আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
230 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (56 points)
আচ্ছালামু আ'লাইকুম হুজুর,

১. বিয়ের ক্ষেত্রে অভিভাবকের অনুমতি কি প্রয়োজন? অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া বিয়ে সম্পর্কে ইসলাম কি বলে?

২. অভিভাবক যদি জোর করে বিয়ে দেয়, আর পাত্রী যদি রাজী না থাকে সেক্ষেত্রে শরীয়ত কি বলে?

৩. অভিভাবক যদি জোর করে বিয়ে দেয়, আর পাত্রী যদি রাজী না থাকে(পাত্রী হারাম সম্পর্কে লিপ্ত bf আছে, পড়ালেখা আগে শেষ করতে চায়) এক্ষেত্রে শরীয়ত কি বলে?

৪. অভিভাবক যদি বিয়ে না দেয় ছেলে মেয়ে গুনাহ এর কাজে লিপ্ত। গুনাহ থেকে বাঁচার জন্য ছেলে মেয়েরা কি অভিভাবক কে না জানিয়ে বিয়ে করতে পারবে?

1 Answer

0 votes
by (676,200 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
বিবাহের ক্ষেত্রে অভিভাবকের অনুমতি প্রয়োজন।
নাবালেগ মেয়ের বিবাহ অভিভাবকের  অনুমতি ছাড়া শুদ্ধই হয়না।
তবে বালেগ মেয়ের বিবাহ অভিভাবকের  অনুমতি ছাড়া শুদ্ধ হয়।
  
তবে কিছুটা ব্যখ্যা রয়েছে। 
শরীয়তের বিধান হলো যদি দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সমঝদার সাক্ষ্যির সামনে প্রাপ্ত বয়স্ক পাত্র ও পাত্রি যদি প্রস্তাব দেয় এবং অপরপক্ষ তা গ্রহণ করে নেয়, তাহলে ইসলামী শরীয়াহ মুতাবিক বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়। অভিভাবকের সম্মতি থাকুক বা না থাকুক। অভিভাবক জানুক বা না জানুক।

 তবে যদি গায়রে কুফুতে বিবাহ করে, তথা এমন পাত্রীকে বিবাহ করে, যার কারণে ছেলে বা মেয়ের পারিবারিক সম্মান বিনষ্ট হয়, তাহলে পিতা সে বিয়ে আদালতের মাধ্যমে ভেঙ্গে দিতে পারে। যদি কুফুতে বিবাহ করে, তাহলে পিতা এ অধিকারও পাবে না।
,
রাসুল সাঃ কুফু মিলাইতে বলেছেনঃ

وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا وَلِحَسَبِهَا وَلِجَمَالِهَا وَلِدِينِهَا فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدَّيْنِ تَرِبَتْ يَدَاكَ»

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (মূলত) চারটি গুণের কারণে নারীকে বিবাহ করা হয়- নারীর ধন-সম্পদ, অথবা বংশ-মর্যাদা, অথবা রূপ-সৌন্দর্য, অথবা তার ধর্মভীরুর কারণে। (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন) সুতরাং ধর্মভীরুকে প্রাধান্য দিয়ে বিবাহ করে সফল হও। আর যদি এরূপ না কর তাহলে তোমার দু’ হাত ধূলায় ধূসরিত হোক (ধর্মভীরু মহিলাকে প্রাধান্য না দিলে ধ্বংস অবধারিত)!

(সহীহ বুখারী ৫০৯০, মুসলিম ১৪৬৬, নাসায়ী ৩২৩০, আবূ দাঊদ ২০৪৭, ইবনু মাজাহ ১৮৫৮, আহমাদ ৯৫২১, ইরওয়া ১৭৮৩, সহীহ আল জামি‘ ৩০০৩।)

কুফু সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ  https://www.ifatwa.info/4541/

অভিভাবক ছাড়া বিবাহ সংক্রান্ত আরো জানুনঃ 

(০২)
এই বিবাহে যদি মেয়েটি ইজাব/কবুল করে,তাহলে জোড়পূর্বক হলেও বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যাবে।



وإذا أكرهت المرأة على النكاح، ففعلت، فإنه يجوز العقد (الفتاوى الهندية-1/294)
সারমর্মঃ
যদি মহিলাকে বিবাহের উপর জোড় করা হয়,তারপর সে যদি বিবাহ করে,তাহলে এই বিবাহ ছহীহ। 

نكاح المكره صحيح، (رد المحتار-4/87)
সারমর্মঃ
জোড়পূর্বক ভাবে হওয়া বিবাহ ছহীহ।   
,
আর যদি মহিলা ইজাব কবুল কিছুই না করে,বরং তারা বাবা বা অভিভাবকই তার পক্ষ থেকে বিবাহ পড়িয়ে দেয়,তাহলে এই বিবাহটি মওকুফ বিবাহ বলে গন্য হবে।

যদি মেয়ে অনুমতি দেয় তবে বিবাহ ছহীহ হবে নতুবা এই বিবাহ ছহীহ হবেনা।

বিস্তারিত জানুনঃ   

(০৩)
দুই নম্বর প্রশ্নের জবাব দ্রষ্টব্য।

(০৪)
যদি মেয়ে বালেগাহ হয়,তাহলে শরীয়তের শর্ত মেনে বিবাহ করলে বিবাহ হয়ে যাবে ঠিকই,তবে পিতা মাতাকে কষ্ট দিয়ে এহেন বিবাহ ঠিক নয়।
মাতা পিতার অনুমতি নিয়ে কাজ করার উচিত।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (56 points)
এক জায়গায় এটা পেলাম, এ সম্পর্কে কি বলবেন?
প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে/মেয়েকে অভিভাবক নির্দিষ্ট কোথাও বিয়েতে বাধ্য করতে পারবে না৷ নবী কারীম ﷺ ইরশাদ করেন—

الْأَيِّمُ أَحَقُّ بِنَفْسِهَا مِنْ وَلِيِّهَا

অর্থ : সাবালিকা মেয়ের নিজ বিয়ের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার অভিভাবক অপেক্ষা তার নিজেরই বেশি। (মুসলিম : ১৪২১; আবু দাউদ : ২০৯৮; তিরমিযী : ২০৯৮)

ولا تجبر البالغة البكر علي النكاح لإنقطاع الولاية.

অর্থ : অভিভাবকত্বের অধিকার চলে যাওয়ার কারণে প্রাপ্তবয়স্ক কুমারী মেয়েকে (নির্দিষ্ট কোথাও) বিয়েতে বাধ্য করা যাবে না৷ (আদ্দুররুল মুখতার : ৪/১৫৯)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...