আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+2 votes
314 views
in সালাত(Prayer) by (6 points)
আসসালামু আলাইকুম।
আমার একজন আত্মীয়(বয়স ৮৫) গতকিছুদিন আগে মারা গেছেন। উনি উনার জীবনে কখনো নামাজ পড়তেন আবার কখনো পড়তেন না। কিন্তু মৃত্যুর আগে প্রায় ৫/৬ মাস নিয়মিত  ৪/৫ ওয়াক্ত করে নামাজ পড়তেন। মারা যাওয়ার আগে তিনি তওবা করে গেছেন। এখন উনার সন্তানরা জানতে চাচ্ছেন এই যে এতবছরের কাযা নামায( কমপক্ষে প্রায় ৬০ বছরের) এর বিধান কী হবে? উল্লেখ্য, তিনি জীবিত থাকাকালীন তার সম্পত্তি সন্তানদের মধ্যে বন্টন করে দিয়েছিলেন। মৃত্যুকালে তার উল্লেখযোগ্য কোনো সম্পত্তি ছিলো না এবং তিনি কোনোরকম ওসিয়তও করে যাননি।

1 Answer

0 votes
by (573,060 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


শরীয়তের বিধান হলো যদি মৃত ব্যক্তি তার সম্পদ থেকে তার নামাযের কাফফারা আদায়ের জন্য অসিয়ত করে যায়, আর তার নিজের মালও ছিল। তাহলে তার এক তৃতীয়াংশ সম্পদ থেকে কাফফারা আদায় করতে হবে।আর যদি তার কোন সম্পদ না থাকে, বা সে মাল রেখে গেছে কিন্তু কোন কাফফারা আদায়ের অসিয়ত করে যায়নি। তাহলে মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কাফফারা আদায় করা আত্মীয়দের উপর জরুরী নয়। তবে স্বজনদের কাফফারা আদায় করে দেয়াই উত্তম।সন্তানদের সামর্থ্য থাকলে নিজেদের সম্পত্তি থেকে স্বতঃস্ফূর্ততার  সাথে মরহুম পিতার নাজাতের জন্য কাফ্ফারা আদায় করে দিতে পারেন,তাহলে মাইয়্যিতের জন্য যথেষ্ট হবে, ইনশাআল্লাহ।

আরো জানুনঃ 

ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ
   
ولو مات وعلیہ صلوات فائتۃ وأوصی بالکفارۃ یعطی لکل صلوۃ نصف صاع من برّ کالفطرۃ، وکــذا حکم الوتر والصوم، وإنما یعطی من ثلث مالہ، وفي الشامي: فیلزمہ ذلک من الثلث إن أوصی وإلا فلا یلزم الولي ذلک؛ لأنہا عبادۃ فلابد فیہا من الاختیار، فإذا لم یوص فات الشرط، فیسقط في حق أحکام الدنیا للتعذر، وأما إذا لم یوص فتطوع بہا الوارث فقد قال محمد في الزیادات: إنہ یجزیہ إنشاء اللّٰہ تعالٰی۔ (شامي ۲؍۳۳-۵۳۲ زکریا، کذا في البحر الرئق ۲؍۱۶۰ رشیدیۃ، الفتاویٰ الہندیۃ ۱؍۱۲۵ رشیدیۃ)
সারমর্মঃ
কেহ যদি মারা যায়,আর তার যিম্মায় যদি কাজা নামাজ থাকে,এবং তিনি যদি কাফফারা আদায়ের অসিয়ত করে যায়,তাহলে প্রত্যেক নামাজের জন্য সদকায়ে ফিতর এর ন্যায় অর্ধ সা' গম সদকাহ করতে হবে।
বিতির আর রোযার ক্ষেত্রেও এই ভাবেই ফিদইয়া আদায় করতে হবে।
এটি তার সম্পদের তিন ভাগের এক ভাগ সম্পদ থেকে দিবে।
তবে যদি ওসিয়ত করে না যায়,আর ওয়ারিশগন যদি 
নিজেদের সম্পত্তি থেকে স্বতঃস্ফূর্ততার  সাথে কাফ্ফারা আদায় করে দেয়,তাহলে মুহাম্মদ রহঃ বলেছেন যে এটি  মাইয়্যিতের জন্য যথেষ্ট হবে, 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
  
أخرج ابن أبي شیبۃ عن عمر بن عبد العزیز في صدقۃ الفطر: نصف صاع عن کل إنسان أو قیمتہ نصف درہم۔ (مصنف ابن أبي شیبۃ ۶؍۵۰۸ رقم: ۱۰۴۷۰)
সারমর্মঃ
ওমর বিন আব্দুল আজিজ রহঃ সদকায়ে ফিতর এর ক্ষেত্রে প্রত্যেক মানুষ থকে অর্ধ সা' (গম) অথবা তার মূল্য নিতেন।   

وإن لم یوص وتبرع بہ بعض الورثۃ جاز۔ (حلبی کبیر ۵۳۵)
সারমর্মঃ
যদি ওসিয়ত করে না যায়,তাহলে কতিপয় ওয়ারিশগন যদি তাহা দিয়ে দেয়,তাহলে জায়েজ আছে।   

★বিতরসহ প্রতি ওয়াক্ত নামায হিসেব করে প্রত্যেক ওয়াক্তের জন্য পৌনে দুই সের গম বা আটা অথবা এর বাজার মূল্য গরীব মিসকিনকে মালিক বানিয়ে দান করে দিতে হবে। অথবা প্রতি ওয়াক্তের বদলে একজন গরীবকে দুই বেলা তৃপ্তি সহকারে খানা খাওয়াতে হবে। যা সদকায়ে ফিতির এর টাকা পরিমাণ হয়। (ফতাওয়া শামী-২/৭২)

সহজ কথায়, প্রতিটি নামাযের জন্য সদকায়ে ফিতির পরিমাণ টাকা গরীবকে দান করে দিতে হবে।

আরো জানুনঃ 

,
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তি যেহেতু জীবিত থাকাকালীন তার সম্পত্তি সন্তানদের মধ্যে বন্টন করে দিয়েছিলেন। মৃত্যুকালে তার উল্লেখযোগ্য কোনো সম্পত্তি ছিলো না এবং তিনি কোনোরকম ওসিয়তও করে যাননি।
সুতরাং এক্ষেত্রে তার সন্তানদের উপর তার বাবার নামাজের ফিদইয়াহ আদায় আবশ্যক নয়।
যদি তারা ফিদইয়াহ আদায় না করে,তাহলে সন্তানদের কোনো গুনাহ হবেনা। 
,
তবে যদি তারা নিজেরাই সন্তুষ্টি চিত্তে তাদের বাবার ৬০ বছর নামাজের ফিদইয়াহ আদায় করতে চায়,তাহলে দৈনিক বিতর সহ মোট ৬ ওয়াক্ত   নামাজের হিসেব করে ৬০ বছরের নামাজের সংখ্যা বের করে প্রত্যেক নামাজের জন্য পৌনে দুই সের গম বা আটা অথবা এর বাজার মূল্য (আনুুমানি ৬৫-৭০ টাকা) গরীব মিসকিনকে দান করে দিতে পারে।
এতে তার বাবার সেই নামাজ গুলির কাফফারা আদায় হয়ে যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...