হাদীসের তাহকীক ও তাবলীগ সম্পর্কে প্রশ্ন

Question

আসসালামু আলাইকুম শাইখ।
১) নিচের হাদিসটা কি সহিহ? আমলযোগ্য?
// ❝দুঃশ্চিন্তাযুক্ত মানুষের কানে আযান দেওয়া❞

❝দুঃশ্চিন্তাগ্রস্থ মানুষের কানে আযান দিলে তার দুঃশ্চিন্তা দূর হয়।❞

হযরত আলী (রদি.) বলেন, রসূল (ﷺ) আমাকে দেখে বললেন, ❝আলী! আমি তোমাকে দুঃশ্চিস্তাগ্রস্থ দেখছি? আমি বললাম, হ্যাঁ। রসূল (ﷺ) বললেন, তোমার পরিবারের কাউকে তোমার কানে আযান দিতে বল। কেননা আযান দুঃশ্চিন্তার জন্য ঔষধ স্বরূপ।❞

হযরত আলী (রদি.) বলেন, ❝আমি এ কাজ করলে আমার দুঃশ্চিন্তা দূর হয়ে গেল।❞
- [কানযুল উম্মাল, খঃ ২, পৃঃ ৬৫৮] //


২) স্ত্রীর, সন্তানের হক আদায় এবং চাহিদা পূরণ না করে এবং স্ত্রী অসন্তুষ্ট হবে এবং অনুমতি না দিলে, ৪০ দিনের জন্য চিল্লায় যাওয়া কি বৈধ হবে স্বামীর জন্য?
জাযাকাল্লাহু খাইরান।

Answer 1

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহাম।
জবাবঃ-
(১)
আপনার বর্ণিত হাদীস বিশুদ্ধ সনদে বর্ণিত নয়।

(২)
https://www.ifatwa.info/990 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,
স্বামী-স্ত্রী পরস্পর হকঃ
স্বামী-স্ত্রী পরস্পর পরস্পরের উপর অনেক হক রয়েছে।তন্মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হক হল,সহবাসের হক।
স্ত্রীর উপর স্বামীর সহবাস হক কতটুকু?
উত্তরঃ স্বামী স্ত্রীকে সহবাসের জন্য তলব করলে স্ত্রীর জন্য তৎক্ষনাৎ স্বামীর ডাকে সাড়া দেয়া ওয়াজিব।শরয়ী উযর ব্যতীত জবাব না দেয়ার কোনো অপশন নেই।
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত
عن أبي هريرة رضي الله عنه، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «إذا دعا الرجل امرأته إلى فراشه فأبت فبات غضبان عليها لعنتها الملائكة حتى تصبح»
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,
কোন লোক যদি নিজ স্ত্রীকে নিজ বিছানায় আসতে ডাকে আর সে অস্বীকার করে এবং সে ব্যক্তি স্ত্রীর উপর দুঃখ নিয়ে রাত্রি যাপন করে, তাহলে ফেরেশ্তাগণ এমন স্ত্রীর উপর সকাল পর্যন্ত লা‘নত দিতে থাকে।
(সহীহ বুখারী-৩২৩৭)

এখন সহসাই প্রশ্ন জাগে,
তাহলে স্বামীর নিকট স্ত্রীর সহবাস হক্ব কতটুকু?

এ সম্পর্কে উলামাদের কাছ থেকে বিরোধপূর্ণ বক্তব্য পাওয়া যায়।
(ক)
ইবনে তাইমিয়্যাহ রাহ বলেন,
ﻭﻳﺠﺐ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺰﻭﺝ ﻭﻁﺀ ﺍﻣﺮﺃﺗﻪ ﺑﻘﺪﺭ ﻛﻔﺎﻳﺘﻬﺎ ﻣﺎ ﻟﻢ ﻳﻨﻬﻚ ﺑﺪﻧﻪ ﺃﻭ ﻳﺸﻐﻠﻪ ﻋﻦ ﻣﻌﻴﺸﺘﻪ ، .. ﻓﺈﻥ ﺗﻨﺎﺯﻋﺎ ﻓﻴﻨﺒﻐﻲ ﺃﻥ ﻳﻔﺮﺿﻪ ﺍﻟﺤﺎﻛﻢ ﻛﺎﻟﻨﻔﻘﺔ ﻭﻛﻮﻃﺌﻪ ﺇﺫﺍ ﺯﺍﺩ "
স্ত্রীর সন্তুষ্টি পর্যন্ত স্বামীর উপর স্ত্রীকে সহবাস করা ওয়াজিব(অর্থাৎ স্ত্রীর চাওয়া মাত্র স্বামীকে সহবাস করতে হবে)।যতক্ষণ না স্বামীর শরীর দুর্বল হচ্ছে বা স্বামীকে তার জীবিকানির্বাহ পরিচালনায় বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। সহবাসের পরিমাণ নিয়ে স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের মধ্যে ঝগড়া সৃষ্টি হলে এক্ষেত্রে উচিৎ খোরপোষ ইত্যাদির মত সহবাসের পরিমাণকে বিচারক ঠিক করে দেবেন।(দৈনিক না সাপ্তাহিক? এইভাবে ঠিক করে দিবেন)(ফাতাওয়ায়ে ইবনে তাইমিয়্যাহ-২৪৬)(শেষ)

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
স্ত্রী সন্তানের হক আদায় করে এবং ভরণপোষণের হক আদায় করে তবেই একজন পুরুষ ৪০ দিন বা এরচেয়ে অধিক দিনের জন্য কোথাও যেতে পারবে। নতুবা স্বামীর জন্য বৈধ হবে না।