আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
202 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (5 points)
সম্পদ বন্টনঃ

১. সম্পদ বন্টনের ক্ষেত্রে কোনটি উত্তম। জীবিত অবস্থায় সম্পদ বন্টন করা নাকি মৃত্যুর পর মীরাসের উত্তরাধিকার পাওয়া?

২. আমাদের দেশে দেখা যায় পিতারা তাদের সব সম্পত্তি ছেলেদের নামে লিখে যান কিন্তু মেয়েদের কিছু দেন না। এটি কি শরীয়ত সম্মত?

৩. পিতা-মাতা জীবিত ও তাদের ৩ মেয়ে এক্ষেত্রে তারা কি সম্পদের অর্ধেক পাবে নাকি সমান সমান পাবে?

৪. আমাদের দেশে সামনের দিকের জমি ও পিছন দিকের জমি নিয়ে বেশ ঝামেলা হয়। কারণ সামনের জমির দাম বেশি আর পিছনের জমির দাম কম। তখন সন্তানদের মাঝে সম্পদ বন্টনের ক্ষেত্রে কোন সন্তান বেশি অগ্রাধিকার পাবে?

পর্দাঃ

১. আমাদের দেশে যৌথ পরিবারগুলোতে দেবর-ভাসুর দিয়ে এক প্রকার মাখামাখি অবস্থা। এই ক্ষেত্রে একজন মহিলা কিভাবে তার পর্দা রক্ষা করবে?

২. যে বাসা গুলোতে গরু-ছাগল পালন করা হয়. অনেক সময় গরু বা বাছুর ছুটে গেলে বাসায় যদি পুরুষ মানুষ না থাকলে মহিলাদের যেতে হয়। এক্ষেত্রে তার পর্দা লঙ্ঘিত হয়। এ ক্ষেত্রে করণীয় কি?

৩. যে সব মহিলারা মাঠে কাজ করেন তারা কিভাবে পর্দা রক্ষা করবে।

1 Answer

0 votes
by (60,240 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী পরিপূর্ণ পর্দা করা ফরজ।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ    

قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠]

 

وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١]

মুমিনদেরকে বলুনতারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।

ঈমানদার নারীদেরকে বলুনতারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমানতা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামীপিতাশ্বশুরপুত্রস্বামীর পুত্রভ্রাতাভ্রাতুস্পুত্রভগ্নিপুত্রস্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদীযৌনকামনামুক্ত পুরুষও বালকযারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞতাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করেতারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণতোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা করযাতে তোমরা সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩০-৩১}

 

 আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন-

يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান) তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী ভঙ্গিতে কথা বলনাযাতে যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহেজাহেলী যুগের মেয়েদের মত নিজেদের প্রকাশ করো না। {সূরা আহযাব-৩২}

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ

 

অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}

 

বিখ্যাত তাফসীরবিদ ইমাম কুরতুবী রাহ. উক্ত আয়াতের আলোচনায় বলেনউক্ত আয়াতে আল্লাহ তাআলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীদের কাছে কোনো প্রয়োজনে পর্দার আড়াল থেকে কিছু চাওয়া বা কোনো মাসআলা জিজ্ঞাসা করার অনুমতি দিয়েছেন। সাধারণ নারীরাও উপরোক্ত হুকুমের অন্তর্ভুক্ত। (তাফসীরে কুরতুবী ১৪/১৪৬)

 

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীগণ হলেন সকল মুমিনের মা। অথচ তাঁদের সাথেই লেনদেন বা কথা-বার্তা বলতে হলে পর্দার আড়াল থেকে করতে বলা হয়েছে। তাহলে অন্যান্য সাধারণ বেগানা নারীদের ক্ষেত্রে হুকুমটি কত গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত তা তো সহজেই অনুমেয়।

 

মৃত ব্যক্তির পরিত্যক্ত সম্পত্তির সাথে ক্রমান্বয়ে চারটি হক রয়েছে।

 

অপচয় ও কার্পণ্য ছাড়া তার দাফন-কাফনের ব্যবস্থা করা

অবশিষ্ট সম্পদ থেকে তা ঋণ পরিশোধ করা। (যদি ঋণ থাকে)

ঋণ পরিশোধের পর অবশিষ্ট সমুদয় সম্পদের এক তৃতীয়াংশ দ্বারা অসিয়ত পূরণ করা। (যদি শরীয়ত সম্মত অসিয়ত করে থাকে।)

৪. তারপর অবশিষ্ট সম্পদ তার ওয়ারিশদের মাঝে ফারায়েজ মোতাবেক বন্টন করা হবে।

 

মৃত ব্যক্তি যদি কোন ছেলে সন্তান না তাকে এবং তার একজন মেয়ে থাকে তাহলে সে সমস্ত সম্পদের অর্ধেক পাবে। আর যদি দুই বা ততাধিক মেয়ে থাকে তাহলে তারা সমস্ত সম্পদের তিন ভাগের দুই ভাগ পাবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন-

 

(ক) ১/২দলীলআল্লাহ তায়ালা বলেন-

وَإِن كَانَتۡ وَٲحِدَةً۬ فَلَهَا ٱلنِّصۡفُۚ

আর যদি একজন মেয়ে হয় তখন তার জন্য অর্ধেক।

 

(খ) ২/৩; দলীলআল্লাহ তায়ালা বলেন-

فَإِن كُنَّ نِسَآءً۬ فَوۡقَ ٱثۡنَتَيۡنِ فَلَهُنَّ ثُلُثَا مَا تَرَكَۖ

তবে যদি তারা দুইয়ের অধিক মেয়ে হয়তাহলে তাদের জন্য হবেযা সে রেখে গেছে তার তিন ভাগের দুই ভাগ;

 

আর যদি মৃত ব্যক্তির ছেলে সন্তান ও পিতা না থাকে তখন মৃত ব্যক্তির ভাইয়েরা আসাবা হিসেবে সম্পদ পাবে। আর তা হলো কুরআনুল কারীমের যাদের অংশ বলে দেওয়া হয়েছে তাদেরকে দেওয়ার পর অবশিষ্ট সম্পদ তারা পেয়ে যাবে।

 

 সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

. স্থান ভেদে উভয় সূরতই উত্তম তবে স্বাভাবিক ভাবে জীবিত থাকা অবস্থায় সম্পদ বন্টন না করে যাওয়া উত্তম কারণ, অনেক ক্ষেত্রে বন্টনের ক্ষেত্রে কম বেশী করা হয় এবং কোনো ছেলে বা মেয়েকে সম্পদ থেকে বঞ্চিত বা কম দেওয়া হয় যা ঠিক নয়

. না, এটা ঠিক নয় মেয়েরাও পিতা মাতার সম্পদের ভাগ পায়

. পিতা মাতা মারা যাওয়ার পরে মৃত ব্যক্তির যদি কোন ছেলে সন্তান না তাকে এবং তার একজন মেয়ে থাকে তাহলে সে সমস্ত সম্পদের অর্ধেক পাবে। আর যদি দুই বা ততাধিক মেয়ে থাকে তাহলে তারা সমস্ত সম্পদের তিন ভাগের দুই ভাগ পাবে। 

. এই ক্ষেত্রে সমাঝোতরা মাধ্যমে বন্টন করা হবে। তখন জমির দাম হিসেব করে বন্টন করা হবে অর্থাৎ সামানের দিকে যে জমি নিবে সে পরিমানে কম নিবে।

৫. শ্বশুরবাড়িতে থেকেও স্ত্রী পরিপূর্ণ পর্দা মেইন্টেইন করে চলবে। এক্ষেত্রে সবসময় বোরখা পরে চলতে হবে এটা জরুরী নয়। বরং প্রয়োজনীয় সব কাজ নিজ কামরাতে সারবে। আর কোন কারনে দেবর-ভাসুর ও গাইরে মাহরামদের সামনে যেতে হলে চেহারাসহ পুরা শরীর কাপড় বা পোশাক দ্বারা এমনভাবে আবৃত করে যাবে যাতে শরীরের কোন অংশ প্রকাশ না পায় এবং গাইরে মাহরামদের সাথে কথা বলতে হলে কন্ঠস্বর নরম না করে কথা বলবে।

৬. এই ক্ষেত্রেও পর্দা করে যাবে। কথায় আছে ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়। অনেক বোনকে দেখা যায় যে, তারা অনেক কাজ করার পরও পর্দার বিধান লঙ্ঘন করেনা।

৭. এই ক্ষেত্রেও পর্দা করে যাবে। কথায় আছে ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়। অনেক বোনকে দেখা যায় যে, তারা অনেক কাজ করার পরও পর্দার বিধান লঙ্ঘন করেনা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...