بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
মন থেকে সন্তুষ্ট না থাকা সত্বেও যদি দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক মুসলিম
পুরুষ একজন পুরুষ ও দুইজন নারী সাক্ষির সামনে বিয়ের ইজাব কবুল তথা প্রস্তাব ও গ্রহণ
হয়ে থাকে। তাহলে বিয়ে সম্পন্ন হয়ে যায়।যদিও পাত্র বা পাত্রী বিয়ে করতে মন থেকে রাজি
না হয়ে থাকে। কারণ বিধান প্রযোজ্য হয় বাহ্যিক অবস্থার উপর। আর বাহ্যিক ইজাব কবুল প্রমাণ
করে বিয়েতে পাত্র পাত্রী রাজি।
সেই হিসেবে উক্ত মেয়েকে বিয়ে করতে আপনি রাজি না থাকলেও যদি বিয়ের
মজলিসে বিয়ের জন্য ইসলামের যেসব শর্ত আছে,
পুরণ করে বিয়ে করে থাকেন, তাহলে বিয়ে হয়ে গেছে।
তাকে কোন যৌক্তিক কারণ ছাড়া তালাক দেয়া ঠিক হবে না।
জোর করে বিয়ে দেয়া যদিও একটি অনৈতিক কাজ, তবে কুমারী মেয়ের সম্মতি থাকলেই (কুমারী নারীর ক্ষেত্রে নীরবতাই সম্মতি)
জোরপূর্বক হলেও বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়। (রদ্দুল মুহতার ৪/৮৭ বাদায়ে’ ২/৬০২)
কেননা, হাদিসে এসেছে, আবু হুরায়রা
রাযি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
ثَلاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ : النِّكَاحُ
، وَالطَّلاقُ ، وَالرَّجْعَةُ
তিনটি বিষয় এমন রয়েছে যা গোস্বায় হোক বা হাসি ঠাট্টায় হোক সর্বাবস্থায়
কার্যকরী হয়ে থাকে। বিবাহ, তালাক ও রজয়াত।
(আবু দাউদ ২১৯৪ তিরমিযি ১১৮৪)
বিয়ের ক্ষেত্রে ছেলে
কিংবা মেয়ের সম্মতি অপরিহার্য। ইসলামের দৃষ্টিতে জোর করে বিয়ে দেয়া অভিভাবকের জন্য
নাজায়েজ এবং আল্লাহর নাফরমানির শামিল।। কেননা,
এর কারণে দাম্পত্যজীবনের মূল নিয়ামক শক্তি প্রেম-ভালোবাসা ও পারস্পরিক
বিশ্বাস ও সম্প্রীতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। আল্লাহর কাছে পানাহ চাই,
অনেক সময় এই দাম্পত্য-কলহ উত্যুঙ্গ আকার ধারণ করে অনেক দুর্ঘটনাও ঘটে
যায়।
وإذا أكرهت المرأة على النكاح، ففعلت، فإنه يجوز العقد
(الفتاوى الهندية-1/294)
যদি কোন মেয়েকে বিয়ের জন্য বাধ্য করা হয় সে (বাধ্য হয়ে ) বিয়ে করে তাহলে বিয়ে হয়ে যাব। (ফাতওয়ায়ে
হিন্দিয়া-১/২৯৪)
*প্রিয় ভাই যদি আপনার বর্ণনা সত্যি হয় তাহলে অবশ্যই
তারা আপনার উপর জুলুম করেছে এবং আপনি যদি মুখে উচ্চারণ করতঃ তাকে তালাক দেন তাহলে তালাক
হয়ে যাবে। যদি মোহর ধার্য করে বিয়ে করে থাকেন, তাহলে উক্ত মেয়ের
সাথে শারীরিক সম্পর্ক বা একান্ত সাক্ষাৎ ছাড়া তালাক দিলে অর্ধেক মোহর পরিশোধ করতে হবে।
আর একান্ত সাক্ষাতের পর তালাক দিলে পূর্ণ মোহর দিতে হবে।
আর যদি মোহর ধার্য করা ছাড়া বিয়ে করে থাকেন, তাহলে একান্ত সাক্ষাৎ ছাড়া বিয়ে করলে স্ত্রীকে
এক জোড়া কাপড় দিতে হবে। আর একান্ত সাক্ষাতের পর তালাক দিলে উক্ত মেয়ের নিকটাত্মীয়দের
বিয়েতে যে পরিমাণ মোহর ধার্য করা হয়ে থাকে, তার সমমানের মোহর
পরিশোধ করতে হবে।আর যদি ঐ মহিলা আপনার মোহরানা ক্ষমা করে দেয় তাহলে তা মাফ হয়ে যাবে।
আপনার উপর পরিশোধ করা আবশ্যক হবে না।
( বি:দ্র: আপনি যেহেতু বিয়েটি ইচ্ছাকৃতভাবে করেননি
বরং আপনাকে বাধ্য করা হয়েছে সেক্ষেত্রে আপনাকে আমরা পরামর্শ দিব যে, আপনি স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তা নিয়ে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করবেন। আল্লাহ
তায়ালা আপনার জন্য সব কিছু সহজ করে দিন।)
وَإِن طَلَّقْتُمُوهُنَّ مِن قَبْلِ أَن تَمَسُّوهُنَّ
وَقَدْ فَرَضْتُمْ لَهُنَّ فَرِيضَةً فَنِصْفُ مَا فَرَضْتُمْ إِلَّا أَن
يَعْفُونَ أَوْ يَعْفُوَ الَّذِي بِيَدِهِ عُقْدَةُ النِّكَاحِ ۚ [٢:٢٣٧]
আর যদি মোহর সাব্যস্ত করার পর স্পর্শ করার পূর্বে তালাক দিয়ে
দাও,তাহলে যে,মোহর সাব্যস্ত করা হয়েছে তার অর্ধেক দিয়ে দিতে হবে। অবশ্য যদি নারীরা ক্ষমা
করে দেয় কিংবা বিয়ের বন্ধন যার অধিকারে সে (অর্থাৎ, স্বামী) যদি
ক্ষমা করে দেয় তবে তা স্বতন্ত্র কথা। [সূরা বাকারা-২৩৭]