তারা নিজদের সম্পদ থেকে ব্যয় করে। সুতরাং পুণ্যবতী নারীরা অনুগত, তারা লোকচক্ষুর অন্তরালে হিফাযাতকারিনী ঐ বিষয়ের যা আল্লাহ হিফাযাত করেছেনে।"

সুতরাং, ইসলাম কখনোই সামাজিক,অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমতা বা সমান সুযোগ সুবিধার কথা বলে না। তো যে ব্যক্তি যে কোনো ধরনের ফেমিনিজম আইডিওলজি বিলিভ করে, সে এ আয়াতকে অস্বীকার , আয়াতটির প্রতি বিদ্বেষপোষণ কিংবা অন্যভাবে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করবেই। আর কেউ কুরআন এর যেকোনো আয়াত এর প্রতি এরকম চিন্তা করলে তাকে তা ইসলাম থেকে খারিজ করে দেয়।

এখন সে হিসেবে যেকোনো ধরনের ফেমিনিজম কেই কুফর বলা যায় কিনা, হয় সেটা মুসলিম ফেমিনিজম বা অন্য ধরনের ফেমিনিজমই হোক না কেন?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


ফ্যামিনিজম কুরআন হাদীস এর খেলাফ হওয়ায় তাহা মানা,কুরআন হাদীস না মানার নামান্তর। 
বিধায় তাহা কুফরি হবে।
,   
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

اَلرِّجَالُ قَوّٰمُوۡنَ عَلَی النِّسَآءِ بِمَا فَضَّلَ اللّٰہُ بَعۡضَہُمۡ عَلٰی بَعۡضٍ وَّ بِمَاۤ اَنۡفَقُوۡا مِنۡ اَمۡوَالِہِمۡ ؕ فَالصّٰلِحٰتُ قٰنِتٰتٌ حٰفِظٰتٌ لِّلۡغَیۡبِ بِمَا حَفِظَ اللّٰہُ ؕ وَ الّٰتِیۡ تَخَافُوۡنَ نُشُوۡزَہُنَّ فَعِظُوۡہُنَّ وَ اہۡجُرُوۡہُنَّ فِی الۡمَضَاجِعِ وَ اضۡرِبُوۡہُنَّ ۚ فَاِنۡ اَطَعۡنَکُمۡ فَلَا تَبۡغُوۡا عَلَیۡہِنَّ سَبِیۡلًا ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ عَلِیًّا کَبِیۡرًا ﴿۳۴﴾ 

পুরুষরা নারীদের কর্তা, কারণ আল্লাহ তাদের এককে অপরের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এবং এজন্য যে, পুরুষ তাদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে, কাজেই পূণ্যশীলা স্ত্রীরা অনুগতা এবং লোকচক্ষুর আড়ালে আল্লাহর হেফাযতে তারা হেফাযত করে। আর স্ত্রীদের মধ্যে যাদের অবাধ্যতার আশংকা কর তাদেরকে সদুপদেশ দাও, তারপর তাদের শয্যা বর্জন কর এবং তাদেরকে প্রহার কর। যদি তারা তোমাদের অনুগত হয় তবে তাদের বিরুদ্ধে কোন পথ অন্বেষণ করো না। নিশ্চয় আল্লাহ শ্ৰেষ্ঠ, মহান।
(সূরা নিসা ৩৪ নং আয়াত) 

وَ لَہُنَّ مِثۡلُ الَّذِیۡ عَلَیۡہِنَّ بِالۡمَعۡرُوۡفِ ۪ وَ لِلرِّجَالِ عَلَیۡہِنَّ دَرَجَۃٌ ؕ وَ اللّٰہُ عَزِیۡزٌ حَکِیۡمٌ ﴿۲۲۸﴾

আর নারীদের তেমনি ন্যায়সংগত অধিকার আছে যেমন আছে তাদের উপর পুরুষদের; আর নারীদের উপর পুরুষদের মর্যাদা আছে। আর আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
(সূরা বাক্বারা ২২৮ নং আয়াত) 

★দুই জন নারীর সাক্ষ্য একজন পুরুষের সাক্ষ্যের সমান।
এক্ষেত্রেও নারী পুরুষ সমান নয়। 

★উত্তরাধিকারের ব্যাপারে শরীয়াহর অবস্থান।
এক্ষেত্রেও নারী পুরুষ সমান নয়। 

★আক্বল ও দ্বীনে নারীর অসম্পূর্ণতা।
জাহান্নামীদের অধিকাংশ হবে নারী। 
সুতরাং নারী পুরুষ সমান নয়। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدِيْثُ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ خَرَجَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم فِي أَضْحَى أَوْ فِطْرٍ إِلَى الْمُصَلَّى فَمَرَّ عَلَى النِّسَاءِ فَقَالَ يَا مَعْشَرَ النِّسَاءِ تَصَدَّقْنَ فَإِنِّي أُرِيتُكُنَّ أَكْثَرَ أَهْلِ النَّارِ فَقُلْنَ وَبِمَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ تُكْثِرْنَ اللَّعْنَ وَتَكْفُرْنَ الْعَشِيرَ مَا رَأَيْتُ مِنْ نَاقِصَاتِ عَقْلٍ وَدِينٍ أَذْهَبَ لِلُبِّ الرَّجُلِ الْحَازِمِ مِنْ إِحْدَاكُنَّ قُلْنَ وَمَا نُقْصَانُ دِينِنَا وَعَقْلِنَا يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ أَلَيْسَ شَهَادَةُ الْمَرْأَةِ مِثْلَ نِصْفِ شَهَادَةِ الرَّجُلِ قُلْنَ بَلَى قَالَ فَذَلِكِ مِنْ نُقْصَانِ عَقْلِهَا أَلَيْسَ إِذَا حَاضَتْ لَمْ تُصَلِّ وَلَمْ تَصُمْ قُلْنَ بَلَى قَالَ فَذَلِكِ مِنْ نُقْصَانِ دِينِهَا


আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাযি.) হতে বর্ণিত, একবার ঈদুল আযহা অথবা ঈদুল ফিতরের সালাত আদায়ের জন্য আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদগাহের দিকে যাচ্ছিলেন। তিনি মহিলাদের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বললেনঃ হে মহিলা সমাজ! তোমরা সাদকা করতে থাক। কারণ আমি দেখেছি জাহান্নামের অধিবাসীদের মধ্যে তোমরাই অধিক। তাঁরা জিজ্ঞেস করলেনঃ কী কারণে, হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেনঃ তোমরা অধিক পরিমাণে অভিশাপ দিয়ে থাক আর স্বামীর অকৃতজ্ঞ হও। বুদ্ধি ও দ্বীনের ব্যাপারে ত্রুটি থাকা সত্ত্বেও একজন সদাসতর্ক ব্যক্তির বুদ্ধি হরণে তোমাদের চেয়ে পারদর্শী আমি আর কাউকে দেখিনি। তাঁরা বললেনঃ আমাদের দ্বীন ও বুদ্ধির ত্রুটি কোথায়, ইয়া রাসূলাল্লাহ? তিনি বললেনঃ একজন মহিলার সাক্ষ্য কি একজন পুরুষের সাক্ষ্যের অর্ধেক নয়? তাঁরা উত্তর দিলেন, ‘হ্যাঁ’। তখন তিনি বললেনঃ এ হচ্ছে তাদের বুদ্ধির ত্রুটি। আর হায়য অবস্থায় তারা কি সালাত ও সিয়াম হতে বিরত থাকে না? তাঁরা বললেন, ‘হ্যাঁ।’ তিনি বললেনঃ এ হচ্ছে তাদের দ্বীনের ত্রুটি।

সহীহুল বুখারী, অধ্যায় ৬, হাঃ ৩০৪; মুসলিম, পর্ব ১: ঈমান, অধ্যায় ৩৪, হাঃ ৭৯, ৮০

,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ্ ব্যতীত যদি অন্য কাউকে আমি সিজদা করার নির্দেশ দিতাম, তাহলে স্ত্রীকে তার স্বামীকে সিজদা করার অনুমতি দিতাম। [তিরমিযীঃ ১১৫৯]

এ ধরনের হাদীসও এসেছে যে যদি কোনো মানুষকে সিজদাহ করার অনুমতি থাকত তাহলে স্বামীকে সিজদাহ করার অনুমতি থাকতো।

ফ্যামিনিজম এই আয়াত ও হাদীস গুলোর পুরোপুরি বিরোধী। 
সুতরাং তাহা কুফরি।
,
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
প্রাথমিক সংজ্ঞায় সব ধরনের  ফ্যামিনিজম সরাসরি কুফরি না হলেও আস্তে-ধীরে কুফরির দিকেই নিয়ে যায়।
আস্তে-ধীরে মুরতাদ হওয়ার দিকেই নিয়ে যায়।
আর অধিকাংশ সংজ্ঞা তো সরাসরি কুফরি।  
তাই এহেন ধ্যান ধারণা ইত্যাদি পরিত্যাজ্য।     


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...