আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
342 views
in সালাত(Prayer) by (31 points)
আসসালামু আলাইকুম উস্তাদ, আমি জানতে চাচ্ছি হানাফি মাজহাব অনুযায়ী মেয়েদের সলাত এর নিয়ম কি?আমি একেকবার একেক নিয়মে নামাজ পড়ি কিছু মানুষের পোস্ট এবং ইউটিউব দেখে কোনটাই আমার ভালো লাগে না।আমি ছোট থেকেই জড়সড় হয়ে নামাজ পড়ি পা সামনের চার আঙুল ফাক রেখে পিছনে লাগিয়ে,বুকের উপর হাত বাধি বাম হাতের পিঠের উপর ডান হাতের তালু,রুকু তে হাটুর উপর হাত হালকা নুয়ে,সিজদাহ একদম বসে পা দুটো ডান দিকে দিয়ে এর পর দেই দু হাতের মাঝখানে কপাল নাক লাগিয়ে এভাবে।

এবং আরেকটি প্রশ্ন হচ্ছে,নামাজের সময় নামাজের সামনে দিয়ে চলাফেরা করা যাবে কিনা প্রয়োজন হলে অথবা সিজদাহ্র জায়গায় পা দিয়ে বা তার আশে পাশে সামনে পা দিয়ে কিছু নেওয়া বা রাখা যাবে কিনা,মোট কথা জায়নামাজে কেউ পা দিয়ে পারবে কিনা?এতে নামাজের মনোযোগ নষ্ট হয়।

1 Answer

0 votes
by (573,840 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
হানাফি মাযহাব মোতাবেক পুরুষ এবং মহিলাদের নামাজের নিয়ম অনেকটা একই রকম।
তবে পুরুষ আর মহিলাদের নামাজের মাঝে অল্প কিছু পার্থক্য রয়েছে।

(০১) তাকবিরে তাহরিমা। 

মহিলারা তাকবিরে তাহরিমা বলার সময় সীনা পর্যন্ত হাত উঠাবে।
পক্ষান্তরে পুরুষেরা কান পর্যন্ত হাত উঠাবে।

(০২) হাত বাধার জায়গা।

মহিলারা সীনার উপর হাত বাধবে।
পুরুষেরা নাভির নিচে হাত বাধবে।

(০৩)
রুকু করার পদ্ধতি।

মহিলারা পুরুষদের মত রুকু করবে না।বরং হাটুকে সামনে রেখে পুরোপুরি না টানিয়ে রুকু করবে।

মহিলাগণ রুকুর সময় পুরুষদের মত পূর্ণাঙ্গ ঝুঁকবে না। বরং উভয় হাত হাটুতে রাখবে। কিন্তু জড়োসড়ো হয়ে পুরুষদের চেয়ে কম ঝুঁকবে।

(০৪) সিজদাহ্ করার পদ্ধতি 

মহিলারা সেজদায় গিয়ে পেট রানের সাথে এবং বাহু কে বগলের সাথে মিলিয়ে রাখবে,কনুই জমিনের উপর বিছিয়ে দিবে।
পক্ষান্তরে পুরুষেরা পেটকে রান থেকে,বাহুকে বগল থেকে এবং কনুইকে জমিন পৃথক রাখবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا حَفْصٌ عَنِ الْجَعْدِ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْمَدِينَةِ عَنِ ابْنَةٍ لِسَعْدٍ أَنَّهَا كَانَتْ تُفْرِطُ فِي الرُّكُوع تَطَأْطُؤًا مُنكَرَاً ، فَقَالَ لَهَا سَعْدٌ : إنَّمَا يَكْفِيك إذَا وَضَعْت يَدَيْك عَلَى رُكْبَتَيْك.

আয়েশা বিনতে সা’দ থেকে বর্ণিত, তিনি রুকুতে খুব বেশী ঝুঁকতেন যা দৃষ্টিকটু। অতঃপর হযরত সা’দ বিন আবী ওয়াক্কাস রা. তাকে বললেন: তোমার দুই হাত হাঁটুতে রাখলে তোমার জন্য যথেষ্ট হয়ে যাবে। (ইবনে আবী শাইবা-২/৪৫২, হাদীস নং- ২৫৯২)

(০৫) বৈঠকের পদ্ধতি। 

মহিলারা দুই পা ডান দিকে বের করে দিয়ে নিতম্বের উপরে বসবে।
,
পক্ষান্তরে পুরুষেরা ডান পা খাড়া করে বাম পা বিছিয়ে দিয়ে তার উপর বসবে।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
  
  5068 – عبد الرزاق عن معمر عن الحسن وقتادة قالا إذا سجدت المرأة فإنها تنضم ما استطاعت ولا تتجافى لكي لا ترفع عجيزتها

হযরত হাসান বসরী ও কাতাদা রহ. বলেন-“মহিলা যখন সেজদা করবে তখন সে যথাসম্ভব জড়সড় হয়ে থাকবে। অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ফাঁকা রেখে সেজদা দিবেনা যাতে কোমড় উঁচু হয়ে না থাকে”। (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক-৩/১৩৭, হাদিস নং-৫০৬৮, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা-১/৩০৩)

حَدِيثُ أَبِى مُطِيعٍ : الْحَكَمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الْبَلْخِىِّ عَنْ عُمَرَ بْنِ ذَرٍّ عَنْ مُجَاهِدٍ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- :« إِذَا جَلَسْتِ الْمَرْأَةُ فِى الصَّلاَةِ وَضَعَتْ فَخِذَهَا عَلَى فَخِذِهَا الأُخْرَى ، وَإِذَا سَجَدْتْ أَلْصَقَتْ بَطْنَهَا فِى فَخِذَيْهَا كَأَسْتَرِ مَا يَكُونُ لَهَا ، وَإِنَّ اللَّهَ تَعَالَى يَنْظُرُ إِلَيْهَا وَيَقُولُ : يَا مَلاَئِكَتِى أُشْهِدُكُمْ أَنِّى قَدْ غَفَرْتُ لَهَا (السنن الكبرى، كتاب الصلاة، باب مَا يُسْتَحَبُّ لِلْمَرْأَةِ مِنْ تَرْكِ التَّجَافِى فِى الرُّكُوعِ وَالسُّجُودِ، رقم الحديث-3324) 

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত।  রাসূল সা. ইরশাদ করেছন-“মহিলা যখন নামাযের মধ্যে বসবে তখন যেন (ডান) উরু অপর উরুর উপর রাখে। আর যখন সেজদা করবে তখন যেন পেট উরুর সাথে মিলিয়ে রাখে। যা তার সতরের জন্য অধিক উপযোগী। আল্লাহ তায়ালা তাকে দেখে বলেন-ওহে আমার ফেরেস্তারা! তোমরা সাক্ষী থাক। আমি তাকে ক্ষমা করে দিলাম। (সুনানে বায়হাকী-২/২২৩, হাদিস নং-৩৩২৪)

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّهُ سُئِلَ عَنْ صَلَاةِ الْمَرْأَةِ، فَقَالَ: «تَجْتَمِعُ وَتَحْتَفِرُ»
আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে যে, মহিলা কিভাবে নামায আদায় করবে? তিনি বললেন, খুব জড়সড় হয়ে অঙ্গের সাথে অঙ্গ মিলিয়ে নামায আদায় করবে। [মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা-২/৫০৫, হাদীস নং-২৭৯৪]

বিস্তারিত জানুনঃ 

(০২)
এভাবে নামাজের আগে যাওয়া বৈধ নয়।
এক্ষেত্রে নামাজির আগে কোনো সুতরা রেখে সামনে যাওয়া যাবে।

সুতরা কমপক্ষে একটি লাঠির সমান হতে হবে। যা হাতের কনুই থেকে কব্জি পর্যন্ত বা এক হাতের এক তৃতীয়াংশ পরিমাণ হয়ে থাকে। এ উচ্চতায় কোন জিনিস দাঁড় করিয়ে দিলে তা সুতরার কাজ করবে।

বিস্তারিত জানুনঃ  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
 আসসালামুআলাইকুম 
২নং এ বাম হাতের উপর ডান হাতটা কিভাবে বাধবো 
৪নং এ বাহু বগলের সাথে মিলানোর ব্যাপারটা কিভাবে ঠিক বুঝলাম না। আর সিজদাহ্ তে পায়ের অবস্থা কেমন রাখবো 
আর নামাযের বিভিন্ন অবস্থা কখন কিরকম রাখবো
by (573,840 points)
পুরুষরা হাত বাঁধার সময় ডান হাতের তালু বাম হাতের পিঠের (পাতার) উপর রাখা।
ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি ও কনিষ্ঠাঙ্গুলি দ্বারা গোলাকার বৃত্ত বানিয়ে বাম হাতের কব্জি ধরা।
অবশিষ্ট তিন আঙ্গুল বাম হাতের উপর স্বাভাবিকভাবে বিছিয়ে রাখা।

নারীরা হাত বাঁধার সময় শুধুমাত্র ডান হাতের তালু বাম হাতের পিঠের (পাতার) উপর রাখবে। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 154 views
...