জবাবঃ-
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
শরীয়তের বিধান হলো যেনা করার কারনে গর্ভবতী হওয়ার পর যেনাকারীনির সাথে বিবাহ হওয়ার ছুরতে বিবাহ হওয়ার ছয় মাস পরে যদি সন্তান জন্ম হয়,তাহলে সেই সন্তানের বংশ প্রমানীত হবে,কিন্তু যদি বিবাহের ছয় মাসের আগেই সন্তান প্রসব করে,তাহলে তাহলে সেই বাচ্চা ঐ যেনাকারী থেকে বংশ প্রমানীত হবেনা।
এবং সেই বাচ্চাকে জারজ সন্তানই বলা হবে।
হ্যাঁ যদি এই ছুরতে যেনাকারী সেই সন্তানের বাবা হওয়ার দাবী করে,এবং যেনার আলোচনা না করে,তাহলে ঐ বাচ্চার বংশ তার থেকে সাব্যস্ত হবে।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مَنْصُورٍ، وَمُسَدَّدٌ، قَالَا: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، اخْتَصَمَ سَعْدُ بْنُ أَبِي وَقَّاصٍ، وَعَبْدُ بْنُ زَمْعَةَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي ابْنِ أَمَةِ زَمْعَةَ، فَقَالَ سَعْدٌ: أَوْصَانِي أَخِي عُتْبَةُ إِذَا قَدِمْتُ مَكَّةَ أَنْ أَنْظُرَ إِلَى ابْنِ أَمَةِ زَمْعَةَ فَأَقْبِضَهُ فَإِنَّهُ ابْنُهُ، وَقَالَ عَبْدُ بْنُ زَمْعَةَ: أَخِي ابْنُ أَمَةِ أَبِي، وُلِدَ عَلَى فِرَاشِ أَبِي، فَرَأَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَبَهًا بَيِّنًا بِعُتْبَةَ، فَقَالَ: الْوَلَدُ لِلْفِرَاشِ وَلِلْعَاهِرِ الْحَجَرُ، وَاحْتَجِبِي عَنْهُ يَا سَوْدَةُ،
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। একদা সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাযি.) ও ‘আবদ ইবনু যাম‘আহ (রাযি.) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট যাম‘আহর দাসীর এক সন্তানের বিষয়ে বিবাদ নিয়ে উপস্থিত হলো। সা‘দ (রাযি.) বললেন, আমার ভাই ‘উতবাহ আমার কাছে ওয়াসিয়াত করেছে, আমি মক্কায় এলে যেন যাম‘আহর দাসীর সন্তানকে আমার অধিকারে গ্রহণ করি। কারণ ওটা তার ছেলে। কিন্তু ‘আবদ ইবনু যাম‘আহ বললেন, এটা আমার ভাই, আমার পিতার দাসীর সন্তান, আমার পিতার বিছানায় তার জন্ম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সন্তানটির মধ্যে ‘উতবাহর সুস্পষ্ট সাদৃশ্য দেখতে পেয়ে বললেনঃ সন্তান তার বিছানা যার। আর যিনাকারীর জন্য রয়েছে পাথর। তিনি সাওদা (রাযি.) বললেনঃ তার থেকে পর্দা করো। যিনাকারীর জন্য রয়েছে পাথর। মুসাদ্দাদের বর্ণনায় রয়েছেঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ‘হে ‘আব্দ! সে তোমার ভাই।’
(আবু দাউদ ২২৭৩)
وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ : كَانَ عُتْبَةُ بْنُ أَبِىْ وَقَّاصٍ عَهِدَ إِلٰى أَخِيهِ سَعْدِ بْنِ أَبِىْ وَقَّاصٍ : أَنَّ ابْنَ وَلِيدَةِ زَمْعَةَ مِنِّىْ فَاقْبِضْهُ إِلَيْكَ فَلَمَّا كَانَ عَامُ الْفَتْحِ أَخَذَه سَعْدٌ فَقَالَ : إِنَّهُ ابْنُ أَخِىْ وَقَالَ عَبْدُ بْنُ زَمْعَةَ : أَخِىْ فَتَسَاوَقَا إِلٰى رَسُوْلِ اللّٰهِ ﷺ فَقَالَ سَعْدٌ : يَا رَسُوْلَ اللّٰهِ! إِنَّ أَخِىْ كَانَ عَهِدَ إِلَىَّ فِيهِ وَقَالَ عَبْدُ بْنُ زَمْعَةَ : أَخِىْ وَابْنُ وَلِيْدَةَ أَبِىْ وُلِدَ عَلٰى فِرَاشِه فَقَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «هُوَ لَكَ يَا عَبْدُ بْنَ زَمْعَةَ الْوَلَدُ لِلْفِرَاشِ وَلِلْعَاهِرِ الْحَجَرُ» ثُمَّ قَالَ لِسَوْدَةَ بِنْتِ زَمْعَةَ : «احْتَجِبِىْ مِنْهُ» لِمَا رَأَى مِنْ شَبَهِه بِعُتْبَةَ فَمَا رَاٰهَا حَتّٰى لَقِىَ اللّٰهَ وَفِىْ رِوَايَةٍ : قَالَ : «هُوَ أَخُوكَ يَا عَبْدُ بْنَ زَمَعَةَ مِنْ أَجْلِ أَنَّه وُلِدَ عَلٰى فِرَاشِ أَبِيهِ». مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, কুরায়শ নেতা ‘উতবাহ্ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (উহুদ যুদ্ধে কাফির অবস্থায় যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দন্ত মুবারক শহীদ করেছিল) সে তার ভাই সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ)-এর নিকট মৃত্যুর পূর্বে ওয়াসিয়্যাত করে যায় যে, কুরায়শ নেতা যাম্‘আহ্-এর দাসীর গর্ভজাত সন্তান আমার ঔরসের, তুমি তাকে (স্বীয় ভাইয়ের পুত্ররূপে) নিয়ে এসো। তিনি [‘আয়িশাহ্ (রাঃ)] বলেন, মক্কা বিজয়ের সময়ে সা‘দ তাকে গ্রহণ করে বলল, এ আমার ভাইয়ের পুত্র। এদিকে যাম্‘আহ্-এর পুত্র ‘আব্দ (অস্বীকৃতি জানিয়ে বাধা সৃষ্টি করল), এ তো আমার ভাই। অতঃপর উভয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপস্থিত হলো।
সা‘দ বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমার ভাই একে গ্রহণ করার জন্য আমাকে ওয়াসিয়্যাত করেছে। এর প্রতিবাদে ‘আব্দ ইবনু যাম্‘আহ্ বলল, আমার ভাই, আমার পিতার দাসীর গর্ভের সন্তান, আমার পিতার শয্যাসঙ্গিনীর উৎসে জন্মেছে। এমতাবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে ‘আবদ ইবনু যাম্‘আহ্! সে তোমারই অংশিদারিত্ব হবে। শয্যা যার সন্তান তার আর ব্যভিচারীর জন্য পাথর (অর্থাৎ- বঞ্চিত হওয়া)। অতঃপর তিনি স্বীয় সহধর্মিণী সাওদাহ্ বিনতু যাম্‘আহ্ (রাঃ)-কে সম্বোধন করে বললেন, তুমি ঐ সন্তান হতে পর্দা করবে, সে তোমার ভাই নয়। কারণ তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পুত্রটির মাঝে ‘উত্বার গঠন-প্রকৃতির সাদৃশ্য দেখতে পান। অতঃপর ছেলেটি মৃত্যু পর্যন্ত সাওদার সামনে আসেনি। অপর এক বর্ণনায় আছে- হে ‘আব্দ ইবনু যাম্‘আহ্! ঐ ছেলেটি তোমার ভাই, কেননা সে তার পিতার শয্যাসঙ্গিনীর উৎসে জন্মগ্রহণ করেছে।
(সহীহ : বুখারী ২৭৪৫, ৪৩০৩, মুসলিম ১৪৫৭, আবূ দাঊদ ২২৭৩, নাসায়ী ৩৪৪৮, আহমাদ ২৪৯৭৫, সহীহাহ্ ২১০৮, সহীহ আল জামি‘ ৭১৬১।)
ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ
الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (3/ 49):
"لو نكحها الزاني حل له وطؤها اتفاقاً، والولد له ولزمه النفقة.
(قوله: والولد له) أي إن جاءت بعد النكاح لستة أشهر، مختارات النوازل، فلو لأقل من ستة أشهر من وقت النكاح لايثبت النسب، ولايرث منه إلا أن يقول: هذا الولد مني، ولايقول: من الزنى، خانية. والظاهر أن هذا من حيث القضاء، أما من حيث الديانة فلايجوز له أن يدعيه؛ لأن الشرع قطع نسبه منه، فلايحل له استلحاقه به، ولذا لو صرح بأنه من الزنى لايثبت قضاءً أيضاً، وإنما يثبت لو لم يصرح؛ لاحتمال كونه بعقد سابق أو بشبهة حملاً لحال المسلم على الصلاح، وكذا ثبوته مطلقاً إذا جاءت به لستة أشهر من النكاح؛ لاحتمال علوقه بعد العقد، وأن ما قبل العقد كان انتفاخاً لا حملاً، ويحتاط في إثبات النسب ما أمكن".
সারমর্মঃ
যদি সেই মেয়েকে যেনাকারীই বিবাহ করে,তাহলে তার জন্য সহবাস হালাল,এবং সন্তান তার সাব্যস্ত হবে,ভরনপোষণ ওয়াজিব হবে।
যদি বিবাহের ছয় মাসের মাথায় বাচ্চা প্রসব হয় তাহলে বংশ প্রমানীত হবে,যদি ছয়মাসের কম সময়েই বাচ্চা প্রসব হয়,তাহলে বংশ প্রমানীত হবেনা।
হ্যাঁ যদি সে বলে যে এটি তারই সন্তান,যেনার নয়।
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত বাচ্চা যেহেতু বিবাহের পাঁচ মাসের মাথায় হয়েছে,তাই এর বংশ এই ছেলে থেকে প্রমানীত হবেনা।
তার ওয়ারিশানা পাবেনা।
হ্যাঁ যদি এই ছেলে নিজেই নিজেকে সেই বাচ্চার বাবা বলে,যেনার বাচ্চা নয় বলে দাবী করে,তাহলে এটি তার বাচ্চা বলে সাব্যস্ত হবে।
সেই ছেলে থেকে ভরনপোষণ পাবে,ওয়ারিশানা পাবে।