আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
233 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (14 points)
আস্সালামুআলাইকুম, উস্তাদ আমি জানতে চাই আমাদের প্রচলিত শিক্ষা ব্যাবস্থায় সর্বাত্মক পড়ালেখা করে দুনিয়ার সমৃদ্ধি অর্জন করা কি জুহুদ পরিপন্থী?এবং আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম) কে ভালোবাসলে দারিদ্রতা আসবে এই হাদিসের ব্যাখ্যা কি? আর আমাদের সমাজ থেকে উঠে যাওয়া কিছু যুহুদ্ সম্পর্কে জানতে চাই।

1 Answer

0 votes
by (682,160 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
যুহুদ হল, হারাম থেকে দূরত্ব অবলম্বন করা, বিলাসিতা পরিহার করা, অতিরিক্ত দুনিয়া সম্ভোগ থেকে দুরে থাকা, আল্লাহর আনুগত্যের কাজে অগ্রগামী থাকা এবং আখিরাতের জন্য সর্বোত্তম পাথেয় সংগ্রহ করা।
যুহুদের সর্বোৎকৃষ্ট ব্যাখ্যা হল, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কর্ম জীবন।

আখিরাতে যে সব কাজ উপকারে আসবে না সেসব কাজ ত্যাগ করাকে যুহুদ তথা দুনিয়া বিমুখতা বলে।

দুনিয়া বিমুখতা কয়েক প্রকার। হারাম কাজে লিপ্ত না হওয়ার যুহুদ। আর এটি করা ফরযে আইন। দ্বিধা-সংশয়যুক্ত কাজে লিপ্ত হওয়া থেকে বিরত থাকা। দ্বিধা-সংশয়ের স্তরভেদে এর যুহুদেরও স্তর রয়েছে। দ্বিধা-সংশয় শক্তিশালী হলে তা থেকে বিরত থাকা ওয়াজিব, আর দ্বিধা-সংশয় কম হলে তা থেকে বিরত থাকা মুস্তাহাব। আরেক প্রকার যুহুদ হলো অনর্থক কাজে লিপ্ত হওয়া থেকে বিরত থাকা। যেমন, অনর্থক কথাবার্তা, দৃষ্টি, প্রশ্ন, সাক্ষাৎ ইত্যাদি থেকে বিরত থাকা। আরেক ধরণের যুহুদ হলো মানুষের কাছে কিছু চাওয়া থেকে বিরত থাকা, নফসের ব্যাপারে যুহুদ, তা হলো আল্লাহর সন্তুষ্টির কাজে নফসের ওপর যে কোনো কাজকে সহজ মনে করা। সবচেয়ে উত্তম যুহুদ হলো আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো কাছে কোনো কিছু চাওয়া ও তোমার প্রয়োজন বলা থেকে বিরত থাকা।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ بْنِ قَعْنَبٍ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ، - يَعْنِي ابْنَ بِلاَلٍ - عَنْ جَعْفَرٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَرَّ بِالسُّوقِ دَاخِلاً مِنْ بَعْضِ الْعَالِيَةِ وَالنَّاسُ كَنَفَتَهُ فَمَرَّ بِجَدْىٍ أَسَكَّ مَيِّتٍ فَتَنَاوَلَهُ فَأَخَذَ بِأُذُنِهِ ثُمَّ قَالَ " أَيُّكُمْ يُحِبُّ أَنَّ هَذَا لَهُ بِدِرْهَمٍ " . فَقَالُوا مَا نُحِبُّ أَنَّهُ لَنَا بِشَىْءٍ وَمَا نَصْنَعُ بِهِ قَالَ " أَتُحِبُّونَ أَنَّهُ لَكُمْ " . قَالُوا وَاللَّهِ لَوْ كَانَ حَيًّا كَانَ عَيْبًا فِيهِ لأَنَّهُ أَسَكُّ فَكَيْفَ وَهُوَ مَيِّتٌ فَقَالَ " فَوَاللَّهِ لَلدُّنْيَا أَهْوَنُ عَلَى اللَّهِ مِنْ هَذَا عَلَيْكُمْ " .

আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা ইবনু কা'নাব (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলীয়া (অঞ্চল) হতে মদীনায় আসার পথে এক বাজার দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উভয় পার্শ্বে বেশ লোকজন ছিল। যেতে যেতে তিনি ক্ষুদ্র কান বিশিষ্ট একটি মৃত বকরীর বাচ্চার নিকট পৌছলেন। অতঃপর তিনি এর কান ধরে বললেন, তোমাদের কেউ কি এক দিরহামের বিনিময়ে এটা নিতে আগ্রহী হবে। তখন উপস্থিত লোকেরা বললেন, কোন কিছুর বিনিময়ে আমরা উহা নিতে আগ্রহী নই এবং এটি নিয়ে আমরা কি করব? তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ (বিনা পয়সায়) তোমরা কি উহা নিতে আগ্রহী? তারা বললেন, এ যদি জীবিত তে তবুও তো এটা দোষী। কেননা এর কান হচ্ছে ক্ষুদ্র ,ক্ষুদ্র। আর এখন তো তা মৃত, কিভাবে আমরা তা গ্রহণ করব? এরপর তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! এ তোমাদের নিকট যতটা তুচ্ছ, আল্লাহর নিকট দুনিয়া এর চেয়েও অধিক তুচ্ছ।
(মুসলিম শরীফ ৭১৫০)

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রচলিত শিক্ষা ব্যাবস্থায় সর্বাত্মক পড়ালেখা করে দুনিয়ার সমৃদ্ধি অর্জন কারীর যদি নিয়ত শুদ্ধ থাকে,
বিলাসিতা পরিহার করে, অতিরিক্ত দুনিয়া সম্ভোগ থেকে দুরে থাকে, আল্লাহর আনুগত্যের কাজে অগ্রগামী থাকে এবং আখিরাতের জন্য সর্বোত্তম পাথেয় সংগ্রহ করে,তাহলে সেটি যুহদের পরিপন্থি হবেনা।
,
(০২)
প্রশ্নে উল্লেখিত হাদীস, হাদীস গ্রন্থে খুজে পাইনি। 
সুতরাং আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম) কে ভালোবাসলে দারিদ্রতা আসবে,এমনটি বলা উচিত হবেনা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...