بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
https://ifatwa.info/3361/ নং ফাতওয়াতে আমরা উল্লেখ
করেছি যে, শরীয়তের বিধান
অনুযায়ী যৌতুকের বিধানঃ
বর বা অন্যান্য মানুষের চাপে কনে পক্ষ থেকে বিভিন্ন জিনিসপত্র
যেমন কনের জেওর, কাপড়,
আসবাবপত্র ইত্যাদিসহ কোনো টাকা গ্রহন বৈধ নয়। বরং এটি এক প্রকার জুলুম।
এ ধরনের সংস্কৃতি হিন্দু সম্প্রদায়ের মাঝে দেখা যেত।
যদি বর বা তার গার্জিয়ানের পক্ষ থেকে এমন শর্ত করা হয় যে কনে
বা তার গার্জিয়ানের পক্ষ থেকে হাদিয়া তুহফা বা টাকা-পয়সা ইত্যাদি উপঢৌকন না দিলে, উক্ত কনেকে বিবাহই করবে না, তাহলে শর্ত সাপেক্ষে কনের পক্ষ থেকে উক্ত জিনিসপত্র দেওয়া সুদ হিসেবে হারাম
হবে। চাই তা নিজের দিক বা অন্য কারো কাছ থেকে নিয়েই দিক। কেননা বিবাহ বন্ধন হল এমন
একটি বেচা-কেনা যেখানে বিনিময়ে কিছু পাওয়া যায় না। যেমন- অন্যান্য বেচা-কেনার টাকার
বিনিময়ে কাপড়, ধান ইত্যাদি কোনো বস্তু পাওয়া যায়। তাই বিবাহ নামক
বেচা-কেনার মধ্যে শরীয়তের দাবী (যেমন মহর ইত্যাদি) ব্যতীত যে কোনো পক্ষ থেকে টাকা-পয়সা
দেওয়া ও নেওয়া ঘুষ হিসাবে হারাম হবে।
আর বিবাহের পূর্বে,
মেয়ের পিতা ছেলের অসন্তুষ্টিতে, তার নিকট থেকে
দাবীর মাধ্যমে যে টাকা গ্রহণ করে, তাও সুদ। হ্যাঁ ছেলের নিকট দাবী করা ব্যতীত সে সন্তুষ্টচিত্তে
যদি দিয়ে থাকে তাহলে সেটা জায়েয হবে।
হাদীস শরীফে আছে,
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদায় হজ্বের ঐতিহাসিক ভাষণে বলেছেন-
ألا ولا يحل لامرئ من مال أخيه شيء إلا بطيب نفس منه
সাবধান! কারো জন্য তার ভাইয়ের কিছুমাত্র সম্পদও বৈধ নয়, যদি তার স্বতঃস্ফূর্ত সম্মতি না থাকে।–(মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ১৫৪৮৮; সুনানে
দারাকুতনী, হাদীস : ২৮৮৩; শুআবুল ঈমান বায়হাকী,
হাদীস : ৫৪৯২)
অর্থাৎ কেউ কিছু দিলেই তা ভোগ করা হালাল হয় না, যে পর্যন্ত না খুশি মনে দেয়।
কুরআন মজীদে একাধিক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন-
لا تأكلوا اموالكم بينكم بالباطل
তোমরা বাতিল উপায়ে একে অন্যের সম্পদ গ্রাস করো না।-সূরা বাকারা
: ১৮৮; সূরা নিসা : ২৯
*হারাম মাল থেকে হাদিয়া দিলে তা গ্রহণ করা জায়েয
হবে না। আর যার উপার্জন হালাল-হারাম মিশ্রিত সে কোনো কিছু হাদিয়া দিলে তা হালাল মাল
থেকে দিয়েছে বলে জানা গেলে তা নেওয়া বৈধ হবে। হারাম মাল থেকে দিয়েছে জানা গেলে তা
গ্রহণ করা বৈধ হবে না। আর যদি হাদিয়া কোন মাল থেকে দিয়েছে তা জানা না যায় তাহলে
এক্ষেত্রে তার অধিকাংশ উপার্জন হালাল হলে উক্ত হাদিয়া গ্রহণ করা যাবে। আর যদি তার
অধিকাংশ উপার্জন হালাল না হয়ে থাকে তাহলে তার হাদিয়া গ্রহণ করা যাবে না। (মাবসূত, সারাখসী ১০/১৯৭; খুলাসাতুল
ফাতাওয়া ৪/৩৪৮; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৪০০; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৭৩)
প্রশ্নকারী
প্রিয় দ্বীনী বোন!
আপনার স্বামী যেহেতু যৌতুক
হিসেবে কিছু চাননি, বরং আপনার মা খুশি হয়েই তাকে উক্ত জিনিসগুলি হাদিয়া দিয়েছেন,
তাই তার জন্য এই জিনিসগুলি নেওয়া বৈধ এবং
তা ইবাদত কবুল হওয়ার ক্ষেত্রে কোন প্রভাব ফেলবে না। তবে যদি তিনি সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে সেই হাদিয়া গ্রহণ করতে না চান তাহলে
উক্ত বিষয়ে তাকে বাধ্য করাও উচিত হবে না।
কিন্তু আমরা ভাইকে পরামর্শ
দিব যে, শশুর বাড়ী থেকে কোন কিছু প্রত্যাশা না করেই যদি তারা স্বেচ্ছায় কোন হাদিয়া
দেন তাহলে তা গ্রহণ করাই শ্রেয়। অন্যথায় ছোট খাটো বিষয় নিয়েও তৈরী হয় মনোমালিণ্যতা
যা কখনো কখনো পরিবারে অশান্তির কারণ হয়। তবে হ্যাঁ যদি তারা আপনাকে কোন হারাম সম্পদ
থেকে কিছু হাদিয়া দেন তাহলে জেনে শুনে এমন হাদিয়া গ্রহণ করা জায়েয হবে না।