উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
জিন থেকে সাহায্য নেওয়া তাদেরকে কাজে লাগানো ইত্যাদি জায়েজ কিনা,এই বিষয়ে উলামায়ে কেরামদের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে।
,
কিছু কিছু উলামায়ে কেরামগন বলেন জিন থেকে সাহায্য নেওয়া, তাদেরকে কাজে লাগানো জায়েজ।
জিনকে নিজের কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন মানুষকে সাহায্যকারী বা শ্রমিক হিসেবে কাজে লাগানো যায়, তেমনি জিনকেও শ্রমিক হিসেবে কাজ করানো যাবে। কাজ করিয়ে তার পাওনা দিয়ে দিতে হবে। এটি জায়েজ আছে।
,
সোলায়মান (আ.) জিনদের নিয়ে বাহিনী তৈরি করেছিলেন এবং তাদের দিয়ে নির্মাণকাজ করিয়েছেন। সুতরাং জিনদের সাহায্য নেওয়া নাজায়েজ নয়। তবে এটি বৈধ প্রক্রিয়ায় হতে হবে। জিনকে দিয়ে হারাম কাজ করা যাবে না, আবার জিনের কোনো শর্তও মানা যাবে না।
,
তবে আরো অনেক উলামায়ে কেরামগন ভিন্নমত পোষণ করেছেন।
তারা বলেন যে জিনদের সাহায্য চাওয়া কখনও শুধু হারাম, কখনও এর সাথে শিরক, কখনও কুফর। এটা কিভাবে সাহায্য চাইছে, কিভাবে সাহায্য করছে এর ওপর নির্ভর করে।”
সুরা জিনে আল্লাহ তায়ালা বলেন –
وَأَنَّهُ كَانَ رِجَالٌ مِّنَ الْإِنسِ يَعُوذُونَ بِرِجَالٍ مِّنَ الْجِنِّ فَزَادُوهُمْ رَهَقًا
অনেক মানুষ অনেক জিনের আশ্রয় নিত, ফলে তারা জিনদের অহংকার বাড়িয়ে দিত। (সুরা জিন, আয়াত ৬)
সুতরাং
“জিনদের সাহায্য চাওয়া হারাম”। তবে স্বাভাবিকভাবেই শয়তান/জিনরা তো এমনিতেই আমার কাজ করবে না। শয়তান বা জিনদের থেকে ফায়দা নিতে হলে, তাদের কথা অনুযায়ী স্যাটানিক রিচ্যুয়াল পালন করতে হয়, সেক্রিফাইস করতে হয়, আল্লাহর নামে না করে তাদের নামে পশু জবাই করতে হয়। ইত্যাদি ইত্যাদি।
,
অনেক কবিরাজকে দেখা যায়,তারা বলে- গরু লাগবে, মুরগি লাগবে, ছাগল লাগবে। তাদের অনেকে নিজে এসব শয়তানের নামে বলি দেয়, আর অনেকে বলে “জবাই করার পর রক্তটা আমাকে দিয়েন।” তাঁরা এই রক্ত শয়তানের উপাসনায় ব্যবহার করে। যাদুবিদ্যায় বিভিন্ন মৃত প্রাণীর রক্ত ব্যবহার করে।
আল্লাহ তায়ালা বলেন
وَيَوْمَ يَحْشُرُهُمْ جَمِيعًا يَا مَعْشَرَ الْجِنِّ قَدِ اسْتَكْثَرْتُم مِّنَ الْإِنسِ ۖ وَقَالَ أَوْلِيَاؤُهُم مِّنَ الْإِنسِ رَبَّنَا اسْتَمْتَعَ بَعْضُنَا بِبَعْضٍ وَبَلَغْنَا أَجَلَنَا الَّذِي أَجَّلْتَ لَنَا ۚ قَالَ النَّارُ مَثْوَاكُمْ خَالِدِينَ فِيهَا إِلَّا مَا شَاءَ اللَّهُ ۗ إِنَّ رَبَّكَ حَكِيمٌ عَلِيم.
যেদিন আল্লাহ সবাইকে একত্রিত করবেন, হে জিন সম্প্রদায়, তোমরা মানুষের মাঝে অনেককে তোমাদের অনুগামী করে নিয়েছ। মানুষদের মাঝে তাদের বন্ধুরা বলবেঃ হে আমাদের পালনকর্তা, “আমরা পরস্পরে পরস্পরের মাধ্যমে উপকার লাভ করেছি।” আর এখন আপনি আমাদের জন্যে যে সময় নির্ধারণ করেছিলেন, আমরা তাতে উপনীত হয়েছি।
তখন তাদের বলা হবে “আগুন হল তোমাদের বাসস্থান। সেখানে তোমরা চিরকাল অবস্থান করবে; আর আল্লাহ যেমন চাইবে..।” নিশ্চয় আপনার পালনকর্তা প্রজ্ঞাময়, মহাজ্ঞানী। (সুরা আন’আম, আয়াত ১২৮)
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরত "কাওকে হত্যা করা হয়েছে,সেখানে কোনো সাক্ষী ছিলনা। আইনের সহায়তা পাওয়া যায়নি"। সেক্ষেত্রে জ্বিনদের সাহায্য নেয়া জায়েজ হবেনা।
★★এতে জিন থেকে পাওয়া ইনফরমেশন এ বিশ্বাস করলে ঈমান হারা হবেননা।
,
তবে তাদের কথা শুনে কোনো বিচার করা নাজায়েজ হবে।
উল্লেখ্য যে ঈমান হারা হওয়ার মতো কোনো কিছু যদি জিন থেকে শুনে বিশ্বাস করে,তাহলে অবশ্যই ঈমান হারা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ,তওবা ইস্তেগফার করতে হবে।