আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
467 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (0 points)
তিনটি সময় বাবা মায়ের কক্ষে যেতে অনুমতি নিতে বলা হয়েছে।এ নিয়ে বিস্তারিত জানতে চাচ্ছি।

অন্য সময় কি অনুমতি ছাড়াই ঢোকা যাবে?

"এশার পর" বলতে আসলে কোন সময় বোঝানো হয়েছে?আমরা তো একেকজন একেক সময় এশা পড়ি।

ফজরের আগে মা বাবা ঘুমিয়ে থাকে;আমি ডাকতে গেলে পারমিশন কেমনে নিব?

দুপুরে আমরা একেকজন একেক সময় খাই,নামাজ পড়ি;তাহলে কোন সময়টাতে অনুমতি লাগবে?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
জবাবঃ-
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَدْخُلُوا بُيُوتًا غَيْرَ بُيُوتِكُمْ حَتَّى تَسْتَأْنِسُوا وَتُسَلِّمُوا عَلَى أَهْلِهَا ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ
হে মুমিনগণ, তোমরা নিজেদের গৃহ ব্যতীত অন্য গৃহে প্রবেশ করো না, যে পর্যন্ত আলাপ-পরিচয় না কর এবং গৃহবাসীদেরকে সালাম না কর। এটাই তোমাদের জন্যে উত্তম, যাতে তোমরা স্মরণ রাখ।(সূরা আন-নূর-২৭)

চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ 
"আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায়(৩/১৪৪)"বর্ণিত রয়েছে,
إن من يريد الدخول، إما أن يكون صغيرا غير مميز، أو صغيرا مميزا، أو كبيرا، والمراد بالتمييز هنا: القدرة على وصف العورات
ঘরে প্রবেশের জন্য অনুমতি প্রার্থী ব্যক্তি হয় অবুঝ শিশু হবে,বা বুঝদ্বার(যে শরীরের সাধারণ অঙ্গ ও গোপনাঙ্গ সম্পর্কে ধারণা রাখতে পারে)শিশু হবে কিংবা বালেগ তথা প্রাপ্ত বয়স্ক হবে।
أما الكبير فإنه لا يحل له الدخول بغير استئذان وإذن.
বালেগ তথা প্রাপ্ত বয়স্কর জন্য অনুমতিহীন ঘরে প্রবেশ করা কখনো কোনো মুহূর্তে জায়েয হবে না।
وأما الصغير المميز فقد ذهب الجمهور (عبد الله بن عباس، وعبد الله بن مسعود، وعطاء بن أبي رباح، وطاوس بن كيسان، والحنفية، والمالكية وغيرهم) إلى وجوب أمره بالاستئذان قبل الدخول، في الأوقات الثلاثة التي هي مظنة كشف العورات؛ لأن العادة جرت بتخفف الناس فيها من الثياب.
আর বুঝদ্বার শিশুর বেলায় জুমহুর ফুকাহায়ে কেরাম বলেন,ঐ তিনটি সময়ে অনুমতি নেয়া ওয়াজিব,যে সময় গুলো সাধারণত বিশ্রামের থাকে।যেজন্য সতর খুলে যাবার আশংকা থাকে।কেননা বিশ্রামের সময় ছোট সংক্ষেপ কাপড় পড়ার অভ্যেস মানুষের রয়েছে।
ولا حرج عليه في ترك الاستئذان في غير هذه الأوقات الثلاثة؛ لما في ذلك من الحرج في الاستئذان عند كل خروج ودخول. والصغير ممن يكثر دخوله وخروجه فهو من الطوافين. قال الله تعالى: 
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لِيَسْتَأْذِنكُمُ الَّذِينَ مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ وَالَّذِينَ لَمْ يَبْلُغُوا الْحُلُمَ مِنكُمْ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ مِن قَبْلِ صَلَاةِ الْفَجْرِ وَحِينَ تَضَعُونَ ثِيَابَكُم مِّنَ الظَّهِيرَةِ وَمِن بَعْدِ صَلَاةِ الْعِشَاء ثَلَاثُ عَوْرَاتٍ لَّكُمْ لَيْسَ عَلَيْكُمْ وَلَا عَلَيْهِمْ جُنَاحٌ بَعْدَهُنَّ طَوَّافُونَ عَلَيْكُم بَعْضُكُمْ عَلَى بَعْضٍ كَذَلِكَ يُبَيِّنُ اللَّهُ لَكُمُ الْآيَاتِ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ
বুঝদ্বার শিশুর বেলায় এই তিন সময় ব্যতীত অন্য সময় অনুমতি ব্যতীত প্রবেশের অনুমতি রয়েছে।কেননা এ বয়সে শিশুরা বারংবার ঘরে প্রবেশ করে ও বাহির হয়।আর বারংবার অনুমতি নেয়া অবশ্যই তাদের জন্য কষ্টকর।সুতরাং তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
হে মুমিনগণ! তোমাদের দাসদাসীরা এবং তোমাদের মধ্যে যারা প্রাপ্ত বয়স্ক হয়নি তারা যেন তিন সময়ে তোমাদের কাছে অনুমতি গ্রহণ করে, ফজরের নামাযের পূর্বে, দুপুরে যখন তোমরা বস্ত্র খুলে রাখ এবং এশার নামাযের পর। এই তিন সময় তোমাদের দেহ খোলার সময়। এ সময়ের পর তোমাদের ও তাদের জন্যে কোন দোষ নেই। তোমাদের একে অপরের কাছে তো যাতায়াত করতেই হয়, এমনি ভাবে আল্লাহ তোমাদের কাছে সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ বিবৃত করেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।(সূরা নূর-৫৮)

وذهب أبو قلابة إلى أن استئذان هؤلاء في هذه الأوقات الثلاثة مندوب غير واجب، فكان يقول: " إنما أمروا بهذا نظرا لهم
আবু কিলাবাহ রাহ মনে করেন,এই তিন সময় শিশুদের জন্য অনুমতি নেয়া মুস্তাহাব।ওয়াজিব নয়।তাদের প্রতি সহানুভূতি হিসেবে রুখসত দিয়ে মুস্তাহাব করা হয়েছে।


তিন সময়
تفسير الزمخشري = الكشاف عن حقائق غوامض التنزيل (3/ 253)
 ثَلاثَ مَرَّاتٍ في اليوم والليلة: قبل صلاة الفجر، لأنه وقت القيام من المضاجع وطرح ما ينام فيه من الثياب ولبس ثياب اليقظة. وبالظهيرة، لأنها وقت وضع الثياب للقائلة. وبعد صلاة العشاء لأنه وقت التجرّد من ثياب اليقظة والالتحاف بثياب النوم. وسمى كل واحدة من هذه الأحوال عورة، لأن الناس يختل تسترهم وتحفظهم فيها
(১)ফজরের পূর্বে এজন্য অনমুতি নিতে হয়,যেহেতু তখন ঘুম থেকে উঠার সময়।এবং ঘুমের পোশাককে পরিবর্তন করে জনসমক্ষের পোষাক পরিধানের সময়।(২)দুপুরের সময় এজন্য অনুমতি নিতে হবে যে,তখন কাপড় খুলে ঘুমানোর সময়।এবং এশার নামযের পর এজন্য অনুমতি নিতে হয় যে,তখন জনসমক্ষের কাপড় খুলে ঘুমের পোষাক পরিধানের সময়।এই তিন সময়কে আওরাহ বা পর্দা বলা হয়েছে,কেননা তখন সতরকে হেফাজত করতে হয়।(তাফসীরে কাশশাফ-৩/২৫৩)


সুতরাং যার রুমে প্রবেশ করা হবে,তার এই তিন অবস্থা ধর্তব্য।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...