আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
150 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (108 points)
edited by
আসসালামু 'আলাইকুম।

১,আমার প্রশ্ন হল আমি জানতাম কেউ যদি ভুল দিক হয়ে নামাজ পড়ে এবং সে যে  সম্পূর্ণরুপে  নিশ্চিত ছিল যে সেটাই তার পশ্চিম দিক এবং পরবর্তীতে যদি জানতে পারে তার জানা ভুল ছিল তাহলে তার নামাজ আজ নতুন করে দোহরাতে হবে না। কিন্তু আমার স্ত্রী নতুন হোস্টেলে উঠার পর সেখান কার মানুষদের থেকে শুনে কিবলা বুঝে নামাজ পড়ে, আমিও তাকে দূর থেকে যতদূর সম্ভব বুঝিয়ে দি।পরে বুঝা যায় সে স্থানীয় লোকজনের কথা বুঝতে ভুল করেছিল যদিও তাদের কথা ঠক ছিল,আমিও আমার স্ত্রীর কথা ভুল বুঝে ছিলাম।যার কারণে ৯০ ডিগ্রি  বা তার কিছু বেশি পরিমাণ তফাত হয়ে যায় তার নামাজে।এভাবে প্রায় অর্ধমাস অতিবাহিত হবার পর,আমাদের নজরে আসে যে এটা ভুল ছিল।এখন কি তার সালাত আবার দোহরাতে হবে?

২,স্ত্রী সহবাস বা বীর্যপাতের পর একবার অল্প প্রসাবকরার পর ফরজ গোসল করে যদি দেখা যায় গোসলের পর বীর্য বা মযী,মনি জাতীয় কিছু আসছে তাহলে কি গোসল আবার করতে হবে।

৩,আমি সবসময় টিস্যু ব্যবহাত করি প্রসাবে,কারণ পানি নিলে আমার অনেক ওয়াসোয়াসা হয়, ফরজ গোসলের পূর্বে প্রসাব করে গোসল করি টিস্যু ব্যবহার ব্যতীত। এরপর গোসল শেষে প্রসাবে জায়গায় বেশ খানি পানি ঢেলে দি,এরপর কাপড় দাড়া গা মুছি,তখন মনে হল প্রসাবের রাস্তা দেখি সেখানে প্রসাব আছে কিনা,দেখি প্রসাবের রগে প্রসাব দেখা যায়,যা একটু চাপ দিলে বাইরে আসে অল্প।ত আমার প্রশ্ন হল যে কাপড় দিয়ে লজ্জাস্থান মুছলাম,সেখানেত পানি ঢেলে দেয়ার পানি ছিল,তা হয়ত রগের প্রসাবের সাথে হাল্কা যুক্ত ও ছিল, আল্লাহু 'আলাম এখন সেই কাপড় দিয়ে বাকি শরীর মুছার দরুন পুরা শরীর কি নাপাক হয়েছে?

৪,কাপড়ের জুতা নাপাক ছিল,তিনবার ধুয়া হয়েছে,তবে চিপা হয়নি,এতে কি পাক হবে?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-

(০১)
নামাযে কিবলামুখী হওয়া নামায শুদ্ধ হওয়ার অন্যতম শর্ত।
 সক্ষমতা থাকার পরেও এ শর্ত পূর্ণ না করলে নামায বাতিল হয়ে যাবে। 
যদি কোন মুসলমান এমন কোন স্থানে থাকেন যে স্থান থেকে তিনি কিবলার দিক জানতে না পারেন তাহলে তিনি তাঁর প্রবল ধারণায় যে দিককে কিবলা মনে হয় সেদিকে ফিরে নামায আদায় করবেন। সেক্ষেত্রে উক্ত নামাযটি পুনরায় আদায় করা তার উপর আবশ্যক হবে না। বরং তার নামায শুদ্ধ; তাকে কোন কিছু করতে হবে না।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

قَدْ نَرَىٰ تَقَلُّبَ وَجْهِكَ فِي السَّمَاءِ ۖ فَلَنُوَلِّيَنَّكَ قِبْلَةً تَرْضَاهَا ۚ فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ ۚ وَحَيْثُ مَا كُنتُمْ فَوَلُّوا وُجُوهَكُمْ شَطْرَهُ ۗ وَإِنَّ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ لَيَعْلَمُونَ أَنَّهُ الْحَقُّ مِن رَّبِّهِمْ ۗ وَمَا اللَّهُ بِغَافِلٍ عَمَّا يَعْمَلُونَ [٢:١٤٤]

নিশ্চয়ই আমি আপনাকে বার বার আকাশের দিকে তাকাতে দেখি। অতএব, অবশ্যই আমি আপনাকে সে কেবলার দিকেই ঘুরিয়ে দেব যাকে আপনি পছন্দ করেন। এখন আপনি মসজিদুল-হারামের দিকে মুখ করুন এবং তোমরা যেখানেই থাক, সেদিকে মুখ কর। যারা আহলে-কিতাব, তারা অবশ্যই জানে যে, এটাই ঠিক পালনকর্তার পক্ষ থেকে। আল্লাহ বেখবর নন, সে সমস্ত কর্ম সম্পর্কে যা তারা করে। {বাকারা-১৪৪}

জাবের (রাঃ) এর বর্ণিত, তিনি বলেন: “আমরা এক যুদ্ধাভিযানে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে ছিলাম। সেদিন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ছিল। আমরা কিবলা জানার চেষ্টা করলাম; কিন্তু নিজেরাই একমত হতে পারলাম না। তাই আমাদের মধ্যে প্রত্যেক ব্যক্তি আলাদা আলাদা নামায আদায় করল। আমাদের প্রত্যেকে তার সামনে একটি দাগ দিয়ে রাখল যেন পরবর্তীতে জায়গাগুলো চেনা যায়। যখন ভোর হল তখন আমরা সে দাগ দেখে বুঝতে পারলাম যে, আমরা কিবলার দিকে নয় অন্য দিকে ফিরে নামায আদায় করেছি। ফলে এ বিষয়টা আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে উল্লেখ করলাম। তিনি আমাদেরকে পুনরায় নামায আদায় করার নির্দেশ দেননি। বরং বললেন: তোমাদের নামায আদায় হয়েছে।[সুনানে দারাকুতনী, মুসতাদরাক হাকেম, সুনানে বাইহাকী; আলবানী ‘ইরওয়াউল গালিল’ গ্রন্থে (২৯১) অন্যান্য হাদিসের আলোকে এ হাদিসকে ‘হাসান’ ঘোষণা করেছেন]

فإن علم أنہ أخطأ بعد ما صلیٰ لایعیدہا۔ (الفتاویٰ الہندیۃ ۱؍۶۴، درمختار مع الشامي ۲؍۱۱۶ زکریا، شامي ۲؍۱۰۳ بیروت، تبیین الحقائق ۱؍۲۶۷)
সারমর্মঃ
কেহ যদি নামাজ শেষে  জানতে পারে যে সে ভুল দিক হয়ে নামাজ আদায় করেছে,তাহলে সেই নামাজ পুনরায় আদায় করতে হবেনা। 

رجل صلی في المسجد في لیلۃ مظلمۃ بالتحری فتبین أنہ صلی إلی غیر القبلۃ جازت صلاتہ۔ (البحر الرائق ۱؍۲۸۷) 
সারমর্মঃ 
কোনো ব্যাক্তি অন্ধকার রাত্রীতে কেবলা নির্ণয়ের চেষ্টা করে কোনো দিক হয়ে নামাজ আদায় করে,তারপর যদি প্রকাশ পেয়ে যায় যে সে কেবলা ছাড়া অন্য দিক হয়ে নামাজ আদায় করেছে,তাহলে তার নামাজ জায়েই হয়ে যাবে।

যদি কোন মুসলিম সফর অবস্থায় থাকেন কিংবা এমন কোন দেশে থাকেন যেখানে কিবলার দিক জানানোর মত কাউকে না পান তাহলে তার নামায শুদ্ধ; যদি তিনি নিজে কিবলা জানার আপ্রাণ চেষ্টা করে নিজে নিজে একটা সিদ্ধান্ত নেন; পরবর্তীতে জানা যায় যে, তিনি কিবলা ভুল করেছেন।
আর যদি তিনি মুসলমান দেশে থাকেন তাহলে তার নামায সহিহ হবে না। কেননা, তার পক্ষে কিবলা সম্পর্কে কাউকে জিজ্ঞেস করা সম্ভব। অনুরূপভাবে মসজিদের কাঠামো দেখার মাধ্যমেও কিবলা জানা সম্ভব।[মাজমুউল ফাতাওয়া (১০/৪২০)]

কিবলা জানার অনেক পদ্ধতি রয়েছে। 
এখন কম্পাসের মাধ্যমে কিংবা কিছু ঘড়ির মাধ্যমে —যেগুলোতে বিশেষ কিছু প্রোগ্রাম আছে— কিবলার দিক জানা সহজ। এছাড়া সূর্যের মাধ্যমে, চন্দ্রের মাধ্যমেও কিবলা নির্ণয় করা যেতে পারে।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,     
যেহেতু কেবলা জানার অনেক পদ্ধতি রয়েছে,তাই অর্ধমাস ধরে করে যাওয়া এহেন ভুল সমর্থিত নয়।  প্রশ্নে উল্লেখিত  সতর্কতামূলক আপনার স্ত্রীকে সবগুলি নামাজের কাজা আদায় করতে বলবেন।
 
(০২)
এটি তো আর উত্তেজনা সহকারে বের হয়না।
বরং স্বাভাবিক ভাবেই বের হয়,তাই পুনরায় গোসল ফরজ হবেনা।
তবে উক্ত স্থান ভালোভাবে ধৌত করতে হবে,পুনরায় অযু করতে হবে।
,
(০৩)
এখানে আপনি যেই কাপড় দিয়ে পুরো শরীর মুছলেন,সেই কাপড়ে যদি রগের পেশাবের সহিত হালকা যুক্ত পানি লেগে থেকে থাকে,তাহলে আপনার শরীর নাপাক ধরা হবে।
নতুবা নয়।
,
আপনার কাছে  যদি বিষয়টি  সন্দেহজনক মনে হয়,তাহলে তাহলে সতর্কতা মূলক নাপাক ধরবেন।  

(০৪)
পরিপূর্ণ শুকিয়ে যাওয়ার পর পাক ধরে নিবেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 121 views
0 votes
1 answer 145 views
...