জবাব
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
শরীয়তের বিধান হলো নিষিদ্ধ ওয়াক্তে ফরজ/ওয়াজিব নামাজ আদায় করলে সেটি আদায় হয়না।
পুনরায় তাহা আদায় করতে হয়।
(তবে ঐ দিনের আছরের নামাজের বিধান ব্যতিক্রম।)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
উকবা বিন আমের জুহানী রাযি. বলেন,
ثَلاثُ سَاعَاتٍ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ يَنْهَانَا أَنْ نُصَلِّيَ فِيهِنَّ أَوْ أَنْ نَقْبُرَ فِيهِنَّ مَوْتَانَا : حِينَ تَطْلُعُ الشَّمْسُ بَازِغَةً حَتَّى تَرْتَفِعَ وَحِينَ يَقُومُ قَائِمُ الظَّهِيرَةِ حَتَّى تَمِيلَ الشَّمْسُ وَحِينَ تَضَيَّفُ الشَّمْسُ لِلْغُرُوبِ حَتَّى تَغْرُبَ
তিনটি সময়ে রাসুল ﷺ আমাদেরকে নামাজ পড়তে এবং মৃতের দাফন করতে নিষেধ করতেন। সূর্য উদয়ের সময়; যতোক্ষণ না তা পুরোপুরি উঁচু হয়ে যায়। সূর্য মধ্যাকাশে অবস্থানের সময় থেকে নিয়ে তা পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়া পর্যন্ত। যখন সূর্য অস্ত যায়। (সহীহ মুসলিম ১৩৭৩)
অন্য হাদীসে এসেছেঃ
عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: لَا يَتَحَرّى أَحَدُكُمْ فَيُصَلِّيَ عِنْدَ طُلُوعِ الشَّمْسِ وَلَا عِنْدَ غُرُوبِهَا وَفِي رِوَايَةٍ قَالَ: إِذَا طَلَعَ حَاجِبُ الشَّمْسِ فَدَعُوا الصَّلَاةَ حَتّى تَبْرُزَ. فَإِذا غَابَ حَاجِبُ الشَّمْسِ فَدَعُوا الصَّلَاةَ حَتّى تَغِيْبَ وَلَا تَحَيَّنُوا بِصَلَاتِكُمْ طُلُوْعَ الشَّمْسِ وَلَا غُرُوْبَهَا فَإِنَّهَا تطلع بَين قَرْنَيِ الشَّيْطَانِ.
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যেন সূর্য উদয়ের ও অস্ত যাওয়ার সময় সলাত আদায়ের জন্য অন্বেষণ না করে।
একটি বর্ণনার ভাষা হলো, তিনি বলেছেন, ‘‘যখন সূর্য গোলক উদিত হয় তখন সলাত ত্যাগ করবে, যে পর্যন্ত সূর্য বেশ স্পষ্ট হয়ে না উঠবে। ঠিক এভাবে আবার যখন সূর্য গোলক ডুবতে থাকে তখন সলাত আদায় করা থেকে বিরত থাকবে, যে পর্যন্ত সূর্য সম্পূর্ণভাবে ডুবে না যায়। আর সূর্য উঠার ও অস্ত যাওয়ার সময় সলাতের ইচ্ছা করবে না। কারণ সূর্য শায়ত্বনের (শয়তানের) দু’ শিং-এর মধ্যখান দিয়ে উদয় হয়।
(বুখারী ৫৮৫, ৩২৮৩, মুসলিম ৮২৮,মিশকাতুল মাসাবিহ ১০৩৯)
ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ
وینعقد نفل بشروع فیہا بکراہة التحریم، لا ینعقد الفرض وما ہو ملحق بہ کواجب لعینہ کوتر: وصح مع الکراہة تطوع بدأ فیہا (الدر المختار مع الرد: ۲/ ۳۴-۳۵)
সারমর্মঃ
উক্ত নিষিদ্ধ ওয়াক্তে নফল নামাজ পড়া মাকরুহে তাহরিমি।
ফরজ এবং এ জাতীয় নামাজ (ওয়াজিব) সেই সময়ে আদায়ই হবেনা।
যদি সেই সময়ে কোনো নফল নামাজ শুরু করে,তাহলে তাহা মাকরুহের সহিত সহীহ হবে।
ফাতাওয়ায়ে আলমগীরীতে আছেঃ
والتطوع في ہذہ الأوقات یجوز ویکرہ (۱/۱۰۸)
অনুবাদঃ যদি সেই সময়ে কোনো নফল নামাজ শুরু করে,তাহলে তাহা মাকরুহের সহিত সহীহ হবে।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ফজরের সালাত যেহেতু নিষিদ্ধ ওয়াক্তে শুরু করা হয়েছে,তাই সেই নামাজ সহীহ হয়নি।
পুনরায় উক্ত নামাজ আদায় করতে হবে।
এখন কথা হলো আপনি যেহেতু মা'যুর,তাই আপনার অযু থাকবে কিনা?
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
আপনি যদি ফজরের ওয়াক্তের মধ্যে অযু করে থাকেন,তাহলে আপনার অযু বাতিল হয়ে গিয়েছে।
পুনরায় অযু করে সালাত আদায় করতে হবে।
আর যদি আপনি ফজরের ওয়াক্ত শেষ হওয়ার পর তথা সূর্য উদয়ের সময় বা তার পরে অযু করে থাকেন,তাহলে আপনার অযু জোহরের ওয়াক্ত শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত বহাল থাকবে।
ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ
فتاوی شامی (1/ 306):
'' وأفاد أنه لو توضأ بعد الطلوع ولو لعيد أو ضحى لم يبطل إلا بخروج وقت الظهر''
সারমর্মঃ
কোনো মা'যুর ব্যাক্তি যদি সূর্য উদিত হওয়ার পর অযু করে,চাই ঈদের নামাজের জন্য বা চাশতের নামাজের জন্য,তাহলে তার অযু জোহরের ওয়াক্ত চলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত বাতিল হবেনা।