আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
144 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (31 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম উস্তাদ, আমি একজন মেয়ে বয়স ২১।আমি ডিভোর্সি।মায়ের জোড়াজুড়ি তে ১৭ বছর বয়সে আমাকে বিয়ে দেওয়া হয় একটি বেদ্বীন এবং অসামাজিক পরিবারে। মাত্র ৪ মাসের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়। এবং আমার মা কখনোই স্বীকার করেন না যে তিনি আমার ক্ষতি করেছেন উল্টো আমার উপর দোষারোপ করেন।আমার বাবা আমার বিয়ের ২বছর পর মারা জান।আমরা চার ভাই বোন আমি সবার বড় এবং খুবই অসুস্থ কিন্তু আমাকে কখনোই আমার মা খেয়াল করেন না আমার উপর উনার রাগ এজন্যই যে আমি ইনকাম করে তাদের খাওয়াই না ইভেন আমার ভাই বোন ও আমার সাথে খারাপ আচরণ করেন।আমার মানুষের কাছে আমার মা আমার দোষ বর্ণনা করে আমাকে ছোট করেন। ভাই বোনের মধ্যে ঝগড়া হলে আমার মা আমাকে সমস্থ দোষ দিয়ে আমার অতীত নিয়ে কথা বলে তাদের সামনে আমাকে ছোট করেন এর ফলে তারাও আমাকে সন্মান করেন না। আমার কি মা এবং ভাই বোনদের ভালোবাসা পাওয়ার জন্য বাহিরে গিয়ে চাকরি করা উচিত হবে? কারণ বেপর্দায় চাকরি করতে হবে পর্দায় চাকরি করার কোনো ব্যাবস্থা বাংলাদেশ এ নেই। যদিও আমি জানি আমার ভাই বোন আমাকে আর সন্মান দিবে না কারণ তারা বড় হয়েছে নিজের স্বাধীন মতো চলে।

আমার মায়ের সুদেরর রিণ এবং গয়না বন্ধক দেওয়ার অভ্যেস আছে অনেক বলেছি এসব ভালো না এবং তিনি অনেক শাইখের বক্তিতা এ শুনেন কিন্তু একবারের জন্য ভাবেন না বলে আল্লাহ দেখছে আর তা ছাড়া এসব আমি নিজের জন্য করছি না তোমাদের জন্য করছি।তার মানে তো তিনি আমাদের হারাম খাওয়াচ্ছেন তার উপর বরকত নেই ঘরে রিণ সোধ করার জন্য আমাকে প্রতিনিয়ত জব করার জন্য চাপ দেয় এবং অপমান করেন যদিও জানেন তিনি আমি অসুস্থ তিনি বলেন আমি ইচ্ছাকরে এমন করছি।এমন করে করে আমার সামান্য গ্যাস্টিক এর রোগ আলসারে পরিণত হয়েছে অবহেলা করে।আমি যদি এখন ইনকাম করে তার রিণ না পুষিয়ে দেই এর জন্য কি আমি আল্লাহর কাছে গুনাহগার হবো?যদিও সে বার বার ই রিণ নিবেন।

আমার বোন হারাম রিলেশনশিপ এ আছে, আমিও পূর্বে করেছি এবং তওবাহ করে ফিরে এসেছি কিন্তু আমি জানতাম না যে এটি হারাম যখন জেনেছি আল্লাহর কসম সাথে সাথে সব অফ করে দিয়েছি, বেপর্দায় করা অনলাইন জব ও ছেড়ে দিয়েছি যেখানে আমি মাসে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারতাম।শুধু আল্লাহর আজাবের ভয়ে ছেড়ে দিয়েছি। আমার মা যখন জানতে পারলো আমি রিলেশন করি আমাকে প্রচুর শাসন করেছিলো কিন্তু আমার বোনকে সাপোর্ট দিয়েছে দুজনের প্রতি দুরকম আচরণের এর কি?

আমার বোনকে আমি এসবের ভয়াবহতা সম্পর্কে বললে সে অবজ্ঞা করে এবং আমাকে আমার অতিত নিয়ে অপমানিত করে।আমার করণীয় কি এদের কি হক্ব রয়েছে আমাকে কথা শুনানোর?

এমন অনেক কিছু বলার ছিলো কিন্তু এই মূহুর্তে অতি কষ্টে আমার কিছুই আসছে না। শুধু এটির উত্তর দিন আমার মা সব সময় আমার গীবত করেন আমার ভালো কাজ গুলো গোপন করেন যদিও এখন আমি তাই চাই আমার ভালো কাজ গোপন থাকুক।কিন্তু সব সময় আমার গিবত করেন বাহিরের মানুষের কাছে?এটা কি ঠিক?আমার সাথে রাগ করে বহুদিন আমার দিকে তাকায় ও না কথা বলার সময় কোনো মা কি এমন টা করতে পারে?সবার খাবার খবর নিলেও আমার নেয় না..

1 Answer

0 votes
by (657,800 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার মা যে আপনার গুনাহ/দোষ অন্যদের কাছে বলছে,এটি সম্পূর্ণভাবে হারাম হচ্ছে।
এটি গীবত।
গীবতের গুনাহ খুবই মারাত্মক।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ


يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اجْتَنِبُوا كَثِيرًا مِّنَ الظَّنِّ إِنَّ بَعْضَ الظَّنِّ إِثْمٌ ۖ وَلَا تَجَسَّسُوا وَلَا يَغْتَب بَّعْضُكُم بَعْضًا ۚ أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَن يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوهُ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۚ إِنَّ اللَّهَ تَوَّابٌ رَّحِيمٌ [٤٩:١٢] 

মুমিনগণ, তোমরা অনেক ধারণা থেকে বেঁচে থাক। নিশ্চয় কতক ধারণা গোনাহ। এবং গোপনীয় বিষয় সন্ধান করো না। তোমাদের কেউ যেন কারও পশ্চাতে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি তারা মৃত ভ্রাতার মাংস ভক্ষণ করা পছন্দ করবে? বস্তুতঃ তোমরা তো একে ঘৃণাই কর। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু। {সূরা হুজুরাত-১২}

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «أَتَدْرُونَ مَا الْغِيبَةُ؟» قَالُوا: اللهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ، قَالَ: «ذِكْرُكَ أَخَاكَ بِمَا يَكْرَهُ» قِيلَ أَفَرَأَيْتَ إِنْ كَانَ فِي أَخِي مَا أَقُولُ؟ قَالَ: «إِنْ كَانَ فِيهِ مَا تَقُولُ، فَقَدِ اغْتَبْتَهُ، وَإِنْ لَمْ يَكُنْ فِيهِ فَقَدْ بَهَتَّهُ»

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লম বলেছেনঃ তোমরা কি জান, গীবত কি? তাঁরা বললেনঃ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভাল জানেন। তিনি বললেনঃ গীবত হল তোমার ভাইয়ের সম্পর্কে এমন কিছু আলোচনা করা, যা সে অপছন্দ করে। প্রশ্ন করা হলঃ আমি যা বলেছি তা যদি আমার ভাইয়ের মধ্যে থেকে থাকে, তাহলে আপনি কি বলেন? তিনি বললেনঃ তুমি তার সম্পর্কে যা বলেছ তা যদি তার মধ্যে থাকে, তাহলেই তুমি তার গীবত করলে। আর যদি তা তার মধ্যে না থাকে, তাহলে তো তুমি তার প্রতি অপবাদ আরোপ করলে। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৫৮৯, ৭০, সুনানে নাসায়ী কুবরা, হাদীস নং-১১৪৫৪, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৫৭৫৮, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৬২৯৩, মুজামে ইবনে আসাকীর, হাদীস নং-১৪১৭, সুনানে কুবরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-২১১৬৩}

আরো জানুনঃ  

★তওবা করে ফিরে আসার পর আপনার দোষ আপনার কাছেও এইভাবে কাহারো জন্য বলা জায়েজ হচ্ছেনা।
এর কারনে মহান আল্লাহর কাছে তাদের কঠিন জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে হবে।
আর এতে বান্দার হক নষ্ট হওয়ায় যতক্ষন পর্যন্ত আপনি তাদের মাফ না করবেন,স্বয়ং আল্লাহ তায়ালাও তাদের মাফ করবেননা।
★আপনি ছোট বোনকে বিবাহ পূর্ব এই  অবৈধ প্রেম থেকে বেঁচে থাকার আদেশ করা চালিয়ে যাবেন,এটি আপনার শুধুমাত্র হক নয়,দায়িত্ব। 
,
মানা না মানা তার ব্যাপার, আপনি আপনার দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।
তবে তারা আপনার কোনো সমস্যা করলে আপনি চাইলে তাদের আর নাও বুঝাতে পারেন।
,
★এদের কোনো হক্ব নেই, আপনাকে কথা শুনানোর।

★আপনি ধৈর্য ধারন করুন।
আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করবেন,ইনশাআল্লাহ। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...