আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
501 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)

মহিলা মাদ্রাসায় পুরুষ উস্তায কি মেয়েদের থেকে পড়া শুনতে পারবেন ?
যদি শুনতে পারেন তাহলে পদ্ধতি কি হবে ? বৈধ না হলে কিভাবে পড়া আদায় করবেন ? মেয়েদের কন্ঠ শোনা কখন বৈধ ?  দয়া করে উত্তর দিয়ে বাধিত করবেন ।

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাব
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম


মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ    

يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী ভঙ্গিতে কথা বলনা, যাতে যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে, জাহেলী যুগের মেয়েদের মত নিজেদের প্রকাশ করো না। {সূরা আহযাব-৩২}

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ

অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,

الْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ ، وَإِنَّهَا إِذَا خَرَجَتِ اسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ ، وَإِنَّهَا لا تَكُونُ أَقْرَبَ إِلَى اللَّهِ مِنْهَا فِي قَعْرِ بَيْتِهَا

‘নারী গোপন জিনিস, যখন সে ঘর থেকে বের হয় শয়তান তাকে তাড়া করে। আর সে আল্লাহ তাআলার সবচে’ নিকটতম তখন হয় যখন সে নিজের ঘরের মাঝে লুকিয়ে থাকে।’ (তাবরানী ২৯৭৪)

★গ্রহনযোগ্য মতানুসারে যেহেতু মহিলাদের কন্ঠও সতরের অন্তর্ভুক্ত। 
,
বিস্তারিত জানুনঃ  

তাই অনেক ইসলামী স্কলারদের মতে মহিলা মাদ্রাসায় পুরুষ উস্তাদ বালেগাহ শিক্ষার্থীদের পড়া শুনতে পারবেনা। এতে গুনাহ হবে।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
মহিলা মাদ্রাসায় প্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের পড়ানোর ক্ষেত্রে পুরুষ শিক্ষকের শিক্ষকতা অনেক ইসলামী স্কলারদের মতে সম্পুর্ন নাজায়েজ। তবে কিছু কিছু ইসলামী স্কলারগন কতিপয় শর্তের ভিত্তিতে জায়েজ বলেছেন।
,
শায়েখ আব্দুল্লাহিল হাদী দাঃবাঃ বলেছেন,
মহিলা মহিলা শিক্ষকের নিকট দ্বীনী ইলম ও বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞানার্জন করবে- এটাই সব চেয়ে নিরাপদ ও সঠিক পদ্ধতি। কিন্তু যদি মহিলা শিক্ষক না পাওয়া যায় তখন পর পুরুষের নিকট শর্ত সাপেক্ষে শিক্ষার্জন করা জায়েয আছে। যেমন,

১. নির্জনতা অবলম্বন করা যাবে না।
২.পূর্ণ পর্দা রক্ষা করতে হবে।
৩.নিয়ত শুদ্ব করা।
৪.মাদ্রাসায় যাতায়াতের সময় অভিভাবক সাথে থাকা।
৫.মহিলাকে অন্তরালে থাকতে হবে।
৬.মহিলা কোমল কণ্ঠে কথা বলা থেকে দূরে থাকবে।
৭.তারা উভয়ে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কথা বলবে না
৮.এবং সর্বোপরি ফেতনা থেকে দুরে থাকতে হবে।
৯.ফিতনার বিন্দুমাত্র আশংকা না থাকা,ইত্যাদি।
এ সব শর্ত সাপেক্ষে পরপুরুষের নিকট দ্বীনী ইলম বা দুনিয়াবি প্রয়োজনীয় বিষয় শিক্ষা অর্জন করা জায়েয আছে।
ইবারত পড়া বা সবক শুনানোর ক্ষেত্রে কমল কন্ঠ পরিহার করতে হবে।

হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছেন,

 عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا ، أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، يَقُولُ : " لَا يَخْلُوَنَّ رَجُلٌ بِامْرَأَةٍ ، وَلَا تُسَافِرَنَّ امْرَأَةٌ إِلَّا وَمَعَهَا مَحْرَمٌ ، فَقَامَ : رَجُلٌ ، فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللَّهِ اكْتُتِبْتُ فِي غَزْوَةِ كَذَا وَكَذَا ، وَخَرَجَتِ امْرَأَتِي حَاجَّةً ، قَالَ : اذْهَبْ فَحُجَّ مَعَ امْرَأَتِكَ " . الكتب » صحيح البخاري » كِتَاب الْجِهَادِ وَالسِّيَرِ » بَاب مَنِ اكْتُتِبَ فِي جَيْشٍ فَخَرَجَتِ امْرَأَتُهُ 

তরজমাঃ- আজনবী পুরুষ-মহিলার মাহরাম ব্যতীত পরস্পর খালওয়াত তথা নির্জনে সাক্ষাৎ করবে না।এক ব্যক্তি দাড়িয়ে বলল।অমুক জিহাদে আমার আমার নাম লিখা হয়েছে,অন্যদিকে আমার স্ত্রী হজ্বে যেতে চাচ্ছে।তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন,তুমি তোমার স্ত্রীর সাথে হজ্বে যাও।(বুখারী-২৮০০)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
সবচেয়ে উত্তম হলো মেয়েরা মহিলা শিক্ষকের নিকটে পড়বে আর বর্তমান সময়ে ফেতনা থেকে বাচার জন্য ইহাই সবচেয়ে নিরাপদ পন্থা। তবে যোগ্য মহিলা শিক্ষক না পাওয়া গেলে বিশেষ প্রয়োজনে পুরুষ শিক্ষকের নিকটেও পড়ার অনুমতি রয়েছে। তবে সে ক্ষেত্রে অবশ্যয় উপরে উল্লেখিত শর্তসমূহ মেনে চলতে হবে । অন্যথায় তা বৈধ হবে না। পুরুষ শিক্ষক মেয়েদের সাথে জীবন ঘনিষ্ট কথা বার্তা বা হাস্যরস মূলক কথা বার্তা বলবেনা,এগুলো পরিহার করতে হবে। কেননা এতে ফেতনার আশঙ্কা আছে।

বিস্তারিত জানুনঃ 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...