আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
320 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (3 points)
আসসালামুআলাইকুম।আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশুনা ছেড়ে দিতে চাই শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কেননা,এখানে সহশিক্ষার পাশাপাশি পর্দা নষ্ট হওয়ার আশঙ্ক্ষা করছি।আর বেদ্বীন পরিবেশে,হাজারো ফিতনার মাঝে নিজের আখলাক ঠিক রাখতেও বেগ পেতে হচ্ছে,এখানে আমার পাশে কোনো ছেলেকে বসতে দিই না কিন্তু বেঞ্চগুলো একটা আরেকটার সাথে লাগানো থাকে,সামনে বা পেছনের বেঞ্চে কোনো ছেলে বসলে সেটা খুবি অসস্তিকর হয় আমার জন্য ,সর্বপরি আমি দ্বীনি শিক্ষায় মনোনিবেশ করতে চাই।

কিন্তু আমার বাবা মা এতে অসন্তুষ্ট ।তারা চান আমি জেনারেল পড়াশুনা কন্টিনিউ করি(আমার কোনো ভাই না থাকায়,তারা ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত,তারা চান আমি পড়াশুনা শেষ করে কোনো চাকরিতে যোগ দিই)।আমার পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ না,মধ্যবিত্ত। বাবা-মায়ের কথা- স্যারদের সামনে মুখ খোলা রাখলে কিছু হবে না,আর প্রয়োজনে তো মুখ খোলার বিধান আছেই!
(যেহেতু ভাইভায় মুখ খোলা লাগে)

এখন আমার কি করণীয়? ছেলে-মেয়ে ফ্রি মিক্সিং এই পরিবেশে আমার মানিয়ে নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে,আমি ফিতনার আশঙ্ক্ষা করছি আবার আমি বাবা-মার অবাধ্য সন্তানও হতে চাই না।তাদের অনেক বুঝিয়েছি কোনো কাজ হয়নি,উনারা কান্নাকাটি করেন,আমাকে ইমোশনালি ব্ল্যাকমেইল করেন।এক্ষেত্রে আমার কি জেনারেল পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়া উচিৎ হবে না ছেড়ে দেয়া(তাদের অবাধ্য হয়ে)?<!--/data/user/0/com.samsung.android.app.notes/files/clipdata/clipdata_211126_190403_929.sdoc-->

1 Answer

0 votes
by (59,970 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

দ্বীনি শিক্ষা হোক,বা দুনিয়াবি শিক্ষা হোক,ইসলামের বিধান হলো ছেলেরা ছেলেদের প্রতিষ্ঠানে এবং মেয়েরা মেয়েদের প্রতিষ্ঠানে পড়বে। বিশেষত মেয়েদের ক্ষেত্রে এর প্রতি সর্বোচ্চ লক্ষ রাখা ও গুরুত্ব দেয়া আবশ্যক। 

 

কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,

زُيِّنَ لِلنَّاسِ حُبُّ الشَّهَوَاتِ مِنَ النِّسَاء

মানবকূলকে মোহগ্রস্ত করেছে নারী…। (সূরা আলি ইমরান ১৪)

 

রাসুলুল্লাহ বলেছেন,

مَا تَرَكْتُ بَعْدِي فِتْنَةً أَضَرَّ عَلَى الرِّجَالِ مِنْ النِّسَاءِ

আমি আমার পরে মানুষের মাঝে পুরুষদের জন্য নারীদের চাইতে অধিকতর ক্ষতিকর কোন ফিতনা রেখে যাই নি।(বুখারী ৪৮০৮ মুসলিম ২৭৪০)

 

ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমাতে এসেছে,

 فلا يجوز للمرأة أن تَدرس أو تعمل في مكان مختلط بالرجال والنساء ، ولا يجوز لوليها أن يأذن لها بذلك

সুতরাং মেয়েদের জন্য এমন প্রতিষ্ঠানে পড়া-লেখা কিংবা চাকরি করা জায়েয হবে না যেখানে নারী-পুরুষের সহাবস্থান রয়েছে এবং অভিবাকের জন্য জায়েয হবে না তাকে এর অনুমতি দেয়া।  (ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমা ১২/১৫৬)

 

একান্ত অপারগ অবস্থায় বা বিকল্প কোন পথ না পেলে এসব প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করা জায়েয আছে। কেননা, الضرورات تبيح المحظورات জরুরত নিষিদ্ধ কাজকে সিদ্ধ করে দেয়। (আলআশবাহ ওয়াননাযাইর ১/৭৮)

 

তবে সবোর্চ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি, যাতে পর্দা লঙ্ঘন বা আল্লাহর অসন্তুষ্টি মূলক কার্যক্রম সংঘটিত না হয়। কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,

فَاتَّقُوا اللَّهَ مَا اسْتَطَعْتُمْ

অতএব তোমরা যথাসাধ্য আল্লাহকে ভয় কর। (সূরা তাগাবুন ১৬)

 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন

যতদিন পর্যন্ত এই দেশে পৃথক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু না হচ্ছে ,ততদিন প্রয়োজনের তাগিদে নিম্নোক্ত শর্তাদির সাথে উলামায়ে কেরামগন কলেজ-ভার্সিটিতে শিক্ষা গ্রহণের পরামর্শ দেন।

 

১/ শিক্ষা অর্জন দেশ ও মুসলিম জাতীর খেদমতের উদ্দেশ্যে হতে হবে।

 

২/ পরিপূর্ণ পর্দা ও চোখকে সব সময় নিচু করে রাখতে হবে,প্রয়োজন ব্যতীত কোনো শিক্ষক/শিক্ষিকার দিকে তাকানো যাবে না। মহিলা/পুরুষ তথা অন্য লিঙ্গের  সহশিক্ষার্থীদের সাথে তো কোনো প্রকার সম্পর্ক রাখা যাবেই না। সর্বদা অন্য লিঙ্গর শিক্ষার্থী থেকে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে। ফাতাওয়া উসমানী ১/১৬০-১৭১;

 

সহ শিক্ষা সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ 

https://www.ifatwa.info/434

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

 

১. যতদিন পর্যন্ত এই দেশে পৃথক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু না হচ্ছে ,ততদিন প্রয়োজনের তাগিদে উপরোক্ত শর্তাদির সাথে উলামায়ে কেরামগন কলেজ-ভার্সিটিতে শিক্ষা গ্রহণের পরামর্শ দেন।

 

২. ক্লাসের সময় মুখ খোলা রাখা জায়েজ হবে না। (ভাইভা পরীক্ষার বিষয়টা আলাদা। কারণ তখন পর্দা লঙ্ঘন করা হয় সাময়ীকের জন্য। তাও এটা থেকে বাঁচার জন্য যেনো একজনের পরীক্ষা আরেকজন দিয়ে না দেয়।)

 

৩. আপনি যদি ফিতনার আশংকা দেখেন তাহলে পিতা মাতার হুকুম অমান্য করে লেখা পড়া ছেড়ে দেওয়া জায়েজ হবে। এতে আপনার কোন গুনাহ হবে না ইনশাআল্লাহ। কারণ, পর্দা, গুনাহ ও ফিতনা থেকে বেঁচে থাকা আল্লাহ তায়ালার হুকুম। তাই পিতা মাতার হুকুম মানতে গিয়ে আল্লাহর হুকুম অমান্য করা জায়েজ হবে না।

 

৪. আপনি আরেকটু পিতা মাতাকে বুঝান এবং আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করতে থাকুন। দুআ করি আল্লাহ তায়ালা যেনো আপনার পিতা মাতাকে দ্বীনের সঠিক বুঝ দান করেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...