আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
239 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (3 points)
I m married for eight years. No problems from both husband and wife. But did not get any child. We have tried a lot and consulted with several doctors. Many tests were conducted and  lots of medicines were tried. Now everybody is aking for going to outside the country and try for test tube baby. Can we go for test tube?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাব
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম


মৌলিকভাবে টেষ্টটিউবের মাধ্যমে প্রজননের তিনটি পদ্ধতি। 

(০১)
স্বামী স্ত্রী ব্যাতিত অন্য কোনো মহিলা ও পুরুষের ডিম্বানু ও শুক্রানো মিশ্রণ করে প্রজনন করা। চাই এ দুই অপরিচিত উৎসগিরি [ডিম্বানু ও শুক্রানু] কোন টিউবে একত্র করা হোক, বা সেই মহিলার জরায়ুতে বা অন্য কোন মহিলার জরায়ুতে হোক। অথবা সেই পুরুষের নিয়মসিদ্ধ ও শরয়ীতসিদ্ধ স্ত্রীর জরায়ুতে তা ফিট করা হোক।

এ পদ্ধতিটি একদমই না জায়েজ। কেননা এতে করে প্রজননে সংমিশ্রণ ঘটে। আর ব্যভিচারের মূল নিষিদ্ধতা এ কারণেই। এ ব্যাপারে স্পষ্ট বর্ণনা আছে-রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন-

عَنْ رُوَيْفِعِ بْنِ ثَابِتٍ الأَنْصَارِىِّ قَالَ قَامَ فِينَا خَطِيبًا قَالَ أَمَا إِنِّى لاَ أَقُولُ لَكُمْ إِلاَّ مَا سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- يَقُولُ يَوْمَ حُنَيْنٍ قَالَ « لاَ يَحِلُّ لاِمْرِئٍ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ أَنْ يَسْقِىَ مَاءَهُ زَرْعَ غَيْرِهِ (سنن ابى داود-كتاب النكاح، باب فِى وَطْءِ السَّبَايَ، رقم الحديث-2160)

অনুবাদ-হযরত রুয়াইফি বিন সাবিত আনসারী রাঃ একদা খুতবাদানকালে বলেন-আমি কি তোমাদের বলব না যা আমি রাসূল সাঃ কে বলতে শুনেছি হুনাইন যুদ্ধের দিন? তিনি বলেছেন-আল্লাহ ও আখেরাত বিশ্বাসী কোন ব্যক্তির জন্য বৈধ নয় যে, সে তার পানি [বীর্য} দিয়ে অন্য কারো জমি [জরায়ু] প্রবাহিত করবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৬০, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৬৯৯০, মুসন্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-১৭৭৪৯, আল মু’জামুল কাবীর, হাদীস নং-৪৪৮২}

এ মিশ্রণ থেকে বাঁচার জন্যই বিবাহ বন্ধন থেকে মুক্ত হওয়ার পর স্ত্রীর উপর ইদ্দত পালনকে আবশ্যক করা হয়েছে। শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দেসে দেহলবী রহঃ লিখেন-

منها معرفة براءة رحمها من مائه ، لئلا تختلط الأنساب ، فان النسب  أحد ما يتشاح به ، ويطلبه العقلاء ، وهو من خواص نوع الانسان ، ومما  امتاز به من سائر الحيوان ، (ححة الله البالغة، كتاب النكاح، باب العدة-2/13)

অনুবাদ-ইদ্দত পালনের উপকারিতার মাঝে এটাও একটা যে, এর দ্বারা মহিলার জরায়ু পূর্ব স্বামীর উৎসগিরি [ডিম্বানু] থেকে মুক্ত হওয়া বুঝা যায়। যেন বংশে সংমিশ্রণ সৃষ্টি না হয়। কেননা বংশ এটি এমন বিষয় যার কামনা করা হয়। আর জ্ঞানীরা যার অনুসন্ধানী। যা মানুষের বিশেষত্ব। এর মাধ্যমে মানুষ অন্য প্রাণী থেকে বৈশিষ্টমন্ডিত। {হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগা-২/১৩}

(০২)
স্বামী ও স্ত্রীর উৎসগিরি [শুক্রানু ও ডিম্বানু] সংগ্রহ করে তা টিউবে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত রাখা হবে। তারপর সেটি সেই স্ত্রীর গর্ভে স্থানান্তরিত করা হবে।
এই স্থানান্তরের কাজ স্বামী স্ত্রী ব্যাতিত ৩য় কোনো ব্যাক্তি করবে।

★এই পদ্ধতি নাজায়েজ হওয়ার অন্যতম দুটি কারন রয়েছে।

এক, শরীয়তের দৃষ্টিতে বিশেষ প্রয়োজন ব্যাতিত অন্যের সামনে তে সতর খুলতে হবে।
যাহা জায়েজ নেই।

দুই, এখানে যেই ব্যাক্তি সেই উৎসগিরি [শুক্রানু ও ডিম্বানু]  স্থানান্তরের কাজ করবে,তার কাছে অনেক  উৎসগিরি [শুক্রানু ও ডিম্বানু]  মজুদ থাকে।
সুতরাং এখানে সেই স্বামী স্ত্রীর উৎসগিরি [শুক্রানু ও ডিম্বানু]  রদ বদল হতে পারে।
বিষয়টি অস্বীকার করা যায়না।
যাহা স্পষ্ট অবৈধ সন্তানের নিকটতম  করে দিবে।

ولا يباح النظر والمس الى مابين السرة والركبة الا فى حالة الضرورة بان كانت المرأة ختانة تختن النساء (تحفة الفقهاء-3/334)

অনুবাদ-নাভি ও হাটুর মাঝামাঝি অংশ দেখা এবং স্পর্শ করা জায়েজ নয় প্রয়োজন ছাড়া এবং মহিলাকে খতনা করার সময় খতনাকারী মহিলা ছাড়া। {তুহফাতুল ফুক্বাহা-৩/৩৩৪}

(০৩)
স্বামী ও স্ত্রীর উৎসগিরি [শুক্রানু ও ডিম্বানু] সংগ্রহ করে তা টিউবে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত রাখা হবে। তারপর সেটি সেই স্ত্রীর গর্ভে স্থানান্তরিত করা হবে।
এই স্থানান্তরের কাজ স্বামী নিজেই করবে করবে।
অথবা স্ত্রী নিজেই করবে।
কোনো ৩য় ব্যাক্তি সেখানে থাকতে পারবেনা।
,
★★যখন কোনোভাবেই স্ত্রীর সন্তান না হয়,তখন বিশেষ প্রয়োজনে ফুকাহায়ে কেরামগন এই ৩য় পদ্ধতি অবলম্বন করার অনুমতি প্রদান করেছেন।        
তবে প্রথম দুই পদ্ধতির অনুমতি নেই। 

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে বিশেষ প্রয়োজনে   আপনারা এই ৩য় পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন। 

দারুল উলুম করাচির (১/৬/১৪৩১ হি. ১৭/১২৩৪,৬৫/৬৭৯) ফতোয়া মতে বেশ কয়টি শর্ত সাপেক্ষে ২য় পদ্ধতি অবলম্বনেরও সুযোগ আছে।

★ এক্ষেত্রে প্রথমে সন্তান জন্ম দেওয়ার সকল স্বাভাবিক চেষ্টা সম্পন্ন করতে হবে। এরপর যদি বন্ধ্যাত্ব চিকিৎসার অন্য সব পদ্ধতি ব্যর্থ হয় এবং আর কোনো উপায়ান্তর না থাকে তাহলে সর্ব শেষ চিকিৎসা হিসেবে এই পদ্ধতি গ্রহণ করার সুযোগ নিতে পারবে।

★এ পদ্ধতি গ্রহণ করার প্রতিটি ধাপে সতর ও হিজাবের প্রতি সর্বোচ্চ সচেষ্ট থাকতে হবে। যেমন, স্ত্রীর কাছ থেকে ডিম্বানু সংগ্রহ করা এবং স্ত্রীর জরায়ুতে ভ্রূণ সংস্থাপন করা; এ কাজগুলো মহিলা ডাক্তারকে দিয়ে করাতে হবে।

★পুরুষ ডাক্তার সিরিঞ্জের মাধ্যমে স্বামীর কাছ থেকে বীর্য সংগ্রহ করবে। যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে হস্তমৈথুনের পরিবর্তে নিজ স্ত্রীর সঙ্গে আযলের মাধ্যমে তা সংগ্রহ করবে।

★যাতে করে অপরের বীর্যের সঙ্গে কোনোভাবে কোনো প্রকার গড়মিল না হয়; সন্তান তার পিতৃ পরিচয় লাভের উদ্দেশ্যে অবশ্যই এর প্রতি পরিপূর্ণ খেয়াল রাখতে হবে।

★যেহেতু বন্ধ্যাত্বের কারণে অনেক সময় তালাকের মত দুর্ঘটনা ঘটে থাকে, তাই জরুরতের প্রতি লক্ষ করে উপায়ান্তর না থাকার পরিস্থিতিতে টেস্টটিউব বেবি নেয়ার চিকিৎসা পদ্ধতি অবলম্বনের অনুমতি দেয়া হয়েছে। সুতরাং কেবল বিলাসিতার উদ্দেশ্যে অর্থাৎ, ছেলে চাই-মেয়ে নয় কিংবা মেয়ে চাই- ছেলে নয়; এ জাতীয় উদ্দেশ্যে এই পদ্ধতি গ্রহণ করা জায়েয হবে না।

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
এই ৩য় পদ্ধতিটি ইসলামী স্কলারদের মাঝে মতবিরোধ পূর্ণ, তাই এই পদ্ধতি অবলম্বন না করাই উচিত।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...