بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
১.ইমামের পিছনে সূরা ফাতেহা পড়ার হুকুম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে
ভিজিট করুন: https://ifatwa.info/1987/?show=1987#q1987
২. ফরয নামাযের ক্ষেত্রে পুরুষের জন্য শরীয়তের বিধান হচ্ছে, পাঁচ ওয়াক্ত নামায মসজিদে জামাতের সাথে আদায়
করা। কোনো শরয়ী ওযর ব্যতীত মসজিদের জামাত তরক করা জায়েয নেই।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন-
لَقَدْ رَأَيْتُنَا وَمَا
يَتَخَلَّفُ عَنِ الصَّلَاةِ إِلَّا مُنَافِقٌ قَدْ عُلِمَ نِفَاقُهُ، أَوْ
مَرِيضٌ، إِنْ كَانَ الْمَرِيضُ لَيَمْشِي بَيْنَ رَجُلَيْنِ حَتَّى يَأْتِيَ
الصَّلَاةِ.
আমাদের অবস্থা এমন ছিল যে, নামায (-এর জামাত) থেকে পিছিয়ে থাকত কেবল এমন মুনাফিক,
যার নিফাক স্পষ্ট ছিল অথবা অসুস্থ ব্যক্তি। তবে আমরা অসুস্থদেরকেও দেখতাম,
দুই ব্যক্তির কাঁধে ভর করে তারা নামাযের জন্য চলে আসত। (সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৪৮৫)
হযরত ইবনে মাসউদ রা. আরো বলেন-
إِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَّمَنَا سُنَنَ الْهُدَى، وَإِنَّ مِنْ سُنَنِ
الْهُدَى الصَّلَاةَ فِي الْمَسْجِدِ الَّذِي يُؤَذَّنُ فِيهِ.
নিঃসন্দেহে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে
হেদায়েতের তরীকাগুলো শিখিয়েছেন। হেদায়েতের এই তরীকাসমূহের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, যেখানে আযান হয় সেখানে নামায আদায় করা। (সহীহ
মুসলিম, হাদীস ১৪৮৫)
আরো জানুনঃ https://ifatwa.info/6430/
https://ifatwa.info/3684/
পুরুষের জন্য যেমন মসজিদে গিয়ে জামাতের সঙ্গে ফরজ নামাজ আদায় করা জরুরি, তেমনি মহিলাদের জন্য ঘরে একা নামাজ পড়াই শরিয়তের
বিধান। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে মহিলাদের পর্দার প্রতি অত্যধিক তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
ফরজ নামাজের জন্য জামাতের নির্দেশ কেবল পুরুষদের জন্য। নারীদের
ওপর জামাতের কোনো নির্দেশ নেই। তাই নারীরা ঘরে একত্রিত হয়ে পুরুষ বা মহিলা ইমাম বানিয়ে
জামাত করাও শরিয়ত নির্দেশিত নয়। এর প্রতি উৎসাহিতও করা হয়নি। হ্যাঁ, যদি তারা পুরুষ ইমামের পেছনে নামাজ পড়ে নেয়,
তাহলে ওই নামাজ শুদ্ধ হবে। এ ক্ষেত্রে নারীদের পর্দার বিধান লঙ্ঘন না
হলে ঘরে এ ধরনের জামাত বৈধ। (তাবঈনুল হাকায়েক : ১/১৩৫, ফাতাওয়া
দারুল উলুম : ৩/৪৩)
যদি কোনো পুরুষ শরিয়ত অনুমোদিত কোনো ওজরবশত মসজিদে যেতে না পারে, তাহলে তার জন্য ঘরের মাহরাম নারীদের নিয়ে জামাতে
নামাজ পড়া বৈধ। এ ক্ষেত্রে সবাই জামাতের সাওয়াব পাবে। কিন্তু গায়রে মাহরাম নারীদের
নিয়ে জামাতে নামাজ পড়া সমীচীন নয়। তা সত্ত্বেও গায়রে মাহরাম নারীরা তাতে শরিক হতে চাইলে
অবশ্যই পর্দার আড়ালে থাকবে। পর্দার বিধান লঙ্ঘন করে জামাত করা বৈধ নয়। (খুলাসাতুল ফাতাওয়া
: ১/২২৮, আপকে মাসায়েল আওর উনকা হল : ২/২২৭)
জামাত করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যণীয় হলো, জামাতে দাঁড়ানোর পদ্ধতি —এক বা একাধিক নারী পেছনের সারিতে দাঁড়াবে। (রদ্দুল মুহতার :
১/৫৬৬, আহসানুল ফাতাওয়া
: ৩/২৯৯)
হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘আমি নবী করিম (সা.)-এর সঙ্গে ঘরে জামাতে নামাজ পড়েছি,
একবার আমি নবী করিম (সা.)-এর পাশে দাঁড়িয়েছি, আর
আয়েশা (রা.) আমাদের পেছনে দাঁড়িয়ে আমাদের সঙ্গে জামাতে শরিক হয়েছিলেন। (সুনানে নাসাঈ,
হাদিস : ৮০৩)
স্বামী-স্ত্রী উভয়ে জামাতে নামাজ আদায় করতে পারবে। তবে স্ত্রী
স্বামীর সঙ্গে সংলগ্ন না দাঁড়িয়ে পেছনের সারিতে একা দাঁড়াবে। অপারগতায় ডান পাশে একটু
পেছনে সরে দাঁড়ালেও নামাজ হয়ে যাবে। তবে স্ত্রী স্বামীর সঙ্গে সমান হয়ে দাঁড়াতে পারবে
না, কারণ এতে উভয়ের নামাজ
নষ্ট হয়ে যাবে। (রদ্দুল মুহতার ১/৫৭২)
৩. সিজদার পুরো সময় দুই পায়ের কোনো অংশ কিছু সময়ের জন্যও
যদি যমিনে লেগে না থাকে তাহলে সিজদা হবে না। কিন্তু যদি সিজদার সময় কোনো এক পা অল্প
সময়ের জন্য মাটিতে লাগানো থাকে তাহলে সিজদা সহীহ হয়ে যাবে এবং নামাযও হয়ে যাবে। তবে সিজদা অবস্থায় উভয় পা যমিনে
লাগিয়ে রাখা সুন্নতে মুআক্কাদা। তাই খেয়াল রাখতে হবে যেন সিজদার সময় উভয় পা যমিনে
লেগে থাকে এবং আঙ্গুলগুলো কিবলামুখী থাকে।(খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৫৫; আলবাহরুর রায়েক ১/৩১৮; রদ্দুল মুহতার ১/৪৪৭,৫০০; হাশিয়াতুত
তহতাবী আলাদ্দুর ১/২২৩)
৪.টয়লেট থেকে এসে অজু করা আবশ্যক নয়। তবে যদি নামাজ পড়তে চান
বা কুরআনের কপি হাতে নিয়ে তেলাওয়াত করতে চান তাহলে তাহলে অজু করা ফরজ। এমন অবস্থায়
মোবইল এ্প্স থেকে হাদীস বা ইসলামিক বই পড়া যাবে। তবে মোবাইল এপ্সে কুরআন তেলাওয়াতের
ক্ষেত্রে আদব হলো, অজু সহ
তেলাওয়াত করা।
৫. দায়িত্বশীলতা ও আমানত পূর্ণাঙ্গভাবে রক্ষা করা প্রত্যেকের
জন্য ফরজ। এ ক্ষেত্রে অবহেলা করলে কিয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে জবাবদিহি হতে হবে। কর্মীর
কাছ থেকে কর্র্তৃপক্ষ বুঝে না পেলে পরকালে অপরাধী হিসেবে শাস্তি পেতে হবে। নবীজি (সা.)
এরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের
প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যককে তার দায়িত্বশীলতার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হবে।’
(বুখারি, হাদিস: ৮৪৪; তিরমিজি, হাদিস: ১২৪)
সুতরাং উক্ত ব্যক্তি যদি অফিস কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অমান্য করে
কাজে ফাকি দেয় তাহলে সে গুনাহগার হবে এবং তার জন্য ধোকা দিয়ে বেতন গ্রহণ করাও পরিপূর্ণ
রুপে হালাল হবে না। আর এমনটি না হলে বেতন নেওয়াতে কোন সমস্যা নেই।