আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
281 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমন কিছু বিষয়ের কথা বর্ণনা করলেন যা আমি স্মরণ রাখতে পারিনি। তোমরা যখন তাদেরকে দেখতে পাবে তখন তাদের নেতার হাতে বায়আত করবে। যদিও বরফের উপর হামাগুড়ি দিয়ে উপস্থিত হতে হয়। কেননা তিনি হলেন আল্লাহর খলীফা মাহদী’’।[3]ইবনে মাজাহ, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ফিতান। ইমাম আলবানী বলেনঃ ‘আল্লাহর খলীফা’ কথাটি ব্যতীত হাদীছের বাকী অংশ সহীহ।

এখানে কি বরফের উপর দিয়ে বলতে কষ্টকে বোঝানো হয়েছে?না সরাসরি বরফকে বোঝানো হয়েছে?দয়া করে জানাবেন।

1 Answer

0 votes
by (573,000 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى، وَأَحْمَدُ بْنُ يُوسُفَ، قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ، عَنْ خَالِدٍ الْحَذَّاءِ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ أَبِي أَسْمَاءَ الرَّحَبِيِّ، عَنْ ثَوْبَانَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " يَقْتَتِلُ عِنْدَ كَنْزِكُمْ ثَلاَثَةٌ كُلُّهُمُ ابْنُ خَلِيفَةٍ ثُمَّ لاَ يَصِيرُ إِلَى وَاحِدٍ مِنْهُمْ ثُمَّ تَطْلُعُ الرَّايَاتُ السُّودُ مِنْ قِبَلِ الْمَشْرِقِ فَيَقْتُلُونَكُمْ قَتْلاً لَمْ يُقْتَلْهُ قَوْمٌ " . ثُمَّ ذَكَرَ شَيْئًا لاَ أَحْفَظُهُ فَقَالَ " فَإِذَا رَأَيْتُمُوهُ فَبَايِعُوهُ وَلَوْ حَبْوًا عَلَى الثَّلْجِ فَإِنَّهُ خَلِيفَةُ اللَّهِ الْمَهْدِيُّ " .

সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের একটি খনিজ সম্পদের নিকট পরপর তিনজন খলীফার পুত্র নিহত হবে। তাদের কেউ সেই খনিজ সম্পদ দখল করতে পারবে না। অতঃপর প্রাচ্যদেশ থেকে কালো পতাকা উড্ডীন করা হবে। তারা তোমাদেরকে এত ব্যাপকভাবে হত্যা করবে যে, ইতোপূর্বে কোন জাতি তদ্রূপ করেনি। অতঃপর তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও কিছু বলেছেনঃ যা আমার মনে নাই। তিনি আরো বলেনঃ তাকে আত্মপ্রকাশ করতে দেখলে তোমরা বরফের উপর হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তার সাথে যোগদান করো। কারণ সে আল্লাহর খলীফা মাহ্দী।
(ইবনে মাজাহ ৪০৮২.৪০৮৪)

★হাদীসটির হুকুমের ব্যাপারে মুহাদ্দিসিনে কেরামগনদের মাঝে মতবিরোধ রয়েছেঃ--     

يقتل عند كنزكم ثلاثة كلهم ابن خليفة، ثم لا يصير إلى واحد منهم، ثم تطلع الرايات السود من قبل المشرق فيقتلونكم قتلا لم يقتله قوم، ثم ذكر شيئا لا أحفظه فقال: فإذا رأيتموه فبايعوه ولوحبوا على الثلج، فإنه خليفة الله المهدي - وفي رواية - إذا رأيتم الرايات السود خرجت من قبل خراسان فأتوها ولو حبوا.. إلخ منكر - أخرجه ابن ماجه (518 - 519) والحاكم (4 / 463 - 464) من طريقين عن خالد الحذاء عن أبي قلابة عن أبي أسماء عن ثوبان مرفوعا بالرواية الأولى، وأخرجه أحمد (5 / 277) عن علي بن زيد، والحاكم أيضا (4 / 502) من طريق عبد الوهاب بن عطاء عن خالد الحذاء عن أبي قلابة به، لكن علي بن زيد وهو ابن جدعان لم يذكر أبا أسماء في إسناده، وهو من أوهامه، ومن طريقه أخرجه ابن الجوزي في كتاب " الأحاديث الواهية " (1445) مختصرا وابن حجر في " القول المسدد في الذب عن المسند " (ص 45) وقال: وعلي بن زيد فيه ضعف وبه أعله المناوي في " فيض القدير " فقال: نقل في " الميزان " عن أحمد وغيره تضعيفه، ثم قال الذهبي: أراه حديثا منكرا، وأورده ابن الجوزي في " الموضوعات " قال ابن حجر: ولم يصب إذ ليس فيهم متهم بالكذب، انتهى قلت: وفي هذا الكلام أخطاء يجب التنبيه عليها 1 - إعلاله الحديث بابن جدعان يوهم أنه تفرد به، وليس كذلك، فقد تابعه خالد الحذاء عند الحاكم وابن ماجه كما تقدم وهو ثقة من رجال الصحيحين 2 - أنه يوهم أن ابن الجوزي أورده من طريق ابن جدعان، وليس كذلك، فإنما أورده في " الموضوعات (2 / 39) من طريق عمرو بن قيس عن الحسن عن أبي عبيدة عن عبد الله يعني ابن مسعود مرفوعا نحوالرواية الثانية عن ثوبان، ثم قال ابن الجوزي: لا أصل له، عمرو لا شيء، ولم يسمع من الحسن، ولا سمع الحسن من أبي عبيدة، قلت: ولا أبو عبيدة سمع من أبيه ابن مسعود، وتعقبه السيوطي في " اللآليء " (1 / 437) بحديث ابن ثوبان هذا، وقد قال في " الزوائد " (ق 249 / 2) : إسناده صحيح ورجاله ثقات، وقال الحاكم: صحيح على شرط الشيخين، ووافقه الذهبي! مع أنه يقول في الميزان : أراه منكرا كما تقدم وهذا هو الصواب، وقد ذهل من صححه عن علته، وهي عنعنة أبي قلابة، فإنه من المدلسين كما تقدم نقله عن الذهبي وغيره في الحديث السابق ولعله لذلك ضعف الحديث ابن علية من طريق خالد كما حكاه عنه أحمد في " العلل " (1 / 356) وأقره، لكن الحديث صحيح المعنى، دون قوله: فإن فيها خليفة الله المهدي فقد أخرجه ابن ماجه (2 / 517 ـ 518) من طريق علقمة عن ابن مسعود مرفوعا نحورواية ثوبان الثانية، وإسناده حسن بما قبله، فإن فيه يزيد بن أبي زياد وهو مختلف فيه فيصلح للاستشهاد به، وليس فيه أيضا ذكر خليفة الله ولا خراسان، وهذه الزيادة خليفة الله ليس لها طريق ثابت، ولا ما يصلح أن يكون شاهدا لها، فهي منكرة كما يفيده كلام الذهبي السابق، ومن نكارتها أنه لا يجوز في الشرع أن يقال: فلان خليفة الله، لما فيه من إيهام ما لا يليق بالله تعالى من النقص والعجز، وقد بين ذلك شيخ الإسلام ابن تيمية رحمه الله تعالى، فقال في " الفتاوى " (2 / 461) : وقد ظن بعض القائلين الغالطين كابن عربي، أن الخليفة هو الخليفة عن الله، مثل نائب الله، والله تعالى لا يجوز له خليفة ولهذا قالوا لأبي بكر: يا خليفة الله! فقال: لست بخليفة الله، ولكن خليفة رسول الله صلى الله عليه وسلم، حسبي ذلك بل هو سبحانه يكون خليفة لغيره، قال النبي صلى الله عليه وسلم: " اللهم أنت الصاحب في السفر، والخليفة في الأهل، اللهم اصحبنا في سفرنا، واخلفنا في أهلنا "، وذلك لأن الله حي شهيد مهيمن قيوم رقيب حفيظ غني عن العالمين، ليس له شريك ولا ظهير، ولا يشفع أحد عنده إلا بإذنه، والخليفة إنما يكون عند عدم المستخلف بموت أو غيبة، ويكون لحاجة المستخلف، وسمي خليفة، لأنه خلف عن الغزووهو قائم خلفه، وكل هذه المعاني منتفية في حق الله تعالى، وهو منزه عنها، فإنه حي قيوم شهيد لا يموت ولا يغيب ... ولا يجوز أن يكون أحد خلفا منه ولا يقوم مقامه، إنه لا سمي له ولا كفء، فمن جعل له خليفة فهو مشرك به

তোমাদের সংরক্ষিত সম্পদের নিকট তিনজনকে হত্যা করা হবে। তাঁরা প্রত্যেক খলিফার পুত্র। অতঃপর তা তাদের মধ্যের একজনের জন্যও হবে না। অতঃপর প্র্যাচ্যের দিক থেকে এক বিরাট দলের ঝাণ্ডা প্রকাশ পাবে। তাঁরা তোমাদের এমনভাবে হত্যা করবে, যেরূপ হত্যাযজ্ঞের সম্মুখীন কোন জাতি হয়নি। অতঃপর তিনি কিছু উল্লেখ করলেন তা আমি হেফয করতে পারিনি। তারপর তিনি বললেনঃ তোমরা যদি তাকে দেখতে পাও তাহলে তার সাথে বাই’য়াত করবে। যদিও বরফের উপর হামাগুড়ি দিয়েও তা করতে হয়। কারন তিনই হচ্ছেন আল্লাহর প্রতিনিধি মাহাদী।

অন্য এক বর্ণনায় এসেছেঃ তোমরা বড় দলের ঝাণ্ডাগুলো দেখতে পাবে। খুরাসানের দিক থেকে বের হয়েছে। তখন তোমরা হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তার নিকট আসবে।

হাদীসটি মুনকার।

ইবনু মাজাহ ৫১৮-৫১৯), হাকিম (৪/৪৬৩-৪৬৪) দুটি সূত্রে খালেদ আল-হাযা সূত্রে আবূ কিলাবা হতে ... হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। এছাড়া ইমাম আহমাদ (৫/২৭৭) আলী ইবনু যায়েদ সূত্রে এবং হাকিম আব্দুল ওয়াহাব সূত্রে ... তার থেকে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। ইবনুল জাওযী “আল-আহাদীসুল ওয়াহিয়াত" গ্রন্থে (১৪৪৫) সংক্ষেপে বর্ণনা করেছেন।

ইবনু হাজার "আল-কাওলুল মুসাদ্দাদ" গ্রন্থে বলেনঃ আলী ইবনু যায়েদ দুর্বল। মানবীও “ফায়যুল কাদীর” গ্রন্থে একই কারণ দর্শিয়েছেন। তিনি বলেনঃ “আল-মীযান” গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আহমাদ ও অন্যরা তাকে দুর্বল (য’ঈফ) আখ্যা দিয়েছেন। অতঃপর যাহাবী বলেনঃ أراه حديثا منكرا আমি এ হাদীসটিকে মুনকারই মনে করি।

ইবনুল জাওযী হাদীসটিকে তার “মাওয়ূ'আত” গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। ইবনু হাজার বলেনঃ জাল হাদীস গ্রন্থে উল্লেখ করাটা সঠিক হয়নি। কারণ এ হাদীসের সনদে এমন কোন ব্যক্তি নেই যাকে মিথ্যার দোষে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তবে ইবনুল জাওযী তার জাল হাদীস গ্রন্থে (২/৩৯) যে সনদে উল্লেখ করেছেন, সে সনদের দিকে লক্ষ্য করলে, তার জাল হিসাবে উল্লেখ করাটা সঠিক হয়েছে। অতঃপর ইবনুল জাওযী বলেনঃ এটির ভিত্তি নেই। আমর কিছুই না। তিনি হাসান হতে শুনেননি এবং হাসান আবু ওবায়দা হতে শুনেননি।

আমি (আলবানী) বলছিঃ আবু ওবায়দা তার পিতা ইবনু মাসউদ (রাঃ) হতেও শুনেননি। সুয়ূতী তার সমালোচনা করে “আল-লাআলী” গ্রন্থে (১/৪৩৭) বলেনঃ তার ইসনাদ সহীহ। হাকিম শাইখায়নের শর্তানুযায়ী সহীহ বলেছেন এবং যাহাবী তার কথাকে সমর্থন করেছেন। অথচ যাহাবী “আল-মীযান” গ্রন্থে বলেছেনঃ আমি হাদীসটিকে মুনকার হিসাবেই দেখছি। মুনকার হওয়াটাই সঠিক। তিনি এটিকে সহীহ বলেছেন মুনকার হওয়ার কারণ ভুলে যাওয়ায়। সেটি হচ্ছে আবূ কিলাবার আন আন সূত্রে বর্ণনা করা। কেননা তিনি মুদাল্লিসদের অন্তর্ভুক্ত, যেমনটি উল্লেখ করেছেন যাহাবী ও অন্যরা। এ জন্যই ইবনু ওলাইয়্যাহ হাদীসটিকে দুর্বল বলেছেন যেমনভাবে ইমাম আহমাদ "আল-ইলাল” গ্রন্থে (১/৩৫৬) ইবনু ওলাইয়্যাহ হতে তা বর্ণনা করে তাকে সমর্থন করেছেন।

তবে “فإنه خليفة الله المهدي” 'কারণ তিনিই হচ্ছেন আল্লাহর প্রতিনিধি মাহদী' এ অংশটুকু বাদ দিয়ে হাদীসটির অর্থ সঠিক। কারণ এ অংশটুকু সাব্যস্ত করার মত কোন বিশুদ্ধ সূত্র নেই। আবু বকর (রাঃ) কে খালীফাতুল্লাহ বলে সম্বোধন করা হলে তিনি বলেনঃ আমি আল্লাহর খলীফা নই বরং আমি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খালীফা। এটি বর্ণনা করেছেন ইমাম আহমাদ তার মুসনাদ গ্রন্থে। আল্লাহ অন্যের খলীফা হন, কেউ তার খালীফা হতে পারেন না।

فقد اختلف أهل الحديث في الحكم على هذا الحديث ما بين مصحح له، ومضعف له.
وعلى أي حال، فإنه لا يلزم من وجود الثلج أن تكون الأرض مروجًا
সারমর্মঃ
হাদীস বীদগন মতবিরোধ করেছে এই হাদিসের হুকুমের সহীহ ও জয়ীফ হওয়ার ব্যাপারে। 
যেটিই হোক বরফের অস্তিত্বের কারনে যমিন তুষারময় হওয়া আবশ্যকীয় নয়।  

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত হাদীস দ্বারা অনেক মুহাদ্দিসিনে কেরামগনই বরফের উপর দিয়ে বলতে কষ্ট করাকে বোঝানো হয়েছে বলে আখ্যায়িত করেছেন। 
,
তবে অনেকে আবার সরাসরি হাদীসের শব্দই হুবহু ঘটবে বলে আখ্যায়িত করেছেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...