ওয়া আলাইকুমুস সালাম
ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির
রাহিম।
জবাবঃ
সুদ সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
اَلَّذِیْنَ
یَاْكُلُوْنَ الرِّبٰوا لَا یَقُوْمُوْنَ اِلَّا كَمَا یَقُوْمُ الَّذِیْ
یَتَخَبَّطُهُ الشَّیْطٰنُ مِنَ الْمَسِّ ذٰلِكَ بِاَنَّهُمْ قَالُوْۤا اِنَّمَا
الْبَیْعُ مِثْلُ الرِّبٰوا ۘ وَ اَحَلَّ اللهُ الْبَیْعَ وَ حَرَّمَ الرِّبٰوا
فَمَنْ جَآءَهٗ مَوْعِظَةٌ مِّنْ رَّبِّهٖ فَانْتَهٰی فَلَهٗ مَا سَلَفَ وَ
اَمْرُهٗۤ اِلَی اللهِ وَ مَنْ عَادَ فَاُولٰٓىِٕكَ اَصْحٰبُ النَّارِ هُمْ
فِیْهَا خٰلِدُوْنَ.
যারা সুদ খায় তারা (কিয়ামতের দিন) সেই ব্যক্তির মতো দাঁড়াবে, যাকে শয়তান স্পর্শ দ্বারা পাগল করে। এটা
এজন্য যে, তারা বলে, ক্রয়-বিক্রয় তো সুদের মতোই। অথচ আল্লাহ
ক্রয়-বিক্রয়কে হালাল করেছেন এবং সুদকে করেছেন হারাম। যার নিকট তার প্রতিপালকের
উপদেশ এসেছে এবং সে বিরত হয়েছে, তবে অতীতে
যা হয়েছে তা তারই। আর তার ব্যাপার আল্লাহর এখতিয়ারে। আর যারা পুনরায় করবে তারাই
জাহান্নামের অধিবাসী হবে। সেখানে তারা হবে চিরস্থায়ী। -সূরা বাকারা (২) : ২৭৫
یَمْحَقُ اللهُ
الرِّبٰوا وَ یُرْبِی الصَّدَقٰتِ وَ اللهُ لَا یُحِبُّ كُلَّ كَفَّارٍ
اَثِیْمٍ.
আল্লাহ সুদকে নিশ্চিহ্ন করেন এবং দানকে বর্ধিত করেন। আল্লাহ কোনো অকৃতজ্ঞ
পাপীকে ভালোবাসেন না। -সূরা বাকারা (২) : ২৭৬
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ
اٰمَنُوا اتَّقُوا اللهَ وَ ذَرُوْا مَا بَقِیَ مِنَ الرِّبٰۤوا اِنْ كُنْتُمْ
مُّؤْمِنِیْنَ فَاِنْ لَّمْ تَفْعَلُوْا فَاْذَنُوْا بِحَرْبٍ مِّنَ اللهِ وَ
رَسُوْلِهٖ وَ اِنْ تُبْتُمْ فَلَكُمْ رُءُوْسُ اَمْوَالِكُمْ لَا
تَظْلِمُوْنَ وَ لَا تُظْلَمُوْنَ.
হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যা বকেয়া আছে তা ছেড়ে দাও, যদি তোমরা মুমিন হও।যদি তোমরা না ছাড় তবে
আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে যুদ্ধের ঘোষণা শুনে নাও। আর যদি তোমরা তাওবা কর
তবে তোমাদের মূলধন তোমাদেরই। এতে তোমরা (কারও প্রতি) জুলুম করবে না এবং তোমাদের
প্রতিও জুলুম করা হবে না। -সূরা বাকারা (২) : ২৭৮-২৭৯
সুদ হারাম হওয়ার
ব্যাপারে মহান আল্লাহ তা'আলা বলেন -
واحل الله البيع و حرم الربوا.
" আল্লাহ ক্রয়-বিক্রয়কে
হালাল ও সুদকে হারাম করেছেন৷" (সূরা বাকারা, আয়াত:২৭৫)
সুদ কতখানি জঘন্য
তা হাদীস শরীফে এসেছে-
عن أبي هريرة، قال: قال رسول الله صلى الله
عليه وسلم : "الربا سبعون حوبا،أيسرها أن ينكح الرجل أمه."
حكم الحديث: صحيح
"হযরত আবু হুরায়রা রা.
থেকে বর্ণিত৷ তিনি বলেন, রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- "সুদের ৭০ টি স্তর রয়েছে৷ সবচেয়ে
নিম্নটি হল নিজ মায়ের সাথে ব্যভিচার করা৷" (ইবনে মাজাহ: অধ্যায়:
ব্যবসা-সুদ:২২৭৪)
হাদীসে বর্ণিত হয়েছে-
لَعَنَ رَسُولُ اللهِ
صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ آكِلَ الرِّبَا، وَمُؤكِلَهُ، وَشَاهِدَيْهِ،
وَكَاتِبَهُ.
যে সুদ খায়, যে সুদ
খাওয়ায়, যে সাক্ষী
থাকে এবং যে ব্যক্তি সুদের হিসাব-নিকাশ বা সুদের চুক্তিপত্র ইত্যাদি লিখে দেয়
সকলের প্রতি রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লা‘নত করেছেন। -মুসনাদে
আহমাদ, হাদীস ৬৬০; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৩৩৩৩; জামে তিরমিযী, হাদীস ১২০৬
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!
১. যদি উক্ত
প্রতিষ্ঠানে Po পদে চাকরীর হালাল কাজের তুলনায় সুদী, ধোঁকা, প্রতারণা হিসাব লিখার কাজ নিতান্তই কম থাকে,তাহলে ফুকাহায়ে কেরাম, এমন কাজের রুখসত দিয়ে থাকেন অর্থাৎ এমন প্রতিষ্ঠানে
হিসাব রক্ষক ও ইত্যাদি হিসাবে চাকরী করা
জায়েজ আছে যদি সরাসরি সুদী কারবার ও সুদী কারবারেরই হিসাবের সাথে জড়িত না হওয়া
লাগে।
২. যদি আপনার বোনের চাকরী সরাসরি সুদ লেনদেন কিংবা ঋণ দেয়া ও তার
হিসাব রাখা এরকম কিছু না হয়ে থাকে তাহলে তার চাকরী জায়েজ হবে এবং তার ইনকামও হালাল
হবে। তবে পরিপূর্ণ পর্দার সাথে চাকরী করবে।
৩. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার বোনের
চাকরীটা না ছেড়ে দিয়ে অন্যত্র আরো ভালো চাকরী খোঁজতে থাকবে। ততদিন আপনারা তার
বেতনেই সংসার চালালে কোনো সমস্যা নেই। কারণ, আপনারা গরীব। তা ছাড়া অন্য কোনো হালাল
ইনকামও আপনাদের নেই এবং আপনাদের ইবাদতও কবুল হবে ইনশাআল্লাহ। তবে যদি আল্লাহ
তায়ালা আপনাদের কখনো এমন সামর্থ্য দান করেন ( দুআ করি আল্লাহ তায়ালা যেনো তা দেন)
যে, যতটাকা বেতন আপনার বোন ঐ প্রতিষ্ঠান থেকে পেয়েছে (তা হিসাব
করে রাখবেন) তা গরীবদেরকে সওয়াবের নিয়ত ছাড়া দান করে দিবেন।