بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
খেলা-ধুলা মানুষের জন্মগত স্বভাব। এর উদ্দেশ্য সাময়িক শরীর চর্চা।
যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। বয়স ভেদে মানুষের শরীর চর্চার ধরনের পরিবর্তন হয়। কিন্তু
সাময়িক শরীর চর্চার বদলে যদি তা কেবল সময়ের অপচয় হয়, স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হয়, যদি ঐ ব্যক্তি দ্বীন থেকে গাফেল হয়, দায়িত্ব বিস্মৃত
হয় বা তাতে জুয়া মিশ্রিত হয়, তখন ঐ খেলা হারামে পরিণত হয়।
প্রত্যেক ঐ মুআমালাকে জুয়া বলা হয়, যা লাভ ও লোকশানের মাঝে
ঝুলন্ত ও সন্দেহযুক্ত থাকে। [জাওয়াহিরুল ফিক্বহ-২/৩৩৬]
যেমনটি বর্তমানের বিভিন্ন টুর্নামেন্টগুলোতে বিদ্যমান। টাকা
দিচ্ছে সবাই সমান সমান। কে সব টাকা পাবে, আর কে পাবে না? তা নিশ্চিত
নয়। একজন অতিরিক্ত টাকার মালিক হচ্ছে। আরেকজন তার মূলধনই হারিয়ে ফেলছে।
যা পরিস্কার জুয়ার অন্তর্ভূক্ত। তাই এভাবে টুর্নামেন্ট খেলা
বৈধ হবে না। তবে যদি আর কোন শরীয়ত বিরোধী কাজ না হয়, তাহলে বিজয়ীদের যদি তৃতীয় কোন পক্ষ পুরস্কার
প্রদান করে, তাহলে তা বৈধ হবে। তখন আর সেটি জুয়ার অন্তর্ভূক্ত
হবে না। বরং তা পুরস্কার বা হাদিয়া হিসেবে গণ্য হবে।
যেমন খেলল দুই দল। পুরস্কার দিল এলাকার কোন গণ্যমান্য ব্যক্তি।
তাহলে আর এটি জুয়া থাকবে না।
يَسْأَلُونَكَ عَنِ الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ ۖ قُلْ
فِيهِمَا إِثْمٌ كَبِيرٌ وَمَنَافِعُ لِلنَّاسِ وَإِثْمُهُمَا أَكْبَرُ مِن
نَّفْعِهِمَا [٢:٢١٩]
তারা তোমাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলে দাও, এতদুভয়ের মধ্যে রয়েছে
মহাপাপ। আর মানুষের জন্যে উপকারিতাও রয়েছে,তবে এগুলোর পাপ উপকারিতা
অপেক্ষা অনেক বড়। [সূরা বাকারা-২১৯]
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّمَا الْخَمْرُ
وَالْمَيْسِرُ وَالْأَنصَابُ وَالْأَزْلَامُ رِجْسٌ مِّنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ
فَاجْتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٥:٩٠]
إِنَّمَا يُرِيدُ الشَّيْطَانُ أَن يُوقِعَ بَيْنَكُمُ
الْعَدَاوَةَ وَالْبَغْضَاءَ فِي الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ وَيَصُدَّكُمْ عَن
ذِكْرِ اللَّهِ وَعَنِ الصَّلَاةِ ۖ فَهَلْ أَنتُم مُّنتَهُونَ [٥:٩١]
হে মুমিনগণ,এই যে মদ, জুয়া,
প্রতিমা এবং ভাগ্য-নির্ধারক শরসমূহ এসব শয়তানের অপবিত্র কার্য বৈ তো
নয়। অতএব, এগুলো থেকে বেঁচে থাক-যাতে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হও।
শয়তান তো চায়, মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের পরস্পরের মাঝে
শুত্রুতা ও বিদ্বেষ সঞ্চারিত করে দিতে এবং আল্লাহর স্মরণ ও নামায থেকে তোমাদেরকে বিরত
রাখতে। অতএব, তোমরা এখন ও কি নিবৃত্ত হবে? [সূরা মায়িদা-৯০-৯১]
খেলাধুলা সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন: https://www.ifatwa.info/673
প্রশ্নকারী প্রিয় দ্বীনী ভাই/বোন!
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে
যেসমস্ত খেলা শরীয়তে নাজায়েজ বলা হয়নি, এমন খেলা যদি নামায বা
ফরয ইবাদত ও লেখাপড়াকে ক্ষতিগ্রস্ত না করে,তাতে যদি বাদ্য-বাজনা
না থাকে,হারাম কিছু (জুয়া,ছতর খোলা) না
থাকে, গায়রে মাহরাম মহিলারা যদি সেখানে না থাকে, তাহলে এ খেলার অনুমোদন দেয়া যেতে
পারে। এবং উক্ত খেলাগুলি যদি জুয়া হিসেবে খেলা না হয়, বরং তৃতীয়
পক্ষ থেকে পুরস্কারের ব্যবস্থা করা হয় যাতে
উভয় পক্ষের প্লেয়ার
বা তাদের কর্তৃপক্ষের কোনো টাকা ইত্যাদি না দিতে হয়,এবং উপরোক্ত শর্ত গুলো পুরোপুরি মানা হয়, তাহলে জায়েজ
আছে অন্যথায় তা জায়েয নেই । সুতরাং প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে যেহেতু সব দল থেকে
টাকা কালেকশন করা হয় বিধায় তা জুয়ার অন্তর্ভুক্ত।