আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
180 views
in সালাত(Prayer) by (27 points)
আসসালামু আলাইকুম
গত শুক্রবার আমি আমাদের এলাকার পরিচিতো একটা মসজিদে জুম্মার নামাজ পড়তে যাই। আমি কখনো মসজিদে নামাজ পড়ি নাই। তাই একটা ইচ্ছে ছিলো খুতবা শুনার আর মসজিদে নামাজ পড়ার।

আমি জানতাম মহিলাদের জুম্মার নামাজ নেই, কিন্তু ঐ খানে জামাতের সাথে দুই রাকাত নামাজ পড়লাম। আর পড়ার পর চার রাকাত জোহরের সুন্নত নামাজ পড়লাম।

এখন আমার নামাজ কি সহী হয়েছে? মহিলাদের জুম্মা নামাজের নিয়ম কি???

প্রশ্ন ২ঃ মসজিদে খেয়াল করলাম অনেক ই সিজদা দেওয়ার সময় পুরুষের মতো করে দিচ্ছে। আমি তোহ নিচু হয়ে বুক হাঁটুর অংশ একসাথে লাগিয়ে সিজদাহ্ করি।

আসলে কোন নিয়ম টা সহী??

মেয়েদের নামাজ পড়ার সঠিক কোনো নিয়ম বা ভিডিও থাকলে দয়া করে উত্তরে দিলে উপকার হয়। এই বিষয়গুলো নিয়ে কনফিউশানে পড়ি সবসময়।
জাযাকাল্লাহ

1 Answer

0 votes
by (63,200 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

১.বর্তমানে ফেতনার যুগে মসজিদে গিয়ে সব ধরণের নামাজ পড়া মাকরুহে তাহরিমী। তবে যদি মার্কেটে বা বাইরে কোথাও যাওয়ার পথে ওয়াক্ত চলে যাবার আশংকায় মসজিদে নামাজ পড়া হয় তাহলে সমস্যা নেই। তবে এক্ষেত্রে মহিলাদের আলাদা ব্যবস্থা আছে কিনা দেখতে হবে। মোট কথা ঘটা করে মহিলাদের মসজিদে যাওয়া যাবেনা। এমনিভাবে  কারণবশত বাইরে গেলেই জুমার নামাজে মহিলারাও উপস্থিত হতে পারবে। এক্ষেত্রে যদি খুতবা শুনতে পারে তাহলে পুরুষদের সাথেই দুই রাকাত পড়লে হবে। আর খুতবা মিস হয়ে গেলে ফরজ চার রাকাতই আদায় করতে হবে। ফতোয়ায়ে উসমানী ও আলমগীরি।

মহিলাদের জন্য ঈদগাহে বা মসজিদে গিয়ে জামাতে নামায পড়া মাকরূহ। তবে যদি নামায পড়লে তা আদায় হয়ে যাবে।

নারীদের আসল স্থান হল তাদের বসবাসের ঘর। নারীদের মসজিদে এসে নামায পড়া রাসূল সাঃ পছন্দ করতেন না। তবে যেহেতু রাসূল সাঃ সবার নবী। আর রাসূল সাঃ এর কাছে ওহী নাজিল হতো। তাই নারীরা রাসূল সাঃ এর জমানায় ওহীর বানী শুনার জন্য মসজিদে আসতো। এটি ছিল শুধুই প্রয়োজনের তাগিতে।

যে প্রয়োজন রাসূল সাঃ ইন্তেকালের দ্বারা বন্ধ হয়ে গেছে।

প্রয়োজনীয় দ্বীন শিখা প্রতিটি নর-নারীর জন্য আবশ্যক। রাসূল সাঃ ছিলেন সেই দ্বীনের বাহক। তাই রাসূল সাঃ এর সময়ে যেহেতু সময়ে সময়ে দ্বীনের বিধান অবতীর্ণ হতো, তাই পুরুষ সাহাবীদের সাথে মহিলা সাহাবীরাও রাসূল সাঃ এর দরবারে এসে সেই দ্বীন শিখতে চেষ্টা করতেন। সেখানে পুরুষ নারী এক সাথে হওয়ার কারনে কোন ফিতনার আশংকা ছিল না।

কিন্তু বর্তমানে সেই আশংকা ভয়াবহ রূপ পরিগ্রহ করেছে। তাই ফুক্বাহায়ে কেরাম নারীদের ঈদগাহে ও মসজিদে গিয়ে নামায পড়তে নিষেধ করেন। এটা না জায়েজ নয়, তবে মাকরূহ। সেই সাথে ইসলামের মূল স্পিরিটের বিপরীত পদ্ধতি। কারণ ইসলামের মূল থিউরী হল নারীরা থাকবে বাড়িকে সৌন্দর্য মন্ডিত করে। রাস্তাঘাটে অবাধে বিচরণ এটা তাদের কাজ নয়। নিম্নের হাদীসগুলো দেখুন-

عن عبد الله بن سويد الأنصاري عن عمته امرأة أبي حميد الساعدي : أنها جاءت النبي صلى الله عليه و سلم فقالت : يا رسول الله صلى الله عليه و سلم إني أحب الصلاة معك فقال : قد علمت أنك تحبين الصلاة معي و صلاتك في بيتك خير من صلاتك في حجرتك و صلاتك في حجرتك خير من صلاتك في دارك و صلاتك في دارك خير من صلاتك في مسجد قومك و صلاتك في مسجد قومك خير من صلاتك في مسجدي فأمرت فبني لها مسجد في أقصى شيء من بيتها و أظلمه فكانت تصلي فيه حتى لقيت الله عز و جل

আব্দুল্লাহ বিন সুয়াইদ আল আনসারী রাঃ তার চাচা থেকে বর্ণনা করেন যে, আবু হুমাইদ আস সায়িদী এর স্ত্রী রাসূল সাঃ এর কাছে এসে  বললেনহে আল্লাহর রাসূল! নিশ্চয় আমি আপনার সাথে নামায পড়তে পছন্দ করি। তখন নবীজী সাঃ বললেন-আমি জেনেছি যে, তুমি আমার সাথে নামায পড়তে পছন্দ কর।  অথচ তোমার একান্ত রুমে নামায পড়া উত্তম তোমার জন্য তোমার বসবাসের গৃহে নামায পড়ার চেয়ে। আর তোমার বসবাসের গৃহে নামায পড়া উত্তম তোমার বাড়িতে নামায পড়ার চেয়ে। আর তোমার বাড়িতে নামায পড়া উত্তম তোমার এলাকার মসজিদে নামায পড়ার চেয়ে। আর তোমার এলাকার মসজিদে নামায পড়া উত্তম আমার মসজিদে [মসজিদে নববীতে] নামায পড়ার চেয়ে।  তারপর তিনি আদেশ দিলেন তার গৃহের কোণে একটি রুম বানাতে। আর সেটিকে অন্ধকারচ্ছন্ন করে ফেললেন। তারপর সেখানেই তিনি নামায পড়তেন মৃত্যু পর্যন্ত। (সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদীস নং-১৬৮৯,

ইলাউস সুনান-৩/২৬)

এ হাদীস কি প্রমাণ করছে? মহিলারা মসজিদে না গিয়ে বাড়িতে নামায পড়বে এ নির্দেশ কার? যদি রাসূল সাঃ নারীদের মসজিদে আসাকে অপছন্দ করে থাকেন, তাহলে সেখানে আমি কে যে, তাদের মসজিদে আসা/ঈদগাহে আসা পছন্দ করবো?

আরেকটি হাদীস দেখি

عن أبي عمرو الشيباني أنه رأى بن مسعود يخرج النساء من المسجد ويقول أخرجن إلى بيوتكن خير لكن

হযরত আবু আমর বিন শায়বানী থেকে বর্ণিত। তিনি দেখেছেন-হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ মহিলাদের মসজিদে থেকে বের করে দিতেন। আর বলতেন যে, মসজিদের চেয়ে তোমাদের জন্য ঘরই উত্তম।

(মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং-৫২০১,সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-৫৪৪১,আল মুজামুল কাবীর, হাদীস নং-৯৪৭৫)

ভাল করে খেয়াল করুন। আব্দুল্লাহ বিন মাসঈদ রাঃ অপছন্দ করেন, আমরাও তা অপছন্দ করি। যে বঞ্চনা রাসূল সাঃ এর প্রিয় সাহাবীর আমল। সেটি আমাদের গলার মালা। যদিও সেটি সাহাবা বিদ্বেষীদের অপছন্দ হয়ে থাকে।

عَنْ عَمْرَةَ بِنْتِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّهَا أَخْبَرَتْهُ أَنَّ عَائِشَةَ زَوْجَ النَّبِىِّ -صلى الله عليه وسلم- قَالَتْ لَوْ أَدْرَكَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم– مَا أَحْدَثَ النِّسَاءُ لَمَنَعَهُنَّ الْمَسْجِدَ كَمَا مُنِعَهُ نِسَاءُ بَنِى إِسْرَائِيلَ. قَالَ يَحْيَى فَقُلْتُ لِعَمْرَةَ أَمُنِعَهُ نِسَاءُ بَنِى إِسْرَائِيلَ قَالَتْ نَعَمْ.

হযরত আমরাতা বিনতে আবদির রহমান বলেন-রাসূল সাঃ এর সহধর্মীনী হযরত আয়শা রাঃ বলেছেন-যদি রাসূলুল্লাহ সাঃ মহিলাদের এখনকার অবস্থা জানতেন, তারা কি করে? তাহলে তাদের মসজিদে আসতে নিষেধ করতেন যেভাবে বনী ইসরাঈলের মহিলাদের নিষেধ করা হয়েছে।

ইয়াহইয়া বলেন-আমি আমরাতাকে বললাম-বনী ইসরাঈলের মহিলাদের কি মসজিদে আসতে নিষেধ করা হয়েছে? তিনি বললেন-হ্যাঁ। (সহিহ মুসলিম -১/১৮৩, হাদীস নং-১০২৭,সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৫৬৯,মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২৫৯৮২,)

এবার ভেবে দেখুন-রাসূল সাঃ এর তিরোধানের পর মুসলিম নারীরা এমন কি পোশাক পড়তেন, যার কারনে আম্মাজান হযরত আয়শা রাঃ একথা বলেছেন? আর বর্তমান নারীদের পোশাকের দৃশ্য দেখলে আম্মাজান আয়শা রাঃ কী বলতেন?

উপরোক্ত হাদীসসমূহের আলোকে একথা পরিস্কার যে, মহিলাদের ঈদগাহে ও মসজিদে আসা মাকরূহ।

২.মেয়েদের নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন: https://ifatwa.info/3081/


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 119 views
+1 vote
1 answer 116 views
...