আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
226 views
in পবিত্রতা (Purity) by (14 points)
আসসালামুআলাইকুম,

১)ফ্লোরে যদি এক ফোটা রক্ত পড়ে আর তা যদি একই ভিজা টিস্যু দিয়ে দুইবার /তিনবার মুছে দেয়া হয়,ফলে মুল রক্ত উঠে গেলেও দাগ থেকে যায়।এতে ফ্লোর পবিত্র হয়েছে কি?

২) পানি চোষণকারী হউক/না হউক উভয় জমিনে যদি দৃশ্যমান নাপাকি লেগে শুকিয়ে যায় তাহলে কি তা উঠিয়ে ফেলা/তুলে ফেলা-ই যথেষ্ট নাকি তুলে ফেলার পর ফ্লোর ধুতে হবে ?

1 Answer

0 votes
by (63,440 points)
edited by

 

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

ফাতাওয়া কাযীখান এ বর্ণিত আছে,

والأرض إذا اصابتها النجاسة فجفت و ذهب أثرها ،ثم أصابها الماء بعد ذلك ،الصحيح أنها لا يعود نجسا ،١\٣١

তরজমাঃ-যদি জমিন নাজাসত মিশ্রিত হয় এবং তা শুকিয়ে যায় ও তার চিন্হ মুছে যায়,অতঃপর পরবর্তিতে তাতে আবার পানি মিশ্রিত হয় তাহলে বিশুদ্ধমতানুযায়ী নাজাসত আবার আর ফিরে আসবে না।(ফাতাওয়া কাযীখান,১/৩১)

অপবিত্র মাটি শুকিয়ে গেলেই তা পবিত্র হয়ে যাবে। এমন মাটিতে নামাজ আদায় করা যাবে, তবে তা দিয়ে তায়াম্মুম করা জায়িজ হবে না। [ফতওয়ায়ে আলমগিরি, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা-৪৪; হিদায়া, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা-৭৪]

পাকা ঘরের মেঝের নাপাক স্থানটুকু শুকনা বা ভেজা কাপড় দ্বারা মুছে দেয়ার পর যদি বাতাসে বা রোদে শুকিয়ে নাপাকীর চিহ্ন দূর হয়ে যায়, তাহলে ঐ স্থানটুকু পাক হয়ে যাবে । তবে নাপাকীর সামান্য চিহ্ন থাকলেও তা পাক হবে না । এজন্যে প্রথমে প্রস্রাবটুকু মুছে নিয়ে একটি পাক কাপড় ভিজিয়ে উক্ত জায়গাটা প্রাথমিকভাবে ২/৩ বার মুছে নিবে, যাতে শুকিয়ে যাওয়ার পর প্রস্রাবের দু্র্গন্ধ বা চিহ্ন না থাকে। [ আবু দাউদ শরীফ, ১ : ৫৫,ফাতাওয়া হিন্দিয়া, ১ : ৪৪, আহসানুল ফাতাওয়া, ২ : ৯২]

পাকা মেঝে বা ফ্লোর নাপাক হয়ে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে তা পাক করার সহজ পদ্ধতি হল, নাপাক জায়গায় পানি ঢেলে ভালভাবে ঝাড়ু দিয়ে ধুয়ে দিবে এভাবে তিনবার ধুয়ে নিলে জায়গাটা পাক হয়ে যাবে । আর যদি পানি গড়িয়ে বের করার ব্যবস্থা না থাকে , তাহলে প্রথমে একটি শুকনো বা ভেজা কাপড় দিয়ে প্রস্রাবটুকু মুছে দিবে । অতঃপর কাপড়টি ভাল করে ধুয়ে নাপাক জায়গাটা আবার মুছে দিবে । এক্ষেত্রে প্রতি বারই নতুন পানি ব্যবহার করবে । এভাবে তিনবার পাক কাপড় দিয়ে মুছে শুকিয়ে নিলে জায়গাটা পাক হয়ে যাবে । উল্লেখ্য যে, নিচতলা এবং উপরতলার হুকুমের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই ।

[ রদ্দুল মুহতার, ১: ৩১৩, ফাতাওয়া আলমগীরী, ১ : ৪৩, হিন্দিয়া, ১ : ৪৩-৪৪]

নাজাসতকে ১০টি পদ্ধতিতে পবিত্র করা যায় যথা-

১. ধৌত করা,যেমন কাপড় ইত্যাদি।

২. মোছা, যেমন আয়না,তলোয়ার ইত্যাদি।

৩. টুকা দিয়ে নাজাসত দূর করা,যেমন গাড় বীর্য কে টুকা দিয়ে কাপড় থেকে দূরে সরিয়ে ফেলা,ইত্যাদি।

৪. ঘর্ষণ, মর্দন, যেমন শরীর বিশিষ্ট নাজাসত যাকে ঘর্ষণ-মর্দন করে দূর করা হলে তা পবিত্র হয়ে যায়,ইত্যাদি।

৫. শুকিয়ে নাজাসতের আসর দূর হয়ে যাওয়া,যেমন জমিন,গাছ ইত্যাদি শুকিয়ে পবিত্র হয়ে যায়,ইত্যাদি।

৬. জ্বালানো, যেমন গোবর ইত্যাদি জ্বলে ভস্ম হয়ে ছাই হয়, যা পবিত্র।ইত্যাদি।

৭. এক অবস্থা থেকে ভিন্নরূপ ধারণ করে পবিত্র হওয়া।যেমনঃ মদ থেকে সিরকায় পরিণত হওয়া যা কিনা পবিত্র।ইত্যাদি।

৮. দেবাগত,যেমন মানুষ এবং খিনযির ব্যতীত সকল প্রকার প্রাণীর চামড়া কে লবন মাখিয়ে রৌদ্রে রাখলে তা পবিত্র হয়ে যায়,ইত্যাদি।

৯. যবেহ, প্রাণীকে যবেহ করার মাধ্যমে উক্ত প্রাণীর চামড়া পবিত্র হয়ে যায়।যদি এমন প্রাণীও হয় যার গোস্ত ভক্ষণ করা হারাম,তবে তার চামড়াকে পবিত্র করে দেয়,ইত্যাদি।

১০. নরখ,তথা যদি কোনো কোঁপে নাজসত পড়ে যায় তাহলে উক্ত কোঁপের মুনাসিব পরিমাণ পানি বাহিরে নিক্ষেপ করলেই উক্ত কোপ পবিত্র হয়ে যায় ইত্যাদি।

এই মোট দশ ভাবে কোনো অপবিত্র জিনিষকে পবিত্র করা যায়।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

১. রক্ত মুছে ফেলার পরে যদি রক্তের কোন চিন্হ অবশিষ্ট না থাকে এবং উক্ত স্থান শুকে যায়  তাহলে ফ্লোর পবিত্র হবে ।

২. উক্ত স্থান থেকে নাপাকী দূর করার পরে যদি সেখানে নাপাকীর কোন চিন্হ না থাকে এবং ঐ অপবিত্র মাটি শুকিয়ে যায় তা পবিত্র হয়ে যাবে, তা ধুয়ে ফেলা আবশ্যক নয়। এমন মাটিতে নামাজ আদায় করা যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...