আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
222 views
in সালাত(Prayer) by (18 points)
closed by
আসসালামু আলাইকুম শায়েখ।
১. আমরা জানি  সর্বাবস্থায় যিকির করা যায়। এক্ষেত্রে মায়ের পা টিপে দেয়ার সময় যিকির করা যাবে কি?

২. মেয়েদের টিপ দেয়া গুনাহ। অনেক সময় মায়েরা তাদের একদম ছোট কোলের মেয়েকে কপালে টিপ পরান। আবার ছোট ছেলে কিংবা মেয়েকে মাথার একপাশে কালো টিপ পরানো হয়।ইসলাম দৃষ্টিতে এটা কি ঠিক?

৩. এখন তো ফজরের ওয়াক্ত শুরুর অনেক পরে আযান দেয়া হয়। এক্ষেত্রে যদি ৪টা ২০ এ ফজরের ওয়াক্ত শুরু হয়, তাহলে ৪ টা থেকে ৪ টা ২০ পর্যন্ত তাহাজ্জুদ সালাত পড়া যাবে কি?
৪. ফজরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার প্রকৃত সময় জানার কোনো উপায় বলে দিন শায়েখ।
৫. কেউ যদি দুআ করার সময় কান্না করে এবং তা অন্য কারো কাছ থেকে লুকাতে চায়, এতে কি কোনো সমস্যা হবে?
জাযাকাল্লাহ খাইরান শায়েখ।
closed

1 Answer

0 votes
by (573,960 points)
selected by
 
Best answer
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১) হ্যাঁ মায়ের পা টিপে দেওয়ার সময় যিকির করা যাবে।
এতে কোনো সমস্যা নেই।   

(০২) শিশুদের বদনজর থেকে বাঁচতে কপালে টিপ দেয়া,এটি পরিত্যাজ্য। টিপ দিলে বদনজর থেকে বাঁচা যায় এটি লোকমুখে প্রচলিত একটি কথা মাত্র। কুরআন ও হাদীসতো দূরে থাক  বাস্তবতার সাথেও এর কোন সম্পর্ক নেই।
তাই একাজ অবশ্য পরিত্যাজ্য।
এগুলো হিন্দুয়ানী প্রথা।  
.

عَنْ عَبْدِ اللهِ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أَنَّهُ قَالَ:: ” الْمَرْءُ مَعَ مَنْ أَحَبَّ
হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঈদ রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, ব্যক্তি [কিয়ামতের দিন] তার সাথে থাকবে যাকে সে মোহাব্বত করে। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৩৭১৮, বুখারী, হাদীস নং-৬১৬৮, ৫৮১৬}
عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ
হযরত ইবনে ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন- যে ব্যক্তি যার সাদৃশ্য গ্রহণ করে, সে তাদেরই অন্তর্ভূক্ত। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪০৩১}
,
বদনজর থেকে বাচার জন্য এগুলোকে মাধ্যম হিসেবে গ্রহন করা কুসংস্কার। 
তাই এহেন কাজ করা নাজায়েজ। 
মুসলমানদের এহেন ইমান বিধ্বংসি কাজ থেকে বিরত থাকা উচিত। 
(কিতাবুন নাওয়াজেল  ১৬/১৮১)
,
তবে অনেক উলামায়ে কেরামগন এগুলো বিশ্বাস করাকে শিরক বলে আখ্যায়িত করেছেন।
,
(০৩) ফজরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পর আর তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া যাবেনা।
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী সুবহে সাদিকের আগ পর্যন্ত তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া যাবে। 
(আপকে মাসায়েল আওর উনকা হল ৩/৫৯)
সুতরাং ৪-২০ এ যদি  ফজরের ওয়াক্ত (সুবহে সাদিক) শুরু হয়,তাহলে ৪ টা থেকে ৪-১৯ পর্যন্ত তাহাজ্জুদের নামাজ  পড়তে পারবেন। 

,
(০৪) 
সুবহে সাদিক এর সময় থেকে ফজর নামাজের ওয়াক্ত শুরু হয়। 
বিষয়টি একটু জটিল। সুবহে সাদিক, সুবহে কাযিব নির্ণয় করার ক্ষমতা সবার নেই। পশ্চিমাকাশে লম্বা সাদা আভা দেখা দেয়া হল সুবহে কাযিব। এর কিছুক্ষণ আড়াআড়িভাবে বড় আকারে সাদা আভা প্রকাশিত হওয়া হল সুবহে সাদিক। যার পর ধীরে ধীরে আলো ফুটতে থাকে।

এ বিষয়টি একটু সুক্ষ্ম বিষয়। সবার চোখে এ পার্থক্য সহজে প্রতিভাত হওয়া আসলে সম্ভব নয়।

তাই এক্ষেত্রে আবহাওয়াবীদদের গবেষণা ও পর্যবেক্ষণের উপর আমাদের নির্ভর করতে হয়। সরকার কর্তৃক নির্ধারিত গবেষকগণ এ বিষয়ে গবেষণা করে প্রতি বছরই পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের টাইম নির্দিষ্ট করে থাকেন। সেই সাথে সুবহে সাদিক তথা কখন ফজর শুরু হয়, কখন সূর্য উঠে এবং সূর্য অস্ত যায়, তা নির্ণিত করে থাকেন।

যেহেতু বিষয়টি জ্যোর্তিবিদ্যা, মহাকাশ ও আবহাওয়া বিষয়ক। তাই এসব বিশেষজ্ঞদের মতামত আমরা সাধারণত মেনে চলছি।

সেই হিসেবেই ফাউন্ডেশন কর্তৃক সময় নির্ধারণী ক্যালেন্ডার অনুপাতেই আমভাবে আমল করা হয় পুরো বাংলাদেশে। কিছু কিছু ব্যক্তি ছাড়া।

তাই আমাদের চোখে সুবহে সাদিক মনে না হলেও ক্যালেন্ডারের সময়সূচি অনুপাতে ফজর নামায পড়তে পারেন। সতর্কতা স্বরূপ একটু পরে পড়াই উত্তম বলে মনে হয়।

(০৫) কেউ যদি দুআ করার সময় কান্না করে এবং তা অন্য কারো কাছ থেকে লুকাতে চায়, এতে কোনো সমস্যা হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...